জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী মোছা. বিলকিস খাতুন (৩৫)। কোমর থেকে বাম পা পর্যন্ত অবশ। এই শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে সঙ্গী করেই তিনি লড়ছেন জীবনযুদ্ধে। আট বছর আগে বাবাকে হারিয়ে এখন একমাত্র আশ্রয় তার ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মা আছিয়া খাতুন।
রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের ছোট্ট একটি দোকান ‘বিলকিস টেইলার্স’। এই দোকানই ছিল তার জীবনের আশার আলো। তিন বছর আগে সাহস করে সেলাইয়ের দোকান খুলেছিলেন তিনি। স্বপ্ন ছিল, নিজের হাতে সেলাই করে সংসারের চাকা ঘুরাবেন। কিন্তু পুঁজির অভাবে সেই স্বপ্ন এখন প্রায় নিভে আসা প্রদীপের মতো।
প্রতিদিন সকালে অটোরিকশায় করে দোকানে আসেন বিলকিস। সারাদিন বসে থাকেন ফাঁকা আলমারির সামনে। গ্রাহক আসে না, তবুও হাল ছাড়েননি তিনি।
ধানগড়া ইউনিয়নের করিলাবাড়ি গ্রামের এই নারী ছোটবেলা থেকেই জীবনের সঙ্গে লড়ছেন। দরিদ্র পিতা সোলায়মান মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে সবার ছোট বিলকিস পড়ালেখা করলেও সংসারের দায়ে থেমে যায় তার শিক্ষা। পরে বিয়েও হয়, কিন্তু স্বামীর সংসারে ঠাঁই হয়নি তার। মাতৃত্বের স্বাদও পাননি।
বাবার মৃত্যুর পর ভাইবোনেরা নিজেদের সংসারে ব্যস্ত হয়ে গেলে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে একাই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বিলকিস।
তিনি বলেন, ভিক্ষা না করে নিজের পরিশ্রমে খেতে চাই। কিন্তু কাপড় কিনে কাজ শুরু করার মতো টাকা নেই। তাই দোকানে বসে থাকি, যদি কেউ আসে। বৃদ্ধা মা আছিয়া খাতুন কণ্ঠ ভার করে বলেন, ছোটবেলা থেকেই মেয়েটা পঙ্গু। কিন্তু মনটা অনেক শক্ত। নিজের মতো করে কিছু করতে চায়। যদি কেউ একটু সাহায্য করত, তাহলে মেয়েটা আবার উঠে দাঁড়াতে পারত।
স্থানীয়দের মতে, বিলকিস আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ও পরিশ্রমী এক নারী। সমাজের কোনো সামর্থ্যবান ব্যক্তি, সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যদি তার পাশে দাঁড়ায়, তাহলে হয়তো আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তিনি।
রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ বলেন, বিলকিস খাতুনের বিষয়টি আমরা জানি। তিনি প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আছেন। তবে তার ব্যবসা পুনরায় চালু করতে কিছু প্রাথমিক পুঁজি প্রয়োজন। আমরা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তার উদ্যোগ নিতে পারি। সমাজসেবা অফিস তার পাশে থাকার চেষ্টা করবে।
আশার প্রদীপ এখনও নিভে যায়নি বিলকিসের জীবনে। প্রতিদিন দোকানের দরজা খোলেন এই দৃঢ়চিত্ত নারী, হয়তো কোনো একদিন ফাঁকা আলমারিগুলো ভরে উঠবে কাপড়ের রঙে, মেশিনের শব্দে আর নতুন জীবনের স্বপ্নে।
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী মোছা. বিলকিস খাতুন (৩৫)। কোমর থেকে বাম পা পর্যন্ত অবশ। এই শারীরিক সীমাবদ্ধতাকে সঙ্গী করেই তিনি লড়ছেন জীবনযুদ্ধে। আট বছর আগে বাবাকে হারিয়ে এখন একমাত্র আশ্রয় তার ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মা আছিয়া খাতুন।
রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের ছোট্ট একটি দোকান ‘বিলকিস টেইলার্স’। এই দোকানই ছিল তার জীবনের আশার আলো। তিন বছর আগে সাহস করে সেলাইয়ের দোকান খুলেছিলেন তিনি। স্বপ্ন ছিল, নিজের হাতে সেলাই করে সংসারের চাকা ঘুরাবেন। কিন্তু পুঁজির অভাবে সেই স্বপ্ন এখন প্রায় নিভে আসা প্রদীপের মতো।
প্রতিদিন সকালে অটোরিকশায় করে দোকানে আসেন বিলকিস। সারাদিন বসে থাকেন ফাঁকা আলমারির সামনে। গ্রাহক আসে না, তবুও হাল ছাড়েননি তিনি।
ধানগড়া ইউনিয়নের করিলাবাড়ি গ্রামের এই নারী ছোটবেলা থেকেই জীবনের সঙ্গে লড়ছেন। দরিদ্র পিতা সোলায়মান মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারেননি। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে সবার ছোট বিলকিস পড়ালেখা করলেও সংসারের দায়ে থেমে যায় তার শিক্ষা। পরে বিয়েও হয়, কিন্তু স্বামীর সংসারে ঠাঁই হয়নি তার। মাতৃত্বের স্বাদও পাননি।
বাবার মৃত্যুর পর ভাইবোনেরা নিজেদের সংসারে ব্যস্ত হয়ে গেলে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে একাই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বিলকিস।
তিনি বলেন, ভিক্ষা না করে নিজের পরিশ্রমে খেতে চাই। কিন্তু কাপড় কিনে কাজ শুরু করার মতো টাকা নেই। তাই দোকানে বসে থাকি, যদি কেউ আসে। বৃদ্ধা মা আছিয়া খাতুন কণ্ঠ ভার করে বলেন, ছোটবেলা থেকেই মেয়েটা পঙ্গু। কিন্তু মনটা অনেক শক্ত। নিজের মতো করে কিছু করতে চায়। যদি কেউ একটু সাহায্য করত, তাহলে মেয়েটা আবার উঠে দাঁড়াতে পারত।
স্থানীয়দের মতে, বিলকিস আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ও পরিশ্রমী এক নারী। সমাজের কোনো সামর্থ্যবান ব্যক্তি, সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যদি তার পাশে দাঁড়ায়, তাহলে হয়তো আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তিনি।
রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ বলেন, বিলকিস খাতুনের বিষয়টি আমরা জানি। তিনি প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আছেন। তবে তার ব্যবসা পুনরায় চালু করতে কিছু প্রাথমিক পুঁজি প্রয়োজন। আমরা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তার উদ্যোগ নিতে পারি। সমাজসেবা অফিস তার পাশে থাকার চেষ্টা করবে।
আশার প্রদীপ এখনও নিভে যায়নি বিলকিসের জীবনে। প্রতিদিন দোকানের দরজা খোলেন এই দৃঢ়চিত্ত নারী, হয়তো কোনো একদিন ফাঁকা আলমারিগুলো ভরে উঠবে কাপড়ের রঙে, মেশিনের শব্দে আর নতুন জীবনের স্বপ্নে।