বৃহস্পতিবার, কক্সবাজারের চকরিয়ায় ইটভাটায় অভিযানে গেলে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শ্রমিকরা -সংবাদ
লামা উপজেলার ফাইতংয়ের ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার পথে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশারটেক এলাকায় কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কায় থাকা ইটভাটার বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও স্থানীয় জনগণের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সড়কের ব্যারিকেড ভেঙে যেতে চাইলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ সময় বিজিবির একটি জীপ গাড়ি, র্যাবের টহল টিমের একটি গাড়ি ও অভিযান পরিচালনায় আনা স্কেভেটর বহনকারী ট্রাক ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ৫ জন শ্রমিককে আটক করে।
বৃহস্পতিবার, (২০ নভেম্বর ২০২৫) বেলা এগারোটার দিকে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের কাকারা-মানিকপুর সড়কের বাদশারটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার, সকাল ১০টার দিকে পরিবেশ. অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান উল ইসলাম ও পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মো. জমির উদ্দিনের নেতৃত্ব সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের নিয়ে লামা উপজেলার ফাইতং এলাকায় ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ায় পথে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশারটেক এলাকায় হাজারো শ্রমিক ও স্থানীয় জনগণ ব্যারিকেড দেয়। তারা সড়কে ইট ভাঙা ও যানবাহন রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় উপস্থিত শ্রমিক জনতা অভিযানের বিপক্ষে স্লোগান দিয়ে অবস্থান করে। এ অবস্থায় অভিযান বন্ধ ঘোষণা করে দুপুর দেড়টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফিরে যায়।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক বলেন, পরিবেশের দোহাই দিয়ে ফাইতং এলাকায় ইটভাটা ভেঙে ফেললে এ ভাটাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের উপোষ থাকতে হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন ও বাড়িঘর নির্মাণের উপকরণ ইট না পেলে দেশের মানুষের কষ্ট বাড়বে। শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের বিকল্প ব্যবস্থা না করে চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর ও পাশের ফাইতং ইউনিয়নের ইটভাটা ধ্বংস করা হলে বেকার হবে অন্তত ২০ হাজার শ্রমিক।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর ফাইতং এলাকায় ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে একইভাবে শ্রমিক জনতার বাধার মুখে পড়ে। অবশ্য ওইদিন চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর এলাকার তিনটি পরিবেশবান্ধব ইটভাটার চিমনি ভেঙে এবং কাঁচা ইট নষ্ট করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত অভিযান পরিচালনাকারী একটি টিম।
ওইদিনের ঘটনাকে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে গত ১৭ নভেম্বর লামা থানায় এনসিপি ও এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের
পরিদর্শক মোহাম্মদ নূর উদ্দিন।
ফাইতংয়ের ইটভাটা মালিক মাষ্টার খাইরুল ইসলাম ও দিদারুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বে ইটভাটা মালিকপক্ষের দায়ের করা দুটি রিট মামলার (মামলা নং ৯৬০৬/২২ ও মামলা নং ১৩১৯১/২২) পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ দূষণ হয় না এমন এলাকায় জায়গা শনাক্ত করে ইটভাটা পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসককে ছয়মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে সময় বেধে দেন মহামান্য হাইকোর্ট।
এরই আলোকে ইতোমধ্যে ইটভাটা মালিকরা বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করলেও কোনো সুরাহা মেলেনি।
এমন প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের বেধে দেয়া ছয়মাস সময়ের মধ্যে তিনমাস অতিবাহিত হয়েছে। এখনও বাকি রয়েছে তিনমাস সময়। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ইটভাটা করার উপযোগী জায়গা শনাক্ত করে না দিয়ে উল্টো কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা ইটভাটা সমূহ উচ্ছেদের নামে মালিক ও শ্রমিকদের হয়রানি করে যাচ্ছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, হাইকোর্টের দেয়া সময়ের আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইটভাটাগুলো সরিয়ে নিতে আমরা বাকি তিনমাস সময় চেয়েছি। বলেছি, তিনমাসের ভেতরে ইটভাটা সরিয়ে না নিলে জেল জরিমানা করলে তা আমরা মেনে নেব। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা আমাদের আবেদন আমলে নিচ্ছে না।
সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) অভিজিৎ দাশ বলেন, ফাইতংয়ের ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযানে যাবার পথে বৃহস্পতিবার, সকালে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশারটেক এলাকায় ইটভাটার শ্রমিকরা অভিযান টিমকে বাধা দেন। তারা সড়ক অবরোধ করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। এ সময় শ্রমিকদের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে যৌথবাহিনীর দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, কক্সবাজারের চকরিয়ায় ইটভাটায় অভিযানে গেলে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শ্রমিকরা -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
লামা উপজেলার ফাইতংয়ের ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার পথে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশারটেক এলাকায় কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কায় থাকা ইটভাটার বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও স্থানীয় জনগণের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সড়কের ব্যারিকেড ভেঙে যেতে চাইলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ সময় বিজিবির একটি জীপ গাড়ি, র্যাবের টহল টিমের একটি গাড়ি ও অভিযান পরিচালনায় আনা স্কেভেটর বহনকারী ট্রাক ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ৫ জন শ্রমিককে আটক করে।
বৃহস্পতিবার, (২০ নভেম্বর ২০২৫) বেলা এগারোটার দিকে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের কাকারা-মানিকপুর সড়কের বাদশারটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার, সকাল ১০টার দিকে পরিবেশ. অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান উল ইসলাম ও পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মো. জমির উদ্দিনের নেতৃত্ব সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের নিয়ে লামা উপজেলার ফাইতং এলাকায় ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ায় পথে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশারটেক এলাকায় হাজারো শ্রমিক ও স্থানীয় জনগণ ব্যারিকেড দেয়। তারা সড়কে ইট ভাঙা ও যানবাহন রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় উপস্থিত শ্রমিক জনতা অভিযানের বিপক্ষে স্লোগান দিয়ে অবস্থান করে। এ অবস্থায় অভিযান বন্ধ ঘোষণা করে দুপুর দেড়টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফিরে যায়।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক বলেন, পরিবেশের দোহাই দিয়ে ফাইতং এলাকায় ইটভাটা ভেঙে ফেললে এ ভাটাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের উপোষ থাকতে হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন ও বাড়িঘর নির্মাণের উপকরণ ইট না পেলে দেশের মানুষের কষ্ট বাড়বে। শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের বিকল্প ব্যবস্থা না করে চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর ও পাশের ফাইতং ইউনিয়নের ইটভাটা ধ্বংস করা হলে বেকার হবে অন্তত ২০ হাজার শ্রমিক।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর ফাইতং এলাকায় ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে একইভাবে শ্রমিক জনতার বাধার মুখে পড়ে। অবশ্য ওইদিন চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর এলাকার তিনটি পরিবেশবান্ধব ইটভাটার চিমনি ভেঙে এবং কাঁচা ইট নষ্ট করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত অভিযান পরিচালনাকারী একটি টিম।
ওইদিনের ঘটনাকে সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে গত ১৭ নভেম্বর লামা থানায় এনসিপি ও এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের
পরিদর্শক মোহাম্মদ নূর উদ্দিন।
ফাইতংয়ের ইটভাটা মালিক মাষ্টার খাইরুল ইসলাম ও দিদারুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বে ইটভাটা মালিকপক্ষের দায়ের করা দুটি রিট মামলার (মামলা নং ৯৬০৬/২২ ও মামলা নং ১৩১৯১/২২) পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ দূষণ হয় না এমন এলাকায় জায়গা শনাক্ত করে ইটভাটা পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসককে ছয়মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে সময় বেধে দেন মহামান্য হাইকোর্ট।
এরই আলোকে ইতোমধ্যে ইটভাটা মালিকরা বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করলেও কোনো সুরাহা মেলেনি।
এমন প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের বেধে দেয়া ছয়মাস সময়ের মধ্যে তিনমাস অতিবাহিত হয়েছে। এখনও বাকি রয়েছে তিনমাস সময়। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ইটভাটা করার উপযোগী জায়গা শনাক্ত করে না দিয়ে উল্টো কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা ইটভাটা সমূহ উচ্ছেদের নামে মালিক ও শ্রমিকদের হয়রানি করে যাচ্ছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, হাইকোর্টের দেয়া সময়ের আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইটভাটাগুলো সরিয়ে নিতে আমরা বাকি তিনমাস সময় চেয়েছি। বলেছি, তিনমাসের ভেতরে ইটভাটা সরিয়ে না নিলে জেল জরিমানা করলে তা আমরা মেনে নেব। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা আমাদের আবেদন আমলে নিচ্ছে না।
সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) অভিজিৎ দাশ বলেন, ফাইতংয়ের ইটভাটা উচ্ছেদে অভিযানে যাবার পথে বৃহস্পতিবার, সকালে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের বাদশারটেক এলাকায় ইটভাটার শ্রমিকরা অভিযান টিমকে বাধা দেন। তারা সড়ক অবরোধ করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। এ সময় শ্রমিকদের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে যৌথবাহিনীর দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে।