alt

তিস্তায় অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে জিরো টলারেট ঘোষণা উপজেলা প্রশাসনের

প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী) : শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

তিস্তা নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলনে জিরো টলারেট ঘোষণা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান। এ ঘোষণার সাথে একমত পোষণ করে সিন্ডিকেট কে শক্ত হাতে দমন করা হবে, অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন, রংপুর ব্যাটালিয়ান (৫১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আল দীন। নীলফামারী ডিমলায় তিস্তা নদীতে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট ভাঙতে আবারো যৌথ অভিযান চালিয়ে তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন কৃত পাথরের স্তুপ জব্দ করা হয়েছে।

গত বুধবার বিকেলে ঘন্টা ব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো, রওশন কবির। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (৫১বিজিবি) বার্নির ঘাট সীমান্ত ফাড়ির সদস্য, পুলিশ সদস্য ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা। তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দফায় দফায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। গত বুধবার বিকেল সাড় ৫ টা থেকে সন্ধ্যা অবধি অভিযান পরিচালনা করেন। তিস্তা নদীতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে স্তুপ করে রাখা ৫ শত সিএফটি পাথর জব্দ করা হয়। এলাকাগুলো হল টেপাখড়ি বাড়ি ইউনিয়নের বার্নির ঘাট সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকার তেলির বাজার এলাকায়। অভিযানে ডিমলা উপজেলা প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) রংপুর ব্যাটালিয়ন (৫১ বিজিবি), ডিমলা থানার পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা। ইতি পূর্বে গত ৬ নভেম্বর অভিযান যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দসহ ও সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর পুনরায় অবৈধ পাথর জব্দের বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন,বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), রংপুর ব্যাটেলিয়ান (৫১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো,সেলিম আল দ্বীন।

একটানা একাধিকবার অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান পাথর জব্দ করা হলেও তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কিছুতেই বন্ধ করতে পারছেন না উপজেলা প্রশাসন ।

একইভাবে টেপাড়িবাড়ি ইউনিয়নের বার্নির ঘাট সীমান্ত ফাঁড়ির তেলীর বাজারসহ একই এলাকাগুলোতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো, রওশন কবির। অভিযানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, (৫১ বিজিবি), ডিমলা থানার পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিস্তা নদী থেকে উত্তোলনকৃত বিপুল পরিমাণ অবৈধ পাথর জব্দ করা হলেও সামান্যতম এর প্রভাব পড়েনি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী চক্রটির ওপড়ে। তিস্তা নদী থেকে পাথর উত্তোলনের কারণে ভাঙ্গনের ভয়াবহতা রুদ্র আকার ধারণ করছে । প্রতিবছর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভাঙ্গন রোধে সরকারের শত কোটি টাকা খরচ করলেও কার্যত তেমন সুফলে আসছে না। স্থানীয় সচেতন মহল দীর্ঘদিন যাবত দাবী করে আসছে ,দ্রুততম সময়ে তিস্তা নদী হতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট ভাঙতে আইন প্রয়োগ করে অভিযান পরিচালনার জন্য । তারা বলছে নইলে প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য - উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে নদী থেকে পাথর তুলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। নির্বিচারে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনে আকস্মিক বন্যা ও নদী ভাঙ্গন দেখা দেয় প্রতিবছর। আবাদী জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে দেধারছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হলেও তেমন কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অবৈধ পাথর উত্তোলনের কার্যকরী ভূমিকা না রাখায় পাথর উত্তোলনকারী চক্রটি আরো বেশী চরম বেপরোয়া হয়ে পড়ায় এ বিষয়ে দৈনিক সংবাদে ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদে খবর প্রকাশের পর কয়েক দফায় অভিযান চালানো হয়। ইতি পূর্বে যৌথ অভিযান চালিয়ে পাথর উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ইঞ্জিন চালিত নৌকাও বিনষ্ট করা হয় এবং পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ জব্দ করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার তিস্তা বিধৌত এলাকা টেপা খড়িবাড়ি ইউনিয়নের তেলীর বাজার, তিস্তা বাজার নামক স্থান সহ কয়েকটি স্থান থেকে তিস্তা নদী হতে অবৈধভাবে উত্তরনকৃত জমানো পাথরের স্তুপ জব্দ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো, ইমরানুজ্জামান । এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা যৌথ অভিযানে সহয়তা করেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), রংপুর ব্যাটেলিয়ান (৫১ বিজিবি)এর একটি টহল টিম, ডিমলা থানার পুলিশ দল ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা। সর্বোপরি তিস্তা নদীতে অবৈধ পাথর উত্তোলনে স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে । পাথর খেকো ওই চক্রটি দুর্দান্ত ক্ষমতার দাপটে স্থানীয় প্রশাসন অসহায় ও নির্বিকারের ভূমিকা পালন করার অভিযোগো করে আসছিলেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। উপজেলার তিস্তা নদীর ডানতীর ভাঙ্গন রোধ সহ তিস্তা বিধৌত এলাকা তীর রক্ষায় প্রতিবছর শতশত কোটি টাকা সরকারের খরচ করছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পউবো) কর্তৃপক্ষ। ভাঙ্গন রোধে প্রচুর পরিমাণ সরকারের অর্থ খরচ করলেও প্রতিবছর নতুন নতুন এলাকা ভাঙ্গনের কবলে পড়ে তিস্তা নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি তিস্তার চ্যানেল তৈরি হয়ে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোট খাতা সুপরিটরি গ্রামের শত শত একর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গিয়ে নতুন নদীর সৃষ্টি হয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে । কার্যত তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের বাঁচাতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কাঙ্খিত সুফল হচ্ছে না।

