alt

শীতের আগমনে কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত সৈয়দপুরে গ্রামীণ নারীরা

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : শীতের আগমনে কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত গ্রামের নারীরা -সংবাদ

শীতের আগমনে কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে গ্রামাঞ্চলের নারীরা। এ কাজে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন গ্রামের বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অভাবী পরিবারের নারীরা। গ্রাম ও শহর শীতের আগমনে শুরু হয় কাঁথা সেলাইয়ের এ কাজ। তারা ঘরে বসে আয় করে নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। পরিবারের ছেলে-মেয়ের লেখাপড়াসহ স্বচ্ছলতা আনছেন সংসারে। সরজমিনে সৈয়দপুর পৌরসভা ও উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে এসব নারীরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাজ করছেন। নারীরা মাদুর পেতে পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি করছেন কাঁথা। কেউবা গাছের নিচে কিংবা বারান্দায় বসে কাঁথা সেলাই করছেন।

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়া গ্রামের আলেয়া খাতুন জানান, স্বামী মারা গেছে অনেক আগে। নাতনিকে নিয়ে বাড়িতে থাকি। শীতের সময় কাঁথা সেলাই করে আমার সংসার চলে। সাধারণ ব্যবহারি কাপড়ে এরুপ কাঁথা সেলাই করতে ৮/১০ দিন লেগে যায়। তবে আকার ভেদে কাঁথা তৈরিতে সময় কমবেশি হয়ে থাকে। একটি রেন কাঁথা তৈরিতে ৫শ থেকে ৭শ টাকা চুক্তিতে কাজ করেন তিনি। বাড়তি আয়ের জন্যই এই কাঁথা সেলাই বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর পৌরসভার কয়া গোলাহাট এলাকার গৃহবধূ সিতারা বেগম, রওশনী ও চাঁদনী বেগম বলেন, পুরনো অথবা নতুন কাপড় দিয়ে মূলত এসব কাঁথা তৈরি করা হয়। প্রথমে নতুন পুরাতন কাপড়ের কয়েকটি স্তর এক সাথে করে সেলাই করা হয়। যদি নকশী কাঁথা হয় তাহলে আগে বিভিন্ন নকশার ছক আঁকাতে হয়। আর এ ছকের ওপর বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে নকশা ফুটিয়ে সুজনি ফোঁড়, কাঁথা ফোড় ও বকুল ঝাড় কাঁথা তৈরি করা হয়। আরেক গৃহবধু নুরজাহান ও শবনম পারভীন বলেন, কাঁথা শুধু বাড়ির জন্যই তৈরি করি তা নয়। আমরা অনেকে মজুরি হিসেবেও কাঁথা সেলাই করে দিই। ৪ বাই ৬ ফুট আকারের কাঁথা ৫শ থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৮শ, ৯শ টাকা পর্যন্ত মজুরি হয়ে থাকে। অবসর সময়ে এক একটি কাঁথা তৈরিতে এক সপ্তাহ থেকে দশদিন সময় লেগে যায়। আর এ থেকে যে বাড়তি আয় হয় তা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংসারিক কাজে ব্যয় করা হয়।

সৈয়দপুর শহরের নারী উদ্যোক্তা প্রভাষক শিউলী বেগম বলেন, এক সময় গ্রামীণ ঐতিহ্য ছিল নকশি কাঁথা। গ্রামের মেয়েরা তাদের মনের মাধুরি মিশিয়ে সেলাই করতেন। যেখানে প্রতিটি ফোঁড়ে গেঁথে থাকত প্রিয়জনদের বলা না বলা কথা। সেইসব নকশী কাঁথা এখন অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে। নকশী কাঁথা না হলেও সাধারণ কাঁথা এখনো শীতের আগে শহর-গ্রামের নারীরা তৈরি করে আসছেন। তিনি বলেন, এসব কাঁথার শোরুম তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কারুকাজ করা কাঁথা বড় বড় শপিংমলে যাচ্ছে। যারা এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, নীলফামারী জেলা বিসিক কর্মকর্তা নূরেল হক বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁথা তৈরিসহ নানা কাজে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। কেউ প্রয়োজন মনে করলে সাহায্য ও সহযোগিতা নিতে পারেন। প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।

