ডিমলা (নীলফামারী) : জরাজীর্ণ সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত -সংবাদ
নীলফামারী ডিমলায় দক্ষিণ সুন্দর খাতা এলাকায় সিংগাহারা নদীর উপর ছয় ফুট প্রশস্ত ও ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল এবং অটোরিকশা-ভ্যান ছাড়া যেতে পারে না অন্য কোনো যানবাহন। সেতুর সামনে দুই পাশের রেলিং ভেঙে অকেজো হয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রিজের রডগুলি বেরিয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এটাতে উঠতে গিয়ে প্রায়ই অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে হার হামেশা। প্রায় ৩০ বছর পূর্বে নির্মাণ হওয়া এ সেতু এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আশপাশের ৪/৫ গ্রামের বসবাসকারী মানুষের। বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা সিংপাড়া এলাকার সিংগাহারা নদীর ওপর এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
জানা গেছে, ১৯৯০ হতে ১৯৯৫ সালের দিকে এলজিইডি ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উদ্যোগে অপরিকল্পিতভাবে সিঙ্গাহারা নদীসহ গেটা উপজেলার বিভিন্ন খালের ওপর পাঁচ থেকে ছয় ফুট প্রশস্ততার একাধিক সেতু নির্মিাণ করা হয়। ওইসব সেতু দিয়ে ট্রাক বা ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। দক্ষিণ সুন্দর কথা সিং পাড়া গ্রামের তপন কুমার সিং জানান, সিং পাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র আছে, কিন্তু তার বাড়ি যাওয়ার দুই থেকে তিন কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে ডিমলা সদরে যেতে হয়।
সিঙ্গাহারা নদীর ওপর যে ব্রিজ রয়েছে, সেটি খুবই সরু। ইট, বালুর ট্রাক এটাতে উঠতে পারে না। ১০০ ফুট লম্বা ব্রিজটি পাঁচ-ছয় ফুট প্রশস্ততার। এটি দিয়ে শুধু রিকশা-ভ্যান চলতে পারে। ভ্যানে করে সেতুর ওপার থেকে ইট, বালু এনে বাড়ি করতে চাইলে তাঁর যাতায়াত খরচ চারগুণ বেশি লাগবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনছের আলী বলেন, এই সেতুর ওপর দিয়ে গ্রামের মানুষজন প্রতিদিন চলাচল করে। সরু সেতুর কারণে অধিকাংশ রাস্তাই এখনও কাঁচা রয়েছে। যাতায়াতের ভালো সুবিধা না থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজির নায্য দামও পাচ্ছে না।
স্থানীয় সমেত আলী, সামসুল মিয়া জানান, একটি রিকশা সেতুতে উঠলে একজন মানুষও পাশ দিয়ে সহজে যেতে পারে না। রেলিং ভাঙা, ঝুঁকিপূর্ণ সরু এই সেতু এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই অটোরিকশা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ সুন্দরখাত গ্রামে সিঙ্গারা নদীর ওপর ৩০-৩৫ বছর আগে ছয় ফুট প্রশস্ততা ও ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এটির ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল, রিকশা ছাড়া অন্য যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা, ভাটিয়াপাড়া, বালুরডাঙ্গা, মুকুলের ডাঙ্গা বাবুরহাটসহ, অনেক গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে মধ্যে রয়েছেন। বালাপাড়া ইউনিয়নের মুকুলের ডাঙ্গার এলাকার আনারুল বলেন, শিঙ্গাহারা নদীর ওপরের সেতুটি ছয় ফুট চওড়া। এ কারণে ডিমলা সদরসহ ১০/১২ গ্রামের মানুষকে ভোগান্তির স্বীকার করছেন হচ্ছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী বলেন, এসব সরু সেতুর কারণে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, যেসব সরু সেতু রয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি ভেঙে সেখানে বড় সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরো জানান, পর্যায়ক্রমে অন্য সরু সেতুগুলোও বড় করে নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, শিঙ্গাহারা ব্রিজের বিষয়টি ইতিমধ্যে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে এটি ভেঙ্গে ফেলে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তার জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
ডিমলা (নীলফামারী) : জরাজীর্ণ সেতুতে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত -সংবাদ
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
নীলফামারী ডিমলায় দক্ষিণ সুন্দর খাতা এলাকায় সিংগাহারা নদীর উপর ছয় ফুট প্রশস্ত ও ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল এবং অটোরিকশা-ভ্যান ছাড়া যেতে পারে না অন্য কোনো যানবাহন। সেতুর সামনে দুই পাশের রেলিং ভেঙে অকেজো হয়ে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রিজের রডগুলি বেরিয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এটাতে উঠতে গিয়ে প্রায়ই অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে হার হামেশা। প্রায় ৩০ বছর পূর্বে নির্মাণ হওয়া এ সেতু এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আশপাশের ৪/৫ গ্রামের বসবাসকারী মানুষের। বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা সিংপাড়া এলাকার সিংগাহারা নদীর ওপর এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
জানা গেছে, ১৯৯০ হতে ১৯৯৫ সালের দিকে এলজিইডি ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উদ্যোগে অপরিকল্পিতভাবে সিঙ্গাহারা নদীসহ গেটা উপজেলার বিভিন্ন খালের ওপর পাঁচ থেকে ছয় ফুট প্রশস্ততার একাধিক সেতু নির্মিাণ করা হয়। ওইসব সেতু দিয়ে ট্রাক বা ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। দক্ষিণ সুন্দর কথা সিং পাড়া গ্রামের তপন কুমার সিং জানান, সিং পাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র আছে, কিন্তু তার বাড়ি যাওয়ার দুই থেকে তিন কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে ডিমলা সদরে যেতে হয়।
সিঙ্গাহারা নদীর ওপর যে ব্রিজ রয়েছে, সেটি খুবই সরু। ইট, বালুর ট্রাক এটাতে উঠতে পারে না। ১০০ ফুট লম্বা ব্রিজটি পাঁচ-ছয় ফুট প্রশস্ততার। এটি দিয়ে শুধু রিকশা-ভ্যান চলতে পারে। ভ্যানে করে সেতুর ওপার থেকে ইট, বালু এনে বাড়ি করতে চাইলে তাঁর যাতায়াত খরচ চারগুণ বেশি লাগবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনছের আলী বলেন, এই সেতুর ওপর দিয়ে গ্রামের মানুষজন প্রতিদিন চলাচল করে। সরু সেতুর কারণে অধিকাংশ রাস্তাই এখনও কাঁচা রয়েছে। যাতায়াতের ভালো সুবিধা না থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজির নায্য দামও পাচ্ছে না।
স্থানীয় সমেত আলী, সামসুল মিয়া জানান, একটি রিকশা সেতুতে উঠলে একজন মানুষও পাশ দিয়ে সহজে যেতে পারে না। রেলিং ভাঙা, ঝুঁকিপূর্ণ সরু এই সেতু এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই অটোরিকশা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ সুন্দরখাত গ্রামে সিঙ্গারা নদীর ওপর ৩০-৩৫ বছর আগে ছয় ফুট প্রশস্ততা ও ১০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এটির ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল, রিকশা ছাড়া অন্য যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা, ভাটিয়াপাড়া, বালুরডাঙ্গা, মুকুলের ডাঙ্গা বাবুরহাটসহ, অনেক গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে মধ্যে রয়েছেন। বালাপাড়া ইউনিয়নের মুকুলের ডাঙ্গার এলাকার আনারুল বলেন, শিঙ্গাহারা নদীর ওপরের সেতুটি ছয় ফুট চওড়া। এ কারণে ডিমলা সদরসহ ১০/১২ গ্রামের মানুষকে ভোগান্তির স্বীকার করছেন হচ্ছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী বলেন, এসব সরু সেতুর কারণে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, যেসব সরু সেতু রয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি ভেঙে সেখানে বড় সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরো জানান, পর্যায়ক্রমে অন্য সরু সেতুগুলোও বড় করে নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, শিঙ্গাহারা ব্রিজের বিষয়টি ইতিমধ্যে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে এটি ভেঙ্গে ফেলে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তার জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।