গত বর্ষায় উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৬ টি এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেয়। তিস্তা নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলো নদীভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে । ভাঙন এলাকায় শ্যলো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে এলাকার একাধিক প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় শ্রমিকরা । নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, তিস্তা ব্যারাজের আশপাশ, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার , চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, কালিগঞ্জ,ভেন্ডাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলনে প্রায় ২০ টি প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের অভিমত, তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে সকল দায় দায়ীত্ব ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের থাকলেও এ দায়িত্বশীল দপ্তরটি নীরব দর্শকের শাড়িতে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করে এই অবৈধ কাজে সমর্থন জানিয়ে পাউবোর সংরক্ষিত জায়গায় তিস্তা হতে অবৈধভাবে উত্তোলন কৃত পাথর রাখার সুযোগ করে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাতে প্রতিয়মান হয় যে, তিস্তা ব্যারেজ ও বৃহত্তর তিস্তা ব্যারেজের সেচ প্রকল্প রক্ষার পরিবর্তে নস্যাত ও অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী সরাসরি জড়ত।

নদী ভাঙ্গা নিঃস্ব পরিবারগুলোকে রক্ষায় সর্বশেষ তিস্তা নদী হতে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করায় উপজেলা প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারা । এ অভিযান অব্যাহত রাখা সহ অবৈধ পাথর সিন্ডিকেট সদস্যদের নামে দ্রুত বিচার আইন মামলায় শাস্তির আওতায় আনার জন্য অনুরোধ জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ।

অবৈধ পাথরচক্র কে সামান্যতম ছাড় দেয়া হবে না। অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে জিরো টলারেট ঘোষণা করেছি। রংপুর ব্যাটালিয়ন (৫১ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো, সেলিম আলদ্বীন বলেন, সীমান্ত এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আমার বিজিবি সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিও ক্ষতিকর। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজিবি শুধুমাত্র সীমান্ত নিরাপত্তা নয়, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার দায়িত্বও পালন করছে আর ভবিষ্যতেও করবে। সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও টেকসই পরিবেশ বজায় রাখতে এই অভিযানে সিভিল প্রশাসনের সাথে বিজিবি আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

৩৭ বছরের শিক্ষকতা শেষে প্রধান শিক্ষকের রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা

দিনাজপুরে যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা, স্বামী ও শাশুড়ি আটক

প্রতিবন্ধীরা সমাজ ও দেশের বোঝা নয়, দেশের সম্পদ

ছবি

সিরাজগঞ্জে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড় চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী

ছবি

দুমকিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহত, আহত ১

ছবি

চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা ওসমান গ্রেপ্তার

ছবি

মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ছবি

যশোরের সাবেক এমপি রণজিৎসহ আ.লীগের ৬১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

সিরাজগঞ্জে ট্রাকচাপায় পল্লী চিকিৎসক নিহত, মহাসড়ক অবরোধ

ঝোপখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবীতে মানববন্ধন

ছবি

ঘিওরের তেরশ্রীতে গণহত্যা দিবস

ছবি

কলারোয়ায় তারুণ্যের সমাবেশ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে যুবদলের মতবিনিময়

ছবি

বোয়ালখালীতে নতুন ভবন নির্মাণকাজ পরিদর্শনে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

ছবি

সিলেটের বিএনপির ১৪ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

ছবি

কিশোরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ কিশোরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ কিশোরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ

ছবি

বেতাগীতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো জনপদ, আবাসিক ভবন ঘরবাড়ি

ছবি

কলারোয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

ছবি

চাঁদপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল

ছবি

বেতাগী পৌর শহরের অটোরিকশার যানজটে দুর্ভোগে পথচারি

ছবি

চকরিয়ায় ইটভাটা শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ: আহত ২০, আটক ৫

ধর্ম নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য, বাউল সম্রাট আবুল সরকার গ্রেপ্তার

ছবি

রায়পুরে বিজ্ঞান মেলা ও প্রকল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন

ছবি

চাটখিলে পৌর কিচেন মার্কেট উদ্বোধন

ছবি

মুন্সীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

ছবি

সুনামগঞ্জে অনুমোদন ছাড়া অবৈধ ক্রাশার মেশিন চালিয়ে পরিবেশ ধ্বংস

ছবি

ঘরহীন জীবনের গল্প রায়গঞ্জে নৌকার ওপর ভাসমান দম্পতির দিনযাপন

বাংলাদেশে ধর্মীয় সাম্প্রতিক উন্নয়ন করতে হবে -আর্চবিশপ কেভিন এস. র‌্যান্ডাল

ছবি

গজারিয়ায় আমনের ফলন ভালো কৃষকের মুখে হাসি

ছবি

রাণীনগরে গ্রামীণ ব্যাংকের গেটের সামনে আগুন!

ছবি

আরও ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

ছবি

শেরপুরে লেপ-তোশক তেরির কারিগরদের ব্যস্ততা তুঙ্গে

ছবি

ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরল ৩০ কিশোর-কিশোরী

ছবি

বদলগাছীতে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা দেখতে জনতার ভীড়

ছবি

শিক্ষার্থীদের নদী পারাপারের জন্য প্রশাসনের নৌকা উপহার

ছবি

চকরিয়ায় আমন চাষে আশাজাগানিয়া ফলন

ছবি

দুমকিতে তিন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল

tab

তিস্তায় অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে জিরো টলারেট ঘোষণা উপজেলা প্রশাসনের

প্রতিনিধি, ডিমলা (নীলফামারী)

শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

তিস্তা নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলনে জিরো টলারেট ঘোষণা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান। এ ঘোষণার সাথে একমত পোষণ করে সিন্ডিকেট কে শক্ত হাতে দমন করা হবে, অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন, রংপুর ব্যাটালিয়ান (৫১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আল দীন। নীলফামারী ডিমলায় তিস্তা নদীতে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট ভাঙতে আবারো যৌথ অভিযান চালিয়ে তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন কৃত পাথরের স্তুপ জব্দ করা হয়েছে।

গত বুধবার বিকেলে ঘন্টা ব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো, রওশন কবির। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (৫১বিজিবি) বার্নির ঘাট সীমান্ত ফাড়ির সদস্য, পুলিশ সদস্য ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা। তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে দফায় দফায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। গত বুধবার বিকেল সাড় ৫ টা থেকে সন্ধ্যা অবধি অভিযান পরিচালনা করেন। তিস্তা নদীতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে স্তুপ করে রাখা ৫ শত সিএফটি পাথর জব্দ করা হয়। এলাকাগুলো হল টেপাখড়ি বাড়ি ইউনিয়নের বার্নির ঘাট সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকার তেলির বাজার এলাকায়। অভিযানে ডিমলা উপজেলা প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) রংপুর ব্যাটালিয়ন (৫১ বিজিবি), ডিমলা থানার পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা। ইতি পূর্বে গত ৬ নভেম্বর অভিযান যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দসহ ও সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর পুনরায় অবৈধ পাথর জব্দের বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন,বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), রংপুর ব্যাটেলিয়ান (৫১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো,সেলিম আল দ্বীন।

একটানা একাধিকবার অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান পাথর জব্দ করা হলেও তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কিছুতেই বন্ধ করতে পারছেন না উপজেলা প্রশাসন ।

একইভাবে টেপাড়িবাড়ি ইউনিয়নের বার্নির ঘাট সীমান্ত ফাঁড়ির তেলীর বাজারসহ একই এলাকাগুলোতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো, রওশন কবির। অভিযানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, (৫১ বিজিবি), ডিমলা থানার পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা সার্বিক সহযোগিতা করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিস্তা নদী থেকে উত্তোলনকৃত বিপুল পরিমাণ অবৈধ পাথর জব্দ করা হলেও সামান্যতম এর প্রভাব পড়েনি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী চক্রটির ওপড়ে। তিস্তা নদী থেকে পাথর উত্তোলনের কারণে ভাঙ্গনের ভয়াবহতা রুদ্র আকার ধারণ করছে । প্রতিবছর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভাঙ্গন রোধে সরকারের শত কোটি টাকা খরচ করলেও কার্যত তেমন সুফলে আসছে না। স্থানীয় সচেতন মহল দীর্ঘদিন যাবত দাবী করে আসছে ,দ্রুততম সময়ে তিস্তা নদী হতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট ভাঙতে আইন প্রয়োগ করে অভিযান পরিচালনার জন্য । তারা বলছে নইলে প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য - উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে নদী থেকে পাথর তুলে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। নির্বিচারে বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনে আকস্মিক বন্যা ও নদী ভাঙ্গন দেখা দেয় প্রতিবছর। আবাদী জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে দেধারছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হলেও তেমন কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অবৈধ পাথর উত্তোলনের কার্যকরী ভূমিকা না রাখায় পাথর উত্তোলনকারী চক্রটি আরো বেশী চরম বেপরোয়া হয়ে পড়ায় এ বিষয়ে দৈনিক সংবাদে ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদে খবর প্রকাশের পর কয়েক দফায় অভিযান চালানো হয়। ইতি পূর্বে যৌথ অভিযান চালিয়ে পাথর উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ইঞ্জিন চালিত নৌকাও বিনষ্ট করা হয় এবং পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ জব্দ করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার তিস্তা বিধৌত এলাকা টেপা খড়িবাড়ি ইউনিয়নের তেলীর বাজার, তিস্তা বাজার নামক স্থান সহ কয়েকটি স্থান থেকে তিস্তা নদী হতে অবৈধভাবে উত্তরনকৃত জমানো পাথরের স্তুপ জব্দ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো, ইমরানুজ্জামান । এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা যৌথ অভিযানে সহয়তা করেন, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), রংপুর ব্যাটেলিয়ান (৫১ বিজিবি)এর একটি টহল টিম, ডিমলা থানার পুলিশ দল ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা। সর্বোপরি তিস্তা নদীতে অবৈধ পাথর উত্তোলনে স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে । পাথর খেকো ওই চক্রটি দুর্দান্ত ক্ষমতার দাপটে স্থানীয় প্রশাসন অসহায় ও নির্বিকারের ভূমিকা পালন করার অভিযোগো করে আসছিলেন তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। উপজেলার তিস্তা নদীর ডানতীর ভাঙ্গন রোধ সহ তিস্তা বিধৌত এলাকা তীর রক্ষায় প্রতিবছর শতশত কোটি টাকা সরকারের খরচ করছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পউবো) কর্তৃপক্ষ। ভাঙ্গন রোধে প্রচুর পরিমাণ সরকারের অর্থ খরচ করলেও প্রতিবছর নতুন নতুন এলাকা ভাঙ্গনের কবলে পড়ে তিস্তা নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি তিস্তার চ্যানেল তৈরি হয়ে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোট খাতা সুপরিটরি গ্রামের শত শত একর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গিয়ে নতুন নদীর সৃষ্টি হয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে । কার্যত তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের বাঁচাতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কাঙ্খিত সুফল হচ্ছে না।

গত বর্ষায় উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৬ টি এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেয়। তিস্তা নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলো নদীভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে । ভাঙন এলাকায় শ্যলো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে এলাকার একাধিক প্রভাবশালী চক্রের ছত্রছায়ায় শ্রমিকরা । নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, তিস্তা ব্যারাজের আশপাশ, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার , চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, কালিগঞ্জ,ভেন্ডাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলনে প্রায় ২০ টি প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের অভিমত, তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে সকল দায় দায়ীত্ব ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের থাকলেও এ দায়িত্বশীল দপ্তরটি নীরব দর্শকের শাড়িতে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করে এই অবৈধ কাজে সমর্থন জানিয়ে পাউবোর সংরক্ষিত জায়গায় তিস্তা হতে অবৈধভাবে উত্তোলন কৃত পাথর রাখার সুযোগ করে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাতে প্রতিয়মান হয় যে, তিস্তা ব্যারেজ ও বৃহত্তর তিস্তা ব্যারেজের সেচ প্রকল্প রক্ষার পরিবর্তে নস্যাত ও অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী সরাসরি জড়ত।

নদী ভাঙ্গা নিঃস্ব পরিবারগুলোকে রক্ষায় সর্বশেষ তিস্তা নদী হতে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করায় উপজেলা প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারা । এ অভিযান অব্যাহত রাখা সহ অবৈধ পাথর সিন্ডিকেট সদস্যদের নামে দ্রুত বিচার আইন মামলায় শাস্তির আওতায় আনার জন্য অনুরোধ জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ।

অবৈধ পাথরচক্র কে সামান্যতম ছাড় দেয়া হবে না। অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে জিরো টলারেট ঘোষণা করেছি। রংপুর ব্যাটালিয়ন (৫১ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো, সেলিম আলদ্বীন বলেন, সীমান্ত এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আমার বিজিবি সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিও ক্ষতিকর। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজিবি শুধুমাত্র সীমান্ত নিরাপত্তা নয়, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার দায়িত্বও পালন করছে আর ভবিষ্যতেও করবে। সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও টেকসই পরিবেশ বজায় রাখতে এই অভিযানে সিভিল প্রশাসনের সাথে বিজিবি আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

back to top