ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
গ্রেড ও পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শুক্রবার, (১৭ অক্টোবর ২০২৫) থেকে ‘আমরণ অনশন’ করার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। মোর্চাভুক্ত সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় তারা আমাদের দাবি-দাওয়া পূরণে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। পে-কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছে, তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছেন বলেও জানিয়েছে।
আনিসুর রহমান বলেন, ‘প্রেসক্লাবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এর মধ্যে আমরা (প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা) যদি সেখানে অনশন কর্মসূচি শুরু করি, সেখানে বড় ঝামেলা সৃষ্টি হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। সার্বিক বিবেচনায় ঐক্য পরিষদের নেতারা অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন ও প্রধান শিক্ষকের শতভাগ পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি দেয়ার দাবিতে শুক্রবার, (১৭ অক্টোবর ২০২৫) থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে সভা শেষে সন্ধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান সাংবাদিকের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবি করছেন, আমরা একমত, আমরা মনে করি তাদের এ দাবি যৌক্তিক। ‘আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় এ দাবির বিষয়ে পে-কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছেন, তাদের কাছে লিখিত আকারে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা এ বিষয়ে পে-কমিশনের সুপারিশ পেলে তা সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন; তাই আমরা পে-কমিশনের সঙ্গে শিক্ষকদের আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা করার একটা ব্যবস্থা করছি।’
দীর্ঘদিন ধরে মামলার কারণে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না তুলে ধরে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান বলেন, ‘মামলাটি কিছুদিন আগে শুনানি হয়েছে, শুনানি সরকারের পক্ষে। শিক্ষকদের পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব করেছি, যেখানে নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষকদের একটি অংশকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় ৯টি শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করি, তারা আমাদের অনুরোধ রাখবেন।’
তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ৫-১৫ মে পর্যন্ত দিনে ১ ঘণ্টা, ১৬-২০ মে পর্যন্ত ২ ঘণ্টা, ২১-২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। ২৬ মে থেকে তারা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন। পরে ২৯ মে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের বৈঠক হয়। এরপর কর্মবিরতি কর্মসূচি আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। গত ৩০ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিনভর মহাসমাবেশ করে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। পরে দুর্গাপূজার কারণে অনশন কর্মসূচি ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
গ্রেড ও পদোন্নতি নিয়ে জটিলতা নিরসনের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শুক্রবার, (১৭ অক্টোবর ২০২৫) থেকে ‘আমরণ অনশন’ করার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। মোর্চাভুক্ত সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় তারা আমাদের দাবি-দাওয়া পূরণে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। পে-কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছে, তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছেন বলেও জানিয়েছে।
আনিসুর রহমান বলেন, ‘প্রেসক্লাবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এর মধ্যে আমরা (প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা) যদি সেখানে অনশন কর্মসূচি শুরু করি, সেখানে বড় ঝামেলা সৃষ্টি হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। সার্বিক বিবেচনায় ঐক্য পরিষদের নেতারা অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসন ও প্রধান শিক্ষকের শতভাগ পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতিসহ দ্রুত পদোন্নতি দেয়ার দাবিতে শুক্রবার, (১৭ অক্টোবর ২০২৫) থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন শিক্ষকরা।
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে সভা শেষে সন্ধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান সাংবাদিকের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবি করছেন, আমরা একমত, আমরা মনে করি তাদের এ দাবি যৌক্তিক। ‘আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় এ দাবির বিষয়ে পে-কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছেন, তাদের কাছে লিখিত আকারে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা এ বিষয়ে পে-কমিশনের সুপারিশ পেলে তা সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন; তাই আমরা পে-কমিশনের সঙ্গে শিক্ষকদের আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা করার একটা ব্যবস্থা করছি।’
দীর্ঘদিন ধরে মামলার কারণে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না তুলে ধরে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান বলেন, ‘মামলাটি কিছুদিন আগে শুনানি হয়েছে, শুনানি সরকারের পক্ষে। শিক্ষকদের পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাব করেছি, যেখানে নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষকদের একটি অংশকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় ৯টি শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করি, তারা আমাদের অনুরোধ রাখবেন।’
তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ৫-১৫ মে পর্যন্ত দিনে ১ ঘণ্টা, ১৬-২০ মে পর্যন্ত ২ ঘণ্টা, ২১-২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন। ২৬ মে থেকে তারা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন। পরে ২৯ মে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের বৈঠক হয়। এরপর কর্মবিরতি কর্মসূচি আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। গত ৩০ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিনভর মহাসমাবেশ করে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। পরে দুর্গাপূজার কারণে অনশন কর্মসূচি ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন। গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।