চুয়াডাঙ্গা : দর্শনায় রেলস্টপেজ পাওয়ায় জনতার উল্লাস -সংবাদ
দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা আর আন্দোলনের ফসল হিসেবে গতকাল বুধবার রাত ১২টা ১২ মিনিটে অবশেষে ঢাকাগামী সুন্দরবন আপ এক্সপ্রেস দাঁড়ায় দর্শনা হল্ট স্টেশনে। এ খবর আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায়। তাই বুধবার সন্ধ্যা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে স্টেশন চত্বরে। ছাত্র-যুবক থেকে শুরু করে প্রবীণ, নারী-পুরুষ সবাই সেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে রাতভর অপেক্ষায় ছিলেন।
ট্রেন থামতেই প্ল্যাটফর্মে উচ্ছ্বাসের বিস্ফোরণ ঘটে। আন্দোলনকারীরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও পরিচালককে। সবার হাতে তুলে দেওয়া হয় খাবার। শুধু কর্মকর্তারাই নয়, যাত্রীদেরও ফুল ও আপ্যায়নে বরণ করা হয়। এমন আয়োজন দেখে ট্রেন কর্তৃপক্ষও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
দর্শনায় ট্রেন থামানোর এই দাবিটি নতুন নয়। বহু বছর ধরে স্থানীয়রা এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব আর প্রশাসনিক জটিলতায় বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন দর্শনার সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, তবুও তার উদ্যোগ না থাকায় বারবার বঞ্চিত হয়েছে মানুষ।
শেষ পর্যন্ত হতাশ দর্শনাবাসী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পথে নামে। কয়েকজন ছাত্র ট্রেন আটকালে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে। ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, সাধারণ জনগণ একসাথে দাঁড়ায় এই দাবির পক্ষে। অবশেষে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত সেপ্টেম্বরে দর্শনা স্টেশনে স্টপেজের সিদ্ধান্ত দেয়।
এরপরই শুরু হয় আনন্দ-উৎসব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তানভির রহমান অনিকের সভাপতিত্বে আয়োজিত বিজয় উৎসব ও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা তৌহিদ হোসেন, ছাত্রদলের কলেজ শাখার নেতা পলাশ আহাম্মেদ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের দর্শনা থানা সভাপতি লোকমান হোসেন, আবিদ হাসান রিফাত ও ডি এস মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোল্লা শফি উদ্দিন।
সভায় বক্তারা বলেন, দর্শনার এ অর্জন কেবল একটি স্টপেজ নয়, এটি ন্যায়ের পথে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের প্রতীক। তারা ভবিষ্যতেও সবাইকে একসাথে থাকার আহ্বান জানান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুবদল সভাপতি জালাল উদ্দীন লিটন, বিএনপির সমন্বয়ক ইকবাল হোসেন, জামায়াতের মাওলানা আব্দুল খালেক, জাসদ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, পৌর বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেটসহ আরও অনেকে। রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির উপদেষ্টা জাহিদুল ইসলাম একে দর্শনাবাসীর ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সফল রূপ বলে অভিহিত করেন।
প্রথম ট্রেন থামার সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন লোকোমাস্টার সাখাওয়াত হোসেন, সহকারী লোকোমাস্টার আবু বক্কর সিদ্দিক এবং পরিচালক আতিকুর রহমান। তারা জানান, এমন ভালোবাসা ও সম্মান খুব কম ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। এই মুহূর্ত তাদের কাছেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
চুয়াডাঙ্গা : দর্শনায় রেলস্টপেজ পাওয়ায় জনতার উল্লাস -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা আর আন্দোলনের ফসল হিসেবে গতকাল বুধবার রাত ১২টা ১২ মিনিটে অবশেষে ঢাকাগামী সুন্দরবন আপ এক্সপ্রেস দাঁড়ায় দর্শনা হল্ট স্টেশনে। এ খবর আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায়। তাই বুধবার সন্ধ্যা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে স্টেশন চত্বরে। ছাত্র-যুবক থেকে শুরু করে প্রবীণ, নারী-পুরুষ সবাই সেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে রাতভর অপেক্ষায় ছিলেন।
ট্রেন থামতেই প্ল্যাটফর্মে উচ্ছ্বাসের বিস্ফোরণ ঘটে। আন্দোলনকারীরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও পরিচালককে। সবার হাতে তুলে দেওয়া হয় খাবার। শুধু কর্মকর্তারাই নয়, যাত্রীদেরও ফুল ও আপ্যায়নে বরণ করা হয়। এমন আয়োজন দেখে ট্রেন কর্তৃপক্ষও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
দর্শনায় ট্রেন থামানোর এই দাবিটি নতুন নয়। বহু বছর ধরে স্থানীয়রা এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব আর প্রশাসনিক জটিলতায় বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন দর্শনার সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, তবুও তার উদ্যোগ না থাকায় বারবার বঞ্চিত হয়েছে মানুষ।
শেষ পর্যন্ত হতাশ দর্শনাবাসী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পথে নামে। কয়েকজন ছাত্র ট্রেন আটকালে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে। ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, সাধারণ জনগণ একসাথে দাঁড়ায় এই দাবির পক্ষে। অবশেষে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত সেপ্টেম্বরে দর্শনা স্টেশনে স্টপেজের সিদ্ধান্ত দেয়।
এরপরই শুরু হয় আনন্দ-উৎসব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তানভির রহমান অনিকের সভাপতিত্বে আয়োজিত বিজয় উৎসব ও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা তৌহিদ হোসেন, ছাত্রদলের কলেজ শাখার নেতা পলাশ আহাম্মেদ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের দর্শনা থানা সভাপতি লোকমান হোসেন, আবিদ হাসান রিফাত ও ডি এস মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোল্লা শফি উদ্দিন।
সভায় বক্তারা বলেন, দর্শনার এ অর্জন কেবল একটি স্টপেজ নয়, এটি ন্যায়ের পথে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের প্রতীক। তারা ভবিষ্যতেও সবাইকে একসাথে থাকার আহ্বান জানান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন যুবদল সভাপতি জালাল উদ্দীন লিটন, বিএনপির সমন্বয়ক ইকবাল হোসেন, জামায়াতের মাওলানা আব্দুল খালেক, জাসদ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, পৌর বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেটসহ আরও অনেকে। রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির উপদেষ্টা জাহিদুল ইসলাম একে দর্শনাবাসীর ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের সফল রূপ বলে অভিহিত করেন।
প্রথম ট্রেন থামার সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন লোকোমাস্টার সাখাওয়াত হোসেন, সহকারী লোকোমাস্টার আবু বক্কর সিদ্দিক এবং পরিচালক আতিকুর রহমান। তারা জানান, এমন ভালোবাসা ও সম্মান খুব কম ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। এই মুহূর্ত তাদের কাছেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।