শেকড় প্রযুক্তিতে সমপরিমাণ মাটিতে দশগুণ সবজি চাষে বাজিমাত
ইবাদ আলীর ছাদ গবেষাণাগার -সংবাদ
কৃষিবিদ ইবাদ আলীর বাড়ির ছাদ যেন ‘ছাদবাগানের গবেষণাগার’। এ গবেষণাগার থেকেই তিনি উদ্ভাবন করেছেন ‘শেকড় প্রযুক্তি’। ইবাদ আলীর এ শেকড় প্রযুক্তিই এখন ছাদবাগানের ধারণাকে বদলে দিচ্ছে। অল্প জায়গায় অল্প মাটিতে অনেক ফসল চাষের এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে। চার বছর ধরে গবেষণা করে এ প্রযুক্তিকে বাস্তবায়ন করছেন তিনি। এতে সাধারণ ছাদবাগানের সমপরিমাণ মাটিতে দশগুণ সবজি চাষ সম্ভব হচ্ছে। শুধু ছাদ নয়; এ শেকড় প্রযুক্তিতে ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলেও বিপুল সবজি উৎপাদন সম্ভব বলে দাবি করেন কৃষিবিদ ইবাদ আলী। যশোরের কৃষি বিভাগও ইবাদ আলীর ছাদকৃষিতে মুগ্ধ। তার এ শেকড় প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে পারলে ছাদকৃষিতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলে উল্লেখ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন।
যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষিবিদ ইবাদ আলী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খাদ্য প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগে চাকরি করলেও কৃষি, উদ্ভাবন, গবেষণাই তার ধ্যান-জ্ঞান। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কৃষি নিয়ে গবেষণা করছেন।
কৃষিবিদ ইবাদ আলী জানান, অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাড়ির ছাদে চাষাবাদ। কিন্তু এ চাষাবাদের জন্য তিনি উদ্ভাবন করেছেন শেকড় প্রযুক্তি। প্রায় চার বছরের গবেষণায় শেকড় প্রযুক্তিতে ছাদে সবজি চাষে সফল হয়েছেন তিনি। এতে কম মাটির ব্যবহারে ছাদ কৃষিতে অধিক ফলনে লাভবান হয়েছেন। নিজের উদ্ভাবিত শেকড় প্রযুক্তিতে ২২ প্রকারের সবজি ও ফল চাষ করছেন। উৎপাদিত সবজি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করছেন। শেকড় প্রযুক্তির মাধ্যমে ছাদে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদও লাভজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যশোর-নড়াইল মহাসড়কের হামিদপুর বাজারের চাঁদপাড়া সড়কের পূর্বপাশে কয়েকশ’ গজ ভিতরে গেলেই ইবাদ আলীর বাড়ি। দুই তলা বাড়ির নিচ তলায় শিশুদের স্কুল। দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। এ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন ছাদ কৃষির গবেষণাগার। গতানুগতিক ছাদ কৃষি থেকে বেরিয়ে অল্প জায়গায় বেশি চাষের লক্ষ্যে ২০২২ সালে শেকড় প্রযুক্তিতে চাষাবাদ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে শেকড় প্রযুক্তিতে ২২ প্রকার সবজি ও ফল চাষ করছেন। বর্তমানে তার ছাদে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, বরবটি, পেঁয়াজ, রসুন, আমড়া, শিম, লেবু, ড্রাগন, কাঁচামরিচ রয়েছে। শেকড় প্রযুক্তিতে অল্প মাটি ব্যবহার করে বেশি বেড তৈরি করেছেন। সেই বেডে সবজিও বেশি রোপন করা হয়েছে। তার পুরো ছাদ সবজি খেতের মতো সুবজে ভরে গেছে। সাশ্রয়ী খরচে ফসল উৎপাদনও বেড়েছে। পরিবারের সবজি ও মসলার চাহিদা পূরণ করে বিক্রিও করছেন।
