সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : তিস্তার ভাঙনে হুমকির মুখে বসতবাড়ি -সংবাদ
টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানি বেড়ে যাওয়ায় সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ভাঙনে উঠতি আমন খেতসহ বিভিন্ন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীতে বিলিন হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে উপজেলা কাপাসিয়া ইউনিয়নের উত্তর লালচামার গ্রামে ২০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে ও ৫০টি বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে এবং ২০০টি বসতবাড়ি ভাঙনের মুখে পড়েছে। পানি বাড়তে থাকায় নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। চরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া আসা করা সম্ভাব হচ্ছে না।
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ালে বা কমলে এমনকি বন্যা দেখা দিলেই শুরু হয় নদী ভাঙন। যে ভাঙন চলতে থাকে মাসের পর মাস। নদী পাড়ের মানুষের অভিযোগ, সরকার স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন, ও সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় প্রতি বছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজারও একর ফসলি জমি নদীতে বিলিন হচ্ছে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, হঠাৎ করে গত রোববার হতে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় লালচামার, উত্তর লালচামার, ভোরের পাখি, ভাটী কাপাসিয়া গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে লালচামার গ্রামের মমিনুল, কছিম উদ্দিন, আবুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, আমিনুল ইসলামসহ ২০ জনের বসতবাড়িসহ শতাধিক বিঘা জমির আমনক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়ে গেছে অন্তত ৫০টি পরিবার। ভাঙনের মুখে পড়েছে শতাধিক বিঘা ফসলি জমিসহ ২০০টি বসতবাড়ি। তার ভাষ্য নদীতে পানি বাড়লে অথবা কমলে এবং বন্যা আসলে তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। চরের মানুষ এখন ত্র্যান চায় না, তারা স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙন রোধ চায়।
পূর্ব শ্রীপুর চাপড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম, ও বাদশা মিয়া বলেন প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। একজন চরবাসিকে এক মৌসুমে কমপক্ষে ৩/৪ বার ঘরবাড়ি সরাতে হয়। আজও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধের কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনজু মিয়া বলেন, গত রোববার হতে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। সরকারি ভাবে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার দাবি নদী খনন, ড্রেজিং, স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে কল্পে বহুবার চাহিদা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আজও কোন ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ হতে নেয়া হয়নি। শুধুমাত্র ভাঙন রোধে প্রাথমিক ভাবে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানো না হলে চরবাসির দুঃখ কোন দিনও দুর হবে না। ভাঙনে প্রতিবছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি এবং হাজারও একর ফসলি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির জানান, কাপাসিয়া শ্রীপুর, চন্ডিপুর ও হরিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি চরে তিস্তার ভাঙনে আমনক্ষেতসহ অন্যান্য ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলি হচ্ছে। এতে করে কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মন্ডল জানান, কাপাসিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি চরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যানকে ভাঙন কবলিত পরিবারের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, ভাঙন কবলিত এলাকায় এই মহুত্বে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা হাতে নেই। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ সরকারের উপর মহলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : তিস্তার ভাঙনে হুমকির মুখে বসতবাড়ি -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানি বেড়ে যাওয়ায় সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেই সাথে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ভাঙনে উঠতি আমন খেতসহ বিভিন্ন ফসলি জমি ও বসতবাড়ি নদীতে বিলিন হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে উপজেলা কাপাসিয়া ইউনিয়নের উত্তর লালচামার গ্রামে ২০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে ও ৫০টি বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে এবং ২০০টি বসতবাড়ি ভাঙনের মুখে পড়েছে। পানি বাড়তে থাকায় নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। চরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া আসা করা সম্ভাব হচ্ছে না।
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ালে বা কমলে এমনকি বন্যা দেখা দিলেই শুরু হয় নদী ভাঙন। যে ভাঙন চলতে থাকে মাসের পর মাস। নদী পাড়ের মানুষের অভিযোগ, সরকার স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন, ও সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় প্রতি বছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজারও একর ফসলি জমি নদীতে বিলিন হচ্ছে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, হঠাৎ করে গত রোববার হতে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় লালচামার, উত্তর লালচামার, ভোরের পাখি, ভাটী কাপাসিয়া গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে লালচামার গ্রামের মমিনুল, কছিম উদ্দিন, আবুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, আমিনুল ইসলামসহ ২০ জনের বসতবাড়িসহ শতাধিক বিঘা জমির আমনক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়ে গেছে অন্তত ৫০টি পরিবার। ভাঙনের মুখে পড়েছে শতাধিক বিঘা ফসলি জমিসহ ২০০টি বসতবাড়ি। তার ভাষ্য নদীতে পানি বাড়লে অথবা কমলে এবং বন্যা আসলে তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। চরের মানুষ এখন ত্র্যান চায় না, তারা স্থায়ী ভাবে নদী ভাঙন রোধ চায়।
পূর্ব শ্রীপুর চাপড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম, ও বাদশা মিয়া বলেন প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। একজন চরবাসিকে এক মৌসুমে কমপক্ষে ৩/৪ বার ঘরবাড়ি সরাতে হয়। আজও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধের কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনজু মিয়া বলেন, গত রোববার হতে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। সরকারি ভাবে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তার দাবি নদী খনন, ড্রেজিং, স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে কল্পে বহুবার চাহিদা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আজও কোন ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ হতে নেয়া হয়নি। শুধুমাত্র ভাঙন রোধে প্রাথমিক ভাবে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানো না হলে চরবাসির দুঃখ কোন দিনও দুর হবে না। ভাঙনে প্রতিবছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি এবং হাজারও একর ফসলি বিলিন হচ্ছে নদীগর্ভে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রাশিদুল কবির জানান, কাপাসিয়া শ্রীপুর, চন্ডিপুর ও হরিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি চরে তিস্তার ভাঙনে আমনক্ষেতসহ অন্যান্য ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলি হচ্ছে। এতে করে কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মন্ডল জানান, কাপাসিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি চরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যানকে ভাঙন কবলিত পরিবারের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, ভাঙন কবলিত এলাকায় এই মহুত্বে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা ছাড়া আর কোন ব্যবস্থা হাতে নেই। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ সরকারের উপর মহলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।