ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দেশে গত দুই দশকে পাঁচ কোটিরও বেশি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা প্রতি বছর প্রায় ৯৪ হাজার শিশুর মৃত্যু প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। সেই সাথে ইপিআই কর্মসূচির মাধ্যমে পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুহার ৮১.৫ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে। যা শুধু বাংলাদেশ, নেপাল, রুয়ান্ডা, ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া ও মালাউই- মোট ছয়টি দেশে অর্জিত হয়েছে।
গত দুই দশকে পাঁচ কোটিরও বেশি শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে
প্রতি বছর প্রায় ৯৪ হাজার শিশুর মৃত্যু প্রতিরোধ করছে টিকা
টিকা কার্যক্রমে কমেছে ধনুষ্টংকারে মাতৃমৃত্যু
৯ মাস-১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টাইফয়েড টিকা দিচ্ছে ইপিআই
দেশে রোগ প্রতিরোধে সরকারী উদ্যোগে ১৯৭৯ সাল থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়, যা পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে ইপিআই কার্যক্রমে সম্প্রসারিত হয়। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ পোলিও নির্মূল, মা ও নবজাতকের ধনুষ্টঙ্কার নির্মূল এবং হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। কিশোরীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশ এইচডিভি টিকা কভারেজ অর্জিত হয়েছে, যা সার্ভিকাল ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি নির্দেশ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে ইপিআই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ শুরু করছে রোববার থেকে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় মাদ্রাসা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত সব ছাত্র-ছাত্রী (প্লে/নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন থেকে ৯ম শ্রেণি/সমমান শ্রেণি পর্যন্ত) এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা কমিউনিটির ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুকেও টিসিভি টিকা দেওয়া হবে।
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত নতুন টিকা টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন দেশব্যাপী পরিচালিত হবে এবং ২০২৬ সালে আরও নতুন টিকা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ
দেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য যেমন রয়েছে, তেমনি এখন পর্যন্ত বিদ্যমান কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একদিকে ইপিআই যেমন জীবনরক্ষাকারী টিকা পৌঁছে দিয়ে শিশুস্বাস্থ্যের চিত্র পরিবর্তন করেছে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে টিকাদানের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে। তেমনি অপরদিকে জনবল সংকটের মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
এরই মধ্যে শুরু হচ্ছে এই টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন। ইউনিসেফের সহায়তায় ইপিআই ৬১টি জেলায় এবং ইপিআই সদর দপ্তরসহ মোট ১২০টি উদ্ভাবনী ওয়াক-ইন কুলার রুম স্থাপন করেছে।
কিন্তু এখানে জনবল সংকটটা একেবারেই দৃশ্যমান। টিকাদান প্রকল্পে বরাদ্দকৃত জনবলের প্রায় ৪০ শতাংশ পদ এখনও শূন্য, যার মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ইপিআই টেকনিশিয়ান/পর্যবেক্ষকসহ ইপিআই সদর দপ্তরের ৪৩ শতাংশ পদও শূন্য। ৪০ জেলায় টিকাদান কর্মী নিয়োগ এখনও সম্পন্ন হয়নি। জেলা পর্যায়ে কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ানের পদে শূন্যতার হার ৫৩ শতাংশ।
বাজেট বরাদ্দে দেরি এবং ৫ম এইচপিএনএসপি অনুমোদনের দেরির কারণে টিকা কেনা, পরিবহন ও বিতরণে বাধা সৃষ্টি করছে, যার ফলে জেলা পর্যায়ে টিকার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থার ভিত্তিতে টিকাদান কেন্দ্র ও কর্মীদের সুষ্ঠু বণ্টন না থাকায় দুর্গম ও উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত টিকাদান কেন্দ্র ও কর্মীর অভাব রয়েছে।
নগর এলাকায় কার্যকর টিকাদান কৌশল ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সেখানে কর্মসূচির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া জনসংখ্যা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ না হওয়ায় টিকাদানের লক্ষ্য নির্ধারণে অসামঞ্জস্যতা তৈরি হচ্ছে এবং টিকা বরাদ্দে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যক্ষ তদারকির অভাবে টিকার অপচয়, টিকা না পাওয়া শিশু এবং ঝরে পড়া শিশুর সংখ্যা বাড়ছে।
গ্রামাঞ্চলে টিকাদানকারী ও জনগণের মধ্যে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ সীমিত, আর শহরাঞ্চলে এ ধরনের যোগাযোগ কার্যত নেই-ই।
## করণীয় কী
টিসিভি ক্যাম্পেইনকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের হেলথ ম্যানেজার ডা. রিয়াদ মাহমুদ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ (হেলথ) ডা. চন্দ্র শেখর সোলোমন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনায় ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন ইপিআই কার্যক্রম অনেক সফলভাবে এগিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় টাইফয়েডের যে টিকা দেওয়া শুরু হতে যাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে আছে। এর আগে সাতটি দেশ এই টিকায় সফল হয়েছে।
টিসিভি টিকা কার্যক্রমকে সামনে রেখে সংকট উত্তরণে করণীয়সমূহ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেগুলো হলো- জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে সরকারের উচিত অবিলম্বে শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নিজস্ব টিকাদান কর্মী নিয়োগ করা, এবং বাজেট বরাদ্দ ও বিতরণ দ্রুত নিশ্চিত করা। ভ্যাকসিন সরবরাহ ও সরকারি বাজেটের আওতায় কোল্ড চেইন রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা (যা বর্তমানে ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে) নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণা চালানো এবং দুর্গম এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম জোরদারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া ইপিআই/এমআইএস/ডিজিএইচএস- এর উচিত বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে ইউনিসেফ-সহায়তাপ্রাপ্ত সকল ডিজিটাল উদ্ভাবন যেমন- ই-ট্র্যাকার, ভ্যাক্সইপিআই, ই-ভিএল এমআইএস এবং জিআইএসভিত্তিক অনলাইন মাইক্রোপ্ল্যানিং সিস্টেম সম্প্রসারণ ও টেকসইভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং কার্যক্রম নিশ্চিত করা হলে ইপিআই কর্মসূচি আরও কার্যকর ও স্থায়ী হবে। এছাড়া সরকারি, বেসরকারি সংস্থা, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে (বিশেষ করে শহরের টিকাদান কর্মসূচীতে) কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিতে হবে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
দেশে গত দুই দশকে পাঁচ কোটিরও বেশি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা প্রতি বছর প্রায় ৯৪ হাজার শিশুর মৃত্যু প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। সেই সাথে ইপিআই কর্মসূচির মাধ্যমে পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুহার ৮১.৫ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে। যা শুধু বাংলাদেশ, নেপাল, রুয়ান্ডা, ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া ও মালাউই- মোট ছয়টি দেশে অর্জিত হয়েছে।
গত দুই দশকে পাঁচ কোটিরও বেশি শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে
প্রতি বছর প্রায় ৯৪ হাজার শিশুর মৃত্যু প্রতিরোধ করছে টিকা
টিকা কার্যক্রমে কমেছে ধনুষ্টংকারে মাতৃমৃত্যু
৯ মাস-১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের টাইফয়েড টিকা দিচ্ছে ইপিআই
দেশে রোগ প্রতিরোধে সরকারী উদ্যোগে ১৯৭৯ সাল থেকে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়, যা পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে ইপিআই কার্যক্রমে সম্প্রসারিত হয়। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ পোলিও নির্মূল, মা ও নবজাতকের ধনুষ্টঙ্কার নির্মূল এবং হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। কিশোরীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশ এইচডিভি টিকা কভারেজ অর্জিত হয়েছে, যা সার্ভিকাল ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি নির্দেশ করছে।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে ইপিআই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫’ শুরু করছে রোববার থেকে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় মাদ্রাসা, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত সব ছাত্র-ছাত্রী (প্লে/নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন থেকে ৯ম শ্রেণি/সমমান শ্রেণি পর্যন্ত) এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা কমিউনিটির ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুকেও টিসিভি টিকা দেওয়া হবে।
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত নতুন টিকা টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন দেশব্যাপী পরিচালিত হবে এবং ২০২৬ সালে আরও নতুন টিকা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ
দেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য যেমন রয়েছে, তেমনি এখন পর্যন্ত বিদ্যমান কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একদিকে ইপিআই যেমন জীবনরক্ষাকারী টিকা পৌঁছে দিয়ে শিশুস্বাস্থ্যের চিত্র পরিবর্তন করেছে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে টিকাদানের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করছে। তেমনি অপরদিকে জনবল সংকটের মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
এরই মধ্যে শুরু হচ্ছে এই টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন। ইউনিসেফের সহায়তায় ইপিআই ৬১টি জেলায় এবং ইপিআই সদর দপ্তরসহ মোট ১২০টি উদ্ভাবনী ওয়াক-ইন কুলার রুম স্থাপন করেছে।
কিন্তু এখানে জনবল সংকটটা একেবারেই দৃশ্যমান। টিকাদান প্রকল্পে বরাদ্দকৃত জনবলের প্রায় ৪০ শতাংশ পদ এখনও শূন্য, যার মধ্যে স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ইপিআই টেকনিশিয়ান/পর্যবেক্ষকসহ ইপিআই সদর দপ্তরের ৪৩ শতাংশ পদও শূন্য। ৪০ জেলায় টিকাদান কর্মী নিয়োগ এখনও সম্পন্ন হয়নি। জেলা পর্যায়ে কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ানের পদে শূন্যতার হার ৫৩ শতাংশ।
বাজেট বরাদ্দে দেরি এবং ৫ম এইচপিএনএসপি অনুমোদনের দেরির কারণে টিকা কেনা, পরিবহন ও বিতরণে বাধা সৃষ্টি করছে, যার ফলে জেলা পর্যায়ে টিকার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থার ভিত্তিতে টিকাদান কেন্দ্র ও কর্মীদের সুষ্ঠু বণ্টন না থাকায় দুর্গম ও উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত টিকাদান কেন্দ্র ও কর্মীর অভাব রয়েছে।
নগর এলাকায় কার্যকর টিকাদান কৌশল ও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সেখানে কর্মসূচির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া জনসংখ্যা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ না হওয়ায় টিকাদানের লক্ষ্য নির্ধারণে অসামঞ্জস্যতা তৈরি হচ্ছে এবং টিকা বরাদ্দে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যক্ষ তদারকির অভাবে টিকার অপচয়, টিকা না পাওয়া শিশু এবং ঝরে পড়া শিশুর সংখ্যা বাড়ছে।
গ্রামাঞ্চলে টিকাদানকারী ও জনগণের মধ্যে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ সীমিত, আর শহরাঞ্চলে এ ধরনের যোগাযোগ কার্যত নেই-ই।
## করণীয় কী
টিসিভি ক্যাম্পেইনকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের হেলথ ম্যানেজার ডা. রিয়াদ মাহমুদ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ (হেলথ) ডা. চন্দ্র শেখর সোলোমন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনায় ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন ইপিআই কার্যক্রম অনেক সফলভাবে এগিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় টাইফয়েডের যে টিকা দেওয়া শুরু হতে যাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে আছে। এর আগে সাতটি দেশ এই টিকায় সফল হয়েছে।
টিসিভি টিকা কার্যক্রমকে সামনে রেখে সংকট উত্তরণে করণীয়সমূহ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেগুলো হলো- জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে টিকাদান কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে সরকারের উচিত অবিলম্বে শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন করা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নিজস্ব টিকাদান কর্মী নিয়োগ করা, এবং বাজেট বরাদ্দ ও বিতরণ দ্রুত নিশ্চিত করা। ভ্যাকসিন সরবরাহ ও সরকারি বাজেটের আওতায় কোল্ড চেইন রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা (যা বর্তমানে ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে) নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণা চালানো এবং দুর্গম এলাকায় টিকাদান কার্যক্রম জোরদারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এছাড়া ইপিআই/এমআইএস/ডিজিএইচএস- এর উচিত বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে ইউনিসেফ-সহায়তাপ্রাপ্ত সকল ডিজিটাল উদ্ভাবন যেমন- ই-ট্র্যাকার, ভ্যাক্সইপিআই, ই-ভিএল এমআইএস এবং জিআইএসভিত্তিক অনলাইন মাইক্রোপ্ল্যানিং সিস্টেম সম্প্রসারণ ও টেকসইভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং কার্যক্রম নিশ্চিত করা হলে ইপিআই কর্মসূচি আরও কার্যকর ও স্থায়ী হবে। এছাড়া সরকারি, বেসরকারি সংস্থা, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে (বিশেষ করে শহরের টিকাদান কর্মসূচীতে) কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নিতে হবে।