কৃষিবিদ ইবাদ আলীর শেকড় প্রযুক্তি কৃষিবিদ ইবাদ আলীর মতে, শেকড়ের গঠন ও বিন্যাস অনুযায়ী মাটি, পানি, বায়ু, আলো এবং খাবার (সার)-এর সঠিক ব্যবহারের নামই হলো শেকড় প্রযুক্তি। গাছ মাটির অগভীর অঞ্চল হতে খাবার গ্রহণ করে। গাছ সাধারণত শেয়ার সিমস্টেম বা সমবায় পদ্ধতিতে খাবার গ্রহণ করে। কিছু গাছের শেকড় মাটির অগভীর অঞ্চল হতে মূল রোমের মাধ্যমে খাবার সংগ্রহ করে। সাধারণত মূল রোমের সংখ্যা উৎপাদনের সমানুপাতিক। অর্থাৎ মূল রোমের সংখ্যা যত বেশি হবে ফসল উৎপাদন তত বেড়ে যাবে। মূল রোমের সংখ্যা বৃদ্ধি করার উপায় হলো গাছের চারপাশের জায়গা বাড়ানো এবং পরিমিত খাবার, পানি সরবরাহ। শেকড় প্রযুক্তির মূল কথা হলো- সবজি বীজ বা চারা বেডে বুনতে হবে। ফলের চারা চ্যানেল সিস্টেমে রোপন করতে হবে। ড্রামে বা টবে রোপন করা যাবে না। সবজির জন্য মাটির গভীরতা ৪ ইঞ্চি হতে হবে (৬ ফুট বাই ৩ ফুট মাটির গভীরতা ৪ ইঞ্চি) ও ফলের জন্য মাটির গভীরতা ১০ ইঞ্চি। ফলের টবের ব্যাস কমপক্ষে ৩ ফুট। ফর্মুলা অনুযায়ী মাটিতে সব প্রকার খাদ্যপ্রাণ মেশাতে হবে। পরিমিত সেচ নিয়মিত দিতে হবে। ফলের গাছে চ্যানেল আকারে রোপন করতে হবে। যে গাছের শেকড়ের জন্য যতটুকু মাটি প্রয়োজন সেই পরিমাণ মাটি ব্যবহার করতে হবে। একটুও কম বা বেশি নয়। এই পদ্ধতিতে প্রতি বর্গফুট জায়গায় ১২ কেজি মাটি লাগে। ১৮ বর্গফুটের বেডে ৩ দশমিক ৫ বস্তা মাটি লাগে। যার ওজন ১৫৪ কেজি। একটি সাধারণ ড্রামের মাটির সমান। একই মাটি ব্যবহার করে ছাদে ১০গুণ বেশি ফসল ফলানো সম্ভব। বেডগুলো সুন্দর করে সাজাতে পারলেই ছাদের সৌন্দর্যও বেড়ে যায়। হাঁটার জন্য অনেক ফাঁকা জায়গা থাকে। পুষ্টির প্রায় ৯৫% আসে সবজি ও মসলা থেকে। যা ড্রামে বা টবে সম্ভব নয়। ড্রাম বা টব পদ্ধতিতে খরচ বেশি। সেই অনুযায়ী উৎপাদন কম। শেকড় প্রযুক্তিতে ফল বা সবজি রোপন করলে ফলন দ্বিগুণ হয়।
ইবাদ আলী বলেন, ‘গতানুগতিক ছাদ কৃষিতে লাভ কম, খরচ বেশি। আমার উদ্ভাবিত শেকড় প্রযুক্তিতে সাশ্রয়ী খরচে কম জায়গায় বেশি উৎপাদন হচ্ছে। পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিক্রি করছি। শেকড় প্রযুক্তির ছাদ কৃষিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও চাষ করা সম্ভব। শুধু ছাদ নয়, জলাবদ্ধতার কারণে যেসব এলাকায় চাষ হয় না। সেখানেও শেকড় প্রযুক্তিতে চাষবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলে পানিতে ভাসমান সেড করেও এই পদ্ধতিতে বিপুল পরিমাণ সবজি উৎপাদন সম্ভব। আমার এই প্রযুক্তি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেলে ছড়িয়ে দিতে পারবো।’
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ইবাদ আলী শেকড় প্রযুক্তিতে পরিকল্পিতভাবে বাড়ির ছাদে সবজি চাষ করেছেন। তার নতুন চাষ প্রযুক্তির মধ্যদিয়ে কৃষিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে। শেকড় প্রযুক্তির ওপর তিনি একটি বইও লিখেছেন। যারা শেকড় পদ্ধতিতে ছাদ কৃষি করতে চান, তারা বই পড়ে উপকৃত হবেন। তার চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে ছাদ কৃষি করলে বাড়ির পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকবে। একই সঙ্গে নিরাপদ, মান সম্মত পুষ্টিকর সবজির জোগানও মিলবে। পরিবারের সবজি ও মসলার চাহিদা পূরণ হবে। এই প্রযুক্তি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে সবাই উপকৃত হবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
শেকড় প্রযুক্তিতে সমপরিমাণ মাটিতে দশগুণ সবজি চাষে বাজিমাত
ইবাদ আলীর ছাদ গবেষাণাগার -সংবাদ
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
কৃষিবিদ ইবাদ আলীর বাড়ির ছাদ যেন ‘ছাদবাগানের গবেষণাগার’। এ গবেষণাগার থেকেই তিনি উদ্ভাবন করেছেন ‘শেকড় প্রযুক্তি’। ইবাদ আলীর এ শেকড় প্রযুক্তিই এখন ছাদবাগানের ধারণাকে বদলে দিচ্ছে। অল্প জায়গায় অল্প মাটিতে অনেক ফসল চাষের এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে। চার বছর ধরে গবেষণা করে এ প্রযুক্তিকে বাস্তবায়ন করছেন তিনি। এতে সাধারণ ছাদবাগানের সমপরিমাণ মাটিতে দশগুণ সবজি চাষ সম্ভব হচ্ছে। শুধু ছাদ নয়; এ শেকড় প্রযুক্তিতে ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলেও বিপুল সবজি উৎপাদন সম্ভব বলে দাবি করেন কৃষিবিদ ইবাদ আলী। যশোরের কৃষি বিভাগও ইবাদ আলীর ছাদকৃষিতে মুগ্ধ। তার এ শেকড় প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে পারলে ছাদকৃষিতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে বলে উল্লেখ করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন।
যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষিবিদ ইবাদ আলী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খাদ্য প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। স্থানীয় সরকার বিভাগে চাকরি করলেও কৃষি, উদ্ভাবন, গবেষণাই তার ধ্যান-জ্ঞান। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কৃষি নিয়ে গবেষণা করছেন।
কৃষিবিদ ইবাদ আলী জানান, অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাড়ির ছাদে চাষাবাদ। কিন্তু এ চাষাবাদের জন্য তিনি উদ্ভাবন করেছেন শেকড় প্রযুক্তি। প্রায় চার বছরের গবেষণায় শেকড় প্রযুক্তিতে ছাদে সবজি চাষে সফল হয়েছেন তিনি। এতে কম মাটির ব্যবহারে ছাদ কৃষিতে অধিক ফলনে লাভবান হয়েছেন। নিজের উদ্ভাবিত শেকড় প্রযুক্তিতে ২২ প্রকারের সবজি ও ফল চাষ করছেন। উৎপাদিত সবজি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করছেন। শেকড় প্রযুক্তির মাধ্যমে ছাদে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদও লাভজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যশোর-নড়াইল মহাসড়কের হামিদপুর বাজারের চাঁদপাড়া সড়কের পূর্বপাশে কয়েকশ’ গজ ভিতরে গেলেই ইবাদ আলীর বাড়ি। দুই তলা বাড়ির নিচ তলায় শিশুদের স্কুল। দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। এ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন ছাদ কৃষির গবেষণাগার। গতানুগতিক ছাদ কৃষি থেকে বেরিয়ে অল্প জায়গায় বেশি চাষের লক্ষ্যে ২০২২ সালে শেকড় প্রযুক্তিতে চাষাবাদ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে শেকড় প্রযুক্তিতে ২২ প্রকার সবজি ও ফল চাষ করছেন। বর্তমানে তার ছাদে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, বরবটি, পেঁয়াজ, রসুন, আমড়া, শিম, লেবু, ড্রাগন, কাঁচামরিচ রয়েছে। শেকড় প্রযুক্তিতে অল্প মাটি ব্যবহার করে বেশি বেড তৈরি করেছেন। সেই বেডে সবজিও বেশি রোপন করা হয়েছে। তার পুরো ছাদ সবজি খেতের মতো সুবজে ভরে গেছে। সাশ্রয়ী খরচে ফসল উৎপাদনও বেড়েছে। পরিবারের সবজি ও মসলার চাহিদা পূরণ করে বিক্রিও করছেন।
