ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বিগত আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে জাতীয় তহবিল থেকে যে পরিমাণ বরাদ্দ ছিল তার অর্ধেকের বেশি ‘দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে’ বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১০-২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটি) থেকে প্রকল্পগুলোতে ৪৫৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।
‘এ সময়কালে মোট দুর্নীতির যে প্রাক্কলন করা হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।’ অর্থাৎ প্রকল্পগুলোর বরাদ্দের ৫৪ শতাংশ দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে বলে টিআইবির ভাষ্য। মঙ্গলবার,(০৪ নভেম্বর ২০২৫) ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব প্রকল্প ‘রাজনৈতিক বিবেচনা, যোগসাজশ ও স্বজনপ্রীতির’ মাধ্যমে অনুমোদনের প্রবণতা স্পষ্ট। অথচ তহবিল ব্যবস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের কর্মকর্তারা অনিয়ম রোধে ‘কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি’। টিআইবির গবেষণায় ২০০৩-২৪ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়িত ১২টি জলবায়ু তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১০-২৪ সময়ের তথ্য আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে ২০০৯ সালে। এরপর টানা সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় ছিল দলটি। ২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ আমলের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সামনে আনা হচ্ছে। সে সময় বিভিন্ন প্রকল্প ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ নেয়ার পর্যবেক্ষণ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সেগুলো বাতিল করেছে।
টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় দেশে প্রতিবছর ১২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হলেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে ২০১৫-২৩ সময়ে গড়ে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ মিলেছে দশমিক ৭ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫৮৫টি সমাপ্ত প্রকল্পের মধ্যে ৯০টির (১৫ দশমিক ৪ শতাংশ) সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। অধিকাংশ প্রকল্পে ‘মূল্যায়নের ঘাটতি’ রয়েছে। ৪৯৫টি (৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ) সমাপ্ত প্রকল্পের ‘প্রভাব যাচাই করা হয়নি’। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩-২৪ সাল পর্যন্ত পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার যা একেবারেই নগণ্য।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
বিগত আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে জাতীয় তহবিল থেকে যে পরিমাণ বরাদ্দ ছিল তার অর্ধেকের বেশি ‘দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে’ বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১০-২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটি) থেকে প্রকল্পগুলোতে ৪৫৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।
‘এ সময়কালে মোট দুর্নীতির যে প্রাক্কলন করা হয়েছে, তার আর্থিক মূল্য ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।’ অর্থাৎ প্রকল্পগুলোর বরাদ্দের ৫৪ শতাংশ দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে বলে টিআইবির ভাষ্য। মঙ্গলবার,(০৪ নভেম্বর ২০২৫) ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব প্রকল্প ‘রাজনৈতিক বিবেচনা, যোগসাজশ ও স্বজনপ্রীতির’ মাধ্যমে অনুমোদনের প্রবণতা স্পষ্ট। অথচ তহবিল ব্যবস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের কর্মকর্তারা অনিয়ম রোধে ‘কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি’। টিআইবির গবেষণায় ২০০৩-২৪ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়িত ১২টি জলবায়ু তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১০-২৪ সময়ের তথ্য আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে ২০০৯ সালে। এরপর টানা সাড়ে ১৫ বছর বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় ছিল দলটি। ২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ আমলের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সামনে আনা হচ্ছে। সে সময় বিভিন্ন প্রকল্প ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ নেয়ার পর্যবেক্ষণ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সেগুলো বাতিল করেছে।
টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় দেশে প্রতিবছর ১২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হলেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে ২০১৫-২৩ সময়ে গড়ে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ মিলেছে দশমিক ৭ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫৮৫টি সমাপ্ত প্রকল্পের মধ্যে ৯০টির (১৫ দশমিক ৪ শতাংশ) সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। অধিকাংশ প্রকল্পে ‘মূল্যায়নের ঘাটতি’ রয়েছে। ৪৯৫টি (৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ) সমাপ্ত প্রকল্পের ‘প্রভাব যাচাই করা হয়নি’। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩-২৪ সাল পর্যন্ত পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার যা একেবারেই নগণ্য।’