alt

পুঁজির অভাবে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী লালপুরের মৃৎশিল্প আশীষ কুমার সরকার সুইট,

লালপুর (নাটোর) : বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

নাটোরের লালপুরে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করছেন এক কুমোর দম্পতি -সংবাদ

কালের পরিক্রমায় এবং পুঁজির অভাবে গ্রামবাংলার অতীত ঐতিহ্য নাটোর লালপুরের মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে। কুমার সম্প্রদায়ের হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানের মাধ্যমে মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকর্মকে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প বলা হয়। আর যেখানে কুমার সম্প্রদায়ের বসবাস ও মাটির তৈজসপত্র তৈরি করে এ এলাকাকে পালপাড়া বলা হয়। মৃৎশিল্পে সব ধরনের মাটি কাজে লাগানো যায় না। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিষ্কার এটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো হয়ে থাকে। আবার এটেল মাটি হলেই যে এ মাটি দিয়ে শিল্পের কাজ করা যায় তাও না।

এতে অনেক যত্ন আর শ্রমের দরকার হয়। তাছাড়া দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। প্রয়োজন কিছু যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। কুমাররা গোলাকৃতির জিনিস বানানোর জন্য একটি ঘুরন্ত চাকা ব্যবহার করেন। একে আঞ্চলিক কথায় ‘চাক’ বলে। উপজেলার মাধবপুর, বিলমাড়ীয়া ও গৌরীপুরসহ ওয়ালিয়া পালপাড়া এলাকায় ক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকত। এখন আর ক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়ে না। দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক, স্টিল, ম্যালামাইন, চিনামাটি ও সিলভারসহ বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থের তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা ও শৌখিন জিনিসপত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধ্বংসের মুখে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।

ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে অনেকে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া এ শিল্পকে ছেড়ে ভিন্ন পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরেজমিনে ওয়ালিয়া, গৌরীপুর ও বিলমাড়ীয়াসহ লালপুর সদর ইউনিয়নের মাধবপুর পালা ঘুরে দেখা যায়, পালপাড়ায় আগের সেই জৌলুস আর নেই। ক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়েনি। কলস ও পাতিলসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবহৃত জিনিসপত্র তৈরি করা দেখা যায়নি। পাল পরিবারের মধ্যে হতাশা আর বেদনা নিয়ে চলছে তাদের জীবন। কিছু জায়গায় টয়লেটে ব্যবহার করার কাজের জন্য মাটির পাট, দই রাখার হাঁড়ি ও খেজুরের গাছে রস সংগ্রহের মাটির হাঁড়ি তৈরি করতে দেখা গেছে। পুঁজি না থাকার কারণে এবং মাটির অভাবে অনেকেই তাদের পৈত্রিক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।

উপজেলাজুড়ে ১ হাজার ৫শ’ পরিবার থাকলেও বর্তমানে ১শ’ পরিবারের কম দেখা গেছে মৃৎশিল্পীদের। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে না তারা। কেউ কোনো খোঁজ-খবর নেন না তাদের বলে জানান পাল পরিবারের লোকজন। ওয়ালিয়া পাল পাড়ার শ্রী অসিত কুমার পাল বলেন, আমরা পুঁজি ও মাটির অভাবে কলস ও পাতিল আর তৈরি করি না। টয়লেটে ব্যবহারের জন্য মাটি দিয়ে পাট তৈরি করছি। এতে আমাদের ঠিকমতো পেট চলে না। তার স্ত্রী বন্দনা কুমারী পাল বলেন, আমরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। কেউ আমাদের কোনো প্রকার খোঁজ খবর নেয় না।

বাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন সাহীন বলেন, আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে শুনে আসছি লালপুর মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। বাড়িতে মাটির তৈরি হাঁড়িতে রান্না হতো। আমি মনে করি যে, লালপুরে মৃৎশিল্পকে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রক্ষা করা উচিত। আর সর্বস্তরের মানুষের উচিত এই শিল্পের তৈরি জিনিসপত্র বেশি বেশি ব্যবহার করে তাদের সহযোগিতা করা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, অসচ্ছল কুমারদের সরকারিভাবে সহায়তা দেয়ার বিষয়ে

