alt

গ্রামবাংলার ঐতিহ্য মাটির খেলনা হারিয়ে যাচ্ছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল : মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গ্রামবাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের অমূল্য অংশ হিসেবে পরিচিত মাটির খেলনা। একসময় দুর্গাপূজা এলেই শিশুদের প্রিয় উপহার ছিল এটি। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে বিলুপ্তির পথে। টাঙ্গাইলের কুমারপল্লীগুলোতে এ সময় যখন মাটির খেলনার সরগরম বাজার জমার কথা ছিল, সেখানে আজ বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে।

বিগত কয়েক দশক আগেও ঈদ, বৈশাখী ও পূজার সময় মাটির হাঁড়ি-পাতিল, পুতুল, নৌকা, পালকি, হাতি, ঘোড়া, টিয়াপাখি, হাঁস, আম, কাঁঠালসহ নানা রঙের কারুকার্য করা খেলনা শিশুদের হাতে অনবদ্য উপহার হিসেবে বিক্রি হতো। তবে আজকের দিনে প্লাস্টিকের যুগে শিশুদের আগ্রহ প্লাস্টিকের খেলনার দিকে ঝুকে গেছে। এর ফলে মাটির মৃৎশিল্পের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

টাঙ্গাইলের কুমোরপাড়া এনায়েতপুর, বাসাখানপুর, তারুটিয়া এলাকাগুলো কুমারপল্লী হিসেবে পরিচিত। এক সময় দুর্গাপূজার আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে মুখরিত থাকত এসব কুমারপল্লীতে মাটির তৈরি বিভিন্ন খেলনা। কুমোরড়া এসব খেলা সামগ্রী বিক্রি করে ভাল লাভবান হতো। কিন্তু বর্তমানে এসব কুমারপল্লীতে মাত্র ১৫-২০টি করে পরিবার এই শিল্পে টিকে আছেন। সেখানে এবার প্রতিমা তৈরি হয়েছে। কিন্তু দুর্গাপূজায় শিশুদের প্রিয় উপহারগুলো বিক্রি না হওয়ার কারণে কুমোররা আর মাটির তৈরি খেলনা বানান না।

পালপাড়ার কুমার উৎপল পাল বলেন, আগে পূজার সময় প্রচুর খেলনা বানাতাম। এখন প্লাস্টিকের খেলনার কারণে বিক্রি হয় না, সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। নিখিল চন্দ্র পাল বলেন, মাটির খেলনা বানাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু দাম খুব কম পাওয়া যায়, বিক্রিও হয় না আগের মতো। তাই অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

প্রতিমা রাণী নামে এক কুমারী বলেন, কয়েক বছর আগে ৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র বিক্রি হতো। এখন ২ হাজার টাকাও বিক্রি হয় না। আমরা চাই এই শিল্প বাঁচুক, এজন্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন। ঝিনুক রাণী পাল বলেন, মাটির কাজ একসময় আমাদের সংসারের ভরসা ছিল। এখন উৎসবের সময়ও বিক্রি কম হয়। সহজ ঋণ ও বাজারজাত করার সুযোগ পেলে হয়তো আবার কাজ শুরু করা যাবে।

অন্যদিকে জামাল হোসেন, আক্তার মিয়াসহ অনেকেই জানান, আমাদের ছোটবেলায় মাটির খেলনাই ছিল ভরসা। এখন পুরনো সেই শৈশবের কথা মনে পড়ে। আমাদের এখনকার ছেলে-মেয়েরা কেউ মাটির তৈরি খেলনা দিয়ে খেলতে চায় না। সে কারনেই তাদেরকে কিনে দেয়া হয় না।

মাটির খেলনা শিল্পের এই অবনতির ফলে শুধু ঐতিহ্যের ক্ষতি হচ্ছে না। বরং বহু পরিবার জীবিকার সংকটে পড়ছে। তাই দেশের গ্রামীণ শিল্পের এই অমূল্য অংশ বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারি সহযোগিতা এবং নতুন বাজার সৃষ্টির উদ্যোগ।

