নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দাবি করেছেন, তিনি কিংবা তার দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ‘ন্যায্য সুযোগ’ দেওয়া হয়নি। সোমবার,(১৭ নভেম্বর ২০২৫) রায়ের পর শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানান বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে।
রায়ের পর শেখ হাসিনা বিবৃতিতে বলেন, “এর মাধ্যমে একটি অনির্বাচিত সরকারের উগ্রপন্থি ব্যক্তিদের বেপরোয়া ও হত্যার মানসিকতা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
জুলাই আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যায় উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দেওয়া, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে চার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সবগুলো অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ তুলেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা পুরোপুরি অস্বীকার করছি। গেল বছরের জুলাই ও অগাস্টের সহিংসতায় আমি দুই পক্ষের প্রতিটি মৃত্যুর জন্যই শোকাহত ছিলাম। ওই সময় আমি কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক নেতা কোনো আন্দোলনকারীকে হত্যার নির্দেশ দেননি।”
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার অনুপস্থিতিতে যে বিচারকাজ হয়েছে, সেখানে আমার পছন্দের কোনো আইনজীবীও ছিলেন না।
“নামের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দ থাকলেও আইসিটিতে আন্তর্জাতিক বলে কিছু নেই। এ আদালত নিরপেক্ষও নয়।”
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা তিনটি অভিযোগ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, যেসব জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বা আইনজীবী তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছিলেন, তাদের সবাইকে ‘হয় অপসারণ করা হয়েছে, নয়তো ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে’ দেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ অন্যদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত সহিংসতায় জড়িত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ আদালত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং সমাজকে পেছনে ঠেলে দেওয়া প্রশাসনের অধীনে যে কোটি কোটি বাংলাদেশি দুঃখ–কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের বোকা বানানো যাবে না।
“তারা দেখতে পাচ্ছেন, তথাকথিত এই ট্রাইব্যুনালের বিচার কখনোই ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে করা হয়নি। এর উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে বলির পাঁঠা বানানো এবং ড. ইউনূসের ব্যর্থতা থেকে বিশ্বের দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া।”শেখ হাসিনা বলেন, “সবই প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, এনজিও, এমনকি আইএমএফের মত সংস্থাগুলোর যাচাই-বাছাইও সেটাই বলছে। আমি এটাও বলতে চাই, বাংলাদেশের একজন মানুষও তাকে সমর্থন জানাননি।”
বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় পান না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “যথাযথ আদালতে বিচার হতে হবে, যেখানে সব নথিপ্রমাণ নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন ও যাচাই করা যাবে।
“এ কারণেই আমি অভিযোগসমূহ হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপন করতে বারবার অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি।”
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দাবি করেছেন, তিনি কিংবা তার দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ‘ন্যায্য সুযোগ’ দেওয়া হয়নি। সোমবার,(১৭ নভেম্বর ২০২৫) রায়ের পর শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে এমন প্রতিক্রিয়া জানান বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে।
রায়ের পর শেখ হাসিনা বিবৃতিতে বলেন, “এর মাধ্যমে একটি অনির্বাচিত সরকারের উগ্রপন্থি ব্যক্তিদের বেপরোয়া ও হত্যার মানসিকতা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
জুলাই আন্দোলন দমনে ১৪০০ জনকে হত্যায় উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দেওয়া, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের’ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে চার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সবগুলো অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ তুলেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা পুরোপুরি অস্বীকার করছি। গেল বছরের জুলাই ও অগাস্টের সহিংসতায় আমি দুই পক্ষের প্রতিটি মৃত্যুর জন্যই শোকাহত ছিলাম। ওই সময় আমি কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক নেতা কোনো আন্দোলনকারীকে হত্যার নির্দেশ দেননি।”
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার অনুপস্থিতিতে যে বিচারকাজ হয়েছে, সেখানে আমার পছন্দের কোনো আইনজীবীও ছিলেন না।
“নামের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দ থাকলেও আইসিটিতে আন্তর্জাতিক বলে কিছু নেই। এ আদালত নিরপেক্ষও নয়।”
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা তিনটি অভিযোগ তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, যেসব জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বা আইনজীবী তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছিলেন, তাদের সবাইকে ‘হয় অপসারণ করা হয়েছে, নয়তো ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে’ দেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ অন্যদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত সহিংসতায় জড়িত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ আদালত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং সমাজকে পেছনে ঠেলে দেওয়া প্রশাসনের অধীনে যে কোটি কোটি বাংলাদেশি দুঃখ–কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের বোকা বানানো যাবে না।
“তারা দেখতে পাচ্ছেন, তথাকথিত এই ট্রাইব্যুনালের বিচার কখনোই ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে করা হয়নি। এর উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে বলির পাঁঠা বানানো এবং ড. ইউনূসের ব্যর্থতা থেকে বিশ্বের দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া।”শেখ হাসিনা বলেন, “সবই প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, এনজিও, এমনকি আইএমএফের মত সংস্থাগুলোর যাচাই-বাছাইও সেটাই বলছে। আমি এটাও বলতে চাই, বাংলাদেশের একজন মানুষও তাকে সমর্থন জানাননি।”
বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় পান না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “যথাযথ আদালতে বিচার হতে হবে, যেখানে সব নথিপ্রমাণ নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন ও যাচাই করা যাবে।
“এ কারণেই আমি অভিযোগসমূহ হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপন করতে বারবার অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি।”