শনিবার ভয়াল ২২ নভেম্বর
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার (২২ নভেম্বর ২০২৫) ভয়াল ২২ নভেম্বর। ঘিওরের তেরশ্রী ঐতিহাসিক গনহত্যা দিবস। পাক হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসর এবং রাজাকার,আলবদর আলসামস বাহিনীর সদস্যরা ১৯৭১ সালের এই দিনে বর্বোরচিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামের তৎকালীন জমিদার সিদ্ধেশরী প্রসাদ রায় চৌধুরীসহ ৪৩জন গ্রামবাকে গুলি করে এবং বেওনেটের আঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জমিদার সিদ্ধেশরী প্রসাদ রায় চৌধুরীকে হাত, পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে জালিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিরীহ গ্রামবাসীর উপর বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকান্ডের করন জানতে চাওয়াতে ঘাতকরা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ ৪৩ জন গ্রামবাসীকে। তবে দুঃখ জনক হলেও সত্য,স্বাধীনতার ৫১টি বছর অতিবাহিত হবার পরেও নিহতদের পরিবারের খোঁজ খবর কেউ রাখেনি। এবং কি বিচার হয়নি হত্যাকান্ডের।
জানা গেছে, ঘিওরের তেরশ্রী গ্রামের মানুষগুলো ছিল সাংস্কৃতিক মনা। বাম রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল তেরশ্রী গ্রাম। মুক্তিযোদ্ধদের আনাগোনা ছিল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর দোসররা টার্গেট করে এই গ্রামটিকে। গোপনে শিক্ষানুরাগী, মুক্তিযোদ্ধা, ভাষাসৈনিক, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবিদের তালিকা করে প্রস্তুত করে দালালেরা। নীল নকশা করে এই গ্রামটিকে ধ্বংস করার। ১৯৭১’ সালের ২২ নভেম্বর ভোর কেটে সূর্য ওঠার মুহূর্তেই পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী ও দেশীয় রাজাকার ঘিরে ফেলে তেরশ্রী গ্রামের সেন পাড়ার কালি মন্দিরটি।
২১ নভেম্বর রাতে এদেশীয় দালালদের নিয়ে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী গোপনে একটি মিটিং করে তেরশ্রী গ্রামে সেনপাড়া কালিবাড়ী মাঠ প্রাঙ্গনে।
তারা পরিকল্পনা করে ২২ নভেম্বর হত্যাযঞ্জের। ঘিওর থেকে সিধুঁনগর গ্রামের মধ্য দিয়ে শতাধিক পাকিস্থানি সেনা এদেশীয় ঘাতকদের সহযোগিতায় ভারি অ¯্র নিয়ে তেরশ্রী গ্রামে যায়।
কনকনে শীতের সকাল তখন অনেকেই ঘুম থেকে উঠেনি। ঠিক সেই মূহুর্তে পাকিস্থানি সেনারা অতর্কিত হামলা চালায় গ্রামটিতে। ঘরে ঘরে জ¦ালিয়ে দেয় আগুন। ঘর থেকে বের হবার সুযোগ দেয়নি গ্রামবাসিকে। বৃষ্টিরমত গুলি ছুড়তে থাকে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর। তাদের চিৎকারে পুরো এলাকা কম্পিত হয়ে উঠে। অপরেশনের সময় এদেলীয় দালালরা মুখোশ পরে নেয় যাতে তাদের কেউ চিনতে না পারে। মাত্র ৬ ঘন্টার অপারেশনে ঘাতকরা একের পর এক বেওনেট চার্জ করে এবং গুলি করে ৪৩ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে।
স্বাধীনতার ৫১ বছর অতিবাহিত হবার পরেও সেন পাড়া গ্রামের মানুষগুলো হত্যাকান্ডের বিচার পায়নি। নিহত ৪৩ জনের মধ্যে ৩০ জনের পরিচয় পাওয়া যায়।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে নিহত শহীদ জমিদার সিদ্ধেশরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর একমাএ সন্তান তেরশ্রী কালী নারায়ন ইনষ্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক সমেশ^র প্রসাদ রায় চৌধুরী জানান, ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর আমার পিতাসহ ৪৩জন গ্রামবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাশিতা তুল ইসলাম বলেন, তেরশ্রী বাজারে প্রবেশ করতেই ঘিওর-দৌলতপুর- টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নির্মান করা হয়েছে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। নতুন প্রজন্মকে তেরশ্রীতে নিহত শহীদদের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার ভয়াল ২২ নভেম্বর
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
শনিবার (২২ নভেম্বর ২০২৫) ভয়াল ২২ নভেম্বর। ঘিওরের তেরশ্রী ঐতিহাসিক গনহত্যা দিবস। পাক হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসর এবং রাজাকার,আলবদর আলসামস বাহিনীর সদস্যরা ১৯৭১ সালের এই দিনে বর্বোরচিত নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামের তৎকালীন জমিদার সিদ্ধেশরী প্রসাদ রায় চৌধুরীসহ ৪৩জন গ্রামবাকে গুলি করে এবং বেওনেটের আঘাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জমিদার সিদ্ধেশরী প্রসাদ রায় চৌধুরীকে হাত, পা বেঁধে শরীরে পেট্রোল ঢেলে জালিয়ে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিরীহ গ্রামবাসীর উপর বর্বরোচিত হামলা ও হত্যাকান্ডের করন জানতে চাওয়াতে ঘাতকরা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তেরশ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ ৪৩ জন গ্রামবাসীকে। তবে দুঃখ জনক হলেও সত্য,স্বাধীনতার ৫১টি বছর অতিবাহিত হবার পরেও নিহতদের পরিবারের খোঁজ খবর কেউ রাখেনি। এবং কি বিচার হয়নি হত্যাকান্ডের।
জানা গেছে, ঘিওরের তেরশ্রী গ্রামের মানুষগুলো ছিল সাংস্কৃতিক মনা। বাম রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল তেরশ্রী গ্রাম। মুক্তিযোদ্ধদের আনাগোনা ছিল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর দোসররা টার্গেট করে এই গ্রামটিকে। গোপনে শিক্ষানুরাগী, মুক্তিযোদ্ধা, ভাষাসৈনিক, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবিদের তালিকা করে প্রস্তুত করে দালালেরা। নীল নকশা করে এই গ্রামটিকে ধ্বংস করার। ১৯৭১’ সালের ২২ নভেম্বর ভোর কেটে সূর্য ওঠার মুহূর্তেই পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী ও দেশীয় রাজাকার ঘিরে ফেলে তেরশ্রী গ্রামের সেন পাড়ার কালি মন্দিরটি।
২১ নভেম্বর রাতে এদেশীয় দালালদের নিয়ে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী গোপনে একটি মিটিং করে তেরশ্রী গ্রামে সেনপাড়া কালিবাড়ী মাঠ প্রাঙ্গনে।
তারা পরিকল্পনা করে ২২ নভেম্বর হত্যাযঞ্জের। ঘিওর থেকে সিধুঁনগর গ্রামের মধ্য দিয়ে শতাধিক পাকিস্থানি সেনা এদেশীয় ঘাতকদের সহযোগিতায় ভারি অ¯্র নিয়ে তেরশ্রী গ্রামে যায়।
কনকনে শীতের সকাল তখন অনেকেই ঘুম থেকে উঠেনি। ঠিক সেই মূহুর্তে পাকিস্থানি সেনারা অতর্কিত হামলা চালায় গ্রামটিতে। ঘরে ঘরে জ¦ালিয়ে দেয় আগুন। ঘর থেকে বের হবার সুযোগ দেয়নি গ্রামবাসিকে। বৃষ্টিরমত গুলি ছুড়তে থাকে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর। তাদের চিৎকারে পুরো এলাকা কম্পিত হয়ে উঠে। অপরেশনের সময় এদেলীয় দালালরা মুখোশ পরে নেয় যাতে তাদের কেউ চিনতে না পারে। মাত্র ৬ ঘন্টার অপারেশনে ঘাতকরা একের পর এক বেওনেট চার্জ করে এবং গুলি করে ৪৩ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে।
স্বাধীনতার ৫১ বছর অতিবাহিত হবার পরেও সেন পাড়া গ্রামের মানুষগুলো হত্যাকান্ডের বিচার পায়নি। নিহত ৪৩ জনের মধ্যে ৩০ জনের পরিচয় পাওয়া যায়।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে নিহত শহীদ জমিদার সিদ্ধেশরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর একমাএ সন্তান তেরশ্রী কালী নারায়ন ইনষ্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক সমেশ^র প্রসাদ রায় চৌধুরী জানান, ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর আমার পিতাসহ ৪৩জন গ্রামবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাশিতা তুল ইসলাম বলেন, তেরশ্রী বাজারে প্রবেশ করতেই ঘিওর-দৌলতপুর- টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নির্মান করা হয়েছে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। নতুন প্রজন্মকে তেরশ্রীতে নিহত শহীদদের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে।