চকরিয়া (কক্সবাজার) : পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে আউশধান কর্তন পর্যবেক্ষন করছেন কৃষি কর্মকর্তারা -সংবাদ
প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশ অনুকূলে থাকার কারণে চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোনালী ফসল আউশধানের বাম্পার ফলন এসেছে। এখন বেসুমার মাঠজুড়ে পাকা আউশ ধানের শীষ বাতাসের সঙ্গে হেলেদুলে পড়ছে। আশাজাগানিয়া বাম্পার ফলন দেখে স্থানীয় পান্তিক কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাঁসির ঝিলিক।
সরেজমিনে উপজেলার কৈয়ারবিল ও পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে আউশধান কর্তন দেখতে গিয়ে বাম্পার ফলন নিয়ে কৃষকের অন্যরকম উচ্ছ্বাস অনুভূতি এমনটাই দেখা গেছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোনালি আউশ ধান কর্তনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ধানের ভারে নুয়ে পড়েছে শীষগুলো। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত প্রতিটি কৃষক। প্রতিটি জমিতে যেন ফুটে উঠেছে সোনালী রঙ। সোনালী রঙে রাঙ্গিয়ে তুলেছে বিলের পর বিলজুড়ে আউশধান।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৬০০ হেক্টর (চার হাজার একর) জমিতে সোনালী ফসল আউশধান চাষ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ২৫টি প্রদর্শনীর আওতায় কৃষকেরা উচ্চফলনশীন হাইব্রিড ব্রি ধান ১০৬ ও ব্রি ধান ৪৮ জাতের আউশধান চাষ করেছে।
চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতে উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে পার্টনার প্রকল্পের আউশ প্রদর্শনীর ব্রি ধান ১০৬ জাতের নমুনা শস্য কর্তনের মাধ্যমে ফলন নির্ণয় করা হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইসরাত জাহান সুইটি এবং উপসহকারী কৃষি অফিসার জনি নন্দি ও উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. রায়হান উপস্থিত থেকে নমুনা শস্য কর্তন কার্যক্রম তদারকি করেন।
একইভাবে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নে আউশ প্রদর্শনীর ব্রি ধান ৪৮ জাতের নমুনা শস্য কর্তন করা হয়। চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. মহিউদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসাররা উপস্থিত থেকে নমুনা শস্য কর্তন কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার (নিরীক্ষা) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার মধ্যে পুর্ববড় ভেওলা, সাহারবিল, কৈয়ারবিল ও বিএমচর ইউনিয়নে আউশধান আবাদ বেশী হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নে অল্প জমিতে আবাদ হয়েছে।
মাঠপর্যায়ে আউশধান কর্তন পর্যবেক্ষন করে চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইশরাত জাহান সুইটি বলেন, অনুকুল আবহাওয়া, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকির কারনে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কৃষক আহমদ হোসেন ও পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া বাজারে ধানের দামও বেশি। ভালো ফলন পেয়ে আমরা খুবই খুশি।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. মহিউদ্দিন বলেন, এ বছর হাইব্রিড জাতের আউশধান ব্রি ধান ১০৬ ও ৪৮ চাষ করে কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ২৫টি প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়। মুলত প্রদর্শনী প্লটের আওতায় চাষের শুরু থেকে ধান কর্তন পর্যন্ত কৃষকদেরকে মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত উপসহকারী কৃষি অফিসাররা পরামর্শ দিয়েছেন। ক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলের সুরক্ষায় নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। এসব কারণে এবছর আউশধান চাষে বাম্পার ফলন এসেছে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহনাজ ফেরদৌসী বলেন, আউশধান চাষের আগে কৃষকদেরকে সরকারিভাবে কৃষি ভর্তুকি, বিনামূল্য বীজ, সার ও প্রণোদনা দেওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। মুলত আউশ চাষে সেচ, সার ও শ্রম কম খরচ হয়। বাজারে ধানের দাম ভাল। এভাবে ধানের দাম থাকলে কৃষকেরা ফসল বিক্রি করে ভালো লাভবান হবেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
