কৃষকের ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসব
মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট): মাঠে মাঠে পাকা আমন ধান -সংবাদ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি, ফসলে মাঠজুড়ে এখন সোনালী ফসলের সমরহ। প্রতিটি ধানের শীষের ডগায় ডগায় থোকা ভর্তি ধান, বাতাসে দুলছে গোটা মাঠ জুড়ে অপরুপ দৃশ্য। কৃষক ধান কেটে ঘরে তুলছেন। নতুন ধান ঘরে তোলায় বাঙালির সাংস্কৃতির প্রাচীনতম চিরচারিত ঐতিহ্য। নবান্ন উৎসব এ উৎসবকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের জোয়ার। কৃষকের ঘরে উঠবে নতুন ফসল। গত বছরের চেয়ে বিঘা প্রতি আমন ধান বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ মন এ বছরে ফলন বৃদ্ধি হওয়ায় বিগত বছর গুলোর লোকসান কাটিয়ে উঠে লাভের মুখ দেখছেন সাধানর কৃষকেরা।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের সোমাদ্দারখালী পাথুরিয়া কালিবাড়ি, মঠবাড়ী, পাজাখোলা, সোনাতলসহ একাধীক গ্রামের কৃষকদের মাঠজুড়ে এখন আমন ফসলের সমরহ। কোথাও কোথাও ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক। আবার অনেকে দু-এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি চলছে। চারদিকে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। শতশত বিঘা ফসলি জমিতে সোনালী পাকা ধানের শীষগুলো বাতাসে দুলছে।
জিউধরা ইউনিয়ন পরিষধের প্যানেল চেয়ারম্যান সালমা আক্তার বলেন এক সময় জিউধরায় মৎস্য চাষর উপরে সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহ হত। এ বছর কৃষক অধিক ফসল ফলানোর কারনে আজকের এ ভালো ফলন। অন্যরা এ ভালো ফলন দেখে আগামীতে চাষাবাদে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি হবে বলে তিনি মনে করেন।
কালিবাড়ি গ্রামের কৃষক অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক নিকুঞ্জু বিহারী সুতার তিনি ৭ একর তথা ২১ বিঘা জমিতে আমন ধান এ বছর উৎপাদন করেছেন ফলন খুবই ভালো হয়েছে, গত বছর যেখানে বিঘায় পেয়েছে ১৭ মন ধান এবছরে ২২-২৫ মন ধান ঘরে তুলতে পারবেন আশা করছেন। এরকম স্বপন খান, পলাশ কুমার সাধিয়াল, সুধাম চন্দ্র হালদার, কৃষানী পিংকী হালদার, কৃষ্ণা রানী হালদার, হাসি রানী হালদার, জয়ন্তী বিশ্বাস এরা প্রত্যেকেই ২/৩ একর আমন ফসলি জমিতে ধান ফলিয়েছে আর মাত্র ১ সপ্তাহ পরে ধান কর্তন করবে। সার ঔষুধ শ্রমিক মজুরি, চাষাবাদ সহ ব্যায় হয়েছে প্রতি বিঘা জমিতে ৭ হাজার টাকা ব্যায় মিটিয়ে তাদের বিক্রী নামবে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
বর্তমান বাজাদর ভালো থাকায় প্রতি মন ধান ১২শো টাকায় বেপারীরা কৃষকের বাড়ি থেকে কিনছেন। অধিক ফলন ভালো হওয়ার কারন কৃষেকেরা জানিয়েছেন এ বছরে বন্যা জলচ্ছাস না থাকা পোকা মাকরের আক্রমণ কম আবহাওয়া অনুকূলে বিরাজ করা কৃষি দপ্তর থেকে কৃষকদেরকে বিভিন্ন সময় পরামর্শ মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ব্যাপক তদরকি থাকায় এ বছরের তাদের আমন ফসল বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন তারা। অগ্রায়নে নতুন ধান ঘরে তোলায় এ নবান্ন উৎসব প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে পালন করছেন।
এদিকে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় এ বছরে ২৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আমন আবাধ করেছেন কৃষক। এর মধ্য স্থানীয় দেশি আমন ১৮ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের (উফশি) ৬ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আবাধ হয়েছে। লক্ষ মাত্রা ২৫ হাজার ১৮০ হেক্টরের।
এ বিষয়ে কথা হয় জিউধরা ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরাদ শেখ বলেন, জিউধরা ইউনিয়নের ১৪শ’ ১৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাধ হয়েছে বিগত বছরের চেয়ে এ বছর কৃষক অধিক ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে কৃষি দপ্তর থেকে তাদেরকে সু-নির্দিষ্ট সময়ে প্রনোদনা বিষ সহায়তা বিভিন্ন প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও পাঠনার ফিল্ড স্কুল এর মাধ্যমে কৃষকদের গ্রুপ ভিত্তিক সম-সাময়িক সমস্যাগুলো সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কারনেই বাম্পার ফলন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে কৃষক।
এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিধ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় এ বছরে আমন ধানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে, তবে গত বারের থেকে আবাধ কমেছে। জলবদ্ধতা অতিবৃষ্টির কারনে মৌসুম শুরু হতে দেরি হওয়া, অনেক জমি মৎস্য ঘেরে আওতায় বসত বাড়ি নির্মান ও ফলজ ও বনজ বাগান হওয়ায় আমনের জমির পরিমান কমে এসেছে। তবে গত ২-৪ বছরের চেয়ে ফসল বৃদ্ধি পেয়েছে ধানের বাজার দর ও ভালো পাচ্ছেন কৃষক। ইতিমধ্য কোন কোন স্থানে ধান কাটা শুরু হয়েছে, ২-১ সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে সব জায়গায় ধান কর্তন শুরু করবে কৃষক।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
