মীরসরাইয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে এবার ফলন বিলম্বিত হয়ে অবশেষে হেমন্তকালীন তরমুজে সফল হয়েছেন অনেক চাষী। মাচার মধ্যে লতায় ঝুলছে রং-বেরঙের নানা জাতের তরমুজ। সারি সারি সবুজ গাছে ঝুলে থাকা তরমুজের ফলন দেখে খুশি অনেকে। রোদ-বৃষ্টিতে কঠোর পরিশ্রমের পর ফলন এখন বাজারজাত করা হচ্ছে। মীরসরাইয়ে এই হৈমন্তি তরমুজ চাষ করে বাজিমাত করেছেন চাষি আব্দুল কুদ্দুস।
উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের মসজিদিয়া গ্রামে ৫০ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছেন জামালপুর জেলার আব্দুল কুদ্দুস। দুই দশক ধরে মীরসরাই এলাকায় বসবাস করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ৫০ শতক জমিতে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মালচিং ও অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করেছিলেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। কিন্তু ফলন বিলম্বিত হয়ে হেমন্ত ঋতুতে তা আলোর মুখ দেখ।
আব্দুল কুদ্দুসের তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা বিভিন্ন রঙের তরমুজ গাছে ঝুলছে। কয়েকজন শ্রমিকসহ তিনি ক্ষেত থেকে তরমুজ সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে আবাদ করা হয়েছে সূর্যডিম, রসগোল্লা, বিগবাইট, লিয়োনা, জাফরান, সুইটবাইট, কিং সুপার জাতের উচ্চ ফলনশীল গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তা ও পরামর্শে এবার ৫০ শতক জমিতে ৬৫ দিন আগে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছি। বর্ষাকালেই তার ফলন আসার কথা। বিলম্ব হয়ে তা কার্তিকে এসে হৈমন্তি ফলনে রুপ লাভ করেছে। তবে ভালো ফলন হয়েছে। ২৯ অক্টোবর থেকে বাজারজাত শুরু করেছি। জমিতে আড়াই কেজি থেকে শুরু করে সাড়ে ৪ কেজি ওজনের তরমুজ আছে। আশা করছি প্রায় ৪ টন তরমুজ উৎপাদন হবে।
তরমুজের পাইকার মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, দেড় লাখ টাকায় আব্দুল কুদ্দুসের ক্ষেত কিনেছি। প্রথমবারের মতো ক্ষেত থেকে তরমুজ উত্তোলন করে বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতি কেজি তরমুজ ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি তরমুজ ২ থেকে সাড়ে ৪ কেজি ওজন হবে। আশা করছি হয়তো ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (খৈয়াছড়া-মসজিদিয়া ব্লক) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার খৈয়াছড়া-মসজিদিয়া বকে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের ৫টি প্রদর্শনী স্থাপন করেছি। কৃষি অফিস থেকে সার, বীজ, মালচিং পেপারসহ আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষক আব্দুল কুদ্দুস ভাই ভালো করেছেন। খুবই অল্প সময়ে পরিপক্বতা লাভ করেছে। অন্য কৃষকের জমিতে এখনো ফলন হারভেস্ট করার সময় হয়নি। তারা ভালো লাভের আশায় শেষদিকে বীজ বপণ করেছেন। আব্দুল কুদ্দুস ভাইয়ের প্রায় ১ লাখ টাকা লাভ হয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, মীরসরাইয়ে প্রায় ৮ জন কৃষক এই গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন জাতের তরমুজ আবাদ করেছেন। তার মধ্যে কৃষক আব্দুল কুদ্দুসের ক্ষেতের ফলন বাজারজাত করা হচ্ছে। অন্য ক্ষেতের ফসল এখনও বাজারজাত করার উপযোগী হয়নি। এবার কেন ফলন বিলম্বিত হলো তা ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে তিনি বলেন, আগামী দু- এক সপ্তাহের মধ্যে অন্যগুলোও বাজারজাত সম্ভব হবে। আমাদের পক্ষ থেকে তরমুজ চাষিদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি। লাভজনক হওয়ায় ক্রমান্বয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষি বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
মীরসরাইয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে এবার ফলন বিলম্বিত হয়ে অবশেষে হেমন্তকালীন তরমুজে সফল হয়েছেন অনেক চাষী। মাচার মধ্যে লতায় ঝুলছে রং-বেরঙের নানা জাতের তরমুজ। সারি সারি সবুজ গাছে ঝুলে থাকা তরমুজের ফলন দেখে খুশি অনেকে। রোদ-বৃষ্টিতে কঠোর পরিশ্রমের পর ফলন এখন বাজারজাত করা হচ্ছে। মীরসরাইয়ে এই হৈমন্তি তরমুজ চাষ করে বাজিমাত করেছেন চাষি আব্দুল কুদ্দুস।
উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের মসজিদিয়া গ্রামে ৫০ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছেন জামালপুর জেলার আব্দুল কুদ্দুস। দুই দশক ধরে মীরসরাই এলাকায় বসবাস করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ৫০ শতক জমিতে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মালচিং ও অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করেছিলেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। কিন্তু ফলন বিলম্বিত হয়ে হেমন্ত ঋতুতে তা আলোর মুখ দেখ।
আব্দুল কুদ্দুসের তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা বিভিন্ন রঙের তরমুজ গাছে ঝুলছে। কয়েকজন শ্রমিকসহ তিনি ক্ষেত থেকে তরমুজ সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে আবাদ করা হয়েছে সূর্যডিম, রসগোল্লা, বিগবাইট, লিয়োনা, জাফরান, সুইটবাইট, কিং সুপার জাতের উচ্চ ফলনশীল গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তা ও পরামর্শে এবার ৫০ শতক জমিতে ৬৫ দিন আগে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছি। বর্ষাকালেই তার ফলন আসার কথা। বিলম্ব হয়ে তা কার্তিকে এসে হৈমন্তি ফলনে রুপ লাভ করেছে। তবে ভালো ফলন হয়েছে। ২৯ অক্টোবর থেকে বাজারজাত শুরু করেছি। জমিতে আড়াই কেজি থেকে শুরু করে সাড়ে ৪ কেজি ওজনের তরমুজ আছে। আশা করছি প্রায় ৪ টন তরমুজ উৎপাদন হবে।
তরমুজের পাইকার মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, দেড় লাখ টাকায় আব্দুল কুদ্দুসের ক্ষেত কিনেছি। প্রথমবারের মতো ক্ষেত থেকে তরমুজ উত্তোলন করে বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতি কেজি তরমুজ ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি তরমুজ ২ থেকে সাড়ে ৪ কেজি ওজন হবে। আশা করছি হয়তো ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (খৈয়াছড়া-মসজিদিয়া ব্লক) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, এসএসিপি প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার খৈয়াছড়া-মসজিদিয়া বকে গ্রীষ্মকালীন তরমুজের ৫টি প্রদর্শনী স্থাপন করেছি। কৃষি অফিস থেকে সার, বীজ, মালচিং পেপারসহ আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষক আব্দুল কুদ্দুস ভাই ভালো করেছেন। খুবই অল্প সময়ে পরিপক্বতা লাভ করেছে। অন্য কৃষকের জমিতে এখনো ফলন হারভেস্ট করার সময় হয়নি। তারা ভালো লাভের আশায় শেষদিকে বীজ বপণ করেছেন। আব্দুল কুদ্দুস ভাইয়ের প্রায় ১ লাখ টাকা লাভ হয়েছে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, মীরসরাইয়ে প্রায় ৮ জন কৃষক এই গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন জাতের তরমুজ আবাদ করেছেন। তার মধ্যে কৃষক আব্দুল কুদ্দুসের ক্ষেতের ফলন বাজারজাত করা হচ্ছে। অন্য ক্ষেতের ফসল এখনও বাজারজাত করার উপযোগী হয়নি। এবার কেন ফলন বিলম্বিত হলো তা ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে তিনি বলেন, আগামী দু- এক সপ্তাহের মধ্যে অন্যগুলোও বাজারজাত সম্ভব হবে। আমাদের পক্ষ থেকে তরমুজ চাষিদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি। লাভজনক হওয়ায় ক্রমান্বয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষি বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।