সিরাজগঞ্জ : খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিক -সংবাদ
শীতের শুরুতেই সিরাজগঞ্জে খেজুরে গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিড়া। এখানকার গুড়ের স্বাদ মান ভালো হওয়ায় দেশ জুড়ে রয়েছে এর চাহিদা। ভোর হতেই গাছিরা রস সংগ্রহ করে মাটির চুলায় জ্বাল দিচ্ছেন। ধীরে ধীরে রসের রং লালচে হতে শুরু করে ও ঘন হয়ে যায়। এভাবে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়া খেজুর গুড় তৈরি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলায়। এবছর নাটোর জেলার লালপুর থেকে তাড়াশের দেশীগ্রামে আসা গাছি জামাল উদ্দিন, হাসিবুল ও আলামিন বলেন, গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে খেজুর গুড় তৈরি করছেন তারা। ক্ষতিকারক কেমিক্যাল কিংবা চিনি মেশানো হয় না।
ক্রেতারা এসে এখান থেকেই গুড় কিনে নিয়ে যায়। রায়গঞ্জের ভূইয়াগাতী গ্রামের রবিজল বাড়ির উঠানে রাজশাহী বাঘা থানার গাছিরা খেজুর রস জ্বাল দিচ্ছেন। আবু সাইদ জানান গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে প্রায় চার ঘণ্টা লাগলো জ্বাল করতে। চুলায় খেজুর রস লালচে রং ধারণ করে ঘন হতে থাকে। পরে একটু ঠান্ডা করে বাটিতে ও পলিথিনের ওপর তরল গুড় ঢেলে দেয়া হয় । এভাবে তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড়। গাছিরা আরো বলেন, কার্তিক মাসের শুরু থেকে ব্যস্ততা বেড়েছে। বিকালের মধ্যে মাটির হাঁড়ি খেজুরগাছে ঝুলিয়ে দেন। ভোরে রস সংগ্রহ করেন। সকাল থেকেই গুড় তৈরি করা হয়। খেজুর গুড়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছেই। প্রতিদিন যে পরিমান গুড় তৈরী হয় সে গুড় দিনেই বিক্রি হয়ে যায়। প্রতি কেজি গুড়ের দাম বর্তমানে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা।
সিরাজঞ্জ বড় বাজারের গুড় বিক্রেতা শ্যামল কুমার বলেন, তাড়াশের তৈরী গুড় সিরাজগঞ্জেই শুধু নয় এর চাহিদ্ রয়েছে দেশ ব্যাপী। বর্তমানে বাজারে পাটালি গুড়, ডিমা গুড়, কোলা গুড়, বাটি গুড় সহ বিভিন্ন নামের গুড় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবছরই শীত বাড়ার সাথে সাথে আতœীয় স্বজনদের ঐতিহ্যবাহী দুধের পিঠা ভাপা পিঠাসহ বিভিন্ন পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। তখন এই খেজুরের গুড়ের কদর বেড়ে যায়।
এবিষয়ে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কৃষিবিদ কর্মকর্তা শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা বলেন, তাড়াশের আট ইউনিয়নে প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে যে গুলি থেকে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে। আরো কিছু গাছ বেড়ে উঠছে বিভিন্ন এলাকায়। তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের গুড়ের মান ও স্বাদে ভরপুর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে এর চাহিদা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে ভেজাল মুক্ত গুড় তৈীর জন্য চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে । এছাড়া চাষিরা যাতে ভেজালমুক্ত গুড় তৈরি করেন, সেদিকে নজরদারি করা হচ্ছে সংশ্লিস্ট অফিস থেকে ।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. নুসরাত জাহান বলেন, খেজুর গাছের রস যাল দিয়ে তৈরী খেজুরের গুড় শুধু সুস্বাধুই নয় এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ন পুষ্টি উপাদান। এই গুড়ে ক্যালোরি, কার্বোহাইর্ডেট, প্রোটিন, ফাইবার ছাড়াও অনেক ধরণের খনিজ পদার্থ রয়েছে। যা মানুষের হাড়, দাঁত মজবুত, রক্তচাপ নিযন্ত্রনে স্ন্যাযু পেশির স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখে। এছাড়াও এতে কিছু এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। শীতকালে শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সিরাজগঞ্জ : খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিক -সংবাদ
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
শীতের শুরুতেই সিরাজগঞ্জে খেজুরে গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিড়া। এখানকার গুড়ের স্বাদ মান ভালো হওয়ায় দেশ জুড়ে রয়েছে এর চাহিদা। ভোর হতেই গাছিরা রস সংগ্রহ করে মাটির চুলায় জ্বাল দিচ্ছেন। ধীরে ধীরে রসের রং লালচে হতে শুরু করে ও ঘন হয়ে যায়। এভাবে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়া খেজুর গুড় তৈরি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলায়। এবছর নাটোর জেলার লালপুর থেকে তাড়াশের দেশীগ্রামে আসা গাছি জামাল উদ্দিন, হাসিবুল ও আলামিন বলেন, গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে খেজুর গুড় তৈরি করছেন তারা। ক্ষতিকারক কেমিক্যাল কিংবা চিনি মেশানো হয় না।
ক্রেতারা এসে এখান থেকেই গুড় কিনে নিয়ে যায়। রায়গঞ্জের ভূইয়াগাতী গ্রামের রবিজল বাড়ির উঠানে রাজশাহী বাঘা থানার গাছিরা খেজুর রস জ্বাল দিচ্ছেন। আবু সাইদ জানান গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে প্রায় চার ঘণ্টা লাগলো জ্বাল করতে। চুলায় খেজুর রস লালচে রং ধারণ করে ঘন হতে থাকে। পরে একটু ঠান্ডা করে বাটিতে ও পলিথিনের ওপর তরল গুড় ঢেলে দেয়া হয় । এভাবে তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড়। গাছিরা আরো বলেন, কার্তিক মাসের শুরু থেকে ব্যস্ততা বেড়েছে। বিকালের মধ্যে মাটির হাঁড়ি খেজুরগাছে ঝুলিয়ে দেন। ভোরে রস সংগ্রহ করেন। সকাল থেকেই গুড় তৈরি করা হয়। খেজুর গুড়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছেই। প্রতিদিন যে পরিমান গুড় তৈরী হয় সে গুড় দিনেই বিক্রি হয়ে যায়। প্রতি কেজি গুড়ের দাম বর্তমানে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা।
সিরাজঞ্জ বড় বাজারের গুড় বিক্রেতা শ্যামল কুমার বলেন, তাড়াশের তৈরী গুড় সিরাজগঞ্জেই শুধু নয় এর চাহিদ্ রয়েছে দেশ ব্যাপী। বর্তমানে বাজারে পাটালি গুড়, ডিমা গুড়, কোলা গুড়, বাটি গুড় সহ বিভিন্ন নামের গুড় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিবছরই শীত বাড়ার সাথে সাথে আতœীয় স্বজনদের ঐতিহ্যবাহী দুধের পিঠা ভাপা পিঠাসহ বিভিন্ন পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। তখন এই খেজুরের গুড়ের কদর বেড়ে যায়।
এবিষয়ে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কৃষিবিদ কর্মকর্তা শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা বলেন, তাড়াশের আট ইউনিয়নে প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে যে গুলি থেকে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে। আরো কিছু গাছ বেড়ে উঠছে বিভিন্ন এলাকায়। তিনি আরো বলেন, এ অঞ্চলের গুড়ের মান ও স্বাদে ভরপুর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে এর চাহিদা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে ভেজাল মুক্ত গুড় তৈীর জন্য চাষীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে । এছাড়া চাষিরা যাতে ভেজালমুক্ত গুড় তৈরি করেন, সেদিকে নজরদারি করা হচ্ছে সংশ্লিস্ট অফিস থেকে ।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. নুসরাত জাহান বলেন, খেজুর গাছের রস যাল দিয়ে তৈরী খেজুরের গুড় শুধু সুস্বাধুই নয় এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ন পুষ্টি উপাদান। এই গুড়ে ক্যালোরি, কার্বোহাইর্ডেট, প্রোটিন, ফাইবার ছাড়াও অনেক ধরণের খনিজ পদার্থ রয়েছে। যা মানুষের হাড়, দাঁত মজবুত, রক্তচাপ নিযন্ত্রনে স্ন্যাযু পেশির স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখে। এছাড়াও এতে কিছু এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। শীতকালে শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে।