সোমবার, শারদীয় দুর্গা উসবে নারায়ণগঞ্জে আমলাপাড়া পূজা ম-প পরিদর্শনকালে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মইন খানকে ফুলদিয়ে শুভেচ্ছা জানান আমলাপাড়া পূজা কমিটির সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা। উপস্থিত ছিলেন অবু জাফর আহমেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান -সংবাদ
যানজট নিরসনে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার পৌরসদরের প্রায় এক কিলোমিটার অংশে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্তকরণ ও ডিভাইডার নির্মাণ করা হলেও কমানো যায়নি যানজট। উল্টো যানজট, দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে দাবি করছেন স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্য যানজটের কারনে প্রতিদিন সকাল-বিকেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে হাজারো যাত্রী ও চালককে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিভাইডার নির্মাণে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। পর্যাপ্ত ইউ-টার্ন রাখা হয়নি, বড় গাড়ি ঘোরানোর জায়গাও নেই। ফলে চালকেরা নিয়ম ভেঙে উল্টো পথে গাড়ি চালাচ্ছেন। এতে দুই গাড়িতে প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সম্প্রতি সরকারি রেয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আজগর আলী বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক দুই পাশে তিন ফুট তিন ফুট করে ইটের সলিং দিয়ে ছয় ফুট প্রশস্ত করা হয়। যান চলাচল একমুখি করতে মাঝখানে রোড ডিভাইডার স্থাপন করা হয়। কাজটি সম্পন্ন করে ভূঁইয়া কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই সড়কের অনেক অংশে ইটের সলিং উঠে গেছে, ভারিী যানবাহনের চাপে দেবে গেছে বেশির ভাগ অংশ। এতে খানাখন্দে ভরে ওঠেছে সড়কটি, বৃষ্টিতে সেসব অংশ জলাবদ্ধ হয়ে ডোবা-নালায় পরিণত হয়। ফলে যান চলাচল ধীর হয়ে যায়, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।
এই সড়কে নিয়মিত মালামাল পরিবহন করেন ট্রাকচালক লিমন মিয়া। তিনি বলেন, ডিভাইডার বসানো হলেও নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেক গাড়ি উল্টো পথে চলে এসে জ্যাম সৃষ্টি করে। সময় মতো মালামাল পৌঁছাতে পারি না। ভাঙা সড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একই অভিযোগ সিএনজি চালক মনির হোসেনেরও। তিনি বলেন, ইটের সলিং দেবে গর্ত হয়ে গেছে। সড়কের পাশেও তেমন বেশি মাটি নেই, সাইড নিতে গেলে অটোরিকশা হেলে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়দের মতে, সবচেয়ে বেশি যানজট হয় সড়কের দুটি স্থানে। এর মধ্যে দেবিদ্বার নিউ মার্কেট চত্বর এলাকায় এলোমেলোভাবে অটোরিকশা, সিএনজি ও বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় পুরো সড়ক অচল হয়ে যায়। অন্যদিকে ফুলগাছতলা এলাকায় অতিরিক্ত খানাখন্দ থাকায় সেখানে গাড়ি চলাচল ধীর হয়ে পড়ে। ফলে সকাল ও বিকেলে কয়েক ঘণ্টা ধরে আটকে থাকে যানবাহন।
অফিসগামী যাত্রী গোলাম কিবরিয়া নিজাম বলেন, আড়াই কোটি টাকা খরচ হলো, অথচ সুবিধা হলো না। উল্টো ভোগান্তি বেড়েছে। এক কিলোমিটার যেতে আধা ঘণ্টার বেশী লেগে যায়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরও বেশি। যানজটে আটকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে দেরি হয়। পরীক্ষার দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে বলে জানান ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ফেরদৌস জাহান ও তাহসিনা পারুয়ারা কলেজের শিক্ষার্থীরা। সিএনজি চালক মো: নুরুল বলেন, “আগে দিনে ১০টা ট্রিপ দিতে পারতাম। এখন ৫-৭টার বেশি হয় না। আয় কমে গেছে, খরচ বেড়েছে।” অন্যদিকে চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ, মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের তদারকি নেই বললেই চলে। নিয়মিত টহল বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় চালকেরা নির্বিঘ্নে উল্টো পথে গাড়ি চালাচ্ছেন, মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছেন। অথচ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ব্যবসায়ী সুমন দত্ত বলেন, মহাসড়কের পাশে পর্যাপ্ত খালি জায়গা নেই, যা আছে তাতে অনেক জায়গায় মাটি সরে গেছে। সওজের জায়গা দখল করে অনেক ব্যবসায়ী নির্মাণসামগ্রী, ইট, বালু, রড, ট্রাক্টর ও জেনারেটর রেখে দিয়েছে। এতে সড়ক আরও সরু হয়ে গেছে। যানজট বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। তিনি আরও বলেন, সড়কটির অনেক স্থানে ভাঙা অংশে সাময়িকভাবে ইট-সুরকি ফেলে সংস্কারের চেষ্টা করা হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই আবার দেবে যায়। কারণ পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক ডুবে যায়। এ অবস্থায় যানবাহন আটকে পড়ছে, পথচারীরা কাদা পানিতে ভিজে বিপাকে পড়ছেন। যানবাহনের চাকা থেকে ছিটকে পড়া কাদা পানি পথচারীদের পোশাক নষ্ট করছে।
হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পারভেজ আলী বলেন, এই মহাসড়কের প্রশস্ততা কম। অথচ যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেশি। বাস, ট্রাক চলে বেপরোয়া। অন্যদিকে থ্রি হুইলার চলে ধীর গতিতে। ফলে গতি বৈষম্য তৈরি হয়। এতে দুর্ঘটনা ও যানজট দুই-ই বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, সড়কের কিছু অংশে দুই পাশে মাটি নেই। ফলে ট্রেইলার বা ভারী যানবাহন একটু এদিক-সেদিক হলেই খাদে পড়ে যায়। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি হয়।
সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “যানবাহনের চাপে যে সকল স্থানে ইটের সলিং উঠে গেছে বা খানাখন্দ হয়েছে, তা যথা সম্ভব মেরামত করে যানবাহন চলাচল উপযোগী করে দিচ্ছি। যদিও এখন আমাদের তহবিল কম তার পরেও বিটুমিন দিয়ে নতুনভাবে সড়কটি সংস্কারে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।
সোমবার, শারদীয় দুর্গা উসবে নারায়ণগঞ্জে আমলাপাড়া পূজা ম-প পরিদর্শনকালে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মইন খানকে ফুলদিয়ে শুভেচ্ছা জানান আমলাপাড়া পূজা কমিটির সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা। উপস্থিত ছিলেন অবু জাফর আহমেদ বাবুল ও মাসুদুজ্জামান -সংবাদ
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যানজট নিরসনে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার পৌরসদরের প্রায় এক কিলোমিটার অংশে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্তকরণ ও ডিভাইডার নির্মাণ করা হলেও কমানো যায়নি যানজট। উল্টো যানজট, দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে দাবি করছেন স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্য যানজটের কারনে প্রতিদিন সকাল-বিকেল ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে হাজারো যাত্রী ও চালককে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিভাইডার নির্মাণে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। পর্যাপ্ত ইউ-টার্ন রাখা হয়নি, বড় গাড়ি ঘোরানোর জায়গাও নেই। ফলে চালকেরা নিয়ম ভেঙে উল্টো পথে গাড়ি চালাচ্ছেন। এতে দুই গাড়িতে প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সম্প্রতি সরকারি রেয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আজগর আলী বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক দুই পাশে তিন ফুট তিন ফুট করে ইটের সলিং দিয়ে ছয় ফুট প্রশস্ত করা হয়। যান চলাচল একমুখি করতে মাঝখানে রোড ডিভাইডার স্থাপন করা হয়। কাজটি সম্পন্ন করে ভূঁইয়া কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই সড়কের অনেক অংশে ইটের সলিং উঠে গেছে, ভারিী যানবাহনের চাপে দেবে গেছে বেশির ভাগ অংশ। এতে খানাখন্দে ভরে ওঠেছে সড়কটি, বৃষ্টিতে সেসব অংশ জলাবদ্ধ হয়ে ডোবা-নালায় পরিণত হয়। ফলে যান চলাচল ধীর হয়ে যায়, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে।