ছবি

মোড়েলগঞ্জে গরুচোর সন্দেহে হত্যা ১ আটক ৩

ছবি

চৌগাছায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তরুণের মৃত্যু

ছবি

পুঠিয়ায় আইন শৃঙ্খলা কমিটি ও মাসিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

সিলেটে চলছে অভিযান : দুই দিনে আটক ২২২ যানবাহন, মামলা ৯৪

ছবি

সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ

নেশার করাল গ্রাস: নাতির হাতে শতবর্ষী দাদি খুন

ছবি

গৌরীপুরে মিঠুহত্যার দায়ে সহোদর দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

ছবি

বিরল রোগ সিফাতের মাথাজুড়ে বেঁধেছে বাসা ধীরে ধীরে গ্রাস করছে ভয়ানক রোগটি

ছবি

সিংগাইরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পরিচালনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত

ছবি

কোম্পানীগঞ্জে নদী থেকে বালু উত্তোলন, প্রকৌশলীসহ কারাদণ্ড ২

ছবি

সীমান্তের প্রান্তিক ও অসহায় মানুষ পেল বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ

ছবি

আনোয়ারায় স্কুলের নির্মাণ কাজ শুরু করে পালিয়ে গেল ঠিকাদার

ছবি

মহম্মদপুরে কৃষকদল নেতাদের সংবর্ধনা ও পরিচিতি সভা

ছবি

সাঘাটায় ১২ জন শহীদ স্মরণে সভা ও দোয়া মাহফিল

ছবি

পিতা যখন অভিযোগকারী, সন্তান তখন আসামি

ছবি

কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে বাগেরহাট সরকারী টেকনিক্যাল স্কুলে কাউন্সিলিং সভা

ছবি

আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ চুয়েটের এক শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি

বাগেরহাটের বাসচাপায় প্রান গেল মটরসাইকেল আরোহীর

ছবি

ডিমলায় চোরাকারবারি বন্ধে বিজিবির কার্যকরী হস্তক্ষেপ কামনা

ছবি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫

ছবি

বাংলাদেশ জলসীমায় মাছ আহরনে আসা ভারতীয় ৯ জন জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী

ছবি

ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

যমুনা রেল সেতুর নিচে পিলারে ফাটল সেতুর জন্য বিপদজনক নয়

ছবি

নন্দীগ্রামে আগাম জাতের ধান চাষে লাভবান কৃষকরা

ছবি

চেয়ারম্যানের প্রতারণার ফাঁদে গৃহবধূ, হত্যার হুমকি

ছবি

মাইয়া ডারে ওরা বাঁচতে দিলোনা

ছবি

ভূরুঙ্গামারীতে ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

কলাপাড়ায় জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা রোধে চার হাজার পরিবারকে সহায়তার উদ্যোগ

ছবি

টাঙ্গুয়ার হাওরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মা মেয়ে

ছবি

জয়পুরহাটে আলু নিয়ে মহা বিপাকে কৃষক-ব্যবসায়ী

ছবি

সাগরে যাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছেন জেলেরা

ছবি

নাসিরনগরে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সহায়ক উপকরন বিতরণ

ছবি

ফুলবাড়ীতে আমন ধানের সস্তা কাঁচা খড়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে গবাদিপশু

ছবি

সীমান্তবাসীর অর্থনৈতিক সংকট দূর করবে পাঁচবিবির এই সেতু

ছবি

মধুপুরে শিক্ষার্থী কমছে সরকারি প্রাথমিকে, বাড়ছে কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসার

ছবি

ইলিশ মাছ কেনার দায়ে চার ক্রেতাকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত

tab

শীতের আগমনে কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত সৈয়দপুরে গ্রামীণ নারীরা

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : শীতের আগমনে কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত গ্রামের নারীরা -সংবাদ