চকরিয়া (কক্সবাজার) : পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে আউশধান কর্তন পর্যবেক্ষন করছেন কৃষি কর্মকর্তারা -সংবাদ
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশ অনুকূলে থাকার কারণে চলতি মৌসুমে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোনালী ফসল আউশধানের বাম্পার ফলন এসেছে। এখন বেসুমার মাঠজুড়ে পাকা আউশ ধানের শীষ বাতাসের সঙ্গে হেলেদুলে পড়ছে। আশাজাগানিয়া বাম্পার ফলন দেখে স্থানীয় পান্তিক কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাঁসির ঝিলিক।
সরেজমিনে উপজেলার কৈয়ারবিল ও পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে আউশধান কর্তন দেখতে গিয়ে বাম্পার ফলন নিয়ে কৃষকের অন্যরকম উচ্ছ্বাস অনুভূতি এমনটাই দেখা গেছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোনালি আউশ ধান কর্তনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ধানের ভারে নুয়ে পড়েছে শীষগুলো। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত প্রতিটি কৃষক। প্রতিটি জমিতে যেন ফুটে উঠেছে সোনালী রঙ। সোনালী রঙে রাঙ্গিয়ে তুলেছে বিলের পর বিলজুড়ে আউশধান।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৬০০ হেক্টর (চার হাজার একর) জমিতে সোনালী ফসল আউশধান চাষ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ২৫টি প্রদর্শনীর আওতায় কৃষকেরা উচ্চফলনশীন হাইব্রিড ব্রি ধান ১০৬ ও ব্রি ধান ৪৮ জাতের আউশধান চাষ করেছে।
চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতে উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে পার্টনার প্রকল্পের আউশ প্রদর্শনীর ব্রি ধান ১০৬ জাতের নমুনা শস্য কর্তনের মাধ্যমে ফলন নির্ণয় করা হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইসরাত জাহান সুইটি এবং উপসহকারী কৃষি অফিসার জনি নন্দি ও উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. রায়হান উপস্থিত থেকে নমুনা শস্য কর্তন কার্যক্রম তদারকি করেন।
একইভাবে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নে আউশ প্রদর্শনীর ব্রি ধান ৪৮ জাতের নমুনা শস্য কর্তন করা হয়। চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. মহিউদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসাররা উপস্থিত থেকে নমুনা শস্য কর্তন কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার (নিরীক্ষা) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার মধ্যে পুর্ববড় ভেওলা, সাহারবিল, কৈয়ারবিল ও বিএমচর ইউনিয়নে আউশধান আবাদ বেশী হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নে অল্প জমিতে আবাদ হয়েছে।
মাঠপর্যায়ে আউশধান কর্তন পর্যবেক্ষন করে চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইশরাত জাহান সুইটি বলেন, অনুকুল আবহাওয়া, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকির কারনে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কৃষক আহমদ হোসেন ও পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়া বাজারে ধানের দামও বেশি। ভালো ফলন পেয়ে আমরা খুবই খুশি।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. মহিউদ্দিন বলেন, এ বছর হাইব্রিড জাতের আউশধান ব্রি ধান ১০৬ ও ৪৮ চাষ করে কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ২৫টি প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়। মুলত প্রদর্শনী প্লটের আওতায় চাষের শুরু থেকে ধান কর্তন পর্যন্ত কৃষকদেরকে মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত উপসহকারী কৃষি অফিসাররা পরামর্শ দিয়েছেন। ক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলের সুরক্ষায় নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। এসব কারণে এবছর আউশধান চাষে বাম্পার ফলন এসেছে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহনাজ ফেরদৌসী বলেন, আউশধান চাষের আগে কৃষকদেরকে সরকারিভাবে কৃষি ভর্তুকি, বিনামূল্য বীজ, সার ও প্রণোদনা দেওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। মুলত আউশ চাষে সেচ, সার ও শ্রম কম খরচ হয়। বাজারে ধানের দাম ভাল। এভাবে ধানের দাম থাকলে কৃষকেরা ফসল বিক্রি করে ভালো লাভবান হবেন।