alt

ডুমুরিয়ায় বিদ্যালয় ভবন পরিত্যাক্ত, পাঠদান চলছে দোচালা ঘরে

প্রতিনিধি, ডুমুরিয়া (খুলনা) : শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

বিদ্যালয় ভবনটি পরিত্যক্ত হয়েছে ১০ বছর আগে। এরপর থেকে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে নির্মিত একটি দোচালা ঘরে চলছে পাঠদান। এই চিত্র খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গজালিয়া অগ্নিবীণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। উপজেলা সদর থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরের দুর্গম এলাকায় মাগুরখালী ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টির অবস্থান। ১৯৮৫ সালে স্থাপিত হয় এটি। ২০০০ সালে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। মাত্র ১৫ বছরে সেই ভবনের দেয়াল, ছাদ, পলেস্তারা ও জানালা-দরজা ধসে পড়েছে। ২০১৫ সালে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তখন থেকেই ভবনটিতে পাঠদান বন্ধ। এরপর গ্রামবাসীর সহযোগিতায় মূল ভবনের দক্ষিণ পাশে গোলপাতার ছাউনি এবং কাঠের বেড়া দিয়ে দোচালা একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। সেখানে দুটি কক্ষে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান চলে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান শেষে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়। একটি কক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অন্যটিতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বসে। কাঠ দিয়ে নির্মিত ঘরটিতে নেই জানালা। দুটি কক্ষে রয়েছে একটি করে বাঁশের বেড়ার দরজা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ের চারপাশে ফাঁকা এবং সামনে বালুভর্তি মাঠ থাকায় গরমের দিনে তাদের ক্লাসে বসে থাকতে কষ্ট হয়। বাতাসে গরম হল্কার সঙ্গে উড়ে আসে ধুলাবালি। ফ্যান চললেও তাতে গরম কমে না। আবার বর্ষা মৌসুমে গোলপাতার ছাউনি চুইয়ে পানি পড়ে ক্লাসে। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই চলছে পাঠদান। শিক্ষকদের বসা ও দাপ্তরিক কাজের জন্য মাঠের এক কোনায় নির্মাণ করা হয়েছে কাঠ ও টিনের একটি ছোট ঘর। সেখানেও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের সমস্যার কথা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও কোনো সমাধান হয়নি বলে জানিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশান মন্ডল ও পঞ্চম শ্রেণির মারিয়া খাতুন জানায়, বৃষ্টি হলেই ঝুপড়ি ঘরে পানি পড়ে বই, খাতাসহ তাদের জামাকাপড় ভিজে যায়। গরমের সময় ধুলাবালি চোখে মুখে যায়। প্রচন্ড গরমের মধ্যে তাদের ক্লাস করতে হয়।

দুইজন অভিভাবক জ্যোৎস্না বৈরাগী ও বিপ্লব সানা বলেন, বিদ্যালয়টির অবস্থা খুবই খারাপ। শিশুরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুম দুটোই শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষার মান ধরে রাখতে বিদ্যালয়ে ভালো পরিবেশের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত নতুন ভবনের দাবি জানান।বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনোজ কুমার রায় ও সুব্রত মন্ডল বলেন, স্কুল পরিচালনার জন্য গ্রামবাসীর সহযোগিতায় একটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। জরাজীর্ণ ঘরেই চলছে পাঠদান। দাপ্তরিক কাজ ও পাঠদানে সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত একটি নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগে বিদ্যালয়টির জন্য নতুন ভবনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মাত্র ১৫ বছরে বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত হয়ে পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, এলাকাটি অনেক নিচু ও লবণাক্ত। লবণপানির প্রভাবে ভবনের ছাদ এবং দেয়াল দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ওই সময় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে খুব বেশি উন্নত প্রযুক্তি ছিল না। এসব কারণে বিদ্যালয় ভবনটি দ্রুত নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

ছবি

রূপাইছড়া রাবার বাগানে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

ছবি

যশোরে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

মোহনগঞ্জে বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত

ছবি

বরগুনায় ৪ ভুয়া চিকিৎসকের জেল-জরিমানা

ছবি

গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের দুর্ভোগ নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

এবারও ভোটার হয়নি সিলেট বিভাগের হিজড়া জনগোষ্ঠী

ছবি

পবিপ্রবিতে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূ-কম্পন পরিমাপ যন্ত্রটি অচল

ছবি

ফটিকছড়িতে রবি মৌসুমে প্রণোদনা পেল ৭৩০ কৃষক

ছবি

গৌরীপুরে নারী সমাবেশে হামলার বিচার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

ছবি

লৌহজংয়ে জলাবদ্ধতায় আলু আবাদে অনিশ্চয়তায় কৃষক

ছবি

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

ছবি

মোংলায় সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সর্বসাধারণের জন্য নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ উন্মুক্ত .

ছবি

সিরাজগঞ্জে ট্রান্সফরমার চোর চক্রের ৪ সদস্য আটক

ছবি

আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ছবি

দিনাজপুরে বাস–ইজিবাইক সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু, আহত দুই

ছবি

মোরেলগঞ্জে ইউনিয়ন পর্যায়ে সিটুসি ক্যাম্পেইন

ছবি

সাদুল্লাপুরে স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

ছবি

বাগেরহাটে মাছের ঘের থেকে মৃতদেহ উদ্ধার

ছবি

পোরশায় অপারেশন ফার্স্ট লাইট অভিযান

ছবি

হবিগঞ্জ মহাসড়কের দুপাশে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ছবি

হবিগঞ্জে সাড়ে ৪ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

ছবি

বেতাগীতে বেড়েছে দেশিয় প্রজাতির মাছের চাহিদা

ছবি

আদমদীঘির হাট বাজারে শাক-সবজির অগ্নিমুল্য

ছবি

যশোরে চার লাখ ২৯ হাজার জাল টাকাসহ কারবারী আটক

ছবি

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ সালিশের পরদিন অভিযুক্ত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

দশমিনায় পুকুরের চারিদিকে মাঁচায় মিষ্টি কুমড়ার চাষে ব্যাপক ফলন

ছবি

মাধবপুরে ইউনিয়ন পর্যায়ে মেধা বৃত্তি পরীক্ষা

ছবি

কেশবপুরে শিক্ষকদের সাথে বিএনপি প্রার্থীর মতবিনিময়

ছবি

কিশোরগঞ্জে পাখি শিকার রোধে বিলবোর্ড স্থাপন

ছবি

সাভারের বাইপাইলে আবারও মৃদু ভূমিকম্প

ছবি

পাঁচ নৌ-রুটে অকার্যকর ড্রেজিং: ব্যয় ৭০০ কোটি টাকা

ঝিনাইগাতীতে গারোদের ৩ দিনব্যাপী ওয়ানগালা উৎসব শুরু

ছবি

হবিগঞ্জে ১০৩টি ইটভাটায় নেই পরিবেশ ও ডিসির নবায়ন লাইসেন্স

ছবি

দেশের ইতিহাসে বড় ভূমিকম্প

ছবি

খানাখন্দে ভরা সড়ক: জনদুর্ভোগ চরমে, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

ছবি

চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, প্রকারভেদে কেজিপ্রতি ৫-৭ টাকা বেড়েছে

tab

ডুমুরিয়ায় বিদ্যালয় ভবন পরিত্যাক্ত, পাঠদান চলছে দোচালা ঘরে

প্রতিনিধি, ডুমুরিয়া (খুলনা)

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

বিদ্যালয় ভবনটি পরিত্যক্ত হয়েছে ১০ বছর আগে। এরপর থেকে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে নির্মিত একটি দোচালা ঘরে চলছে পাঠদান। এই চিত্র খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গজালিয়া অগ্নিবীণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। উপজেলা সদর থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরের দুর্গম এলাকায় মাগুরখালী ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে বিদ্যালয়টির অবস্থান। ১৯৮৫ সালে স্থাপিত হয় এটি। ২০০০ সালে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। মাত্র ১৫ বছরে সেই ভবনের দেয়াল, ছাদ, পলেস্তারা ও জানালা-দরজা ধসে পড়েছে। ২০১৫ সালে উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। তখন থেকেই ভবনটিতে পাঠদান বন্ধ। এরপর গ্রামবাসীর সহযোগিতায় মূল ভবনের দক্ষিণ পাশে গোলপাতার ছাউনি এবং কাঠের বেড়া দিয়ে দোচালা একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। সেখানে দুটি কক্ষে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান চলে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান শেষে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়। একটি কক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অন্যটিতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বসে। কাঠ দিয়ে নির্মিত ঘরটিতে নেই জানালা। দুটি কক্ষে রয়েছে একটি করে বাঁশের বেড়ার দরজা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ের চারপাশে ফাঁকা এবং সামনে বালুভর্তি মাঠ থাকায় গরমের দিনে তাদের ক্লাসে বসে থাকতে কষ্ট হয়। বাতাসে গরম হল্কার সঙ্গে উড়ে আসে ধুলাবালি। ফ্যান চললেও তাতে গরম কমে না। আবার বর্ষা মৌসুমে গোলপাতার ছাউনি চুইয়ে পানি পড়ে ক্লাসে। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই চলছে পাঠদান। শিক্ষকদের বসা ও দাপ্তরিক কাজের জন্য মাঠের এক কোনায় নির্মাণ করা হয়েছে কাঠ ও টিনের একটি ছোট ঘর। সেখানেও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের সমস্যার কথা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও কোনো সমাধান হয়নি বলে জানিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশান মন্ডল ও পঞ্চম শ্রেণির মারিয়া খাতুন জানায়, বৃষ্টি হলেই ঝুপড়ি ঘরে পানি পড়ে বই, খাতাসহ তাদের জামাকাপড় ভিজে যায়। গরমের সময় ধুলাবালি চোখে মুখে যায়। প্রচন্ড গরমের মধ্যে তাদের ক্লাস করতে হয়।

দুইজন অভিভাবক জ্যোৎস্না বৈরাগী ও বিপ্লব সানা বলেন, বিদ্যালয়টির অবস্থা খুবই খারাপ। শিশুরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুম দুটোই শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষার মান ধরে রাখতে বিদ্যালয়ে ভালো পরিবেশের বিকল্প নেই উল্লেখ করে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত নতুন ভবনের দাবি জানান।বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনোজ কুমার রায় ও সুব্রত মন্ডল বলেন, স্কুল পরিচালনার জন্য গ্রামবাসীর সহযোগিতায় একটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। জরাজীর্ণ ঘরেই চলছে পাঠদান। দাপ্তরিক কাজ ও পাঠদানে সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত একটি নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগে বিদ্যালয়টির জন্য নতুন ভবনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মাত্র ১৫ বছরে বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত হয়ে পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, এলাকাটি অনেক নিচু ও লবণাক্ত। লবণপানির প্রভাবে ভবনের ছাদ এবং দেয়াল দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ওই সময় ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে খুব বেশি উন্নত প্রযুক্তি ছিল না। এসব কারণে বিদ্যালয় ভবনটি দ্রুত নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

back to top