রাজশাহী : নবান্ন উৎসবের ধান কাটছেন কৃষাণী -সংবাদ
হেমন্তের মলয় বাতাসে যখন প্রকৃতি ধীরে ধীরে সোনালি আভায় রাঙা হয়ে ওঠে, তখনই বাংলার গ্রামজুড়ে জাগে এক অনাবিল উৎসবের সুরনবান্ন। নতুন ধানের ঘ্রাণে ভরে ওঠে ঘর-আঙিনা, মাঠ-ঘাট, আর কৃষকের মনও আলোকিত হয় নতুন স্বপ্নে। অগ্রহায়ণের প্রথম দিনটি তাই শুধু ঋতুর পরিবর্তন নয়, এটি বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক চিরন্তন আনন্দঘন পুনর্জাগরণ।
রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে যেন সেই চিরচেনা প্রাণের ছোঁয়া আরও উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিল। সোনালি ধানের ঢেউ, হালকা কুয়াশার পরশ আর কৃষকের পরিশ্রমের হাসিমাখা মুখসব মিলিয়ে প্রকৃতি যেন নিজেই সাজিয়ে তুললো এক উৎসব প্রাঙ্গণ। চৈতন্যপুরের মাঠে কৃষক, আদিবাসী সম্প্রদায়, শিক্ষাবিদ ও সুধিজনের সমবেত উপস্থিতিতে ধান কাটার যে বর্ণিল আয়োজন হলো, তা নবান্নের মূল সত্তাকেই তুলে ধরে উৎসব, ঐতিহ্য ও মানুষে-মানুষের মিলনমেলা। সব মিলিয়ে নবান্ন শুধু ফসল উৎসব নয়এটি বাংলার জীবনযাত্রা, লোকসংস্কৃতি আর কৃষির প্রতি শ্রদ্ধার এক অনুপম প্রকাশ।
রোববার পয়লা অগ্রহায়ণে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুরে নবান্ন উৎসবে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কৃষক মনিরুজ্জামান মনির এ গ্রামে জমি ইজারা নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করছেন। একাধিকবার জাতীয় কৃষি পদকও পেয়েছেন। তাঁর উদ্যোগেই সাত বছর ধরে গ্রামে এই উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। বরাবরের মতো এবারও এই আয়োজনে পুরো গ্রামের মানুষ অংশ নেন। প্রথমেই গ্রামের শিশু-কিশোরীরা গাঁদা ফুল ছিটিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেয়। পরে জাতীয় সংগীতের পর শুরু হয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের ধান কাটার প্রতিযোগিতা।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে এবারও গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পিঠাপুলি আর পায়েস রান্না করা হয়। এক মাস আগে থেকে গ্রমের কিশোরীরা নাচ অনুশীলন করে রাখে। বিকেলে ধান কাটার প্রতিযোগিতার পর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে কিশোরীরা নৃত্য পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মেহেরুন নেসা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম। তাঁরা প্রায় হারাতে বসা এ নবান্ন উৎসব দেখে অভিভূত হন। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, এ বছর রাজশাহীতে ৮৩ হাজার ৫৫০ হেক্টের জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন হবে আশা করা হচ্ছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রাজশাহী : নবান্ন উৎসবের ধান কাটছেন কৃষাণী -সংবাদ
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
হেমন্তের মলয় বাতাসে যখন প্রকৃতি ধীরে ধীরে সোনালি আভায় রাঙা হয়ে ওঠে, তখনই বাংলার গ্রামজুড়ে জাগে এক অনাবিল উৎসবের সুরনবান্ন। নতুন ধানের ঘ্রাণে ভরে ওঠে ঘর-আঙিনা, মাঠ-ঘাট, আর কৃষকের মনও আলোকিত হয় নতুন স্বপ্নে। অগ্রহায়ণের প্রথম দিনটি তাই শুধু ঋতুর পরিবর্তন নয়, এটি বাংলার গ্রামীণ জীবনের এক চিরন্তন আনন্দঘন পুনর্জাগরণ।
রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে যেন সেই চিরচেনা প্রাণের ছোঁয়া আরও উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিল। সোনালি ধানের ঢেউ, হালকা কুয়াশার পরশ আর কৃষকের পরিশ্রমের হাসিমাখা মুখসব মিলিয়ে প্রকৃতি যেন নিজেই সাজিয়ে তুললো এক উৎসব প্রাঙ্গণ। চৈতন্যপুরের মাঠে কৃষক, আদিবাসী সম্প্রদায়, শিক্ষাবিদ ও সুধিজনের সমবেত উপস্থিতিতে ধান কাটার যে বর্ণিল আয়োজন হলো, তা নবান্নের মূল সত্তাকেই তুলে ধরে উৎসব, ঐতিহ্য ও মানুষে-মানুষের মিলনমেলা। সব মিলিয়ে নবান্ন শুধু ফসল উৎসব নয়এটি বাংলার জীবনযাত্রা, লোকসংস্কৃতি আর কৃষির প্রতি শ্রদ্ধার এক অনুপম প্রকাশ।
রোববার পয়লা অগ্রহায়ণে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুরে নবান্ন উৎসবে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কৃষক মনিরুজ্জামান মনির এ গ্রামে জমি ইজারা নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করছেন। একাধিকবার জাতীয় কৃষি পদকও পেয়েছেন। তাঁর উদ্যোগেই সাত বছর ধরে গ্রামে এই উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। বরাবরের মতো এবারও এই আয়োজনে পুরো গ্রামের মানুষ অংশ নেন। প্রথমেই গ্রামের শিশু-কিশোরীরা গাঁদা ফুল ছিটিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেয়। পরে জাতীয় সংগীতের পর শুরু হয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের ধান কাটার প্রতিযোগিতা।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে এবারও গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পিঠাপুলি আর পায়েস রান্না করা হয়। এক মাস আগে থেকে গ্রমের কিশোরীরা নাচ অনুশীলন করে রাখে। বিকেলে ধান কাটার প্রতিযোগিতার পর একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে কিশোরীরা নৃত্য পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মেহেরুন নেসা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম। তাঁরা প্রায় হারাতে বসা এ নবান্ন উৎসব দেখে অভিভূত হন। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, এ বছর রাজশাহীতে ৮৩ হাজার ৫৫০ হেক্টের জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ভালো ফলন হবে আশা করা হচ্ছে।