ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নাগরিক সমাজের আপত্তি উপেক্ষা করে ঐতিহ্যবাহী আবু সিনা ছাত্রাবাস ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছিল ২৫০ শয্যার সিলেট জেলা হাসপাতাল। তবে নির্মাণকাজ শেষেও প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এ হাসপাতালটি। প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতালের নির্মাণকাজ ২০২৩ সালে শেষ হলেও এখন এর দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের মতামত না নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করায় এ হাসপাতাল ভবনের দায়িত্ব নিতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। ফলে হাসপাতাল কমপ্লেক্স বুঝিয়ে দেয়ার মতো কর্তৃপক্ষ পাচ্ছে না গণপূর্ত বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সিভিল সার্জন অফিসসহ কেউই এর দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছে না। ফলে হাসপাতাল চালু করা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
তবে সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে এ হাসপাতাল চালু করা হবে। বৃহস্পতিবার, (০২ অক্টোবর ২০২৫) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, জটিলতা কাটিয়ে মাস দুয়েকের মধ্যে সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এটি চালু হলে ওসমানীতে রোগীর চাপ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জানা যায়, এ হাসপাতালের দায়িত্ব হস্তান্তরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। নবনির্মিত এই হাসপাতাল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন অফিস না-কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, আসলে কে পরিচালনা করবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয় নি। গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ১৫ তলা হাসপাতাল ভবনে আনুমানিক ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আট তলা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। গণপূর্ত জানায়, হাসপাতাল ভবনের বেইজমেন্টে রয়েছে কারপার্কিং; প্রথম তলায় টিকেট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম; দ্বিতীয় তলায় আউটডোর, রিপোর্ট ডেলিভারি ও কনসালট্যান্ট চেম্বার; তৃতীয় তলায় ডায়াগনস্টিক; চতুর্থ তলায় কার্ডিয়াক ও জেনারেল ওটি, আইসিসিইউ, সিসিইউ; পঞ্চম তলায় গাইনি বিভাগ, অপথালমোলজি, অর্থপেডিক্স ও ইএনটি বিভাগ এবং ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম তলায় ওয়ার্ড ও কেবিন। এরমধ্যে আইসিইউ বেড ১৯টি, সিসিইউ বেড ৯টি এবং ৪০টি কেবিন রয়েছে। জেলা হাসপাতাল প্রসঙ্গে সিলেট গণপূর্ত বিভাগের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন, ‘নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেই কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন হস্তান্তর করে দেবে যে কোনো সময়। এখন সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে দিতে চাই; কিন্তু কেউ দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। তারা ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। এ কমিটি হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেবে, আমরা সেভাবেই কাজ করবো।’
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ৮ সদস্যের একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। কমিটি তাদের কাজ করে যাচ্ছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নবনির্মিত হাসপালকেই সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ৯৮ একর জমির ওপর হাসপাতালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব পায় পদ্মা অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এরআগে আবু সিনা ছাত্রাবাস প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উল্লেখ করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন সিলেটের নাগরিক সমাজ।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
নাগরিক সমাজের আপত্তি উপেক্ষা করে ঐতিহ্যবাহী আবু সিনা ছাত্রাবাস ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছিল ২৫০ শয্যার সিলেট জেলা হাসপাতাল। তবে নির্মাণকাজ শেষেও প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এ হাসপাতালটি। প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতালের নির্মাণকাজ ২০২৩ সালে শেষ হলেও এখন এর দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের মতামত না নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করায় এ হাসপাতাল ভবনের দায়িত্ব নিতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা। ফলে হাসপাতাল কমপ্লেক্স বুঝিয়ে দেয়ার মতো কর্তৃপক্ষ পাচ্ছে না গণপূর্ত বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সিভিল সার্জন অফিসসহ কেউই এর দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছে না। ফলে হাসপাতাল চালু করা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
তবে সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম জানিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে এ হাসপাতাল চালু করা হবে। বৃহস্পতিবার, (০২ অক্টোবর ২০২৫) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, জটিলতা কাটিয়ে মাস দুয়েকের মধ্যে সিলেট জেলা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এটি চালু হলে ওসমানীতে রোগীর চাপ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জানা যায়, এ হাসপাতালের দায়িত্ব হস্তান্তরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। নবনির্মিত এই হাসপাতাল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন অফিস না-কি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, আসলে কে পরিচালনা করবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয় নি। গণপূর্ত বিভাগ জানায়, ১৫ তলা হাসপাতাল ভবনে আনুমানিক ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আট তলা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। গণপূর্ত জানায়, হাসপাতাল ভবনের বেইজমেন্টে রয়েছে কারপার্কিং; প্রথম তলায় টিকেট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম; দ্বিতীয় তলায় আউটডোর, রিপোর্ট ডেলিভারি ও কনসালট্যান্ট চেম্বার; তৃতীয় তলায় ডায়াগনস্টিক; চতুর্থ তলায় কার্ডিয়াক ও জেনারেল ওটি, আইসিসিইউ, সিসিইউ; পঞ্চম তলায় গাইনি বিভাগ, অপথালমোলজি, অর্থপেডিক্স ও ইএনটি বিভাগ এবং ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম তলায় ওয়ার্ড ও কেবিন। এরমধ্যে আইসিইউ বেড ১৯টি, সিসিইউ বেড ৯টি এবং ৪০টি কেবিন রয়েছে। জেলা হাসপাতাল প্রসঙ্গে সিলেট গণপূর্ত বিভাগের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন, ‘নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখন পরিচ্ছন্নতাসহ আনুষাঙ্গিক সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেই কাজগুলো মাসখানেকের ভেতরে শেষ করা হবে। এগুলো শেষ হলেই পুরোপুরিভাবে ভবনের সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন হস্তান্তর করে দেবে যে কোনো সময়। এখন সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে দিতে চাই; কিন্তু কেউ দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। তারা ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। এ কমিটি হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেবে, আমরা সেভাবেই কাজ করবো।’
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ৮ সদস্যের একটি কমিটি দেয়া হয়েছে। কমিটি তাদের কাজ করে যাচ্ছে। কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নবনির্মিত হাসপালকেই সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ৬ দশমিক ৯৮ একর জমির ওপর হাসপাতালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব পায় পদ্মা অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এরআগে আবু সিনা ছাত্রাবাস প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উল্লেখ করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন সিলেটের নাগরিক সমাজ।