alt

প্লাস্টিক-সিরামিকে দাপটে ধ্বংসের পথে মৃৎশিল্প

প্রতিনিধি, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : রোদে শুকানো হচ্ছে মাটির হাড়িপাতিল -সংবাদ

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের লস্করপুর গ্রামে একসময় মাটির তৈরি জিনিসপত্র ছিল স্থানীয় মানুষের প্রতিদিনের ব্যবহার্য বস্তু। গ্রামে ৩০টিরও বেশি পরিবার তাদের নিপুণ হাতে তৈরি মাটির হাঁড়ি, পাতিল, থালা, বাটিসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি ও বাজারের পরিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী পেশা ক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে।

বর্তমানে গ্রামে এই পেশা অনুসরণ করে মাত্র ৫টি পরিবার বেঁচে আছে। তাদের মধ্যে দুলাল পাল, ও তার স্ত্রী রিনা রাণী পাল এখনো প্রতিদিন নিপুণ হাতে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করছেন।

রিনা রাণী পালের হাতে তৈরি মাটির হাঁড়িপাতিল, থালা ও অন্যান্য পাত্র স্থানীয় বাজারে এখনও চাহিদা আছে।

দুলাল পাল জানান, আমাদের গ্রামে একসময় ২০-৩০টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের তৈরি মাটির হাঁড়িপাতিল, পাত্র-পাতিল রান্না ঘর ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হতো।

গ্রামের প্রতিটি ঘরে আমাদের তৈরি জিনিসপত্র দেখা যেত। সেই সময় প্রচুর চাহিদা ছিল। কিন্তু এখন প্লাস্টিক, সিরামিক ও অন্যান্য নতুন জিনিসপত্রের কারণে আমাদের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা অনেক কমে গেছে। অনেকেই এই পেশা ছেড়ে শহর বা অন্য উপজেলায় চলে গেছেন।

গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুলাল পালের বাড়ির উঠোনে সারি সারি মাটির হাঁড়িপাতিল রোদে শুকতে রাখা হয়েছে। প্রতিটি পাত্রের ওপরেই ফুটে উঠেছে কারিগরদের নিপুণ হাতের ছাপ। দুলাল পাল আরও জানান, এখনও আমাদের গ্রামে আমি সহ স্বপন পাল, মতিন্ড পাল, দিলিপ পাল, রবি পাল এই ৫টি পরিবার কিছুটা এই পেশা ধরে রেখেছে। কিন্তু জানি না, ভবিষ্যতে কতোদিন এটি টিকে থাকবে। এই পেশা হারিয়ে গেলে শুধু আমাদের জীবিকা নয়, লস্করপুরের এক সময়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও হারাবে।

মাটির তৈরি জিনিসপত্রের এই অবহেলা কেবল গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে না, বরং প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় হারাচ্ছে শিল্প ও সংস্কৃতির এক অমূল্য অংশ।

এবিষয়ে কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লাইমুন হোসেন ভুঁইয়া বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজ যদি মাটির পণ্যকে সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে, তবে এই পেশার সৃষ্টিশীলতা নতুন প্রজন্মের কাছে রক্ষা করা সম্ভব।

ছবি

ভিত্তিপ্রস্তরের ২ যুগ: ফুলদী নদীতে সেতু হয়নি আজও

ছবি

বেলকুচিতে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে গৃহবধুর ফাঁসি, প্রেমিকের যাবজ্জীবন

ছবি

ডিমলায় পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে নানী-নাতনীর মৃত্যু

ছবি

দোয়ারাবাজারে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

ছবি

লালমাই উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও হয়নি ফায়ারসার্ভিস স্টেশন

ছবি

শেরপুর পৌরসভায় বাস-ট্রাক টার্মিনাল বাস্তবে নেই, তবুও ইজারা বিজ্ঞপ্তি

ছবি

জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের মানববন্ধন

ছবি

সাতক্ষীরায় সফটশেল কাঁকড়া চাষ বদলে দিয়েছে অর্থনীতি

ছবি

কেশবপুরে রহস্যে ঘেরা খাঞ্জেলি দীঘির মাটির ঢিবিতে ভক্তের মিলন মেলা

ছবি

টাকার অভাবে ছয় উপজাতি শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চিত

ছবি

উলিপুরে বন্যার পলিতে আমন ধানে চিটা

ছবি

. জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের মানববন্ধন

ছবি

জামালপুরে কভার্ড ভ্যান-অটোরিকশা সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যু

ছবি

রাণীনগরে কৃষি প্রণোদনার সার বীজ বিতরণ

ছবি

কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি, ড্রেজার জব্দ

ছবি

সংযোগ সড়ক না থাকায় অকেজো ছয় কোটি টাকার সেতু

ছবি

চকরিয়ায় আউশের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে খুশির ঝিলিক

পুলিশ কর্মকর্তার ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ : আতঙ্কে ভিটেছাড়া অনেকে

