মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার প্রধান পোস্ট অফিসে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা গ্রহিতারা। গজারিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ব্যাপী থাকা ১১ টি শাখা ডাকঘরের নেই কোন স্হায়ী কার্যালয়। কারো বাড়ি, দোকান কিংবা রাণারের কাঁদের ব্যাগ বা ঝোলাটিই যেনো কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গজারিয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে ৮ জন লোকবলের পদ থাকলেও ৪ টি পদ দীর্ঘদিন শুণ্য রয়েছে। উপজেলা পোস্ট মাস্টার, একজন পোস্টম্যান আর দুইজন রানার সাকুল্যে ৪ জন দিয়েই চলছে উপজেলা পোস্ট অফিসের সেবা কার্যক্রম। পোষ্টাল অপারেটরের ২টি পদই শূণ্য থাকায়, পোস্টম্যান মো. আনোয়ারকে পোষ্টাল অপারেটরের কাজ করতে হয়। গজারিয়া উপজেলা পোষ্ট মাষ্টার মিজানুর রহমান সংবাদকে জানান, পোষ্টাল অপারেটর পদ ২টি, প্যাকার পদ ১টি ও রানারের ১ টি পদ শূণ্য রয়েছে দীর্ঘদিন। প্রয়োজনের অর্ধেক লোকবল নিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলার প্রধান কার্যালয়টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভবেরচর, বাউশিয়া, পুরান বাউশিয়া, বি কে রায়পাড়া, বলাকী, গুয়াগাছিয়া, হোগলাকান্দী,ইসমানিরচর,উত্তর শাহপুর,টেংগারচর ও মধ্য ভাটেরচর এলাকার ১১ টি শাখা পোস্ট অফিসের কোনটিরই নিজস্ব ভবন বা কার্যালয় নেই।
ভবেরচর শাখা কার্যালয়ের পোস্টম্যান (অস্হায়ী) আবুল খায়ের জানান ভবেরচর কাঁচা বাজারের পাশে একটি পরিত্যক্ত কক্ষে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, তিনি আরো বলেন, কক্ষটি এতোটাই জরাজীর্ন সামান্য বৃষ্টিতে কক্ষে থাকা সামানা ভিজে যায়। এদিকে মধ্য ভাটেরচর শাখা কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সোহেল মিয়াকে (৪০) কয়েক জায়গায় খোঁজ করে সবশেষ পাওয়া গেলো ব্যাটারী চালিত অটোরিকসায়। তিনি বলেন, তার কোন নির্দিষ্ট অফিস নেই, নিজের বাড়ি থেকে সন্ধ্যার পর চিঠি বিলি করেন। বাকী সময় নিজের অটোতে যাত্রী আনা-নেয়া করেন। গজারিয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে সাধারণ ও রেজিষ্ট্রিকৃত চিঠি গ্রহন ও বিলি করা, আন্তর্জাতিক পার্সেল পোস্টাল গ্রহণ ও বিতরণ করা। পোস্ট অফিস কার্যালয়ের ‘ স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্টে আয়কর রির্টাং, দলিল পর্চা উত্তোলণের আবেদন ও সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। এ কার্যালয়ে সঞ্চয় পত্র গ্রহন ও ইস্যু করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ উপজেলার প্রধান পোস্ট অফিসটি উপজেলার পশ্চিম প্রান্তের গজারিয়া ইউনিয়নে স্থাপিত হওয়ার কারণে ফুলদী নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলার অধিকাংশ এলাকার মানুষ সরকারী যোগাযোগ সেবার বাহিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এছাড়াও পোস্ট অফিসে ব্যাংক নোট কাউন্টার মেশিন নষ্ট এবং ফ্র্যাংকিং মেশিনে কালি না থাকায় সেবা প্রত্যাশীরা পোস্ট অফিসে সেবা নিতে এসে বিপাকে পড়েন।