ছবি

মেরিন ড্রাইভ সৈকতে ২৯ ভুক্তভোগী উদ্ধার

ছবি

জুলাই শহীদের কন্যা ধর্ষণ মামলার ৩ জনের কারাদণ্ড

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারা বাতিলের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ

ছবি

চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফ্লাইওভার, ১৪০ নাট-বোল্টু চুরি

ছবি

এবার পাঁচ দাবিতে আন্দোলনে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা

ছবি

মাদারগঞ্জে এমদাদ ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে লাউ চাষে লাভবান

ছবি

দামুড়হুদায় ছাতিম ফুলের মিষ্টি সুবাসে মুগ্ধ পথচারী

ছবি

ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় সিসা দূষণ প্রতিরোধে র‌্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

আগের মতো জাতীয় ফুল শাপলা দেখা যায় না

ছবি

মানিকগঞ্জে কৃষকদের মাঝে সার বীজ বিতরণ

ছবি

চান্দিনায় খুচরা সার ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

ছবি

ধর্মপুর কলেজের অধ্যক্ষ ছামিউল চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত

পানিতে ডুবে শিশুর ও বিষপানে যুবকেরা আত্মহত্যা

ছবি

মতলবে বিএসটিআইর অভিযানে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে অর্থদণ্ড

চকরিয়ায় লোকালয়ে অবৈধ গ্যাসের গোডাউন দুর্ঘটনার আশঙ্কা, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ছবি

নবীগঞ্জে নারীর আত্মহত্যা

ছবি

নন্দীগ্রামে গো খাদ্যর তীব্র সংকট, বিপাকে খামারিরা

ছবি

সবুজের গল্পে কৃষির ইতিহাস শাহ কৃষি জাদুঘর দেশের সর্ববৃহৎ কৃষি জাদুঘর নওগাঁয়

ছবি

সৈয়দপুর লায়ন্স ক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

গাইবান্ধায় ইটভাটা মালিকদের অভিযোগ অস্বচ্ছ নীতিমালার শুরুতে নীরব, মাঝপথে অভিযান

ছবি

কেশবপুরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সরিষার বীজ সার বিতরণ

ছবি

চকরয়িায় ট্রেনে কাটা পড়ে মানসকি ভারসাম্যহীন বৃদ্ধা নারী নহিত

ছবি

সিরাজগঞ্জে বন্যা না হওয়ায় প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা

ছবি

সেন্ট মার্টিনে নৌযান চলাচলের জন্য লাগবে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন

ছবি

সৈয়দপুরে চার মাদকসেবীর কারাদণ্ড

ছবি

মোংলায় মাদক ব্যবসায়ী আকবারসহ আটক ৩

ছবি

বোয়ালখালীতে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমানা

ছবি

পীরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে ৯ রোগী শনাক্ত

ছবি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্ঠাকে ‘অপদার্থ ও অযোগ্য’ বললেন এবি পার্টির ফুয়াদ

ছবি

গৌরনদীতে অজ্ঞাতনামা মরদেহের পরিচয় মেলেনি

ছবি

আদমদীঘিতে আমন খেতে মাজরা পোকার হানা, দিশেহারা কৃষক

ছবি

কলেজের সামনে ময়লার ভাগারকে কেন্দ্র করে মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

জৈন্তাপুর সীমান্তে বিজিবির গুলিতে যুবকের মৃত্যু, আহত এক সদস্য

ছবি

ডিমলায় ভিডাব্লিউবির চাল দুর্গন্ধযুক্ত ও নিম্নমানের কারণে বিতরণ বন্ধ

ছবি

জয়পুরহাটে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি

ত্রিশালে ভয়াবহ ট্রাক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত

tab

পুঁজির অভাবে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী লালপুরের মৃৎশিল্প আশীষ কুমার সরকার সুইট,

লালপুর (নাটোর)

নাটোরের লালপুরে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করছেন এক কুমোর দম্পতি -সংবাদ

বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

কালের পরিক্রমায় এবং পুঁজির অভাবে গ্রামবাংলার অতীত ঐতিহ্য নাটোর লালপুরের মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে। কুমার সম্প্রদায়ের হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানের মাধ্যমে মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকর্মকে মাটির শিল্প বা মৃৎশিল্প বলা হয়। আর যেখানে কুমার সম্প্রদায়ের বসবাস ও মাটির তৈজসপত্র তৈরি করে এ এলাকাকে পালপাড়া বলা হয়। মৃৎশিল্পে সব ধরনের মাটি কাজে লাগানো যায় না। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিষ্কার এটেল মাটি। এ ধরনের মাটি বেশ আঠালো হয়ে থাকে। আবার এটেল মাটি হলেই যে এ মাটি দিয়ে শিল্পের কাজ করা যায় তাও না।

এতে অনেক যত্ন আর শ্রমের দরকার হয়। তাছাড়া দরকার হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞান। প্রয়োজন কিছু যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম। কুমাররা গোলাকৃতির জিনিস বানানোর জন্য একটি ঘুরন্ত চাকা ব্যবহার করেন। একে আঞ্চলিক কথায় ‘চাক’ বলে। উপজেলার মাধবপুর, বিলমাড়ীয়া ও গৌরীপুরসহ ওয়ালিয়া পালপাড়া এলাকায় ক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকত। এখন আর ক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়ে না। দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক, স্টিল, ম্যালামাইন, চিনামাটি ও সিলভারসহ বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থের তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা ও শৌখিন জিনিসপত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধ্বংসের মুখে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।

ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে অনেকে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া এ শিল্পকে ছেড়ে ভিন্ন পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরেজমিনে ওয়ালিয়া, গৌরীপুর ও বিলমাড়ীয়াসহ লালপুর সদর ইউনিয়নের মাধবপুর পালা ঘুরে দেখা যায়, পালপাড়ায় আগের সেই জৌলুস আর নেই। ক্রেতাদের আনাগোনা চোখে পড়েনি। কলস ও পাতিলসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবহৃত জিনিসপত্র তৈরি করা দেখা যায়নি। পাল পরিবারের মধ্যে হতাশা আর বেদনা নিয়ে চলছে তাদের জীবন। কিছু জায়গায় টয়লেটে ব্যবহার করার কাজের জন্য মাটির পাট, দই রাখার হাঁড়ি ও খেজুরের গাছে রস সংগ্রহের মাটির হাঁড়ি তৈরি করতে দেখা গেছে। পুঁজি না থাকার কারণে এবং মাটির অভাবে অনেকেই তাদের পৈত্রিক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।

উপজেলাজুড়ে ১ হাজার ৫শ’ পরিবার থাকলেও বর্তমানে ১শ’ পরিবারের কম দেখা গেছে মৃৎশিল্পীদের। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে না তারা। কেউ কোনো খোঁজ-খবর নেন না তাদের বলে জানান পাল পরিবারের লোকজন। ওয়ালিয়া পাল পাড়ার শ্রী অসিত কুমার পাল বলেন, আমরা পুঁজি ও মাটির অভাবে কলস ও পাতিল আর তৈরি করি না। টয়লেটে ব্যবহারের জন্য মাটি দিয়ে পাট তৈরি করছি। এতে আমাদের ঠিকমতো পেট চলে না। তার স্ত্রী বন্দনা কুমারী পাল বলেন, আমরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। কেউ আমাদের কোনো প্রকার খোঁজ খবর নেয় না।

বাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন সাহীন বলেন, আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে শুনে আসছি লালপুর মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। বাড়িতে মাটির তৈরি হাঁড়িতে রান্না হতো। আমি মনে করি যে, লালপুরে মৃৎশিল্পকে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রক্ষা করা উচিত। আর সর্বস্তরের মানুষের উচিত এই শিল্পের তৈরি জিনিসপত্র বেশি বেশি ব্যবহার করে তাদের সহযোগিতা করা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, অসচ্ছল কুমারদের সরকারিভাবে সহায়তা দেয়ার বিষয়ে

back to top