ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শহিদুল ইসলাম ও এএসআই মাহবুবের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় থানার অভ্যন্তরে বিরাজ করছে উত্তেজনা, আর স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা। ঘুষের অভিযোগে কাঠ ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী, সূত্রে জানা জায়, প্রায় তিন মাস আগে সলঙ্গা ইউনিয়নের রাণীনগর গ্রামের ভোলা নামের এক ব্যক্তি রাস্তার পাশে থাকা তিনটি গাছ স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী মঞ্জুর কাছে বিক্রি করেন। মঞ্জু ভোরবেলা গাছ কাটতে গেলে সলঙ্গা থানার এসআই শহিদুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে ৩০ মিনিট গাছকাটা স্থানে আটকে রাখেন এবং তার ব্যবহৃত ভ্যানগাড়ি করাত সাবল ও কুড়াল আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে অভিযোগ ওঠে, এসআই শহিদুল মঞ্জুর কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। আর্থিক সংকটে থাকা ওই কাঠ ব্যবসায়ী শেষ পর্যন্ত ৭ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন। টাকাটি দেওয়ার পর হাতকড়া খুলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে এখনো তার করাত ও সাবল ফেরত দেওয়া হয়নি। রাতের বেলায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে হাতকড়া ও ঘুষের অভিযোগ, অপরদিকে গত ১৭ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চৈতহাটি মৌজার পাঠানপাড়া গ্রামের আবুল কালাম ও তার বড় ভাই সাইফুল ইসলাম সরকারি রাস্তার পাশে একটি গাছ কাটছিলেন। এ সময় এএসআই মাহবুব তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আবুল কালামকে গাছ থেকে নামিয়ে ডান গালে পাঁচটি চড় মারেন এবং হাতকড়া পরিয়ে মিরাজের সিএনজির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। ভুক্তভোগী আবুল কালাম অসুস্থ্য অবস্থ্যয় অনুরোধ জানান, স্যার, আমি হার্টের রোগী, দয়া করে আর মারবেন না, থানায় নিয়ে চালান দিন। পরে এএসআই মাহবুব ও সিএনজি চালক মিরাজ তার ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে কোন উপায় না পেয়ে সাইফুল তার অটোরিকশা অন্যের কাছে জামানত রেখে টাকা জোগাড় করে দিলে তখন হাতকড়া খোলা হয় বলে অভিযোগে জানা যায়। থানায় ঘুষচক্রের অভিযোগ, সলঙ্গা থানার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওসি হুমায়ুন কবিরের প্রত্যক্ষ মদদেই সেকেন্ড অফিসার শহিদুল ইসলাম, এএসআই মাহবুব ও সিএনজি চালক মিরাজ দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ঘুষ ও চাঁদাবাজি করে আসছেন। তারা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকা আদায় করে ওসিকে ভাগ দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি স্থানীয় সুশীল সমাজের সদস্যরা জানান, ওসি হুমায়ুন কবির সলঙ্গা থানায় যোগদানের পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত কয়েক মাসে থানার বিভিন্ন এলাকায় চারটি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধ বাড়লেও পুলিশ প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,আমরা এই থানায় খুব কষ্টে আছি। ওসি স্যার কেবল সেকেন্ড অফিসার শহিদুল, এএসআই মাহবুব ও সিএনজি চালক মিরাজের কথাই শোনেন। এই তিনজনই থানা এলাকায় চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।
ওসির বিরুদ্ধে পুরনো অভিযোগ, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওসি হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে এর আগেও সিরাজগঞ্জ সদর থানায় দায়িত্বকালীন সময়ে নানা অনিয়ম ও ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরির ও তার স্বামীর রিমান্ড সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয় কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় শাস্তিমূলক বদলি হয়ে তিনি সলঙ্গা থানায় যোগ দেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও চলমান রয়েছে বলে যানা গেছে। অভিযুক্তদের বক্তব্য, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই মাহবুব বলেন,ভাই, আমি আপনাকে খুব সম্মান করি। বিষয়টি এমন নয়। আমার বিশ্বাস, আপনি আমার কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না। এরপর তিনি ফোন সংযোগ কেটে দেন। অন্যদিকে এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা পুলিশ আর সাংবাদিক ভাই ভাই আসেন, বসে একসাথে চা খাই, কথা বলি। সলঙ্গা থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, এসব বিষয় আমার জানা নেই। কেউ যদি লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি) সাইফুল ইসলাম খান বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। আপনার মাধ্যমে বিষয়গুলো জানতে পারলাম। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় প্রথমবার কল ঢুকলেও রিসিভ করেননি পরবর্তীতে তিনি ফোনটি বন্ধ করে দেন। ফলে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সুশীল সমাজের দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এ সম্পর্কে রাজশাহী বিভাগের পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকতার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সংবাদকে বলেন, অভিযুক্ত ২জন পুলিশ কর্মকতাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তারপর ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শহিদুল ইসলাম ও এএসআই মাহবুবের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় থানার অভ্যন্তরে বিরাজ করছে উত্তেজনা, আর স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা। ঘুষের অভিযোগে কাঠ ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী, সূত্রে জানা জায়, প্রায় তিন মাস আগে সলঙ্গা ইউনিয়নের রাণীনগর গ্রামের ভোলা নামের এক ব্যক্তি রাস্তার পাশে থাকা তিনটি গাছ স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী মঞ্জুর কাছে বিক্রি করেন। মঞ্জু ভোরবেলা গাছ কাটতে গেলে সলঙ্গা থানার এসআই শহিদুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে ৩০ মিনিট গাছকাটা স্থানে আটকে রাখেন এবং তার ব্যবহৃত ভ্যানগাড়ি করাত সাবল ও কুড়াল আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে অভিযোগ ওঠে, এসআই শহিদুল মঞ্জুর কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। আর্থিক সংকটে থাকা ওই কাঠ ব্যবসায়ী শেষ পর্যন্ত ৭ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন। টাকাটি দেওয়ার পর হাতকড়া খুলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে এখনো তার করাত ও সাবল ফেরত দেওয়া হয়নি। রাতের বেলায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে হাতকড়া ও ঘুষের অভিযোগ, অপরদিকে গত ১৭ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চৈতহাটি মৌজার পাঠানপাড়া গ্রামের আবুল কালাম ও তার বড় ভাই সাইফুল ইসলাম সরকারি রাস্তার পাশে একটি গাছ কাটছিলেন। এ সময় এএসআই মাহবুব তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে আবুল কালামকে গাছ থেকে নামিয়ে ডান গালে পাঁচটি চড় মারেন এবং হাতকড়া পরিয়ে মিরাজের সিএনজির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। ভুক্তভোগী আবুল কালাম অসুস্থ্য অবস্থ্যয় অনুরোধ জানান, স্যার, আমি হার্টের রোগী, দয়া করে আর মারবেন না, থানায় নিয়ে চালান দিন। পরে এএসআই মাহবুব ও সিএনজি চালক মিরাজ তার ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে কোন উপায় না পেয়ে সাইফুল তার অটোরিকশা অন্যের কাছে জামানত রেখে টাকা জোগাড় করে দিলে তখন হাতকড়া খোলা হয় বলে অভিযোগে জানা যায়। থানায় ঘুষচক্রের অভিযোগ, সলঙ্গা থানার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওসি হুমায়ুন কবিরের প্রত্যক্ষ মদদেই সেকেন্ড অফিসার শহিদুল ইসলাম, এএসআই মাহবুব ও সিএনজি চালক মিরাজ দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ঘুষ ও চাঁদাবাজি করে আসছেন। তারা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকা আদায় করে ওসিকে ভাগ দেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি স্থানীয় সুশীল সমাজের সদস্যরা জানান, ওসি হুমায়ুন কবির সলঙ্গা থানায় যোগদানের পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত কয়েক মাসে থানার বিভিন্ন এলাকায় চারটি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধ বাড়লেও পুলিশ প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,আমরা এই থানায় খুব কষ্টে আছি। ওসি স্যার কেবল সেকেন্ড অফিসার শহিদুল, এএসআই মাহবুব ও সিএনজি চালক মিরাজের কথাই শোনেন। এই তিনজনই থানা এলাকায় চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।
ওসির বিরুদ্ধে পুরনো অভিযোগ, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওসি হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে এর আগেও সিরাজগঞ্জ সদর থানায় দায়িত্বকালীন সময়ে নানা অনিয়ম ও ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরির ও তার স্বামীর রিমান্ড সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয় কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় শাস্তিমূলক বদলি হয়ে তিনি সলঙ্গা থানায় যোগ দেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও চলমান রয়েছে বলে যানা গেছে। অভিযুক্তদের বক্তব্য, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই মাহবুব বলেন,ভাই, আমি আপনাকে খুব সম্মান করি। বিষয়টি এমন নয়। আমার বিশ্বাস, আপনি আমার কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না। এরপর তিনি ফোন সংযোগ কেটে দেন। অন্যদিকে এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা পুলিশ আর সাংবাদিক ভাই ভাই আসেন, বসে একসাথে চা খাই, কথা বলি। সলঙ্গা থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, এসব বিষয় আমার জানা নেই। কেউ যদি লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি) সাইফুল ইসলাম খান বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। আপনার মাধ্যমে বিষয়গুলো জানতে পারলাম। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করব। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় প্রথমবার কল ঢুকলেও রিসিভ করেননি পরবর্তীতে তিনি ফোনটি বন্ধ করে দেন। ফলে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সুশীল সমাজের দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এ সম্পর্কে রাজশাহী বিভাগের পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকতার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সংবাদকে বলেন, অভিযুক্ত ২জন পুলিশ কর্মকতাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তারপর ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।