alt

রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজে দুর্নীতি ও নিয়োগ-বাণিজ্যে স্থবির একাডেমিক কার্যক্রম

প্রতিনিধি, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : বহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজের প্রশাসনিক ভবন -সংবাদ

প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা, অরাজকতা ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ। কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশাসনিক অরাজকতা এবং আর্থিক অনিয়ম করেছেন। ভর্তি, পরীক্ষা, সার্টিফিকেট থেকে অবৈধ অর্থ আদায়, সরকারের নিয়ম বহির্ভূতভাবে টেন্ডার, অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরই সাবেক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সরকার পতনের পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বর্তমানেও তিনি নিয়মিত কলেজে উপস্থিত হন না। ফলে কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি প্রভাব খাটিয়ে বিরোধীদলীয় শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছেন। এমনকি ভুয়া মামলা দিয়ে কাউকে কাউকে জেল হাজতেও পাঠিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, ২০১৫ সালে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র গোলাম আজমকে কোন কারণ ছাড়াই জেল হাজতে পাঠায় ফলে ঐ ছাত্র নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনি ।

তার ডানহাত বলে খ্যাত অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মাইনুল ইসলাম ও ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মাসুদ রানাসহ আরো কতিপয় দলবাজ শিক্ষক সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। উক্ত দুই শিক্ষক বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত স্টাডি কেন্দ্রের দায়িত্ব¡ পালন করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন। স্টাডি কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষক এই প্রতিবেদককে জানান, অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় মাইনুল ইসলাম ও মাসুদ রানা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে উন্মুক্ত পরীক্ষায় প্রক্সির সুযোগ করে দেন। ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি সরকারিকরণ হয়। একাধিক শিক্ষক কর্মচারী জানান, কলেজটি সরকারিকরণের পর শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা চালুর জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় শিক্ষক অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অজুহাতে শিক্ষক কর্মচারীদের হয়রানি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।

জানা গেছে, কলেজে প্রতিবছর প্রায় ০৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এতে ভর্তি বাবদ আয় হয় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা। ২০২৪ সালে শিক্ষার্থী ভর্তি বাবদ আয় হয় ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আর খরচ দেখানো হয় মাত্র ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বাকি ২৩ লাখ টাকার বেশি অর্থ ভুয়া বিল ও ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়। এদিকে ভর্তি বাতিল, অন্য কলেজে স্থানান্তর, মৌখিক পরীক্ষা, সার্টিফিকেট ইস্যু এবং হাজিরার ঘাটতি পুরণের জন্যও টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন নির্মাণকাজ, জমি লিজ, দোকানঘর, ক্যান্টিন ও ভাস্কর্য নির্মাণেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তার জানান, নয়জনের কাছ থেকে চাকরি স্থায়ী করার জন্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। পরে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও ভুক্তভোগীরা এখনো তা পাননি। এদিকে দ্বৈত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয়করণের সুবিধা বঞ্চিত ৮/৯ জন শিক্ষক তাদের প্রদেয় চাঁদার অর্থ এখনও ফেরত পাননি এবং তাদের কাগজপত্রাদি অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়নি বলে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

এদিকে ৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অধ্যক্ষ ও সাবেক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে বসে তদন্তের জন্য ৯ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করেন। বোর্ডের ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করার কথা। যা এখন পর্যন্ত প্রক্রিয়াধীন। জানতে চাইলে অফিস সহায়ক পদে চাকরিরত মিজানুর রহমান বলেন, ‘অফিস সহায়ক পদে চাকরি দেবে বলে অধ্যক্ষের নাম করে আব্দুস সাত্তার আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছিল। আমি চার বছর কলেজের পদার্থ ও ভূগোল বিভাগে চাকরি করেছি। হঠাৎ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অধ্যক্ষ আমাকে কলেজে আসতে নিষেধ করেছেন। তারপর থেকে আমি আর কলেজে যাচ্ছি না।

একই পদের আরেক চাকরি প্রত্যাশী হিমেল বাবু বলেন, ‘আমার থেকে আব্দুস সাত্তার দুবার ৯০ হাজার করে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত অধ্যক্ষ আমাকে চাকরি দেয়নি। অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সকল কর্মকা- বিভিন্ন উপকমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। আমি কোন অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নই।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকে অসুস্থতা ও নানা ঝুট-ঝামেলার কারণে নিয়মিত কলেজ করতে সমস্যা হচ্ছে।’ এ বিষয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আ. ন. ম. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দপ্তরের যেটা করণীয় তা আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখব। তবে কলেজ অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুনীতির বিষয়গুলো মাউশি দেখে।’ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখা-১-এর উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম সিকদার বলেন, অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি

খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় নিহত তিন পাহাড়ি, আহতদের চিকিৎসা ও ন্যায়বিচারের দাবি মানবাধিকার সংগঠনের

ছবি

চুয়াডাঙ্গা কারাগারে হাজতির মৃত্যু

ছবি

নারায়ণগঞ্জে গণপিটুনিতে ইউপি সদস্য নিহত

ছবি

রাউজানে কাকের পিছু নিয়ে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ছবি

ধোবাউড়ায় ঘনঘন লোডশেডিং, ভূতুরে বিলে ভোগান্তি অন্তহীন

ছবি

রাজশাহীতে দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক

ছবি

দর্শনায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ছবি

নরসিংদীর চরাঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১, আহত ১০

ছবি

পিস্তল ঠেকিয়ে ছিনতাই চেষ্টা, যুবক আটক

ছবি

অধিক লাভের স্বপ্ন নিয়ে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

ছবি

আড়াইহাজারে ইউপি সদস্যকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

পোরশায় অবাধে বিক্রি হচ্ছে রোগাক্রান্ত পশুর মাংস, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

ছবি

ভৈরবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মালচিং পদ্ধতির চাষাবাদ

ছবি

মাওয়ায় ছয়টি প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত

ছবি

লালপুরে অস্তিত্বহীন খালে পুনঃখনন প্রকল্প

ছবি

চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী উপকরণ দিয়ে সাজানো হল পূজা মণ্ডপ

ছবি

কৃষকের মরিচ খেতে প্রতিপক্ষের হানা

ছবি

শরতের কাশফুল আর মেঘের ভেলায় ভাসছে প্রকৃতিপ্রেমীরা

ছবি

নারায়ণগঞ্জে পিতার ‘অমানবিক আচরণ’, ঘরবন্দি শিশু উদ্ধার

ছবি

নবীনগরে ঐতিহ্যবাহী বাঁশজাত শিল্প বিলুপ্তির পথে

ছবি

বোয়ালমারীতে এন্টিভেনম দেওয়ার পরও সাপে কাটা কৃষকের মৃত্যু

ছবি

আত্রাই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অপসারণ দাবি

ছবি

সিলেটে ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধের দাবিতে গণ-পদযাত্রা

ছবি

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে দুদকের অভিযান : ফলাফল জালিয়াতি

ছবি

কুতুবদিয়ায় পৌঁছেছে রাশিয়ার গমবাহী জাহাজ

ছবি

হাকিমপুরে পৌর যুবদলের সদস্য সচিবের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

ছবি

অগ্নিকান্ডে ১৮ ঘর ভষ্মিভূত, নিহত ১

ছবি

বিশ্ব নদী দিবসে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে চকরিয়ায় মানববন্ধন

ছবি

কুমিল্লা-সিলেট সড়কের দেবিদ্বার অংশ প্রশস্থ করার পরও কমেনি যানজট

খাগড়াছড়ির ধর্ষণ প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য, পরে দুঃখপ্রকাশ করলেন এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে গবাদিপশু খাদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছে কলার ঘাউর

ছবি

ডিমলায় ট্রলি চাপায় মৃত্যু ১

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় আটক ১৫

ছবি

ভৈরবে পিকআপ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৩

ছবি

সম্পদের বিবরণ চেয়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় নোটিশ ঝুলাল দুদক

ছবি

মাদারগঞ্জে ২০ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ

tab

রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজে দুর্নীতি ও নিয়োগ-বাণিজ্যে স্থবির একাডেমিক কার্যক্রম

প্রতিনিধি, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : বহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজের প্রশাসনিক ভবন -সংবাদ

সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা, অরাজকতা ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ। কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশাসনিক অরাজকতা এবং আর্থিক অনিয়ম করেছেন। ভর্তি, পরীক্ষা, সার্টিফিকেট থেকে অবৈধ অর্থ আদায়, সরকারের নিয়ম বহির্ভূতভাবে টেন্ডার, অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরই সাবেক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তার। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সরকার পতনের পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বর্তমানেও তিনি নিয়মিত কলেজে উপস্থিত হন না। ফলে কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি প্রভাব খাটিয়ে বিরোধীদলীয় শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছেন। এমনকি ভুয়া মামলা দিয়ে কাউকে কাউকে জেল হাজতেও পাঠিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, ২০১৫ সালে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র গোলাম আজমকে কোন কারণ ছাড়াই জেল হাজতে পাঠায় ফলে ঐ ছাত্র নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনি ।

তার ডানহাত বলে খ্যাত অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মাইনুল ইসলাম ও ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মাসুদ রানাসহ আরো কতিপয় দলবাজ শিক্ষক সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। উক্ত দুই শিক্ষক বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত স্টাডি কেন্দ্রের দায়িত্ব¡ পালন করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন। স্টাডি কেন্দ্রের একাধিক শিক্ষক এই প্রতিবেদককে জানান, অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় মাইনুল ইসলাম ও মাসুদ রানা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে উন্মুক্ত পরীক্ষায় প্রক্সির সুযোগ করে দেন। ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি সরকারিকরণ হয়। একাধিক শিক্ষক কর্মচারী জানান, কলেজটি সরকারিকরণের পর শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা চালুর জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় শিক্ষক অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অজুহাতে শিক্ষক কর্মচারীদের হয়রানি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।

জানা গেছে, কলেজে প্রতিবছর প্রায় ০৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এতে ভর্তি বাবদ আয় হয় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা। ২০২৪ সালে শিক্ষার্থী ভর্তি বাবদ আয় হয় ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আর খরচ দেখানো হয় মাত্র ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বাকি ২৩ লাখ টাকার বেশি অর্থ ভুয়া বিল ও ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়। এদিকে ভর্তি বাতিল, অন্য কলেজে স্থানান্তর, মৌখিক পরীক্ষা, সার্টিফিকেট ইস্যু এবং হাজিরার ঘাটতি পুরণের জন্যও টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন নির্মাণকাজ, জমি লিজ, দোকানঘর, ক্যান্টিন ও ভাস্কর্য নির্মাণেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তার জানান, নয়জনের কাছ থেকে চাকরি স্থায়ী করার জন্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। পরে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও ভুক্তভোগীরা এখনো তা পাননি। এদিকে দ্বৈত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয়করণের সুবিধা বঞ্চিত ৮/৯ জন শিক্ষক তাদের প্রদেয় চাঁদার অর্থ এখনও ফেরত পাননি এবং তাদের কাগজপত্রাদি অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়নি বলে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

এদিকে ৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অধ্যক্ষ ও সাবেক অফিস সহায়ক আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে বসে তদন্তের জন্য ৯ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করেন। বোর্ডের ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করার কথা। যা এখন পর্যন্ত প্রক্রিয়াধীন। জানতে চাইলে অফিস সহায়ক পদে চাকরিরত মিজানুর রহমান বলেন, ‘অফিস সহায়ক পদে চাকরি দেবে বলে অধ্যক্ষের নাম করে আব্দুস সাত্তার আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছিল। আমি চার বছর কলেজের পদার্থ ও ভূগোল বিভাগে চাকরি করেছি। হঠাৎ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অধ্যক্ষ আমাকে কলেজে আসতে নিষেধ করেছেন। তারপর থেকে আমি আর কলেজে যাচ্ছি না।

একই পদের আরেক চাকরি প্রত্যাশী হিমেল বাবু বলেন, ‘আমার থেকে আব্দুস সাত্তার দুবার ৯০ হাজার করে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত অধ্যক্ষ আমাকে চাকরি দেয়নি। অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘সকল কর্মকা- বিভিন্ন উপকমিটির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। আমি কোন অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নই।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকে অসুস্থতা ও নানা ঝুট-ঝামেলার কারণে নিয়মিত কলেজ করতে সমস্যা হচ্ছে।’ এ বিষয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আ. ন. ম. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দপ্তরের যেটা করণীয় তা আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখব। তবে কলেজ অধ্যক্ষের অনিয়ম-দুনীতির বিষয়গুলো মাউশি দেখে।’ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি কলেজ শাখা-১-এর উপপরিচালক মো. নুরুল ইসলাম সিকদার বলেন, অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

back to top