ছবি

ডেঙ্গু: একমাসে হাসপাতালে ভর্তি ১৫ হাজারের বেশি, মৃত্যু ৭৬ জন

ছবি

খাগড়াছড়ির ঘটনা বাড়তে দেয়া হলো কেন: ফওজিয়া মোসলেম

ছবি

বেসরকারি ব্যবস্থাপনাতেও ৩টি হজ প্যাকেজ

ছবি

বাংলাদেশি ২টি ট্রলার ও ১৪ জেলেকে আটক করেছে আরাকান আর্মি

ছবি

পর্যটন খাতে সম্ভাবনার হাতছানি চান্দিনার ‘ঘুরগার বিল’

ছবি

সিলেটে ভূমিকম্প: বাড়ছে ক্ষয়-ক্ষতির শঙ্কা

ছবি

বেনাপোল বন্দর: ভারত থেকে ২১ দিনে ৭,১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি

ছবি

বৃষ্টিতে বাড়লো স্থানীয় প্রজাতির মাছ, প্রাণ পেল কালীগঞ্জের কুটির শিল্প

ছবি

খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় তদন্ত কমিটি, অবরোধ তুললেই ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার

ছবি

মই বেয়ে উঠতে হয় ব্রিজে দুর্ভোগে ৫ গ্রামের মানুষ

ছবি

মঠবাড়িয়ায় সার উত্তোলন না করেই বিক্রি করে দেন বিসিআইসি ডিলার

ছবি

কলাপাড়ায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ৮০ পরিবারকে গৃহনির্মাণ সামগ্রী বিতরণ

ছবি

বেতাগীতে মা ইলিশ সংরক্ষণে টাস্কফোর্স কমিটির সভা

ছবি

ইয়াবার ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, আহত ২

ছবি

এক বছরে গ্রাম আদালতে ২৩৩৫ মামলার নিষ্পত্তি

ছবি

সৈয়দপুরে চীনের প্রস্তাবিত ১০০০ শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

কালিহাতীতে সাঁতার শিখতে গিয়ে মৃত্যু

ছবি

আলফাডাঙ্গার হরি মন্দিরে ২৫১টি প্রতিমায় পালিত হচ্ছে দুর্গোৎসব

ছবি

ত্রিশ বছর গান গেয়ে পত্রিকা বিক্রেতা আব্দুল গফফারের

ছবি

যশোরে পুলিশ পরিচয়ে সোনা ডাকাতির ঘটনায় চারজন আটক

ছবি

তারাগঞ্জে বিআরডি’র সুফল ভোগীর প্রশিক্ষণ

ছবি

চরম হতাশায় ভুগছেন কালিতলা গ্রোয়েনে বাঁধের টঙ্গ দোকানিরা

ছবি

রাজবাড়ীতে টাইফয়েডের টিকা পাবে ৩ লাখ ১২ হাজার শিশু

ছবি

ধনবাড়ীতে ৩৫টি মন্দিরে দুর্গোৎসব

ছবি

গজারিয়ায় নদীতে ঝোঁপ ফেলে মাছ মারায় হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ

ছবি

লালপুরে বিএনপির গণসংযোগ ও পথসভা

ছবি

বরেন্দ্র অঞ্চলে টেকসই ধান উৎপাদন বিষয়ক কর্মশালা

ছবি

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা

ছবি

আদমদীঘিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মা মেয়ের মৃত্যু, আহত ৬

ছবি

চুয়াডাঙ্গা খুনের মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

সালথায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত

ছবি

তেতুলিয়ায় স্বপ্ন সারথি গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠান সম্পন্ন