কৃষকের ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসব
মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট): মাঠে মাঠে পাকা আমন ধান -সংবাদ
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি, ফসলে মাঠজুড়ে এখন সোনালী ফসলের সমরহ। প্রতিটি ধানের শীষের ডগায় ডগায় থোকা ভর্তি ধান, বাতাসে দুলছে গোটা মাঠ জুড়ে অপরুপ দৃশ্য। কৃষক ধান কেটে ঘরে তুলছেন। নতুন ধান ঘরে তোলায় বাঙালির সাংস্কৃতির প্রাচীনতম চিরচারিত ঐতিহ্য। নবান্ন উৎসব এ উৎসবকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিটি ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের জোয়ার। কৃষকের ঘরে উঠবে নতুন ফসল। গত বছরের চেয়ে বিঘা প্রতি আমন ধান বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ মন এ বছরে ফলন বৃদ্ধি হওয়ায় বিগত বছর গুলোর লোকসান কাটিয়ে উঠে লাভের মুখ দেখছেন সাধানর কৃষকেরা।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের সোমাদ্দারখালী পাথুরিয়া কালিবাড়ি, মঠবাড়ী, পাজাখোলা, সোনাতলসহ একাধীক গ্রামের কৃষকদের মাঠজুড়ে এখন আমন ফসলের সমরহ। কোথাও কোথাও ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক। আবার অনেকে দু-এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি চলছে। চারদিকে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। শতশত বিঘা ফসলি জমিতে সোনালী পাকা ধানের শীষগুলো বাতাসে দুলছে।
জিউধরা ইউনিয়ন পরিষধের প্যানেল চেয়ারম্যান সালমা আক্তার বলেন এক সময় জিউধরায় মৎস্য চাষর উপরে সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহ হত। এ বছর কৃষক অধিক ফসল ফলানোর কারনে আজকের এ ভালো ফলন। অন্যরা এ ভালো ফলন দেখে আগামীতে চাষাবাদে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি হবে বলে তিনি মনে করেন।
কালিবাড়ি গ্রামের কৃষক অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক নিকুঞ্জু বিহারী সুতার তিনি ৭ একর তথা ২১ বিঘা জমিতে আমন ধান এ বছর উৎপাদন করেছেন ফলন খুবই ভালো হয়েছে, গত বছর যেখানে বিঘায় পেয়েছে ১৭ মন ধান এবছরে ২২-২৫ মন ধান ঘরে তুলতে পারবেন আশা করছেন। এরকম স্বপন খান, পলাশ কুমার সাধিয়াল, সুধাম চন্দ্র হালদার, কৃষানী পিংকী হালদার, কৃষ্ণা রানী হালদার, হাসি রানী হালদার, জয়ন্তী বিশ্বাস এরা প্রত্যেকেই ২/৩ একর আমন ফসলি জমিতে ধান ফলিয়েছে আর মাত্র ১ সপ্তাহ পরে ধান কর্তন করবে। সার ঔষুধ শ্রমিক মজুরি, চাষাবাদ সহ ব্যায় হয়েছে প্রতি বিঘা জমিতে ৭ হাজার টাকা ব্যায় মিটিয়ে তাদের বিক্রী নামবে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
বর্তমান বাজাদর ভালো থাকায় প্রতি মন ধান ১২শো টাকায় বেপারীরা কৃষকের বাড়ি থেকে কিনছেন। অধিক ফলন ভালো হওয়ার কারন কৃষেকেরা জানিয়েছেন এ বছরে বন্যা জলচ্ছাস না থাকা পোকা মাকরের আক্রমণ কম আবহাওয়া অনুকূলে বিরাজ করা কৃষি দপ্তর থেকে কৃষকদেরকে বিভিন্ন সময় পরামর্শ মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ব্যাপক তদরকি থাকায় এ বছরের তাদের আমন ফসল বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন তারা। অগ্রায়নে নতুন ধান ঘরে তোলায় এ নবান্ন উৎসব প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে পালন করছেন।
এদিকে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় এ বছরে ২৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আমন আবাধ করেছেন কৃষক। এর মধ্য স্থানীয় দেশি আমন ১৮ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের (উফশি) ৬ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আবাধ হয়েছে। লক্ষ মাত্রা ২৫ হাজার ১৮০ হেক্টরের।
এ বিষয়ে কথা হয় জিউধরা ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরাদ শেখ বলেন, জিউধরা ইউনিয়নের ১৪শ’ ১৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাধ হয়েছে বিগত বছরের চেয়ে এ বছর কৃষক অধিক ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে কৃষি দপ্তর থেকে তাদেরকে সু-নির্দিষ্ট সময়ে প্রনোদনা বিষ সহায়তা বিভিন্ন প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও পাঠনার ফিল্ড স্কুল এর মাধ্যমে কৃষকদের গ্রুপ ভিত্তিক সম-সাময়িক সমস্যাগুলো সমাধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে কারনেই বাম্পার ফলন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে কৃষক।
এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিধ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় এ বছরে আমন ধানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে, তবে গত বারের থেকে আবাধ কমেছে। জলবদ্ধতা অতিবৃষ্টির কারনে মৌসুম শুরু হতে দেরি হওয়া, অনেক জমি মৎস্য ঘেরে আওতায় বসত বাড়ি নির্মান ও ফলজ ও বনজ বাগান হওয়ায় আমনের জমির পরিমান কমে এসেছে। তবে গত ২-৪ বছরের চেয়ে ফসল বৃদ্ধি পেয়েছে ধানের বাজার দর ও ভালো পাচ্ছেন কৃষক। ইতিমধ্য কোন কোন স্থানে ধান কাটা শুরু হয়েছে, ২-১ সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে সব জায়গায় ধান কর্তন শুরু করবে কৃষক।