মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার -সংবাদ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার। ইউটিউবে দেখে শুরু শুরু করে পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদন করে বিকাশ এখন সফল আধুনিক কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন।শুধু সিংগাইর নয়, আশপাশের সাভার, দোহার, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জের কৃষকরাও এখন বিকাশের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছেন।একসময় বাবার সঙ্গে প্রচলিত কৃষিকাজে বারবার লোকসানের মুখে পড়লেও হার মানেননি। অধ্যবসায়, কৌতূহল আর শেখার আগ্রহই আজ তাকে বদলে দিয়েছে এক সফল আধুনিক কৃষি উদ্যোক্তায়। বিকাশ চন্দ্র সরকারের সাফল্যের গল্প আজ শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো গ্রামের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তার হাতে গড়া পলিশেড হাউজ যেন গ্রামের তরুণদের চোখে এক নতুন সম্ভাবনার আলো জ্বলে উঠেছে। ২০১৬ সালে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে শুরু করেন বিকাশ। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশে ছোট্ট একটি শেডে মাত্র ১০ হাজার চারা উৎপাদন করেন। প্রথমবারেই সফলতা পান। সেই সাফল্যই বদলে দেয় তার জীবনের পথচলা।
আজ তার এক বিঘা জমিতে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি আধুনিক পলিশেড হাউজ। সারিবদ্ধভাবে সাজানো প্লাস্টিক ট্রেতে সবুজ চারার সারি যেন এক জীবন্ত শিল্পকর্ম। কেউ বীজ বপনে ব্যস্ত, কেউ পানি দিচ্ছেন যতেœ, আবার কেউ বাজারে পাঠানোর জন্য ক্যারেটে চারা গোছাচ্ছেন ভালোবাসা মিশিয়ে।বর্তমানে তার খামারে ৮–১০ জন স্থানীয় নারী-পুরুষ কৃষি শ্রমিকের সাথে নিজেও নিয়মিত কাজ করছেন।
এ বিষয়ে বিকাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান ‘করোনার সময় ইউটিউবে দেখেই শুরু করেছিলাম পলিশেড হাউজে কৃষিকাজ। কখনো ভাবিনি এত দূর যেতে পারব। এখন এক মৌসুমে সব খরচ বাদে অন্তত ছয় লাখ টাকা লাভ হয়। শুধু নিজের আয় নয় ৮ থেকে ১০ জন কৃষি শ্রমিক আমার সাথে কাজ করে তাদের পরিবার চালাচ্ছে।আমি আগামীতে আরও বড় আকারে পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদন করতে চাই।সেজন্য সরকারের সাহায্যে সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বিকাশের বাবা রঞ্জিত চন্দ্র সরকার বলেন,প্রথমে ছেলের উদ্যোগে খুব একটা ভরসা পাইনি। কিন্তু সাফল্যের পর এখন নিয়মিত খামারে কাজ করছি। সে শুধু নিজের নয়, গ্রামেরও মুখ উজ্জ্বল করছে।
পার্শ্ববর্তী জেলা কেরানীগঞ্জ থেকে চারা নিতে আসা কৃষক আনোয়ার বলেন, ‘আগে যশোর থেকে চারা আনতাম, অনেক নষ্ট হয়ে যেত। এখন বিকাশের কাছ থেকে নিচ্ছি। মান ভালো, খরচও কম হচ্ছে বলে জানান তিনি। সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, ‘পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদনে খরচ ও ঝুঁকি কম, উৎপাদন হয় মানসম্মত। শেডের বিশেষ প্লাস্টিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে রোগবালাইয়ের আশঙ্কা কমে।
