বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : আলফাডাঙ্গার হরি মন্দিরে ২৫১ মূর্তিতে তৈরি পূজামণ্ডপ -সংবাদ
ফরিদুরের আলফাডাঙ্গা বাজারে অবস্থিত হরি মন্দিরে এবার ২৫১টি প্রতিমায় পালিত হচ্ছে দুর্গোৎসব। এক মন্দিরে এত বেশি প্রতিমার আয়োজন এতদঞ্চলের আর কোথাও নেই। এ কারণে আলফাডাঙ্গা দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে দূর্গা দেবীর একান্ন রূপে আর্বিভাবের প্রতিমা প্রদর্শনী।
সরেজমিন আলফাডাঙ্গার হরি মন্দিরের পূজামন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, আলফাডাঙ্গা কপি হাউজ সংলগ্ন পৌরসদরে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুসুমদী গ্রামের হরি মন্দিরের মণ্ডপে ভারত থেকে ৪ জন প্রতিমা শিল্পী এসে ৫১টি পীঠে একশো ৫১ খন্ড প্রতিমা তৈরি করেছেন। যা কারিগররা চার মাস আগে থেকেই শুরু করেছিলেন। এখানে কয়েকটি ডিজিটাল প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। ‘মা-ছেলের একটি প্রতিমায় ছেলে টাকা চাচ্ছে, টাকা না দিলে কান্না করছে ও দুর্গা প্রতিমার পায়ের নিচে বাঘটিও সংক্রিয়ভাবে তার মুখবায়ব নাড়িয়ে ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এবং অপর ৫১ ফিট সাপের একটি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। মূল ফটকে ঢুকতেই সাপের প্রতিমাটি প্রদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া আরেকটি প্রতিমা মোমবাতি জ্বালিয়ে আড়তি দিচ্ছে ও আরেকটিতে ঢুলি-তবলা বাজাচ্ছেন। সনাতনী ধর্মের মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী শতী দেবীর বিভিন্ন খণ্ড ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ৫১ খণ্ড পিঠ ছড়িয়ে রয়েছে। যা এ বছর ফরিদপুরে আলফাডাঙ্গা হরি মন্দিরের দুর্গা মণ্ডপে এই ৫১টি পীঠের থিম ব্যবহার করে সতীপীঠের একটি মডেল করা হয়েছে। এখানে আসা দর্শনার্থীরা পীঠ দর্শনের মাধ্যমে সনাতন ধর্মের পূর্নঙ্গ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। সাধারনত কোন দর্শনার্থীর পক্ষে এতোগুলি স্থানে গিয়ে পীঠগুলো দেখা সম্ভব হয় না, তাই এই মণ্ডপে এসে ভক্তদের মনের আশা পূর্ণতা পাবে।
আয়োজকরা জানান, বিশেষ প্রদর্শনীটি শুধু আলফাডাঙ্গাতেই নয় ফরিদপুর জেলা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকেও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে। পাশের জেলা গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও মাগুরার দর্শনার্থীরাও এখানে দর্শন করতে আসে। সনাতনী ধর্মের শিক্ষার্থীরা এখানে এসে তাদের ধর্মের সম্পূর্ণ কাহিনী জানতে পারবে এবং সনাতন ধর্মীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। এছাড়া সকলের জানা ও বুঝার জন্য প্রতিটি প্রতি খণ্ড মণ্ডপের পাশে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কুসুমদি গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত গাইন বলেন, ‘আলফাডাঙ্গার শান্তিপ্রিয় মানুষ ধর্ম-বর্ণ বিভেদ ভুলে মিলেমিশে একসাথে বাস করে। সম্প্রীতির দৃঢ় বন্ধন রয়েছে এখানে। আমাদের এখানকার ২৫১টি প্রতিমার বিশাল প্রদর্শনী দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ভিড় করে। এ বছর আমরা চেষ্টা করছি দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দিতে।’
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পূজা উযযাপন কমিটির সভাপতি ও হরি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে দূর্গা দেবীর একান্ন সতীপীঠ বলতে বোঝায় হিন্দু ধর্মের সেই পবিত্রস্থানকে। যেখানে দেবী সতীর দেহ ৫১ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পতিত হয়েছিল। এই পীঠগুলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তিব্বত ও ভুটানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। সাধারনত কোন ভক্তের পক্ষে অর্থ খরচ করে এতোগুলি স্থানে গিয়ে পীঠগুলো দেখা সম্ভব হয় না। এবার দূর্গাপূজার মণ্ডপে এই ৫১টি পীঠের থিম ব্যবহার করে সতীপীঠের একটি মডেল করা হয়েছে যা ভক্তদের এক জায়গায় সব পীঠ দর্শনের অভিজ্ঞতা দিবে। এই মণ্ডপে এসে ভক্তদের মনের আশা পূর্ণ হবে আশা করছি।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল আলম জানান, ‘আলফাডাঙ্গা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে সার্বিক বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : আলফাডাঙ্গার হরি মন্দিরে ২৫১ মূর্তিতে তৈরি পূজামণ্ডপ -সংবাদ
মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফরিদুরের আলফাডাঙ্গা বাজারে অবস্থিত হরি মন্দিরে এবার ২৫১টি প্রতিমায় পালিত হচ্ছে দুর্গোৎসব। এক মন্দিরে এত বেশি প্রতিমার আয়োজন এতদঞ্চলের আর কোথাও নেই। এ কারণে আলফাডাঙ্গা দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে দূর্গা দেবীর একান্ন রূপে আর্বিভাবের প্রতিমা প্রদর্শনী।
সরেজমিন আলফাডাঙ্গার হরি মন্দিরের পূজামন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, আলফাডাঙ্গা কপি হাউজ সংলগ্ন পৌরসদরে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুসুমদী গ্রামের হরি মন্দিরের মণ্ডপে ভারত থেকে ৪ জন প্রতিমা শিল্পী এসে ৫১টি পীঠে একশো ৫১ খন্ড প্রতিমা তৈরি করেছেন। যা কারিগররা চার মাস আগে থেকেই শুরু করেছিলেন। এখানে কয়েকটি ডিজিটাল প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। ‘মা-ছেলের একটি প্রতিমায় ছেলে টাকা চাচ্ছে, টাকা না দিলে কান্না করছে ও দুর্গা প্রতিমার পায়ের নিচে বাঘটিও সংক্রিয়ভাবে তার মুখবায়ব নাড়িয়ে ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এবং অপর ৫১ ফিট সাপের একটি প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। মূল ফটকে ঢুকতেই সাপের প্রতিমাটি প্রদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া আরেকটি প্রতিমা মোমবাতি জ্বালিয়ে আড়তি দিচ্ছে ও আরেকটিতে ঢুলি-তবলা বাজাচ্ছেন। সনাতনী ধর্মের মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী শতী দেবীর বিভিন্ন খণ্ড ভারত, পাকিস্তান, নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ৫১ খণ্ড পিঠ ছড়িয়ে রয়েছে। যা এ বছর ফরিদপুরে আলফাডাঙ্গা হরি মন্দিরের দুর্গা মণ্ডপে এই ৫১টি পীঠের থিম ব্যবহার করে সতীপীঠের একটি মডেল করা হয়েছে। এখানে আসা দর্শনার্থীরা পীঠ দর্শনের মাধ্যমে সনাতন ধর্মের পূর্নঙ্গ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। সাধারনত কোন দর্শনার্থীর পক্ষে এতোগুলি স্থানে গিয়ে পীঠগুলো দেখা সম্ভব হয় না, তাই এই মণ্ডপে এসে ভক্তদের মনের আশা পূর্ণতা পাবে।
আয়োজকরা জানান, বিশেষ প্রদর্শনীটি শুধু আলফাডাঙ্গাতেই নয় ফরিদপুর জেলা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকেও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে। পাশের জেলা গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও মাগুরার দর্শনার্থীরাও এখানে দর্শন করতে আসে। সনাতনী ধর্মের শিক্ষার্থীরা এখানে এসে তাদের ধর্মের সম্পূর্ণ কাহিনী জানতে পারবে এবং সনাতন ধর্মীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে। এছাড়া সকলের জানা ও বুঝার জন্য প্রতিটি প্রতি খণ্ড মণ্ডপের পাশে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কুসুমদি গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত গাইন বলেন, ‘আলফাডাঙ্গার শান্তিপ্রিয় মানুষ ধর্ম-বর্ণ বিভেদ ভুলে মিলেমিশে একসাথে বাস করে। সম্প্রীতির দৃঢ় বন্ধন রয়েছে এখানে। আমাদের এখানকার ২৫১টি প্রতিমার বিশাল প্রদর্শনী দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ভিড় করে। এ বছর আমরা চেষ্টা করছি দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দিতে।’
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পূজা উযযাপন কমিটির সভাপতি ও হরি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে দূর্গা দেবীর একান্ন সতীপীঠ বলতে বোঝায় হিন্দু ধর্মের সেই পবিত্রস্থানকে। যেখানে দেবী সতীর দেহ ৫১ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পতিত হয়েছিল। এই পীঠগুলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তিব্বত ও ভুটানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। সাধারনত কোন ভক্তের পক্ষে অর্থ খরচ করে এতোগুলি স্থানে গিয়ে পীঠগুলো দেখা সম্ভব হয় না। এবার দূর্গাপূজার মণ্ডপে এই ৫১টি পীঠের থিম ব্যবহার করে সতীপীঠের একটি মডেল করা হয়েছে যা ভক্তদের এক জায়গায় সব পীঠ দর্শনের অভিজ্ঞতা দিবে। এই মণ্ডপে এসে ভক্তদের মনের আশা পূর্ণ হবে আশা করছি।
আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজালাল আলম জানান, ‘আলফাডাঙ্গা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে সার্বিক বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।