ভাঙ্গুড়া (পাবনা) : পুঁইবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নড়বড়ে বাঁশ কাঠের সাঁকো পেরিয়ে স্কুলে আসছে -সংবাদ
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের পুঁইবিল গ্রামে অবস্থিত পুঁইবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা যাওয়া এখন যেন এক দুঃস্বপ্নের যাত্রা।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ও ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হওয়া এই বিদ্যালয়ে ১২০ জন শিক্ষার্থীকে ৫ জন শিক্ষক পাঠদান করে আসছেন। তবে এসব শিশুর শিক্ষার পথে সবচেয়ে বড় বাধা একটি নড়বড়ে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো, যেটি পার হতে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলের সামনে রয়েছে বড় একটি জলাশয়। সেই জলাশয়ের ওপরই তৈরি করা হয়েছে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো। উপরে কচুরিপানা জমে থাকায় নিচের গভীরতা বোঝা যায় না। হাঁটলেই সাঁকো কাঁপে, তক্তাগুলো নড়বড়ে যে কোনো মুহূর্তেই ভেঙে পড়তে পারে। এই বিপজ্জনক সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে ১২০ জন শিক্ষার্থী, পাঁচজন শিক্ষকসহ দুই পাড়ের শত শত মানুষ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ২০ হাজার টাকা সহায়তা, বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড এবং স্থানীয়দের অবদান মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। তবে বর্ষার পানি ও ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে মাত্র কয়েক মাসেই তা নাজুক হয়ে পড়েছে।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিথি খাতুন জানায়, সাঁকোতে হাঁটলে কাঁপে। খুব ভয় লাগে। কিন্তু স্কুল তো যেতেই হবে।
৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হোসাইন আহমেদ বলে, বাতাস এলেই সাঁকো দুলতে থাকে। মনে হয় পড়ে যাব। বৃষ্টি হলে আরও ভয় লাগে।
এলাকার বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সাঁকোর নিচে পানি অনেক গভীর। কচুরিপানায় কিছু দেখা যায় না। বাচ্চারা পড়ে গেলে কোথায় যাবে কে জানে! স্থায়ী সেতু তৈরি ছাড়া উপায় নেই।
স্থানীয় গৃহবধূ সেলিনা বেগম বলেন, বাচ্চা স্কুলে গেলে সাঁকো পার না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকি। প্রতিদিনই মনে হয় পানিতে পড়ে যাবে।
প্রধান শিক্ষিকা মোছা. ফাতেমা খাতুন জানান, একদিন একসঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থী উঠতেই সাঁকো এমনভাবে কেঁপেছিল যে ভেবেছিলাম ভেঙে পড়বে। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সহকারী শিক্ষক মো. কামাল হোসেন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থায়ী সেতু ছাড়া শিক্ষার মান স্বাভাবিক রাখা কঠিন।
ভাঙ্গুড়া সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। স্থায়ী সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রকৌশল বিভাগকে জানানো হবে।
বিদ্যালয়ের ১২০ শিশুর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে স্থায়ী সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপেই থামতে পারে এই ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) : পুঁইবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নড়বড়ে বাঁশ কাঠের সাঁকো পেরিয়ে স্কুলে আসছে -সংবাদ
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের পুঁইবিল গ্রামে অবস্থিত পুঁইবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা যাওয়া এখন যেন এক দুঃস্বপ্নের যাত্রা।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ও ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হওয়া এই বিদ্যালয়ে ১২০ জন শিক্ষার্থীকে ৫ জন শিক্ষক পাঠদান করে আসছেন। তবে এসব শিশুর শিক্ষার পথে সবচেয়ে বড় বাধা একটি নড়বড়ে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো, যেটি পার হতে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলের সামনে রয়েছে বড় একটি জলাশয়। সেই জলাশয়ের ওপরই তৈরি করা হয়েছে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো। উপরে কচুরিপানা জমে থাকায় নিচের গভীরতা বোঝা যায় না। হাঁটলেই সাঁকো কাঁপে, তক্তাগুলো নড়বড়ে যে কোনো মুহূর্তেই ভেঙে পড়তে পারে। এই বিপজ্জনক সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে ১২০ জন শিক্ষার্থী, পাঁচজন শিক্ষকসহ দুই পাড়ের শত শত মানুষ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ২০ হাজার টাকা সহায়তা, বিদ্যালয়ের স্লিপ ফান্ড এবং স্থানীয়দের অবদান মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। তবে বর্ষার পানি ও ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে মাত্র কয়েক মাসেই তা নাজুক হয়ে পড়েছে।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিথি খাতুন জানায়, সাঁকোতে হাঁটলে কাঁপে। খুব ভয় লাগে। কিন্তু স্কুল তো যেতেই হবে।
৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হোসাইন আহমেদ বলে, বাতাস এলেই সাঁকো দুলতে থাকে। মনে হয় পড়ে যাব। বৃষ্টি হলে আরও ভয় লাগে।
এলাকার বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সাঁকোর নিচে পানি অনেক গভীর। কচুরিপানায় কিছু দেখা যায় না। বাচ্চারা পড়ে গেলে কোথায় যাবে কে জানে! স্থায়ী সেতু তৈরি ছাড়া উপায় নেই।
স্থানীয় গৃহবধূ সেলিনা বেগম বলেন, বাচ্চা স্কুলে গেলে সাঁকো পার না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকি। প্রতিদিনই মনে হয় পানিতে পড়ে যাবে।
প্রধান শিক্ষিকা মোছা. ফাতেমা খাতুন জানান, একদিন একসঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থী উঠতেই সাঁকো এমনভাবে কেঁপেছিল যে ভেবেছিলাম ভেঙে পড়বে। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সহকারী শিক্ষক মো. কামাল হোসেন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থায়ী সেতু ছাড়া শিক্ষার মান স্বাভাবিক রাখা কঠিন।
ভাঙ্গুড়া সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। স্থায়ী সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রকৌশল বিভাগকে জানানো হবে।
বিদ্যালয়ের ১২০ শিশুর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে স্থায়ী সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপেই থামতে পারে এই ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা।