alt

মুখ থুবড়ে পড়েছে নাটোরের লালপুরের ঐতিহ্য কাঁসা শিল্প

আশীষ কুমার সরকার সুইট, লালপুর (নাটোর) : মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

নাটোরের লালপুরে কাঁসা কারখানায় কাজ করছেন কারিগর -সংবাদ

কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আর পুঁজির অভাব, স্বল্পমূল্যে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রীর ব্যাপক বিস্তারে মুখথুবড়ে পড়ছে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্প। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ওঠা ছোট-বড় কাঁসার কারখানাগুলোর বেশিরভাগই ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

অ্যালুমিনিয়াম, সীসা, মেলামাইন, প্লাস্টিক, সিরামিক আর কাঁচের তৈজসপত্রের ভিড়ে কাঁসা-পিতল হারিয়ে যাচ্ছে

এরকম নানা সমস্যা জর্জরিত হয়ে ঝিমিয়ে পড়ছে নাটোরের লালপুরের কাঁসারী বাজার, থেমে যাচ্ছে কাঁসা পেটানোর শব্দ। এক সময় যেখানে দৈনন্দিন তৈজসপত্রের অধিকাংশই তৈরি হতো কাঁসা দিয়ে, এখন সেখানে কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আর পুঁজির অভাবসহ স্বল্পমূল্যে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী ব্যবহারে এ শিল্প মুখথুবড়ে পড়ছে।

কালের বিবর্তনে কাঁসাশিল্পের জৌলুস অনেকটাই হারিয়ে গেছে। অসংখ্য পরিবার জড়িয়ে ছিল এই শিল্পের সঙ্গে। বংশপরম্পরায় চলে আসা এ পেশাটি এখন ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক পরিবার। এখন অ্যালুমিনিয়াম, সীসা, মেলামাইন, প্লাস্টিক, সিরামিক আর কাঁচের তৈজসপত্রের ভিড়ে কাঁসা-পিতলের প্রচলন হারিয়ে যাচ্ছে। এখনো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে আগের মতো কাঁসার তৈজসপত্রের কদর বিদ্যমান। দেশে-বিদেশে কাঁসার বাসনকোসনের বিপুল চাহিদা রয়েছে। এত কিছুর পরও কাঁসা সামগ্রীর কদর একেবারে ফুরিয়ে যায়নি। গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখনো গৃহস্থালীর কাজের জন্য কাঁসাজ পণ্য ব্যবহার করছেন।

জানা যায়, নবাবী আমলে বর্গীয় হাঙ্গামার সময় বর্গিদের অত্যাচারে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমার খাগড়া থেকে কাঁসা বণিক ও শ্রমিক নাটোরের লালপুর, সিংড়ার কলমে ও নবাবগঞ্জে বসতি স্থাপন করে। লালপুরে ৫০টি কারখানায় দক্ষ কারিগররা সুনিপুণ হাতে কাঁসা-পিতলের বগি থালা, টেডি প্লেট, বর প্লেট, বিভিন্ন ডিজাইনের গ্লাস, গলাচিপা কলস, রেকাব, পানদানি, ডাবর, জগ, ঘটি, বাটি, পিকদানি, ফুলদানি, হুক্কা, গামলা, পাতিল, ডেকচি ও ঘণ্টা ইত্যাদি তৈরি করতেন।

কাঁসাশিল্পীরা জানান, কাঁসার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত তামা আর রাংয়ের দষ্প্রাপ্যতা এই শিল্পকে সংকটের মুখে দাঁড় করেছে। তামা দেশে কমবেশি পাওয়া গেলেও রাং আমদানি করতে হয় মালয়েশিয়া থেকে। এ ছাড়া বেড়েছে কয়লার দাম। আর এসব কারণে টিকে থাকতে পারছে না কাঁসাশিল্প। ফলে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে অনেক কাঁসাশিল্প সংশ্লিষ্ট পরিবার। এখন নানা সংকটের কারণে টিকে আছে মাত্র ৪-৫টি কারখানা। হাঁটিহাঁটি পা-পা করে যে কয়টি কারখানা টিকে রয়েছে, তাও হুমকির মুখে। ভারতে কাঁসার দাম বেশি হওয়ায় চোরাইপথে পাচার হয়। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে অনীহা, দক্ষ শ্রমিকের অভাব আর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় উৎপাদন কমে গেছে।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, সরকার সহজ শর্তে ব্যাংকঋণ, শুল্কমুক্ত আমদানি-রপ্তানির উদ্যোগ নিলে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী এই কাঁসাশিল্পটি টিকে থাকবে। অন্যথায় শিল্পটি মসলিন শিল্পের মতো কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে বলে মনে করেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

