স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে কোনো ফাইল গেলে তা অনুমোদন হয় না বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, তিনটি প্রকল্প এখনও মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, “অ্যাডভাইজার সাহেব এটা যখন দেখেন যে এটা একটা প্রজেক্ট, উনি ফাইলটা আর মিনিস্ট্রিতে রাখেন না, ঘরে নিয়ে যান। ‘দিজ ইজ দ্য প্যাটিথিক সিনারিও দ্যাট উই আর ফেসিং নাও আ ডেইজ’। ফাইল আছে সবই আছে। খুব চমৎকারভাবে উনারা বাসায় নিয়ে যান। মিনিস্ট্রি থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়। এটা আমার গত ১১ মাসের অভিজ্ঞতা।”
সোমবার নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) ক্যাম্পাসে ‘পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, “ফাইল আর মিনিস্ট্রিতে পাওয়া যায় না। আমি খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে মিনিস্ট্রিতে…। আমার ফাইল কই? বলে, ফাইল তো বাসায় নিয়ে গেছে। এখন বাসা থেকে ওটার আর পরে সিগনেচার হয় না। ওটা আর আসে না।”
তিনি আরও জানান, ইউকের প্রকল্প এবং জাপান ও কোরিয়ার প্রকল্প দ্রুত পেলে চট্টগ্রাম শহর আরও সুন্দর করা যেত। কিন্তু এটি কেবল চট্টগ্রাম সিটির ব্যর্থতা নয়, এটি রাষ্ট্র ও সরকারের ব্যর্থতাও। চারশ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট ফিন্যান্স মিনিস্ট্রিতে গিয়ে ২৯৮ কোটি টাকায় হ্রাস করা হয়েছে। প্রায় একশ কোটি টাকা কেটে দিয়ে ১৬০ কোটি টাকা ৫ শতাংশ সুদে ঋণ হিসেবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মেয়র বলেন, “ওই ফাইলটা এখনও ওই জায়গায় রয়ে গেছে। আমি এখনো দৌড়াচ্ছি, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমি কোথায় যাব? এর উপর আর কেউ আছে? উনি চট্টগ্রামের মানুষ। উনাকে বলেছি, উনার পিএসকে বারবার বলেছি যে, কাজটা করে দেন। আমার মেশিনারিজ খুব দরকার। আমার আসলে মেশিনারিজ নেই। যে যন্ত্রপাতিগুলো আছে সেগুলো ১৫-২০ বছরের পুরনো। গত সরকার একটা ড্রেনেজ সিস্টেম করতে গিয়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। আর এটা যন্ত্রপাতি কেনার জন্য তিনশ কোটি টাকার খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট। কিন্তু সেখানে আমি ফেইল করলাম।”
তিনি বলেন, “আমি ফেইল করলাম মানে রাষ্ট্র ফেইল করল। একদম স্ট্রেইট ফেইল করল। একটা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানকে দিতে কার্পণ্য করল। আমি এটা দিতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। জলাবদ্ধতা একটি বড় সমস্যা। আমি এটা সমাধান করতে চাই। এখানে যে উপদেষ্টাকে পাঠানো হয়েছে, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আমি উনার সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি। অনুরোধ করলাম। সবশেষে তিনি বললেন, প্রথমে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হয়ে যাক, তারপর আপনি সেটা পাবেন। আমার ৫০-৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতার সমস্যা ইতিমধ্যে সমাধান হয়েছে। এখনো আমি সেটা পাচ্ছি না। কাজেই কথা আমরা বলি, কিন্তু এখানে কথার পিছনে কথা থাকে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। সিটি মেয়রের বক্তব্যের পরে তিনি বলেন, “আমাদের ফান্ডিং যা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা নেওয়া দরকার। সরকারের আনলিমিটেড রাজস্ব নেই। সরকার চাইলে অনেক বেশি অর্থ দিতে পারে না। আমরা সব মিনিস্ট্রি, ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রির সাথে মারামারি করি। আমরা চাইলে বাজেট পাই না। যেই বাজেট পাওয়া গেছে, যেহেতু মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ, আপনাকে যদি ৫ শতাংশ দিয়েছে, তাহলে প্লিজ এই ফান্ডটা নিবেন এবং চট্টগ্রামের মানুষকে বঞ্চিত না করে কাজ শুরু করবেন।”
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, “উন্নয়ন হয়েছে এবছর জলাবদ্ধতা থেকে। চট্টগ্রামের মানুষকে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে পেরেছি। আমরা এ বছর গলা পরিমাণ পানি দেখিনি। সিটি করপোরেশন, সিডিএ, নাগরিক সমাজ, ছাত্র ও শিক্ষক সমাজ যারা এ লক্ষ্যে কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আশা করি আগামী এক বছরে সুফল দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “সিটি করপোরেশনকে আয় বাড়াতে হবে। যত বেশি সরকারের উপর নির্ভরশীল হবে, সিটি গভর্নমেন্টের ধারণাও পিছিয়ে যাবে। প্রমাণ করতে হবে, সিটি নিজের আয়ে নিজে চলতে পারে। নিজের পায়ে দাঁড়ালে এই ভয়েস জোরালো হবে যে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ না হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারি।”
