মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীসহ একাধিক শাখা নদীতে ঝোঁপ ফেলে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অবৈধ উপায়ে ঝোঁপ ফেলে নির্বিচারে মাছ শিকার করায় বিলুপ্তির পথে দেশি প্রজাতির মাছ। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জেলেরা। হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া ও মুদারকান্দি গ্রাম-সংলগ্ন মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে, গুয়াগাছিয়া, হোসেন্দী, টেংগারচর ইউনিয়ন সংলগ্ন নদীতে ঝোপ পেতে চলছে মাছ শিকার। ঝোপ তৈরির শুরুতে নদীতে গাছের ডালপালা ফেলা হয়। পরে চারদিকে বাঁশের বেড়া ও কচুরিপানা দেওয়া হয়। এরপর ঝোপের ভেতরে মাছের খাবার দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পর ঝোপের চারদিকে বানা ও সূক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘের দিয়ে ঝোপের ভেতরে আশ্রয় নেয়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা জয়।
নদী বেষ্টিত গজারিয়ায় একাধিক নদী, শাখা ও উপনদীতে গঁজিয়ে উঠা আনুমানিক শতাধিক সংখ্যক অবৈধ ঝোঁপ মাছ সংকটের জন্য দায়ী বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদী, খাল, হাওর-বাওর, মিঠা পানির জলাশয় ও নদীতে দুই শতাধিক প্রজাতির মাছের মধ্যে ৬০টিরও অধিক প্রজাতির মিঠা পানির মাছ বিলুপ্তির পথে রয়েছে।
সূত্রের দাবি, এই সংকটের প্রধানতম কারণ নদী তীরে গড়ে উঠা বিভিন্ন শিল্প কারখানার রাসায়নিক বর্জে পানি দুষন ও নদী দখল করে প্রভাবশালীমহলের প্রত্যক্ষ মদদে ঝোঁপ বা জাগ স্থাপন করে, লোভনীয় খাবারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানে মৎস্য সম্পদ আটকে রেখে বিশেষ পদ্ধতিতে জাল দিয়ে বেড় দিয়ে মাছ আহরণ করে চিহ্নিত একটি গোষ্ঠির মুনাফা নিশ্চিত করা হচ্ছ।
গজারিয়া উপজেলার চারপাশে বয়ে চলা মেঘনা, গোমতি নদী ও এদের শাখা-প্রশাখা ও উপনদীর বিশাল অংশ জুড়ে, যুগের পর যুগ প্রভাবশালীরা ঝোঁপ তৈরি করে আসছেন। এই পদ্ধতিতে মাছের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে এক স্থানে আটকে ফেলা হয়, যার ফলে নির্বিচারে মাছ ধরা পড়ে এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে। এই প্রথাটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং স্থানীয় জেলেদের পেশা ও জীবিকাতেও বাধা সৃষ্টি করে। ঝোপ যেভাবে তৈরি করা হয় নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁশ এবং অন্যান্য গাছের ডালপালা ও কচুরিপানা স্তুপ করে আটকে রাখা হয়।এই স্তুপ বা “ঝোপ” মাছের চলাচলের পথ আটকে দেয়। মাছেরা এই ঝোপের ভেতরে আটকা পড়ে এবং তখন সহজেই এদের ধরা যায়।
এই পদ্ধতি জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, কারণ এটি দেশি মাছের প্রজাতিগুলো বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেয়।
ঝোপ তৈরি করার কারণে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঝোঁপে নিয়মিত ছিটিয়ে দেয়া হয় লোভনীয় স্বাসযুক্ত খাবার নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাঁশ ও জাল দিয়ে ঝোঁপ বেড় দিয়ে ছেকে তোলা হয় মাছ।
গজারিয়া উপজেলা জুড়ে নদীতে অবৈধ এই ঝোঁপ স্থাপন করে প্রান্তিক জেলে ও মৎস্যজীবী পরিবারের জীবন- জীবিকা কঠিন করে তোলা হচ্ছে। ঝোঁপ স্থাপন করে চলছে মৎস্য নিধনের মহোৎসব, এতে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধা গ্রস্থ হয়ে পলি জমে নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে নদীর জীলজ প্রাণী। এতে নদী পথের ক্ষুদ্র মাঝারি জলযান চলাচলে ব্যঘাত সৃষ্টি হওয়ার পণ্য পরিবহনে যুক্ত হচ্ছে বাড়তি খরচ।
গজারিয়ায় ৭ শতাধিক জেলে পরিবারের বাইরেও সহস্রাধিক পরিবার মৌসুমবেধে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহের সাথে জড়িত বলে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে লোকবল সংকটের কারণে তাদের কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আব্দুস সামাদ জানান, তিনিসহ মাত্র ৩ জন জনবল রয়েছে তার কার্যালয়ে। দীর্ঘদিন শূণ্য রয়েছে সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও ক্ষেত্রসহকারীর মতো অতি প্রয়োজনীয় পদগুলো। ঝোঁপ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করাসহ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বাজেট, লোকবল ও লজিস্টক ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের লোক বল ও লজিস্টিক ঘাটতি নিয়ে চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস সালাম জানান, তিনিসহ তার কার্যালয়ে লোকবল একুনে ৩ জন। উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও ক্ষেত্র সহকারী পদের মত প্রয়োজনীয় পদগুলো শুন্য রয়েছে দীর্ঘদিন।
এমন লোকবল ঘাটতি নিয়েই গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় গজারিয়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযানের চুড়ান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত উপজেলা ট্রান্সফোর্স কমিটির সভা।
মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীসহ একাধিক শাখা নদীতে ঝোঁপ ফেলে মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অবৈধ উপায়ে ঝোঁপ ফেলে নির্বিচারে মাছ শিকার করায় বিলুপ্তির পথে দেশি প্রজাতির মাছ। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ জেলেরা। হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া ও মুদারকান্দি গ্রাম-সংলগ্ন মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে, গুয়াগাছিয়া, হোসেন্দী, টেংগারচর ইউনিয়ন সংলগ্ন নদীতে ঝোপ পেতে চলছে মাছ শিকার। ঝোপ তৈরির শুরুতে নদীতে গাছের ডালপালা ফেলা হয়। পরে চারদিকে বাঁশের বেড়া ও কচুরিপানা দেওয়া হয়। এরপর ঝোপের ভেতরে মাছের খাবার দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের পর ঝোপের চারদিকে বানা ও সূক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘের দিয়ে ঝোপের ভেতরে আশ্রয় নেয়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা জয়।
নদী বেষ্টিত গজারিয়ায় একাধিক নদী, শাখা ও উপনদীতে গঁজিয়ে উঠা আনুমানিক শতাধিক সংখ্যক অবৈধ ঝোঁপ মাছ সংকটের জন্য দায়ী বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদী, খাল, হাওর-বাওর, মিঠা পানির জলাশয় ও নদীতে দুই শতাধিক প্রজাতির মাছের মধ্যে ৬০টিরও অধিক প্রজাতির মিঠা পানির মাছ বিলুপ্তির পথে রয়েছে।
সূত্রের দাবি, এই সংকটের প্রধানতম কারণ নদী তীরে গড়ে উঠা বিভিন্ন শিল্প কারখানার রাসায়নিক বর্জে পানি দুষন ও নদী দখল করে প্রভাবশালীমহলের প্রত্যক্ষ মদদে ঝোঁপ বা জাগ স্থাপন করে, লোভনীয় খাবারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানে মৎস্য সম্পদ আটকে রেখে বিশেষ পদ্ধতিতে জাল দিয়ে বেড় দিয়ে মাছ আহরণ করে চিহ্নিত একটি গোষ্ঠির মুনাফা নিশ্চিত করা হচ্ছ।
গজারিয়া উপজেলার চারপাশে বয়ে চলা মেঘনা, গোমতি নদী ও এদের শাখা-প্রশাখা ও উপনদীর বিশাল অংশ জুড়ে, যুগের পর যুগ প্রভাবশালীরা ঝোঁপ তৈরি করে আসছেন। এই পদ্ধতিতে মাছের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে এক স্থানে আটকে ফেলা হয়, যার ফলে নির্বিচারে মাছ ধরা পড়ে এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে। এই প্রথাটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং স্থানীয় জেলেদের পেশা ও জীবিকাতেও বাধা সৃষ্টি করে। ঝোপ যেভাবে তৈরি করা হয় নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁশ এবং অন্যান্য গাছের ডালপালা ও কচুরিপানা স্তুপ করে আটকে রাখা হয়।এই স্তুপ বা “ঝোপ” মাছের চলাচলের পথ আটকে দেয়। মাছেরা এই ঝোপের ভেতরে আটকা পড়ে এবং তখন সহজেই এদের ধরা যায়।
এই পদ্ধতি জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, কারণ এটি দেশি মাছের প্রজাতিগুলো বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেয়।
ঝোপ তৈরি করার কারণে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঝোঁপে নিয়মিত ছিটিয়ে দেয়া হয় লোভনীয় স্বাসযুক্ত খাবার নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাঁশ ও জাল দিয়ে ঝোঁপ বেড় দিয়ে ছেকে তোলা হয় মাছ।
গজারিয়া উপজেলা জুড়ে নদীতে অবৈধ এই ঝোঁপ স্থাপন করে প্রান্তিক জেলে ও মৎস্যজীবী পরিবারের জীবন- জীবিকা কঠিন করে তোলা হচ্ছে। ঝোঁপ স্থাপন করে চলছে মৎস্য নিধনের মহোৎসব, এতে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধা গ্রস্থ হয়ে পলি জমে নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে নদীর জীলজ প্রাণী। এতে নদী পথের ক্ষুদ্র মাঝারি জলযান চলাচলে ব্যঘাত সৃষ্টি হওয়ার পণ্য পরিবহনে যুক্ত হচ্ছে বাড়তি খরচ।
গজারিয়ায় ৭ শতাধিক জেলে পরিবারের বাইরেও সহস্রাধিক পরিবার মৌসুমবেধে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহের সাথে জড়িত বলে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে লোকবল সংকটের কারণে তাদের কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আব্দুস সামাদ জানান, তিনিসহ মাত্র ৩ জন জনবল রয়েছে তার কার্যালয়ে। দীর্ঘদিন শূণ্য রয়েছে সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও ক্ষেত্রসহকারীর মতো অতি প্রয়োজনীয় পদগুলো। ঝোঁপ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করাসহ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বাজেট, লোকবল ও লজিস্টক ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
গজারিয়া উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের লোক বল ও লজিস্টিক ঘাটতি নিয়ে চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস সালাম জানান, তিনিসহ তার কার্যালয়ে লোকবল একুনে ৩ জন। উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও ক্ষেত্র সহকারী পদের মত প্রয়োজনীয় পদগুলো শুন্য রয়েছে দীর্ঘদিন।
এমন লোকবল ঘাটতি নিয়েই গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় গজারিয়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযানের চুড়ান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত উপজেলা ট্রান্সফোর্স কমিটির সভা।