রাজশাহী : নৌকা দিয়ে পারাপার শিক্ষার্থীদের -সংবাদ
রানী নদীর বুকে যখন সকালের কুয়াশা ভেসে থাকে, তখনই দেখা যায় কিছু ছোট্ট পা, স্বপ্নে ভরা, ভবিষ্যতের আলো নিয়ে এগিয়ে চলেছে স্কুলের পথে। কিন্তু সেই পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে নদী নীরব, কিন্তু নির্মম এক বাধা। বছরের পর বছর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেই নদী পাড় দিতে হতো অনিশ্চয়তা ও বিপদের দোলায় দুলতে দুলতে। তবু নদীর ওপারে ছিল জ্ঞানের আলো, ছিল তাদের আগামী। এমন সময়ে বাগমারা উপজেলা প্রশাসনের মানবতার নৌকায় একটি ছোট্ট উপহারে, যা অচেনা অন্ধকার সরিয়ে আনল উজ্জ্বল সকাল।
শিক্ষার্থীর নিরাপদ যাতায়াত, কৃষকের সুবিধা, আর তিন গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন পথচলায় এনেছে নতুন অধ্যায়। প্রকৃত অর্থেই এই উদ্যোগ শুধু একটি উন্নয়নকাজ নয়এটি মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, আর মানবিক প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগের কোমল স্পর্শ।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের ২১৫নং বীরকষা ত্রিমোহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের দুর্ভোগ কমাতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা প্রশাসন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা তাহমিনা খাতুনের উদ্যোগে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সহযোগিতায় এবং বাগমারার সুযোগ্য ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মাহবুবুল ইসলামের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্প (ইউডিপি) থেকে ৭০,০০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে একটি নৌকা উপহার দেওয়া হয়। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই নৌকা যোগে নিরাপদে নদী পাড় হয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছে।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বীরকয়া, লাউবাড়ীয়া ও কাস্টনাংলা তিন গ্রামের শতশত মানুষও প্রতিদিন রাণী নদী পারাপারে উপকৃত হচ্ছেন। সরকারি ব্রিজ না থাকায় এবং বিদ্যালয়ে যাতাযাতের রাস্তা কাঁচা থাকার কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের আঙিনায় পানি জমে জনদুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। তবে নৌকা উপহার দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিযে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ উপজেলা প্রশাসনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা জানান, নৌকাটি পাওয়ায় শিক্ষা, কৃষি ও নিত্যদিনের চলাচল এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে।
দীর্ঘদিন পরে হলেও এই উদ্যোগ তাদের জীবনমান উন্নয়ন ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিশ্চিন্তে পারাপারে এই উদ্যোগ এলাকাবাসীর মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক, লাউবাড়ীয়া গ্রামের শুকুর আলী, মোসলেম আলী ও আমজাদ হোসেনের সাথে কথা হলে তারা জানান, এই নৌকাটি শুধু একটি পরিবহন নয় এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক ও উন্নয়নমূলক প্রশাসনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতাযাতকে সহজ করতে এবং স্কুলে যেতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা একটি নৌকা) দিয়েছি। রাস্তা এবং ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে আমরা সামনের মিটিং এ আলোচনা করবো। যদি আমাদের বরাদ্দ দিয়ে করা যায় করবো, না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করবো।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রাজশাহী : নৌকা দিয়ে পারাপার শিক্ষার্থীদের -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
রানী নদীর বুকে যখন সকালের কুয়াশা ভেসে থাকে, তখনই দেখা যায় কিছু ছোট্ট পা, স্বপ্নে ভরা, ভবিষ্যতের আলো নিয়ে এগিয়ে চলেছে স্কুলের পথে। কিন্তু সেই পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে নদী নীরব, কিন্তু নির্মম এক বাধা। বছরের পর বছর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেই নদী পাড় দিতে হতো অনিশ্চয়তা ও বিপদের দোলায় দুলতে দুলতে। তবু নদীর ওপারে ছিল জ্ঞানের আলো, ছিল তাদের আগামী। এমন সময়ে বাগমারা উপজেলা প্রশাসনের মানবতার নৌকায় একটি ছোট্ট উপহারে, যা অচেনা অন্ধকার সরিয়ে আনল উজ্জ্বল সকাল।
শিক্ষার্থীর নিরাপদ যাতায়াত, কৃষকের সুবিধা, আর তিন গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন পথচলায় এনেছে নতুন অধ্যায়। প্রকৃত অর্থেই এই উদ্যোগ শুধু একটি উন্নয়নকাজ নয়এটি মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, আর মানবিক প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগের কোমল স্পর্শ।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের ২১৫নং বীরকষা ত্রিমোহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের দুর্ভোগ কমাতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা প্রশাসন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা তাহমিনা খাতুনের উদ্যোগে, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সহযোগিতায় এবং বাগমারার সুযোগ্য ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মাহবুবুল ইসলামের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্প (ইউডিপি) থেকে ৭০,০০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে একটি নৌকা উপহার দেওয়া হয়। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই নৌকা যোগে নিরাপদে নদী পাড় হয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছে।
শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বীরকয়া, লাউবাড়ীয়া ও কাস্টনাংলা তিন গ্রামের শতশত মানুষও প্রতিদিন রাণী নদী পারাপারে উপকৃত হচ্ছেন। সরকারি ব্রিজ না থাকায় এবং বিদ্যালয়ে যাতাযাতের রাস্তা কাঁচা থাকার কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের আঙিনায় পানি জমে জনদুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। তবে নৌকা উপহার দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিযে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ উপজেলা প্রশাসনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা জানান, নৌকাটি পাওয়ায় শিক্ষা, কৃষি ও নিত্যদিনের চলাচল এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে।
দীর্ঘদিন পরে হলেও এই উদ্যোগ তাদের জীবনমান উন্নয়ন ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিশ্চিন্তে পারাপারে এই উদ্যোগ এলাকাবাসীর মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক, লাউবাড়ীয়া গ্রামের শুকুর আলী, মোসলেম আলী ও আমজাদ হোসেনের সাথে কথা হলে তারা জানান, এই নৌকাটি শুধু একটি পরিবহন নয় এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক ও উন্নয়নমূলক প্রশাসনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতাযাতকে সহজ করতে এবং স্কুলে যেতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা একটি নৌকা) দিয়েছি। রাস্তা এবং ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে আমরা সামনের মিটিং এ আলোচনা করবো। যদি আমাদের বরাদ্দ দিয়ে করা যায় করবো, না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করবো।