চারুকলার বকুলতলায় প্রতি বছর সমবেত সংগীত ও নাচ-গানে শরৎ উৎসব পালন করা হয়। কিন্তু ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ট্যাগ দেয়ায় এ বছর তা আর হচ্ছে না -সংবাদ
ফ্যাসিবাদের দোসর দাবি করে ‘অনেকের কাছ থেকে আপত্তি আসার’ অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজনের অনুমতি বাতিল করে দিয়েছে চারুকলা অনুষদ। শুক্রবার,(১০ অক্টোবর ২০২৫) সকালে বিগত বছরের মতো এবারও সেখানে ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিল সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন । শেষ মুহূর্তে ‘গোলযোগ’ হওয়ার শঙ্কাকে কারণ দেখিয়ে চারুকলা কর্তৃপক্ষ ভেন্যু বরাদ্দ বাতিল করে ফলে সেখানে উৎসবটি করা সম্ভব হয়নি। তারা চারুকলার বকুলতলায় ১৯ বছর ধরে এই উৎসবটি করে আসছেন। ফলে এই উৎসব আয়োজনে ১৯ বছরের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়লো বলে দাবি তাদের। চারুকলা অনুষদের বাধায় বকুলতলায় শরৎ উৎসব আয়োজন সম্ভব না হলে পরে আয়োজকরা উৎসবটি একই সময়ে গেন্ডারিয়ায় কচিকাঁচার মেলার মাঠে আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে পুলিশের বাধার কারণে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়াতেও ‘শরৎ উৎসব ১৪৩২’ আয়োজন করতে পারেনি এই শিল্পী সংগঠনটি। সেখানে ‘অনুমতি না থাকার’ কথা জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়। যদিও বকুলতলায় অনুষ্ঠান করতে চারুকলা অনুষদের কাছ থেকে তাদের পূর্বানুমতি নেয়া ছিল বলে নিশ্চিত করেছে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
শরৎ উৎসব আয়োজন করতে না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে চারুকলার বকুলতলার জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি। এর জন্য ২৬ হাজার টাকা ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আমাদেরকে চারুকলা কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেখানে অনুষ্ঠানটি করা যাবে না।’ এখানে অনুষ্ঠান করলে ‘গোলযোগ’ হতে পারে, এমনটা আমাদেরকে মৌখিকভাবে জানিয়ে অনুষ্ঠান করতে মানা করেছে। কিন্তু আমাদের কাছে অনুষ্ঠান করার লিখিত অনুমতিপত্র আছে বলেও জানান তিনি।
এই উৎসবের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে মানজার চৌধুরী বলেন, ‘এটি সার্বজনীন একটি আয়োজন। এখানে দলমত নির্বিশেষে, সকল ধর্মের মানুষ অতীতেও অংশ নিয়েছেন, আগামীতেও এটি সার্বজনীন রূপেই থাকবে।’ তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা চারুকলার বকুলতলায় ১৯ বছর ধরে এই উৎসবটি করে আসছি। কোভিড মহামারি ছাড়া কোনো বছরই উৎসবটি বন্ধ হয়নি। এবার করতে পারলাম না।’
অন্যদিকে ‘অনেকের কাছ থেকে আপত্তি আসায়’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
)চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত ‘শরৎ উৎসব’ বাতিল করা হয়েছে মর্মে যে খবরটি এসেছে, তা ‘সঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম। তার দাবি উৎসবটি বাতিল নয়, স্থগিত করা হয়েছে। তার ভাষ্য, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শরৎ উৎসবের আয়োজকদের একজন ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ এমন অভিযোগের পর ‘বিশৃঙ্খলা এড়াতে’ আমরা শুক্রবারের(১০ অক্টোবর ২০২৫) জন্য যে বরাদ্দ দিয়েছিলাম, তা স্থগিত করেছি। শিক্ষার্থীদের নানা পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠান করা নিয়ে আপত্তি থাকার কারণে অনুষ্ঠানটি শুক্রবার করতে মানা করা হয়েছে বলে জানান চারুকলার এই ডিন।
‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পী সমাজ’ নামে একটি সংগঠন থেকে শরৎ উৎসব আয়োজনে আপত্তি এসেছে বলে জানান আজহারুল ইসলাম। শরৎ উৎসবের নামে ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগকে’ পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উক্ত সংগঠনের। এ ব্যাপারে আজ একটি সভা হবে বলে জানিয়েছেন চারুকলার ডিন। আজকের সভায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
গেন্ডারিয়ার কচিকাঁচার মেলার মাঠে এই উৎসব করতে না দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ওয়ারী বিভাগ) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের দাবি গেন্ডারিয়াতে শরৎ উৎসব করার ব্যাপারে কোনো পূর্ব অনুমতি নেয়া হয়নি।
তবে আজ চারুকলা অনুষদের ডাকা সভায় তারা অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী।
তবে চারুকলা অনুষদের একজন শিক্ষক বলেন, মানজার চৌধুরীকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ ট্যাগ দিয়ে কেউ কেউ অনুষ্ঠান চলাকালীন ঝামেলা করতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে চারুকলা কর্তৃপক্ষ এখানে ভেন্যু বরাদ্দ বাতিল করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফেইসবুকে একটি পোস্টার ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কয়েকজনকে দেখা যায়, তাদের মধ্যে মানজার চৌধুরীও আছেন।