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

শীতের আগমনে কাঁথা সেলাইয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে গ্রামাঞ্চলের নারীরা। এ কাজে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন গ্রামের বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অভাবী পরিবারের নারীরা। গ্রাম ও শহর শীতের আগমনে শুরু হয় কাঁথা সেলাইয়ের এ কাজ। তারা ঘরে বসে আয় করে নারীরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। পরিবারের ছেলে-মেয়ের লেখাপড়াসহ স্বচ্ছলতা আনছেন সংসারে। সরজমিনে সৈয়দপুর পৌরসভা ও উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে এসব নারীরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাজ করছেন। নারীরা মাদুর পেতে পুরনো কাপড় দিয়ে তৈরি করছেন কাঁথা। কেউবা গাছের নিচে কিংবা বারান্দায় বসে কাঁথা সেলাই করছেন।

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দলুয়া গ্রামের আলেয়া খাতুন জানান, স্বামী মারা গেছে অনেক আগে। নাতনিকে নিয়ে বাড়িতে থাকি। শীতের সময় কাঁথা সেলাই করে আমার সংসার চলে। সাধারণ ব্যবহারি কাপড়ে এরুপ কাঁথা সেলাই করতে ৮/১০ দিন লেগে যায়। তবে আকার ভেদে কাঁথা তৈরিতে সময় কমবেশি হয়ে থাকে। একটি রেন কাঁথা তৈরিতে ৫শ থেকে ৭শ টাকা চুক্তিতে কাজ করেন তিনি। বাড়তি আয়ের জন্যই এই কাঁথা সেলাই বলে জানান তিনি।

সৈয়দপুর পৌরসভার কয়া গোলাহাট এলাকার গৃহবধূ সিতারা বেগম, রওশনী ও চাঁদনী বেগম বলেন, পুরনো অথবা নতুন কাপড় দিয়ে মূলত এসব কাঁথা তৈরি করা হয়। প্রথমে নতুন পুরাতন কাপড়ের কয়েকটি স্তর এক সাথে করে সেলাই করা হয়। যদি নকশী কাঁথা হয় তাহলে আগে বিভিন্ন নকশার ছক আঁকাতে হয়। আর এ ছকের ওপর বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে নকশা ফুটিয়ে সুজনি ফোঁড়, কাঁথা ফোড় ও বকুল ঝাড় কাঁথা তৈরি করা হয়। আরেক গৃহবধু নুরজাহান ও শবনম পারভীন বলেন, কাঁথা শুধু বাড়ির জন্যই তৈরি করি তা নয়। আমরা অনেকে মজুরি হিসেবেও কাঁথা সেলাই করে দিই। ৪ বাই ৬ ফুট আকারের কাঁথা ৫শ থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৮শ, ৯শ টাকা পর্যন্ত মজুরি হয়ে থাকে। অবসর সময়ে এক একটি কাঁথা তৈরিতে এক সপ্তাহ থেকে দশদিন সময় লেগে যায়। আর এ থেকে যে বাড়তি আয় হয় তা ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংসারিক কাজে ব্যয় করা হয়।

সৈয়দপুর শহরের নারী উদ্যোক্তা প্রভাষক শিউলী বেগম বলেন, এক সময় গ্রামীণ ঐতিহ্য ছিল নকশি কাঁথা। গ্রামের মেয়েরা তাদের মনের মাধুরি মিশিয়ে সেলাই করতেন। যেখানে প্রতিটি ফোঁড়ে গেঁথে থাকত প্রিয়জনদের বলা না বলা কথা। সেইসব নকশী কাঁথা এখন অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে। নকশী কাঁথা না হলেও সাধারণ কাঁথা এখনো শীতের আগে শহর-গ্রামের নারীরা তৈরি করে আসছেন। তিনি বলেন, এসব কাঁথার শোরুম তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কারুকাজ করা কাঁথা বড় বড় শপিংমলে যাচ্ছে। যারা এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, নীলফামারী জেলা বিসিক কর্মকর্তা নূরেল হক বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁথা তৈরিসহ নানা কাজে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। কেউ প্রয়োজন মনে করলে সাহায্য ও সহযোগিতা নিতে পারেন। প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।

back to top