গজারিয়া উপজেলা প্রধান পোস্ট অফিসে নিয়মিত দেশিয় ও আন্তর্জাতিক ডাক দ্রব্যাদি গ্রহণ, বিলিকরণ, রেজিষ্ট্রেশন সেবা, পার্সেল সেবা, বুক পোস্ট (বুক প্যাকেট ও প্যাটার্ণ প্যাকেট), রেজিস্টার্ড চিঠিপত্র ও পার্সেল, মানি অর্ডার সেবা, সঞ্চয়পত্র বিক্রয় সেবাসহ সব ধরনের সেবা প্রদান করা হয়। পোস্ট মাষ্টার মিজানুর রহমান গত বৃহস্পতিবার সংবাদকে বলেন,’ তার নামে বরাদ্দ পাওয়া সরকারী আবাসিক ভবন জরাজীর্ন ও ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ায়, তাকে অন্যত্র বসবাস করতে হচ্ছে।প্রসঙ্গত, মানুষে মানুষে যোগাযোগ চিরন্তন। যোগাযোগের একটি ঐতিহ্যবাহী মাধ্যম হলো চিঠি। চিঠি নিয়ে কতই না কথা। বিদেশ গিয়া বন্ধু তুমি আমায় ভুইলো না, চিঠি দিও পত্র দিও জানাইও ঠিকানা। যারে যা চিঠি লেইখা দিলাম সোনা বন্ধুর নামে। এখন আর চিঠি লাগে না, ঠিকানা লাগে না। এখন শুধু নম্বর লাগে। মুহুর্তে খবরাখবর সাত সমুদ্র তের নদী পাড় হচ্ছে। অথচ এমন এক সময় ছিল যখন যোগাযোগের প্রধান মাধ্য ছিল চিঠি। কুশলাদি, আমন্ত্রণ, দাওয়াত দিতে চিঠিই ছিল একমাত্র মাধ্যম। সুখ দুঃখের চিঠিতে ভরপুর থাকতো ডাক পিওনের ঝোলা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে, হাটবাজারে ডাকপিয়ন চিঠি বিলি করতেন। পোস্ট অফিসের সামনে, রেল স্টেশনে, অফিস আদালতের সামনে ছিল ডাকবাক্স। চিঠি লিখে খামে পুরে, পোস্ট কার্ডে, লিখে, কেউ কেউ আবার রঙবেরঙের খামে পুরে চিঠি ডাকে দিতেন। বর্তমানে অফিসিয়াল চিঠির কিছু আদান প্রদান থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লেখার চল নেই বললেই চলে। প্রযুক্তির যুগে দাঁড়িয়ে সবকিছুতেই পরিবর্তন। পরিবর্তনের জোয়ারে, চিঠি লেখাতেও ছেদ পড়েছে। হাতে হাতে স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট, ই মেইলের আশির্বাদে চিঠির ব্যবহার দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই উঠে যাচ্ছে পুরনো রীতি চিঠি
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার প্রধান পোস্ট অফিসে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা গ্রহিতারা। গজারিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ব্যাপী থাকা ১১ টি শাখা ডাকঘরের নেই কোন স্হায়ী কার্যালয়। কারো বাড়ি, দোকান কিংবা রাণারের কাঁদের ব্যাগ বা ঝোলাটিই যেনো কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গজারিয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে ৮ জন লোকবলের পদ থাকলেও ৪ টি পদ দীর্ঘদিন শুণ্য রয়েছে। উপজেলা পোস্ট মাস্টার, একজন পোস্টম্যান আর দুইজন রানার সাকুল্যে ৪ জন দিয়েই চলছে উপজেলা পোস্ট অফিসের সেবা কার্যক্রম। পোষ্টাল অপারেটরের ২টি পদই শূণ্য থাকায়, পোস্টম্যান মো. আনোয়ারকে পোষ্টাল অপারেটরের কাজ করতে হয়। গজারিয়া উপজেলা পোষ্ট মাষ্টার মিজানুর রহমান সংবাদকে জানান, পোষ্টাল অপারেটর পদ ২টি, প্যাকার পদ ১টি ও রানারের ১ টি পদ শূণ্য রয়েছে দীর্ঘদিন। প্রয়োজনের অর্ধেক লোকবল নিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলার প্রধান কার্যালয়টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভবেরচর, বাউশিয়া, পুরান বাউশিয়া, বি কে রায়পাড়া, বলাকী, গুয়াগাছিয়া, হোগলাকান্দী,ইসমানিরচর,উত্তর শাহপুর,টেংগারচর ও মধ্য ভাটেরচর এলাকার ১১ টি শাখা পোস্ট অফিসের কোনটিরই নিজস্ব ভবন বা কার্যালয় নেই।