অনুষ্ঠানে সিআইইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক এম এম নুরুল আবসার সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক। ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুবও উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সিআইইউর সহকারী রেজিস্ট্রার রুমা দাশ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটির প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে কোনো ফাইল গেলে তা অনুমোদন হয় না বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, তিনটি প্রকল্প এখনও মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, “অ্যাডভাইজার সাহেব এটা যখন দেখেন যে এটা একটা প্রজেক্ট, উনি ফাইলটা আর মিনিস্ট্রিতে রাখেন না, ঘরে নিয়ে যান। ‘দিজ ইজ দ্য প্যাটিথিক সিনারিও দ্যাট উই আর ফেসিং নাও আ ডেইজ’। ফাইল আছে সবই আছে। খুব চমৎকারভাবে উনারা বাসায় নিয়ে যান। মিনিস্ট্রি থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়। এটা আমার গত ১১ মাসের অভিজ্ঞতা।”
সোমবার নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) ক্যাম্পাসে ‘পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, “ফাইল আর মিনিস্ট্রিতে পাওয়া যায় না। আমি খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে মিনিস্ট্রিতে…। আমার ফাইল কই? বলে, ফাইল তো বাসায় নিয়ে গেছে। এখন বাসা থেকে ওটার আর পরে সিগনেচার হয় না। ওটা আর আসে না।”
তিনি আরও জানান, ইউকের প্রকল্প এবং জাপান ও কোরিয়ার প্রকল্প দ্রুত পেলে চট্টগ্রাম শহর আরও সুন্দর করা যেত। কিন্তু এটি কেবল চট্টগ্রাম সিটির ব্যর্থতা নয়, এটি রাষ্ট্র ও সরকারের ব্যর্থতাও। চারশ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট ফিন্যান্স মিনিস্ট্রিতে গিয়ে ২৯৮ কোটি টাকায় হ্রাস করা হয়েছে। প্রায় একশ কোটি টাকা কেটে দিয়ে ১৬০ কোটি টাকা ৫ শতাংশ সুদে ঋণ হিসেবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মেয়র বলেন, “ওই ফাইলটা এখনও ওই জায়গায় রয়ে গেছে। আমি এখনো দৌড়াচ্ছি, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমি কোথায় যাব? এর উপর আর কেউ আছে? উনি চট্টগ্রামের মানুষ। উনাকে বলেছি, উনার পিএসকে বারবার বলেছি যে, কাজটা করে দেন। আমার মেশিনারিজ খুব দরকার। আমার আসলে মেশিনারিজ নেই। যে যন্ত্রপাতিগুলো আছে সেগুলো ১৫-২০ বছরের পুরনো। গত সরকার একটা ড্রেনেজ সিস্টেম করতে গিয়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। আর এটা যন্ত্রপাতি কেনার জন্য তিনশ কোটি টাকার খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট। কিন্তু সেখানে আমি ফেইল করলাম।”
তিনি বলেন, “আমি ফেইল করলাম মানে রাষ্ট্র ফেইল করল। একদম স্ট্রেইট ফেইল করল। একটা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানকে দিতে কার্পণ্য করল। আমি এটা দিতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। জলাবদ্ধতা একটি বড় সমস্যা। আমি এটা সমাধান করতে চাই। এখানে যে উপদেষ্টাকে পাঠানো হয়েছে, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আমি উনার সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি। অনুরোধ করলাম। সবশেষে তিনি বললেন, প্রথমে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হয়ে যাক, তারপর আপনি সেটা পাবেন। আমার ৫০-৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতার সমস্যা ইতিমধ্যে সমাধান হয়েছে। এখনো আমি সেটা পাচ্ছি না। কাজেই কথা আমরা বলি, কিন্তু এখানে কথার পিছনে কথা থাকে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। সিটি মেয়রের বক্তব্যের পরে তিনি বলেন, “আমাদের ফান্ডিং যা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা নেওয়া দরকার। সরকারের আনলিমিটেড রাজস্ব নেই। সরকার চাইলে অনেক বেশি অর্থ দিতে পারে না। আমরা সব মিনিস্ট্রি, ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রির সাথে মারামারি করি। আমরা চাইলে বাজেট পাই না। যেই বাজেট পাওয়া গেছে, যেহেতু মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ, আপনাকে যদি ৫ শতাংশ দিয়েছে, তাহলে প্লিজ এই ফান্ডটা নিবেন এবং চট্টগ্রামের মানুষকে বঞ্চিত না করে কাজ শুরু করবেন।”
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, “উন্নয়ন হয়েছে এবছর জলাবদ্ধতা থেকে। চট্টগ্রামের মানুষকে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে পেরেছি। আমরা এ বছর গলা পরিমাণ পানি দেখিনি। সিটি করপোরেশন, সিডিএ, নাগরিক সমাজ, ছাত্র ও শিক্ষক সমাজ যারা এ লক্ষ্যে কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আশা করি আগামী এক বছরে সুফল দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “সিটি করপোরেশনকে আয় বাড়াতে হবে। যত বেশি সরকারের উপর নির্ভরশীল হবে, সিটি গভর্নমেন্টের ধারণাও পিছিয়ে যাবে। প্রমাণ করতে হবে, সিটি নিজের আয়ে নিজে চলতে পারে। নিজের পায়ে দাঁড়ালে এই ভয়েস জোরালো হবে যে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ না হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারি।”
অনুষ্ঠানে সিআইইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক এম এম নুরুল আবসার সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক। ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুবও উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সিআইইউর সহকারী রেজিস্ট্রার রুমা দাশ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল করিম, চট্টগ্রাম সিটির প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।