কৃষিবিদ ইবাদ আলীর শেকড় প্রযুক্তি কৃষিবিদ ইবাদ আলীর মতে, শেকড়ের গঠন ও বিন্যাস অনুযায়ী মাটি, পানি, বায়ু, আলো এবং খাবার (সার)-এর সঠিক ব্যবহারের নামই হলো শেকড় প্রযুক্তি। গাছ মাটির অগভীর অঞ্চল হতে খাবার গ্রহণ করে। গাছ সাধারণত শেয়ার সিমস্টেম বা সমবায় পদ্ধতিতে খাবার গ্রহণ করে। কিছু গাছের শেকড় মাটির অগভীর অঞ্চল হতে মূল রোমের মাধ্যমে খাবার সংগ্রহ করে। সাধারণত মূল রোমের সংখ্যা উৎপাদনের সমানুপাতিক। অর্থাৎ মূল রোমের সংখ্যা যত বেশি হবে ফসল উৎপাদন তত বেড়ে যাবে। মূল রোমের সংখ্যা বৃদ্ধি করার উপায় হলো গাছের চারপাশের জায়গা বাড়ানো এবং পরিমিত খাবার, পানি সরবরাহ। শেকড় প্রযুক্তির মূল কথা হলো- সবজি বীজ বা চারা বেডে বুনতে হবে। ফলের চারা চ্যানেল সিস্টেমে রোপন করতে হবে। ড্রামে বা টবে রোপন করা যাবে না। সবজির জন্য মাটির গভীরতা ৪ ইঞ্চি হতে হবে (৬ ফুট বাই ৩ ফুট মাটির গভীরতা ৪ ইঞ্চি) ও ফলের জন্য মাটির গভীরতা ১০ ইঞ্চি। ফলের টবের ব্যাস কমপক্ষে ৩ ফুট। ফর্মুলা অনুযায়ী মাটিতে সব প্রকার খাদ্যপ্রাণ মেশাতে হবে। পরিমিত সেচ নিয়মিত দিতে হবে। ফলের গাছে চ্যানেল আকারে রোপন করতে হবে। যে গাছের শেকড়ের জন্য যতটুকু মাটি প্রয়োজন সেই পরিমাণ মাটি ব্যবহার করতে হবে। একটুও কম বা বেশি নয়। এই পদ্ধতিতে প্রতি বর্গফুট জায়গায় ১২ কেজি মাটি লাগে। ১৮ বর্গফুটের বেডে ৩ দশমিক ৫ বস্তা মাটি লাগে। যার ওজন ১৫৪ কেজি। একটি সাধারণ ড্রামের মাটির সমান। একই মাটি ব্যবহার করে ছাদে ১০গুণ বেশি ফসল ফলানো সম্ভব। বেডগুলো সুন্দর করে সাজাতে পারলেই ছাদের সৌন্দর্যও বেড়ে যায়। হাঁটার জন্য অনেক ফাঁকা জায়গা থাকে। পুষ্টির প্রায় ৯৫% আসে সবজি ও মসলা থেকে। যা ড্রামে বা টবে সম্ভব নয়। ড্রাম বা টব পদ্ধতিতে খরচ বেশি। সেই অনুযায়ী উৎপাদন কম। শেকড় প্রযুক্তিতে ফল বা সবজি রোপন করলে ফলন দ্বিগুণ হয়।
ইবাদ আলী বলেন, ‘গতানুগতিক ছাদ কৃষিতে লাভ কম, খরচ বেশি। আমার উদ্ভাবিত শেকড় প্রযুক্তিতে সাশ্রয়ী খরচে কম জায়গায় বেশি উৎপাদন হচ্ছে। পরিবারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিক্রি করছি। শেকড় প্রযুক্তির ছাদ কৃষিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতেও চাষ করা সম্ভব। শুধু ছাদ নয়, জলাবদ্ধতার কারণে যেসব এলাকায় চাষ হয় না। সেখানেও শেকড় প্রযুক্তিতে চাষবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলে পানিতে ভাসমান সেড করেও এই পদ্ধতিতে বিপুল পরিমাণ সবজি উৎপাদন সম্ভব। আমার এই প্রযুক্তি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেলে ছড়িয়ে দিতে পারবো।’
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ইবাদ আলী শেকড় প্রযুক্তিতে পরিকল্পিতভাবে বাড়ির ছাদে সবজি চাষ করেছেন। তার নতুন চাষ প্রযুক্তির মধ্যদিয়ে কৃষিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে। শেকড় প্রযুক্তির ওপর তিনি একটি বইও লিখেছেন। যারা শেকড় পদ্ধতিতে ছাদ কৃষি করতে চান, তারা বই পড়ে উপকৃত হবেন। তার চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে ছাদ কৃষি করলে বাড়ির পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকবে। একই সঙ্গে নিরাপদ, মান সম্মত পুষ্টিকর সবজির জোগানও মিলবে। পরিবারের সবজি ও মসলার চাহিদা পূরণ হবে। এই প্রযুক্তি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে সবাই উপকৃত হবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে।