ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চর ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ শেখ ওরফে খতিব হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মহিলা সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহত লতিফ চর ফরিদপুর গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সলঙ্গা থানা আমলি আদালত) শাহরিয়ার বাপ্পীর আদালতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শাহীনুরের সঙ্গে দুই বছর ধরে পরকীয়া চালিয়ে আসছিলেন গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ শেখ ওরফে খতিব। পরবর্তীতে খতিবের ছোট ভগ্নিপতি রফিকুল ইসলামও শাহীনুরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নিজেদের প্রেমের পথে কাঁটা খতিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহীনুর ও রফিকুল। পরিকল্পনা মোতাবেক কয়েকজনকে ভাড়া করে শ্বাসরোধে হত্যার পর হাত-পায়ে ইট বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
আসামিরা হলেন, সলঙ্গা থানার চর ফরিদপুর গ্রামের মো. আব্দুল গফুর শেখের ছেলে মো. মাসুদ রানা (৩৮), একই গ্রামের আব্দুল মান্নান মণ্ডলের ছেলে মো. ফরিদুল ইসলাম (৪২), প্রবাসী মতিউর রহমান মতির স্ত্রী মোছা. শাহিনুর খাতুন (৪০) ও দোস্তপাড়া গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে ভিকটিম খতিবের ভগ্নিপতি মো. রফিকুল ইসলাম (৪০)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক রতন জানান, গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন খতিব। তিনদিন পর ১২ নভেম্বর সকালে ফুলজোড় নদীর খাড়াঘাট নামক এলাকা থেকে হাত-পায়ে ইট বাঁধা অবস্থায় খতিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ক্লু-লেস এই মামলার রহস্য উদঘাটনে তদন্তে পুলিশ সুপার একটি টিম গঠন করেন। টিমটি তথ্যপ্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সনাক্ত করে। গত সোমবার বিকালে আসামি নিজ চা-স্টলে অভিযান চালিয়ে ফরিদুল ও মাসুদকে, একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় নিজ বাড়ি থেকে শাহীনুরকে এবং সন্ধ্যা ৭টায় চর ফরিদপুরের শ্বশুরবাড়ি থেকে রফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে প্রবাসী মতিউর রহমানের স্ত্রী শাহীনুরের সঙ্গে দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন খতিব। সম্পর্ক চলাকালে শাহীনুরের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন তিনি। এক পর্যায়ে শাহীনুর পাওনা টাকা ফেরত চাইলে খতিব অস্বীকার করেন। এ থেকেই দুজনের মাঝে সম্পর্ক কিছুটা নষ্ট হয়। এ অবস্থায় খতিবের আপন ছোট ভগ্নিপতি রফিকুল শাহীনুরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নিজেদের প্রেমের পথে কাঁটা খতিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহীনুর ও রফিকুল। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদ ও ফরিদুলসহ আরও বেশ কয়েকজনকে দুই লাখ টাকায় ভাড়া করেন শাহীনুর।
ঘটনার দিন শাহীনুর নিজেই খতিবকে নদীর ঘাটে ডেকে নেন। সেখানে আগে থেকেই অন্যান্য আসামিরা অবস্থান করছিলেন। এ সময় খতিবকে ঘুমের ওষুধ মেশানো কোমল পানীয় পান করান শাহীনুর। এতে খতিব ঝিমিয়ে পড়লে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করার পর হাত-পায়ে ইট বেঁধে ফুলজোড় নদীতে ফেলে দেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চর ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ শেখ ওরফে খতিব হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মহিলা সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহত লতিফ চর ফরিদপুর গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সলঙ্গা থানা আমলি আদালত) শাহরিয়ার বাপ্পীর আদালতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শাহীনুরের সঙ্গে দুই বছর ধরে পরকীয়া চালিয়ে আসছিলেন গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ শেখ ওরফে খতিব। পরবর্তীতে খতিবের ছোট ভগ্নিপতি রফিকুল ইসলামও শাহীনুরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নিজেদের প্রেমের পথে কাঁটা খতিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহীনুর ও রফিকুল। পরিকল্পনা মোতাবেক কয়েকজনকে ভাড়া করে শ্বাসরোধে হত্যার পর হাত-পায়ে ইট বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
আসামিরা হলেন, সলঙ্গা থানার চর ফরিদপুর গ্রামের মো. আব্দুল গফুর শেখের ছেলে মো. মাসুদ রানা (৩৮), একই গ্রামের আব্দুল মান্নান মণ্ডলের ছেলে মো. ফরিদুল ইসলাম (৪২), প্রবাসী মতিউর রহমান মতির স্ত্রী মোছা. শাহিনুর খাতুন (৪০) ও দোস্তপাড়া গ্রামের মৃত মন্তাজ আলীর ছেলে ভিকটিম খতিবের ভগ্নিপতি মো. রফিকুল ইসলাম (৪০)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক রতন জানান, গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন খতিব। তিনদিন পর ১২ নভেম্বর সকালে ফুলজোড় নদীর খাড়াঘাট নামক এলাকা থেকে হাত-পায়ে ইট বাঁধা অবস্থায় খতিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ক্লু-লেস এই মামলার রহস্য উদঘাটনে তদন্তে পুলিশ সুপার একটি টিম গঠন করেন। টিমটি তথ্যপ্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সনাক্ত করে। গত সোমবার বিকালে আসামি নিজ চা-স্টলে অভিযান চালিয়ে ফরিদুল ও মাসুদকে, একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় নিজ বাড়ি থেকে শাহীনুরকে এবং সন্ধ্যা ৭টায় চর ফরিদপুরের শ্বশুরবাড়ি থেকে রফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে প্রবাসী মতিউর রহমানের স্ত্রী শাহীনুরের সঙ্গে দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছিলেন খতিব। সম্পর্ক চলাকালে শাহীনুরের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন তিনি। এক পর্যায়ে শাহীনুর পাওনা টাকা ফেরত চাইলে খতিব অস্বীকার করেন। এ থেকেই দুজনের মাঝে সম্পর্ক কিছুটা নষ্ট হয়। এ অবস্থায় খতিবের আপন ছোট ভগ্নিপতি রফিকুল শাহীনুরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। নিজেদের প্রেমের পথে কাঁটা খতিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহীনুর ও রফিকুল। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদ ও ফরিদুলসহ আরও বেশ কয়েকজনকে দুই লাখ টাকায় ভাড়া করেন শাহীনুর।
ঘটনার দিন শাহীনুর নিজেই খতিবকে নদীর ঘাটে ডেকে নেন। সেখানে আগে থেকেই অন্যান্য আসামিরা অবস্থান করছিলেন। এ সময় খতিবকে ঘুমের ওষুধ মেশানো কোমল পানীয় পান করান শাহীনুর। এতে খতিব ঝিমিয়ে পড়লে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করার পর হাত-পায়ে ইট বেঁধে ফুলজোড় নদীতে ফেলে দেন।