ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
গত বছর আগাম সবজি চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার বাড়তি লাভের আশায় আমন চাষে ঝুকেছে ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় কৃষকের সে আশায় বাধ সাজে প্রকৃতি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের কারণে গত ৫ দিনের টানা বৃষ্টিতে ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ও সবজির খেত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ৫ দিনে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩২.৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বর্তমানে জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। পাশাপাশি ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এরমধ্যে আগাম সবজি আবাদ হয়েছে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে।
সদর উপজেলার নারগুণ কহরপাড়া এলাকার আমনচাষি মহররম আলী বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটতাম। হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে এবং ধান গাছের মাথা ভাড়ি হয়ে নুইয়ে পড়ে যায়। শিষ পানিতে ডুবে রঙ কালচে হয়ে যাচ্ছে। এতে ফলন যেমন কমবে, তেমনি বাজারে ধানের দামও মিলবে না।’
কেবল আমন ধান নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন শীতকালীন সবজিচাষিরাও। মাঠে ইতোমধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, টমেটো, বেগুন ও মুলার আবাদ হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে শাক-সবজির খেতেও পানি জমে গাছ ক্ষতির মুখে পড়ছে ।
ভাউলারহাট এলাকার লাবু মিঞা নামের আরেক কৃষক জানান, গতবার শীতকালীন আগাম সবজি বেশি করেছিলাম। সেসময় আমি ফলন খারাপ হওয়ায় এবার তাই আমন চাষে বেশি ঝুঁকি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এবারো মনে ভয় চলে এসেছে। জানিনা কতটা ক্ষতি হবে এবার।
তবে সবজিও করেছি অল্প কিছু জমিতে। টানা বৃষ্টিতে সেসব সবজিরও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, সমুদ্রে সৃষ্ট লঘু চাপের কারণে গত ৫ দিনের টানা বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় আমন ধান ও শীতকালীন সবজিতে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে যে ধান পাকতে শুরু করেছে, পানিতে ডুবে থাকার কারণে এর গুণমান কমে যাচ্ছে। এতে ফলন কমার পাশাপাশি বাজারে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন না।’ তবে কৃষক দ্রুত এসব ফসল ঘরে তুললে তারা কিছুটা কম ক্ষতি হবে।
এছাড়াও শীতকালীন সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, শসা ও মুলা এখন জমিতে রয়েছে। এগুলো অনেকটাই সংবেদনশীল ফসল। জলাবদ্ধতা দীর্ঘ হলে শিকড় পচে গাছ মারা যেতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে দ্রুত জমি থেকে পানি নামানো যায়। প্রয়োজনে নালা কেটে পানি বের করে দিতে হবে।’
ক্ষতির হিসাব নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজ করছেন। শিগগিরই ক্ষতির একটি সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। তবে আমরা আশা করছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ক্ষতি কিছুটা সামলে ওঠা সম্ভব হবে।’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
গত বছর আগাম সবজি চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবার বাড়তি লাভের আশায় আমন চাষে ঝুকেছে ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় কৃষকের সে আশায় বাধ সাজে প্রকৃতি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের কারণে গত ৫ দিনের টানা বৃষ্টিতে ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ও সবজির খেত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ৫ দিনে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৩২.৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বর্তমানে জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। পাশাপাশি ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এরমধ্যে আগাম সবজি আবাদ হয়েছে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে।
সদর উপজেলার নারগুণ কহরপাড়া এলাকার আমনচাষি মহররম আলী বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটতাম। হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে এবং ধান গাছের মাথা ভাড়ি হয়ে নুইয়ে পড়ে যায়। শিষ পানিতে ডুবে রঙ কালচে হয়ে যাচ্ছে। এতে ফলন যেমন কমবে, তেমনি বাজারে ধানের দামও মিলবে না।’
কেবল আমন ধান নয়, ক্ষতির মুখে পড়েছেন শীতকালীন সবজিচাষিরাও। মাঠে ইতোমধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, টমেটো, বেগুন ও মুলার আবাদ হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে শাক-সবজির খেতেও পানি জমে গাছ ক্ষতির মুখে পড়ছে ।
ভাউলারহাট এলাকার লাবু মিঞা নামের আরেক কৃষক জানান, গতবার শীতকালীন আগাম সবজি বেশি করেছিলাম। সেসময় আমি ফলন খারাপ হওয়ায় এবার তাই আমন চাষে বেশি ঝুঁকি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এবারো মনে ভয় চলে এসেছে। জানিনা কতটা ক্ষতি হবে এবার।
তবে সবজিও করেছি অল্প কিছু জমিতে। টানা বৃষ্টিতে সেসব সবজিরও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, সমুদ্রে সৃষ্ট লঘু চাপের কারণে গত ৫ দিনের টানা বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় আমন ধান ও শীতকালীন সবজিতে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে যে ধান পাকতে শুরু করেছে, পানিতে ডুবে থাকার কারণে এর গুণমান কমে যাচ্ছে। এতে ফলন কমার পাশাপাশি বাজারে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন না।’ তবে কৃষক দ্রুত এসব ফসল ঘরে তুললে তারা কিছুটা কম ক্ষতি হবে।
এছাড়াও শীতকালীন সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, শসা ও মুলা এখন জমিতে রয়েছে। এগুলো অনেকটাই সংবেদনশীল ফসল। জলাবদ্ধতা দীর্ঘ হলে শিকড় পচে গাছ মারা যেতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে দ্রুত জমি থেকে পানি নামানো যায়। প্রয়োজনে নালা কেটে পানি বের করে দিতে হবে।’
ক্ষতির হিসাব নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজ করছেন। শিগগিরই ক্ষতির একটি সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে। তবে আমরা আশা করছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ক্ষতি কিছুটা সামলে ওঠা সম্ভব হবে।’