এই সড়কে নিয়মিত মালামাল পরিবহন করেন ট্রাকচালক লিমন মিয়া। তিনি বলেন, ডিভাইডার বসানো হলেও নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেক গাড়ি উল্টো পথে চলে এসে জ্যাম সৃষ্টি করে। সময় মতো মালামাল পৌঁছাতে পারি না। ভাঙা সড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একই অভিযোগ সিএনজি চালক মনির হোসেনেরও। তিনি বলেন, ইটের সলিং দেবে গর্ত হয়ে গেছে। সড়কের পাশেও তেমন বেশি মাটি নেই, সাইড নিতে গেলে অটোরিকশা হেলে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়দের মতে, সবচেয়ে বেশি যানজট হয় সড়কের দুটি স্থানে। এর মধ্যে দেবিদ্বার নিউ মার্কেট চত্বর এলাকায় এলোমেলোভাবে অটোরিকশা, সিএনজি ও বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় পুরো সড়ক অচল হয়ে যায়। অন্যদিকে ফুলগাছতলা এলাকায় অতিরিক্ত খানাখন্দ থাকায় সেখানে গাড়ি চলাচল ধীর হয়ে পড়ে। ফলে সকাল ও বিকেলে কয়েক ঘণ্টা ধরে আটকে থাকে যানবাহন।
অফিসগামী যাত্রী গোলাম কিবরিয়া নিজাম বলেন, আড়াই কোটি টাকা খরচ হলো, অথচ সুবিধা হলো না। উল্টো ভোগান্তি বেড়েছে। এক কিলোমিটার যেতে আধা ঘণ্টার বেশী লেগে যায়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরও বেশি। যানজটে আটকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে দেরি হয়। পরীক্ষার দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে বলে জানান ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ফেরদৌস জাহান ও তাহসিনা পারুয়ারা কলেজের শিক্ষার্থীরা। সিএনজি চালক মো: নুরুল বলেন, “আগে দিনে ১০টা ট্রিপ দিতে পারতাম। এখন ৫-৭টার বেশি হয় না। আয় কমে গেছে, খরচ বেড়েছে।” অন্যদিকে চালক ও যাত্রীদের অভিযোগ, মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের তদারকি নেই বললেই চলে। নিয়মিত টহল বা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় চালকেরা নির্বিঘ্নে উল্টো পথে গাড়ি চালাচ্ছেন, মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছেন। অথচ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ব্যবসায়ী সুমন দত্ত বলেন, মহাসড়কের পাশে পর্যাপ্ত খালি জায়গা নেই, যা আছে তাতে অনেক জায়গায় মাটি সরে গেছে। সওজের জায়গা দখল করে অনেক ব্যবসায়ী নির্মাণসামগ্রী, ইট, বালু, রড, ট্রাক্টর ও জেনারেটর রেখে দিয়েছে। এতে সড়ক আরও সরু হয়ে গেছে। যানজট বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। তিনি আরও বলেন, সড়কটির অনেক স্থানে ভাঙা অংশে সাময়িকভাবে ইট-সুরকি ফেলে সংস্কারের চেষ্টা করা হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই আবার দেবে যায়। কারণ পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক ডুবে যায়। এ অবস্থায় যানবাহন আটকে পড়ছে, পথচারীরা কাদা পানিতে ভিজে বিপাকে পড়ছেন। যানবাহনের চাকা থেকে ছিটকে পড়া কাদা পানি পথচারীদের পোশাক নষ্ট করছে।
হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পারভেজ আলী বলেন, এই মহাসড়কের প্রশস্ততা কম। অথচ যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেশি। বাস, ট্রাক চলে বেপরোয়া। অন্যদিকে থ্রি হুইলার চলে ধীর গতিতে। ফলে গতি বৈষম্য তৈরি হয়। এতে দুর্ঘটনা ও যানজট দুই-ই বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, সড়কের কিছু অংশে দুই পাশে মাটি নেই। ফলে ট্রেইলার বা ভারী যানবাহন একটু এদিক-সেদিক হলেই খাদে পড়ে যায়। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি হয়।
সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “যানবাহনের চাপে যে সকল স্থানে ইটের সলিং উঠে গেছে বা খানাখন্দ হয়েছে, তা যথা সম্ভব মেরামত করে যানবাহন চলাচল উপযোগী করে দিচ্ছি। যদিও এখন আমাদের তহবিল কম তার পরেও বিটুমিন দিয়ে নতুনভাবে সড়কটি সংস্কারে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।