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফার্মেসিগুলোর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, ওষুধ না পেয়ে বিপাকে রোগীরা

ছবি

বোয়ালখালীতে পানি পান করছে তৃষ্ণার্ত এক গোখরো সাপ

ছবি

চাঁদপুর যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

ছবি

সিদ্ধিরগঞ্জে ৬ মাসেও ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

ছবি

বোয়ালখালীতে কাভার্ড ভ্যান থেকে চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

হালদা নদীতে অভিযান, বড়শি ও জাল উদ্ধার

ছবি

মহাদেবপুরে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উদ্যোগ নেই : কমছে ফসলী জমি

ছবি

সুপেয় পানির সংকট নিরসনে ৩৫০ কোটি টাকার প্রকল্প

জনবল সংকটে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল

ছবি

হবিগঞ্জে অগ্নিকান্ডে তিন পরিবারের ঘর পুড়ে ছাই

ছবি

কাপাসিয়ায় মাদ্রসার কমিটি গঠনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বাণিজ্যের অভিযোগ

ছবি

মহেশপুরে পানিতে ডুবে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

ছবি

বকুলতলা খাল থেকে সদ্য ভরাটকৃত বালু সরানো শুরু

ছবি

নরসিংদীতে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক

ছবি

ঘোড়াশালে চাকরির ইন্টারভিউ শেষে বাড়ি ফেরা হলো না সৈকতের

ছবি

বেনাপোল সীমান্ত থেকে যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

ছবি

সমাজ পরিবর্তনে কাজ করছেন তরুণ উদ্যোক্তা মাহবুব হাসান ইলিয়াস

ছবি

মহাসড়ক এখন মৃত্যুফাঁদ ৬ মাসে ৯ জনের প্রাণহানি, আতঙ্কে রায়গঞ্জবাসী

tab

প্লাস্টিক-সিরামিকে দাপটে ধ্বংসের পথে মৃৎশিল্প

প্রতিনিধি, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : রোদে শুকানো হচ্ছে মাটির হাড়িপাতিল -সংবাদ

সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের লস্করপুর গ্রামে একসময় মাটির তৈরি জিনিসপত্র ছিল স্থানীয় মানুষের প্রতিদিনের ব্যবহার্য বস্তু। গ্রামে ৩০টিরও বেশি পরিবার তাদের নিপুণ হাতে তৈরি মাটির হাঁড়ি, পাতিল, থালা, বাটিসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি ও বাজারের পরিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী পেশা ক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে।

বর্তমানে গ্রামে এই পেশা অনুসরণ করে মাত্র ৫টি পরিবার বেঁচে আছে। তাদের মধ্যে দুলাল পাল, ও তার স্ত্রী রিনা রাণী পাল এখনো প্রতিদিন নিপুণ হাতে মাটির জিনিসপত্র তৈরি করছেন।

রিনা রাণী পালের হাতে তৈরি মাটির হাঁড়িপাতিল, থালা ও অন্যান্য পাত্র স্থানীয় বাজারে এখনও চাহিদা আছে।

দুলাল পাল জানান, আমাদের গ্রামে একসময় ২০-৩০টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের তৈরি মাটির হাঁড়িপাতিল, পাত্র-পাতিল রান্না ঘর ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হতো।

গ্রামের প্রতিটি ঘরে আমাদের তৈরি জিনিসপত্র দেখা যেত। সেই সময় প্রচুর চাহিদা ছিল। কিন্তু এখন প্লাস্টিক, সিরামিক ও অন্যান্য নতুন জিনিসপত্রের কারণে আমাদের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা অনেক কমে গেছে। অনেকেই এই পেশা ছেড়ে শহর বা অন্য উপজেলায় চলে গেছেন।

গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুলাল পালের বাড়ির উঠোনে সারি সারি মাটির হাঁড়িপাতিল রোদে শুকতে রাখা হয়েছে। প্রতিটি পাত্রের ওপরেই ফুটে উঠেছে কারিগরদের নিপুণ হাতের ছাপ। দুলাল পাল আরও জানান, এখনও আমাদের গ্রামে আমি সহ স্বপন পাল, মতিন্ড পাল, দিলিপ পাল, রবি পাল এই ৫টি পরিবার কিছুটা এই পেশা ধরে রেখেছে। কিন্তু জানি না, ভবিষ্যতে কতোদিন এটি টিকে থাকবে। এই পেশা হারিয়ে গেলে শুধু আমাদের জীবিকা নয়, লস্করপুরের এক সময়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও হারাবে।

মাটির তৈরি জিনিসপত্রের এই অবহেলা কেবল গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে না, বরং প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় হারাচ্ছে শিল্প ও সংস্কৃতির এক অমূল্য অংশ।

এবিষয়ে কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লাইমুন হোসেন ভুঁইয়া বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজ যদি মাটির পণ্যকে সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে, তবে এই পেশার সৃষ্টিশীলতা নতুন প্রজন্মের কাছে রক্ষা করা সম্ভব।

back to top