ছবি

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এনসিডি কর্নারে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ নিশ্চিত করা হবে

ছবি

মহিচাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন ‘ব্যবসায়ীর গোডাউন’

ছবি

কোটালীপাড়ায় থানা ও উপজেলা পরিষদে ককটেল বিষ্ফোরণ, ৩ পুলিশ সদস্য আহত

ছবি

সিংড়ায় ভরা মৌসুমেও সবজির দাম আকাশছোঁয়া

ছবি

শিবপুরে প্রাথমিকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির প্রথম দিনেই অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

সিরাজদিখানে পুলিশের সামনেই যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মিছিল

ছবি

কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময় সভা

ছবি

সরকারি কলেজের প্রভাষকদের নো প্রমোশন, নো ওয়ার্ক কর্মসূচি

ছবি

রায়গঞ্জে সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির বিশেষ সভা

অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে গৃহবধূর মৃত্যু

ছবি

শার্শায় বোমা বিস্ফোরণে যুবক আহত

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় স্বামীর মোটরসাইকেল থেকে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যু

ছবি

নন্দীগ্রামে নবান্নে মাছের মেলা

ছবি

নিজামপুর ইউনিয়ন পরিষদে অগ্নিকান্ড গুরুত্বপূর্ণ নথি ছাই

ছবি

তাহিরপুরে মনোনয়ন পুনর্ম্যূলায়নের দাবিতে গণমিছিল

ছবি

জীবননগরে সড়কে গাছ ফেলে নৈশকোচে ডাকাতি

ছবি

কালিয়াকৈ বন্ধ করে দেওয়া হলো দেওয়ান ডিজিটাল হাসপাতাল

ছবি

সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর, সেনা মোতায়েন

ছবি

বেশী দামে সার বিক্রি করায় ব্যবসায়ীকে জরিমানা

ছবি

গৌরীপুরে সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

ছবি

ভালুকায় সোনালী ধানে ভরে উঠছে কৃষকের আঙ্গিনা

ছবি

ধনবাড়ীতে গাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টা প্রতিপক্ষরা

ছবি

চিলমারীতে ঠান্ডা জনিত রোগে বিপাকে শিশু ও বয়স্করা

ছবি

সিরাজদিখানে জাটকায় সয়লাব মাছ বাজার

ছবি

সভাপতি হাবিব, সম্পাদক মোস্তফা

ছবি

পঞ্চগড়ে বিলুপ্তির পথে কাছারি ঘর

ছবি

অটো ছিনতাইকারীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ছবি

নড়াইলে গ্রাম আদালত শক্তিশালীকরণে গুরুত্বারোপ

ছবি

রাজিবপুরে বিএনপির প্রার্থীর মতবিনিময় সভা

ছবি

পূর্বধলায় আ.লীগের ২ নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

খোকসায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

ছবি

একমাত্র সম্ভল পাওয়ার টিলার হারিয়ে পথে বসেছে আনিসুর

ছবি

সদরপুরে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে ৬ ফার্মেসিকে জরিমানা

ছবি

শীতের আগমনে গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে রোগীর চাপ

ছবি

ঝালকাঠিতে প্রায় শতভাগ শিশু পেয়েছে টাইফয়েড টিকা

ছবি

কুমিল্লায় নৃ-সিংহ দেব মন্দিরে নীলাকীর্তন

tab

মুখ থুবড়ে পড়েছে নাটোরের লালপুরের ঐতিহ্য কাঁসা শিল্প

আশীষ কুমার সরকার সুইট, লালপুর (নাটোর)

নাটোরের লালপুরে কাঁসা কারখানায় কাজ করছেন কারিগর -সংবাদ

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আর পুঁজির অভাব, স্বল্পমূল্যে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রীর ব্যাপক বিস্তারে মুখথুবড়ে পড়ছে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্প। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ওঠা ছোট-বড় কাঁসার কারখানাগুলোর বেশিরভাগই ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

অ্যালুমিনিয়াম, সীসা, মেলামাইন, প্লাস্টিক, সিরামিক আর কাঁচের তৈজসপত্রের ভিড়ে কাঁসা-পিতল হারিয়ে যাচ্ছে

এরকম নানা সমস্যা জর্জরিত হয়ে ঝিমিয়ে পড়ছে নাটোরের লালপুরের কাঁসারী বাজার, থেমে যাচ্ছে কাঁসা পেটানোর শব্দ। এক সময় যেখানে দৈনন্দিন তৈজসপত্রের অধিকাংশই তৈরি হতো কাঁসা দিয়ে, এখন সেখানে কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আর পুঁজির অভাবসহ স্বল্পমূল্যে প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী ব্যবহারে এ শিল্প মুখথুবড়ে পড়ছে।

কালের বিবর্তনে কাঁসাশিল্পের জৌলুস অনেকটাই হারিয়ে গেছে। অসংখ্য পরিবার জড়িয়ে ছিল এই শিল্পের সঙ্গে। বংশপরম্পরায় চলে আসা এ পেশাটি এখন ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক পরিবার। এখন অ্যালুমিনিয়াম, সীসা, মেলামাইন, প্লাস্টিক, সিরামিক আর কাঁচের তৈজসপত্রের ভিড়ে কাঁসা-পিতলের প্রচলন হারিয়ে যাচ্ছে। এখনো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে আগের মতো কাঁসার তৈজসপত্রের কদর বিদ্যমান। দেশে-বিদেশে কাঁসার বাসনকোসনের বিপুল চাহিদা রয়েছে। এত কিছুর পরও কাঁসা সামগ্রীর কদর একেবারে ফুরিয়ে যায়নি। গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখনো গৃহস্থালীর কাজের জন্য কাঁসাজ পণ্য ব্যবহার করছেন।

জানা যায়, নবাবী আমলে বর্গীয় হাঙ্গামার সময় বর্গিদের অত্যাচারে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমার খাগড়া থেকে কাঁসা বণিক ও শ্রমিক নাটোরের লালপুর, সিংড়ার কলমে ও নবাবগঞ্জে বসতি স্থাপন করে। লালপুরে ৫০টি কারখানায় দক্ষ কারিগররা সুনিপুণ হাতে কাঁসা-পিতলের বগি থালা, টেডি প্লেট, বর প্লেট, বিভিন্ন ডিজাইনের গ্লাস, গলাচিপা কলস, রেকাব, পানদানি, ডাবর, জগ, ঘটি, বাটি, পিকদানি, ফুলদানি, হুক্কা, গামলা, পাতিল, ডেকচি ও ঘণ্টা ইত্যাদি তৈরি করতেন।

কাঁসাশিল্পীরা জানান, কাঁসার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত তামা আর রাংয়ের দষ্প্রাপ্যতা এই শিল্পকে সংকটের মুখে দাঁড় করেছে। তামা দেশে কমবেশি পাওয়া গেলেও রাং আমদানি করতে হয় মালয়েশিয়া থেকে। এ ছাড়া বেড়েছে কয়লার দাম। আর এসব কারণে টিকে থাকতে পারছে না কাঁসাশিল্প। ফলে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে অনেক কাঁসাশিল্প সংশ্লিষ্ট পরিবার। এখন নানা সংকটের কারণে টিকে আছে মাত্র ৪-৫টি কারখানা। হাঁটিহাঁটি পা-পা করে যে কয়টি কারখানা টিকে রয়েছে, তাও হুমকির মুখে। ভারতে কাঁসার দাম বেশি হওয়ায় চোরাইপথে পাচার হয়। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে অনীহা, দক্ষ শ্রমিকের অভাব আর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকায় উৎপাদন কমে গেছে।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, সরকার সহজ শর্তে ব্যাংকঋণ, শুল্কমুক্ত আমদানি-রপ্তানির উদ্যোগ নিলে একমাত্র ঐতিহ্যবাহী এই কাঁসাশিল্পটি টিকে থাকবে। অন্যথায় শিল্পটি মসলিন শিল্পের মতো কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে বলে মনে করেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

back to top