সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : অকালে বৃষ্টি ও বাতাসে নুয়ে পড়া আমন ধান -সংবাদ
গত চারদিন ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে মাঝারি বৃষ্টি ও বাতাসে নিচু জমির আমন ধান নুয়ে বা হেলে পড়েছে। সেই সাথে অন্যান্য ফসলসহ সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। অকালে বৃষ্টি ও বাতাসে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। মৌসুমের শেষ সময়ে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ কৃষকদের হতাশাগ্রস্থ করে তুলেছেন। আগাম আলু এবং সবজি চাষিরা দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার পনের ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৩০ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। রবি সবজি চাষাবাদ হয়েছে ৩৭০ হেক্টর। বৃষ্টি এবং বাতাসে ১০৬ হেক্টর জমির ধান নুয়ে বা হেলে পড়েছে এবং সবজির ক্ষতি হয়েছে ১০ হেক্টর। তবে চাষিদের মতে এর পরিমান অনেক বেশি। ইতোমধ্যে নিচু জমির ও আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করেছে। বেশির ভাগ জমির ধান আধাপকা হয়েছে। বিশেষ করে আলু চাষিরা আগাম জাতের ধান চাষ করে থাকেন। সেই সব জমির ধান কাটতে শুরু করেছেন অনেকে। চর এলাকার এর পরিমান বেশি।
পৌরসভার ফরমান আলী বলেন, বৃষ্টি এবং বাতাসে তাঁর দুই বিঘা জমির পাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে এবং এক বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। দুই বিঘা জমিতে তার ১৫ হাজার টাকা লোকসান হবে। অসময়ের এই বৃষ্টি ও বাতাস অনেক চাষির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। অনেকে নিচু জমির ধান এ অবস্থায় কেটে নিয়ে আসছে। তিনি বলেন এ অবস্থা আরও ৩ হতে ৪ দিন অব্যাহত থাকলে ফসলের ভ্যাপক ক্ষতি হবে।
কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের বজরা কঞ্চিবাড়ি গ্রামের সুজন মিয়া বলেন, তারও প্রায় তিন বিঘা জমির আধাপাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তার অর্ধেক ফসল বিনষ্ট হয়ে যাবে। তার আশায় যেন গুড়েবালি।
বেলকা চরের আলু চাষি বিল্পব মিয়া বলেন, ইতোমধ্যে তিনি ৫ বিঘা জমি আলু চাষের জন্য প্রস্তুত করেছেন। হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় তার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আলু লাগাতে তাকে আর ২০ দিন অপেক্ষ করতে হবে। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হবে।
হরিপুর ডাঙ্গার চরের জরিপ মিয়া বলেন, চলতি রবি মৌসুমে তিনি এক বিঘা জমিতে পিয়াজ, এক বিঘা জমিতে মরিচ এবং এক বিঘা জমিতে কফি চাষ করেছেন। অসময়ে বৃষ্টি ও বাতাসে তার সব ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে জমি প্রস্তুত করতে অনেক দিন অপেক্ষ করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির বলেন, অসময়ে বৃষ্টি ও বাতাসের কারনে প্রায় ১০৬ হেক্টর আমন ধান হেলে পড়েছে এবং ১০ হেক্টর রবি সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। তবে আমন ধানের ক্ষয়-ক্ষতি এখন নিরুপন করা যাবে না। যেহেতু বৈরী আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এখানো আসলে মানুষের করার কিছু নেই। তবে বৈষিক কারনে অসময়ে এসব বৃষ্টি ও বাতাস হচ্ছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : অকালে বৃষ্টি ও বাতাসে নুয়ে পড়া আমন ধান -সংবাদ
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
গত চারদিন ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে মাঝারি বৃষ্টি ও বাতাসে নিচু জমির আমন ধান নুয়ে বা হেলে পড়েছে। সেই সাথে অন্যান্য ফসলসহ সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। অকালে বৃষ্টি ও বাতাসে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। মৌসুমের শেষ সময়ে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ কৃষকদের হতাশাগ্রস্থ করে তুলেছেন। আগাম আলু এবং সবজি চাষিরা দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার পনের ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৩০ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। রবি সবজি চাষাবাদ হয়েছে ৩৭০ হেক্টর। বৃষ্টি এবং বাতাসে ১০৬ হেক্টর জমির ধান নুয়ে বা হেলে পড়েছে এবং সবজির ক্ষতি হয়েছে ১০ হেক্টর। তবে চাষিদের মতে এর পরিমান অনেক বেশি। ইতোমধ্যে নিচু জমির ও আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করেছে। বেশির ভাগ জমির ধান আধাপকা হয়েছে। বিশেষ করে আলু চাষিরা আগাম জাতের ধান চাষ করে থাকেন। সেই সব জমির ধান কাটতে শুরু করেছেন অনেকে। চর এলাকার এর পরিমান বেশি।
পৌরসভার ফরমান আলী বলেন, বৃষ্টি এবং বাতাসে তাঁর দুই বিঘা জমির পাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে এবং এক বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। দুই বিঘা জমিতে তার ১৫ হাজার টাকা লোকসান হবে। অসময়ের এই বৃষ্টি ও বাতাস অনেক চাষির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। অনেকে নিচু জমির ধান এ অবস্থায় কেটে নিয়ে আসছে। তিনি বলেন এ অবস্থা আরও ৩ হতে ৪ দিন অব্যাহত থাকলে ফসলের ভ্যাপক ক্ষতি হবে।
কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের বজরা কঞ্চিবাড়ি গ্রামের সুজন মিয়া বলেন, তারও প্রায় তিন বিঘা জমির আধাপাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তার অর্ধেক ফসল বিনষ্ট হয়ে যাবে। তার আশায় যেন গুড়েবালি।
বেলকা চরের আলু চাষি বিল্পব মিয়া বলেন, ইতোমধ্যে তিনি ৫ বিঘা জমি আলু চাষের জন্য প্রস্তুত করেছেন। হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় তার সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আলু লাগাতে তাকে আর ২০ দিন অপেক্ষ করতে হবে। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হবে।
হরিপুর ডাঙ্গার চরের জরিপ মিয়া বলেন, চলতি রবি মৌসুমে তিনি এক বিঘা জমিতে পিয়াজ, এক বিঘা জমিতে মরিচ এবং এক বিঘা জমিতে কফি চাষ করেছেন। অসময়ে বৃষ্টি ও বাতাসে তার সব ফসল বিনষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে জমি প্রস্তুত করতে অনেক দিন অপেক্ষ করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির বলেন, অসময়ে বৃষ্টি ও বাতাসের কারনে প্রায় ১০৬ হেক্টর আমন ধান হেলে পড়েছে এবং ১০ হেক্টর রবি সবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। তবে আমন ধানের ক্ষয়-ক্ষতি এখন নিরুপন করা যাবে না। যেহেতু বৈরী আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরও কয়েকদিন থাকতে পারে। এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এখানো আসলে মানুষের করার কিছু নেই। তবে বৈষিক কারনে অসময়ে এসব বৃষ্টি ও বাতাস হচ্ছে।