ভবেরচর শাখা কার্যালয়ের পোস্টম্যান (অস্হায়ী) আবুল খায়ের জানান ভবেরচর কাঁচা বাজারের পাশে একটি পরিত্যক্ত কক্ষে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, তিনি আরো বলেন, কক্ষটি এতোটাই জরাজীর্ন সামান্য বৃষ্টিতে কক্ষে থাকা সামানা ভিজে যায়। এদিকে মধ্য ভাটেরচর শাখা কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সোহেল মিয়াকে (৪০) কয়েক জায়গায় খোঁজ করে সবশেষ পাওয়া গেলো ব্যাটারী চালিত অটোরিকসায়। তিনি বলেন, তার কোন নির্দিষ্ট অফিস নেই, নিজের বাড়ি থেকে সন্ধ্যার পর চিঠি বিলি করেন। বাকী সময় নিজের অটোতে যাত্রী আনা-নেয়া করেন। গজারিয়া উপজেলা পোস্ট অফিসে সাধারণ ও রেজিষ্ট্রিকৃত চিঠি গ্রহন ও বিলি করা, আন্তর্জাতিক পার্সেল পোস্টাল গ্রহণ ও বিতরণ করা। পোস্ট অফিস কার্যালয়ের ‘ স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্টে আয়কর রির্টাং, দলিল পর্চা উত্তোলণের আবেদন ও সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। এ কার্যালয়ে সঞ্চয় পত্র গ্রহন ও ইস্যু করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ উপজেলার প্রধান পোস্ট অফিসটি উপজেলার পশ্চিম প্রান্তের গজারিয়া ইউনিয়নে স্থাপিত হওয়ার কারণে ফুলদী নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলার অধিকাংশ এলাকার মানুষ সরকারী যোগাযোগ সেবার বাহিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এছাড়াও পোস্ট অফিসে ব্যাংক নোট কাউন্টার মেশিন নষ্ট এবং ফ্র্যাংকিং মেশিনে কালি না থাকায় সেবা প্রত্যাশীরা পোস্ট অফিসে সেবা নিতে এসে বিপাকে পড়েন।
গজারিয়া উপজেলা প্রধান পোস্ট অফিসে নিয়মিত দেশিয় ও আন্তর্জাতিক ডাক দ্রব্যাদি গ্রহণ, বিলিকরণ, রেজিষ্ট্রেশন সেবা, পার্সেল সেবা, বুক পোস্ট (বুক প্যাকেট ও প্যাটার্ণ প্যাকেট), রেজিস্টার্ড চিঠিপত্র ও পার্সেল, মানি অর্ডার সেবা, সঞ্চয়পত্র বিক্রয় সেবাসহ সব ধরনের সেবা প্রদান করা হয়। পোস্ট মাষ্টার মিজানুর রহমান গত বৃহস্পতিবার সংবাদকে বলেন,’ তার নামে বরাদ্দ পাওয়া সরকারী আবাসিক ভবন জরাজীর্ন ও ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ায়, তাকে অন্যত্র বসবাস করতে হচ্ছে।প্রসঙ্গত, মানুষে মানুষে যোগাযোগ চিরন্তন। যোগাযোগের একটি ঐতিহ্যবাহী মাধ্যম হলো চিঠি। চিঠি নিয়ে কতই না কথা। বিদেশ গিয়া বন্ধু তুমি আমায় ভুইলো না, চিঠি দিও পত্র দিও জানাইও ঠিকানা। যারে যা চিঠি লেইখা দিলাম সোনা বন্ধুর নামে। এখন আর চিঠি লাগে না, ঠিকানা লাগে না। এখন শুধু নম্বর লাগে। মুহুর্তে খবরাখবর সাত সমুদ্র তের নদী পাড় হচ্ছে। অথচ এমন এক সময় ছিল যখন যোগাযোগের প্রধান মাধ্য ছিল চিঠি। কুশলাদি, আমন্ত্রণ, দাওয়াত দিতে চিঠিই ছিল একমাত্র মাধ্যম। সুখ দুঃখের চিঠিতে ভরপুর থাকতো ডাক পিওনের ঝোলা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে, হাটবাজারে ডাকপিয়ন চিঠি বিলি করতেন। পোস্ট অফিসের সামনে, রেল স্টেশনে, অফিস আদালতের সামনে ছিল ডাকবাক্স। চিঠি লিখে খামে পুরে, পোস্ট কার্ডে, লিখে, কেউ কেউ আবার রঙবেরঙের খামে পুরে চিঠি ডাকে দিতেন। বর্তমানে অফিসিয়াল চিঠির কিছু আদান প্রদান থাকলেও ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লেখার চল নেই বললেই চলে। প্রযুক্তির যুগে দাঁড়িয়ে সবকিছুতেই পরিবর্তন। পরিবর্তনের জোয়ারে, চিঠি লেখাতেও ছেদ পড়েছে। হাতে হাতে স্মার্ট ফোন, ইন্টারনেট, ই মেইলের আশির্বাদে চিঠির ব্যবহার দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই উঠে যাচ্ছে পুরনো রীতি চিঠি