ছবি

আগের মতো এক ব্যক্তিদর্শী ধরণের কোনো নির্বাচন হবে না : উপদেষ্টা

ছবি

টেলিগ্রাম কেবলই স্মৃতি

ছবি

রায়পুরে কৃষকের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ

ছবি

বিদেশি স্যান্ডেলের দাপটে দেশি পাদুকা শিল্পের গ্রাম কালুহাটি আজ চুপচাপ

tab

গ্রামবাংলার ঐতিহ্য মাটির খেলনা হারিয়ে যাচ্ছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গ্রামবাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের অমূল্য অংশ হিসেবে পরিচিত মাটির খেলনা। একসময় দুর্গাপূজা এলেই শিশুদের প্রিয় উপহার ছিল এটি। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে বিলুপ্তির পথে। টাঙ্গাইলের কুমারপল্লীগুলোতে এ সময় যখন মাটির খেলনার সরগরম বাজার জমার কথা ছিল, সেখানে আজ বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে।

বিগত কয়েক দশক আগেও ঈদ, বৈশাখী ও পূজার সময় মাটির হাঁড়ি-পাতিল, পুতুল, নৌকা, পালকি, হাতি, ঘোড়া, টিয়াপাখি, হাঁস, আম, কাঁঠালসহ নানা রঙের কারুকার্য করা খেলনা শিশুদের হাতে অনবদ্য উপহার হিসেবে বিক্রি হতো। তবে আজকের দিনে প্লাস্টিকের যুগে শিশুদের আগ্রহ প্লাস্টিকের খেলনার দিকে ঝুকে গেছে। এর ফলে মাটির মৃৎশিল্পের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

টাঙ্গাইলের কুমোরপাড়া এনায়েতপুর, বাসাখানপুর, তারুটিয়া এলাকাগুলো কুমারপল্লী হিসেবে পরিচিত। এক সময় দুর্গাপূজার আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে মুখরিত থাকত এসব কুমারপল্লীতে মাটির তৈরি বিভিন্ন খেলনা। কুমোরড়া এসব খেলা সামগ্রী বিক্রি করে ভাল লাভবান হতো। কিন্তু বর্তমানে এসব কুমারপল্লীতে মাত্র ১৫-২০টি করে পরিবার এই শিল্পে টিকে আছেন। সেখানে এবার প্রতিমা তৈরি হয়েছে। কিন্তু দুর্গাপূজায় শিশুদের প্রিয় উপহারগুলো বিক্রি না হওয়ার কারণে কুমোররা আর মাটির তৈরি খেলনা বানান না।

পালপাড়ার কুমার উৎপল পাল বলেন, আগে পূজার সময় প্রচুর খেলনা বানাতাম। এখন প্লাস্টিকের খেলনার কারণে বিক্রি হয় না, সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। নিখিল চন্দ্র পাল বলেন, মাটির খেলনা বানাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু দাম খুব কম পাওয়া যায়, বিক্রিও হয় না আগের মতো। তাই অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।

প্রতিমা রাণী নামে এক কুমারী বলেন, কয়েক বছর আগে ৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র বিক্রি হতো। এখন ২ হাজার টাকাও বিক্রি হয় না। আমরা চাই এই শিল্প বাঁচুক, এজন্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন। ঝিনুক রাণী পাল বলেন, মাটির কাজ একসময় আমাদের সংসারের ভরসা ছিল। এখন উৎসবের সময়ও বিক্রি কম হয়। সহজ ঋণ ও বাজারজাত করার সুযোগ পেলে হয়তো আবার কাজ শুরু করা যাবে।

অন্যদিকে জামাল হোসেন, আক্তার মিয়াসহ অনেকেই জানান, আমাদের ছোটবেলায় মাটির খেলনাই ছিল ভরসা। এখন পুরনো সেই শৈশবের কথা মনে পড়ে। আমাদের এখনকার ছেলে-মেয়েরা কেউ মাটির তৈরি খেলনা দিয়ে খেলতে চায় না। সে কারনেই তাদেরকে কিনে দেয়া হয় না।

মাটির খেলনা শিল্পের এই অবনতির ফলে শুধু ঐতিহ্যের ক্ষতি হচ্ছে না। বরং বহু পরিবার জীবিকার সংকটে পড়ছে। তাই দেশের গ্রামীণ শিল্পের এই অমূল্য অংশ বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারি সহযোগিতা এবং নতুন বাজার সৃষ্টির উদ্যোগ।

back to top