বিকাশের মানসম্মত চারা এখন শুধু স্থানীয় নয়, আশপাশের জেলার কৃষকরাও নিচ্ছেন। তার উদ্যোগে সিংগাইরে চারা উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। আর তাকে আমাদের পক্ষ থেকে একটি পলিশেড হাউজ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। আর সব সময়ই তাকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার। ইউটিউবে দেখে শুরু শুরু করে পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদন করে বিকাশ এখন সফল আধুনিক কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন।শুধু সিংগাইর নয়, আশপাশের সাভার, দোহার, কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জের কৃষকরাও এখন বিকাশের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছেন।একসময় বাবার সঙ্গে প্রচলিত কৃষিকাজে বারবার লোকসানের মুখে পড়লেও হার মানেননি। অধ্যবসায়, কৌতূহল আর শেখার আগ্রহই আজ তাকে বদলে দিয়েছে এক সফল আধুনিক কৃষি উদ্যোক্তায়। বিকাশ চন্দ্র সরকারের সাফল্যের গল্প আজ শুধু তার পরিবারের নয়, পুরো গ্রামের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তার হাতে গড়া পলিশেড হাউজ যেন গ্রামের তরুণদের চোখে এক নতুন সম্ভাবনার আলো জ্বলে উঠেছে। ২০১৬ সালে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে শুরু করেন বিকাশ। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশে ছোট্ট একটি শেডে মাত্র ১০ হাজার চারা উৎপাদন করেন। প্রথমবারেই সফলতা পান। সেই সাফল্যই বদলে দেয় তার জীবনের পথচলা।
আজ তার এক বিঘা জমিতে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি আধুনিক পলিশেড হাউজ। সারিবদ্ধভাবে সাজানো প্লাস্টিক ট্রেতে সবুজ চারার সারি যেন এক জীবন্ত শিল্পকর্ম। কেউ বীজ বপনে ব্যস্ত, কেউ পানি দিচ্ছেন যতেœ, আবার কেউ বাজারে পাঠানোর জন্য ক্যারেটে চারা গোছাচ্ছেন ভালোবাসা মিশিয়ে।বর্তমানে তার খামারে ৮–১০ জন স্থানীয় নারী-পুরুষ কৃষি শ্রমিকের সাথে নিজেও নিয়মিত কাজ করছেন।
এ বিষয়ে বিকাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান ‘করোনার সময় ইউটিউবে দেখেই শুরু করেছিলাম পলিশেড হাউজে কৃষিকাজ। কখনো ভাবিনি এত দূর যেতে পারব। এখন এক মৌসুমে সব খরচ বাদে অন্তত ছয় লাখ টাকা লাভ হয়। শুধু নিজের আয় নয় ৮ থেকে ১০ জন কৃষি শ্রমিক আমার সাথে কাজ করে তাদের পরিবার চালাচ্ছে।আমি আগামীতে আরও বড় আকারে পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদন করতে চাই।সেজন্য সরকারের সাহায্যে সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ব্যাপারে বিকাশের বাবা রঞ্জিত চন্দ্র সরকার বলেন,প্রথমে ছেলের উদ্যোগে খুব একটা ভরসা পাইনি। কিন্তু সাফল্যের পর এখন নিয়মিত খামারে কাজ করছি। সে শুধু নিজের নয়, গ্রামেরও মুখ উজ্জ্বল করছে।
পার্শ্ববর্তী জেলা কেরানীগঞ্জ থেকে চারা নিতে আসা কৃষক আনোয়ার বলেন, ‘আগে যশোর থেকে চারা আনতাম, অনেক নষ্ট হয়ে যেত। এখন বিকাশের কাছ থেকে নিচ্ছি। মান ভালো, খরচও কম হচ্ছে বলে জানান তিনি। সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, ‘পলিশেড হাউজে চারা উৎপাদনে খরচ ও ঝুঁকি কম, উৎপাদন হয় মানসম্মত। শেডের বিশেষ প্লাস্টিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে রোগবালাইয়ের আশঙ্কা কমে।
বিকাশের মানসম্মত চারা এখন শুধু স্থানীয় নয়, আশপাশের জেলার কৃষকরাও নিচ্ছেন। তার উদ্যোগে সিংগাইরে চারা উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। আর তাকে আমাদের পক্ষ থেকে একটি পলিশেড হাউজ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। আর সব সময়ই তাকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’