নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসা ও পথ্য সেবার মান বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সংকট কাটেনি শয্যা, চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর। সরকারি এ হাসপাতালের ওপর চিকিৎসা সেবার ভরসা সৈয়দপুরসহ আশপাশ উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ২০০ থেকে ২২০ জন পর্যন্ত। আউটডোরে চিকিৎসা নেয় দৈনিক গড়ে ৯০০ থেকে এক হাজার ২০০ জন রোগী। অবশ্য আউটডোরে মহিলা রোগীর সংখ্যা শতকরা ৯৫ জন। মিলছে রোগীদের প্রয়োজনীয় সকল ধরনের ওষুধ। এক্সরে এবং প্যাথলজি টেস্টও বিদ্যমান। তবে মাঝে মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ছেদ পড়ে বলে অভিযোগ আছে। এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হুদা।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় দায়িত্বরত কর্মচঞ্চল তরুণ আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হুদার সঙ্গে। তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালটি ভৌগলিকগত ভাবে এমন স্থানে গড়ে উঠেছে যে আশপাশের কমপক্ষে আটটি উপজেলার আংশিক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে। সেই হিসাবে বলতে গেলে ২০ লাখ সাধারণ মানুষের চিকিসার ভরসাস্থল এটি।
ওই চিকিৎসা কর্মকর্তার মতে, বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী ইনডোরে ভর্তি থাকে। সেজন্য এই হাসপাতালটিকে কমপক্ষে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার প্রস্তাবনা দেয়া আছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও চিঠি চালাচালি করছে। বর্তমান হাসপাতাল কম্পাউন্ডেই ভবন নির্মাণ করে বাড়তি রোগীর সেবা দেয়া সম্ভব। তবে চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণীর পরিচ্ছন্নকর্মীর বেশ অপ্রতুলতা রয়েছে হাসপাতালে। অবশ্য পর্যাপ্ত পরিমাণ দক্ষ নার্স রয়েছে। ডা. নাজমুল হুদার মতে ৪০টি চিকিৎসকের পদ এ হাসপাতালে। কিন্তু কর্মরত আছে মাত্র ১৮ জন। বিশেষ করে ১১ জন সিনিয়র কনসালটেন্টের মধ্যে কর্মরত মাত্র ১ জন।। আর জুনির কনসালটেন্টের ১০টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে ৫ জন। অন্যান্য আরো ৬টি পদে চিকিৎসক শূন্য। পরিচ্ছন্নকর্মীর অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্বেও হাসপাতালের পরিবেশ ঝকঝকে তকতকে রাখা সম্ভব হয় না। ১৮টি পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদে কর্মরত আছে মাত্র ৩ জন। ১৫টি পদই শূণ্য। কর্মী সংকটে থাকার পরেও সেবার মান বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষ অনড়। পূর্বের তুলনায় সেবার মান বেড়েছে। ওই কর্মকর্তার মতে শুধু ওষুধ নয়, আমরা পথ্য সরবরাহেও বাড়তি নজরদারি রেখেছি। রোগীরা যেন সময়মতো তিনবেলা খাবার পায় সেজন্য তদারকি করা হয়। আর রোগীদের দেয়া হচ্ছে ন্যূনতম হলেও মানসম্পন্ন খাবার। সময়মাফিক রোগীদের খাবারও সরবরাহ করা হয়। অন্য সময়ের চেয়ে হাল আমলে পথ্য সেবার মানও বেড়েছে।
খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা রোগীদের পথ্য নিয়ে হাসপাতালে আসতে স্থানীয় বখাটে কর্তৃক হেনস্তার শিকার হচ্ছে এমন অভিযোগ বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করা হলে আরএমও বলেন, আমার হাসপাতাল কম্পাউন্ডে এমন ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নেই। তবে বাইরে হলে এজন্য কর্তৃপক্ষ দায়ি না। অবশ্য তিনি বলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময়মতোই তাদের কর্তব্য পালন করছে। নিত্যদিন সঠিক সময়েই খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। এক্ষেত্রে কদাচিৎ সামান্য সময়ের হেরফের কোনো সময়ে হলে মানবিক কারণে তা মেনে নিতে হয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসা ও পথ্য সেবার মান বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সংকট কাটেনি শয্যা, চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর। সরকারি এ হাসপাতালের ওপর চিকিৎসা সেবার ভরসা সৈয়দপুরসহ আশপাশ উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ২০০ থেকে ২২০ জন পর্যন্ত। আউটডোরে চিকিৎসা নেয় দৈনিক গড়ে ৯০০ থেকে এক হাজার ২০০ জন রোগী। অবশ্য আউটডোরে মহিলা রোগীর সংখ্যা শতকরা ৯৫ জন। মিলছে রোগীদের প্রয়োজনীয় সকল ধরনের ওষুধ। এক্সরে এবং প্যাথলজি টেস্টও বিদ্যমান। তবে মাঝে মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ছেদ পড়ে বলে অভিযোগ আছে। এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হুদা।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় দায়িত্বরত কর্মচঞ্চল তরুণ আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হুদার সঙ্গে। তিনি এই প্রতিনিধিকে জানান, সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালটি ভৌগলিকগত ভাবে এমন স্থানে গড়ে উঠেছে যে আশপাশের কমপক্ষে আটটি উপজেলার আংশিক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে। সেই হিসাবে বলতে গেলে ২০ লাখ সাধারণ মানুষের চিকিসার ভরসাস্থল এটি।
ওই চিকিৎসা কর্মকর্তার মতে, বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী ইনডোরে ভর্তি থাকে। সেজন্য এই হাসপাতালটিকে কমপক্ষে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার প্রস্তাবনা দেয়া আছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও চিঠি চালাচালি করছে। বর্তমান হাসপাতাল কম্পাউন্ডেই ভবন নির্মাণ করে বাড়তি রোগীর সেবা দেয়া সম্ভব। তবে চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণীর পরিচ্ছন্নকর্মীর বেশ অপ্রতুলতা রয়েছে হাসপাতালে। অবশ্য পর্যাপ্ত পরিমাণ দক্ষ নার্স রয়েছে। ডা. নাজমুল হুদার মতে ৪০টি চিকিৎসকের পদ এ হাসপাতালে। কিন্তু কর্মরত আছে মাত্র ১৮ জন। বিশেষ করে ১১ জন সিনিয়র কনসালটেন্টের মধ্যে কর্মরত মাত্র ১ জন।। আর জুনির কনসালটেন্টের ১০টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছে ৫ জন। অন্যান্য আরো ৬টি পদে চিকিৎসক শূন্য। পরিচ্ছন্নকর্মীর অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্বেও হাসপাতালের পরিবেশ ঝকঝকে তকতকে রাখা সম্ভব হয় না। ১৮টি পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদে কর্মরত আছে মাত্র ৩ জন। ১৫টি পদই শূণ্য। কর্মী সংকটে থাকার পরেও সেবার মান বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষ অনড়। পূর্বের তুলনায় সেবার মান বেড়েছে। ওই কর্মকর্তার মতে শুধু ওষুধ নয়, আমরা পথ্য সরবরাহেও বাড়তি নজরদারি রেখেছি। রোগীরা যেন সময়মতো তিনবেলা খাবার পায় সেজন্য তদারকি করা হয়। আর রোগীদের দেয়া হচ্ছে ন্যূনতম হলেও মানসম্পন্ন খাবার। সময়মাফিক রোগীদের খাবারও সরবরাহ করা হয়। অন্য সময়ের চেয়ে হাল আমলে পথ্য সেবার মানও বেড়েছে।
খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা রোগীদের পথ্য নিয়ে হাসপাতালে আসতে স্থানীয় বখাটে কর্তৃক হেনস্তার শিকার হচ্ছে এমন অভিযোগ বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করা হলে আরএমও বলেন, আমার হাসপাতাল কম্পাউন্ডে এমন ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নেই। তবে বাইরে হলে এজন্য কর্তৃপক্ষ দায়ি না। অবশ্য তিনি বলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময়মতোই তাদের কর্তব্য পালন করছে। নিত্যদিন সঠিক সময়েই খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। এক্ষেত্রে কদাচিৎ সামান্য সময়ের হেরফের কোনো সময়ে হলে মানবিক কারণে তা মেনে নিতে হয়।