চারুকলার বকুলতলায় প্রতি বছর সমবেত সংগীত ও নাচ-গানে শরৎ উৎসব পালন করা হয়। কিন্তু ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ট্যাগ দেয়ায় এ বছর তা আর হচ্ছে না -সংবাদ
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
ফ্যাসিবাদের দোসর দাবি করে ‘অনেকের কাছ থেকে আপত্তি আসার’ অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজনের অনুমতি বাতিল করে দিয়েছে চারুকলা অনুষদ। শুক্রবার,(১০ অক্টোবর ২০২৫) সকালে বিগত বছরের মতো এবারও সেখানে ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিল সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন । শেষ মুহূর্তে ‘গোলযোগ’ হওয়ার শঙ্কাকে কারণ দেখিয়ে চারুকলা কর্তৃপক্ষ ভেন্যু বরাদ্দ বাতিল করে ফলে সেখানে উৎসবটি করা সম্ভব হয়নি। তারা চারুকলার বকুলতলায় ১৯ বছর ধরে এই উৎসবটি করে আসছেন। ফলে এই উৎসব আয়োজনে ১৯ বছরের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়লো বলে দাবি তাদের। চারুকলা অনুষদের বাধায় বকুলতলায় শরৎ উৎসব আয়োজন সম্ভব না হলে পরে আয়োজকরা উৎসবটি একই সময়ে গেন্ডারিয়ায় কচিকাঁচার মেলার মাঠে আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে পুলিশের বাধার কারণে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়াতেও ‘শরৎ উৎসব ১৪৩২’ আয়োজন করতে পারেনি এই শিল্পী সংগঠনটি। সেখানে ‘অনুমতি না থাকার’ কথা জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়। যদিও বকুলতলায় অনুষ্ঠান করতে চারুকলা অনুষদের কাছ থেকে তাদের পূর্বানুমতি নেয়া ছিল বলে নিশ্চিত করেছে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।
শরৎ উৎসব আয়োজন করতে না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে চারুকলার বকুলতলার জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি। এর জন্য ২৬ হাজার টাকা ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আমাদেরকে চারুকলা কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেখানে অনুষ্ঠানটি করা যাবে না।’ এখানে অনুষ্ঠান করলে ‘গোলযোগ’ হতে পারে, এমনটা আমাদেরকে মৌখিকভাবে জানিয়ে অনুষ্ঠান করতে মানা করেছে। কিন্তু আমাদের কাছে অনুষ্ঠান করার লিখিত অনুমতিপত্র আছে বলেও জানান তিনি।
এই উৎসবের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে মানজার চৌধুরী বলেন, ‘এটি সার্বজনীন একটি আয়োজন। এখানে দলমত নির্বিশেষে, সকল ধর্মের মানুষ অতীতেও অংশ নিয়েছেন, আগামীতেও এটি সার্বজনীন রূপেই থাকবে।’ তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা চারুকলার বকুলতলায় ১৯ বছর ধরে এই উৎসবটি করে আসছি। কোভিড মহামারি ছাড়া কোনো বছরই উৎসবটি বন্ধ হয়নি। এবার করতে পারলাম না।’
অন্যদিকে ‘অনেকের কাছ থেকে আপত্তি আসায়’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
)চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত ‘শরৎ উৎসব’ বাতিল করা হয়েছে মর্মে যে খবরটি এসেছে, তা ‘সঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম। তার দাবি উৎসবটি বাতিল নয়, স্থগিত করা হয়েছে। তার ভাষ্য, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শরৎ উৎসবের আয়োজকদের একজন ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ এমন অভিযোগের পর ‘বিশৃঙ্খলা এড়াতে’ আমরা শুক্রবারের(১০ অক্টোবর ২০২৫) জন্য যে বরাদ্দ দিয়েছিলাম, তা স্থগিত করেছি। শিক্ষার্থীদের নানা পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠান করা নিয়ে আপত্তি থাকার কারণে অনুষ্ঠানটি শুক্রবার করতে মানা করা হয়েছে বলে জানান চারুকলার এই ডিন।
‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পী সমাজ’ নামে একটি সংগঠন থেকে শরৎ উৎসব আয়োজনে আপত্তি এসেছে বলে জানান আজহারুল ইসলাম। শরৎ উৎসবের নামে ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগকে’ পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উক্ত সংগঠনের। এ ব্যাপারে আজ একটি সভা হবে বলে জানিয়েছেন চারুকলার ডিন। আজকের সভায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
গেন্ডারিয়ার কচিকাঁচার মেলার মাঠে এই উৎসব করতে না দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ওয়ারী বিভাগ) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের দাবি গেন্ডারিয়াতে শরৎ উৎসব করার ব্যাপারে কোনো পূর্ব অনুমতি নেয়া হয়নি।
তবে আজ চারুকলা অনুষদের ডাকা সভায় তারা অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী।
তবে চারুকলা অনুষদের একজন শিক্ষক বলেন, মানজার চৌধুরীকে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ ট্যাগ দিয়ে কেউ কেউ অনুষ্ঠান চলাকালীন ঝামেলা করতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে চারুকলা কর্তৃপক্ষ এখানে ভেন্যু বরাদ্দ বাতিল করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফেইসবুকে একটি পোস্টার ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কয়েকজনকে দেখা যায়, তাদের মধ্যে মানজার চৌধুরীও আছেন।