হবিগঞ্জ : বাহুবল উপজেলার রূপাইছড়া রাবার বাগান -সংগৃহীত
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত রূপাইছড়া রাবার বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ বনশিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রূপাইছড়া রাবার বাগান শ্রমিক কর্মচারীবৃন্দ। অভিযোগপত্রটি আমলে নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন রূপাইছড়া রাবার বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাশেম আখঞ্জি ও সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন।
অভিযোগে জানা যায়, রূপাইছড়া রাবার বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে শ্রমিকদের জিম্মি করে বাগানের কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০২২ সালে যোগদানের পর থেকেই তিনি অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলে কথা বলার সাহস পায়নি। তার ভয়ে তটস্থ থাকে শ্রমিক কর্মচারীরা।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, অফিসের কর্মচারী বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত চালানে প্রায় ১শ গাড়ীর অধিক অফিসের রেকর্ড ছাড়া ২২০০ হারে মোট ২২ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন। উক্ত চালানগুলো ভান্ডারের রেকর্ডে এমনকি জ্বালানী কাঠের রেজিস্টারেও লিপিবদ্ধ নেই। বাগানের জঙ্গল কাটা প্রতি বৎসর প্রায় চার লক্ষ থেকে সাড়ে চার লক্ষ টাকা বাজেট থাকে, কিন্তু টেপার দ্বারা জঙ্গল কর্তন করে উক্ত বাজেটের পুরো টাকা তিনি আত্মসাত করেন। এ বিষয়ে বিল বাউচার পর্যালোচনা করলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে।
এছাড়াও প্রতি বৎসর বাগানের সীমানায় ড্রেন নির্মাণের জন্য দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা বাজেট থাকে, কিন্তু বাস্তবে সীমানায় ড্রেন না করে ভূয়া বিলের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন। গাছ মার্কিং এর প্রতি বৎসর বাজেট থাকে ৬০/৭০ হাজার টাকা, কিন্তু বাস্তবে টেপার মাঠ কর্মীদের দ্বারা গাছ মার্কিং করে ভূয়া বিলের মাধ্যমে প্রতি বছরই সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন তিনি।
এছাড়াও দৈনিক ভিত্তিক মাঠকর্মী, অতিরিক্ত সুপার ভাইজার দৈনিক/স্থায়ী নিরাপত্তা স্মোকার, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেখে টেপার হতে বানানো মাঠ কর্মী, দৈনিক কিস্তিওয়ালা মোট ৩০জন জনবল দ্বারা পুনঃবাসন বাগানের জঙ্গল কাটা, নার্সারী সৃজন, সার প্রয়োগ, ওষুধ স্প্রে ইত্যাদি পুনঃবাসন বাগানের যাবতীয় পরিচর্যার কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ভুয়া বিল বাউচারের মাধ্যমে বাজেটের সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করে তা পুরোটাই তিনি আত্মসাত করেন।
অভিযোগ রয়েছে বাগানের ফায়ার লাইন, ফায়ার ওয়াছার কোন বৎসরই জনবল না নিয়ে ২/১জন লোক দ্বারা কাজ করে ভুয়া বাউচার সাজিয়ে বিল তুলেন। বাগানের বাসাবাড়ি মেরামতের নামে বাজেটের সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করে নামমাত্র কাজ করে প্রায় ১ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন। শ্রমিক কর্মচারীর বাসার পানির লাইন মেরামত না করে দেড় লক্ষ টাকা, নার্সারী সৃজনের নামে ১৭ লক্ষ টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থ বৎসরের বাগান স্থানীয় লোকদের ৩০০ কেয়ার জায়গা ইজারা দিয়ে ১৫০০ টাকা হারে মোট ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে মসজিদে আংশিক টাকা খরচ করে বাকী টাকাও আত্মসাত করেন। দুই মাঠ কর্মীকে ১০০ কেয়ার জায়গা মুখি চাষ করিয়ে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ধান ক্ষেত ইজারা দিয়ে ১ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন।
রূপাইছড়া বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে অনেক অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা আর তদন্ত হয়নি। একটি সূত্র জানায়, তদন্ত হওয়ার পূর্বেই তিনি তদন্তে নিয়োজিত লোকদের উৎকোচের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ফেলেন। যার ফলে তদন্ত লাল ফিতা বন্দি হয়ে যায়। যদিও তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রূপাইছড়া রাবার বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি কোন ধরণের অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
হবিগঞ্জ : বাহুবল উপজেলার রূপাইছড়া রাবার বাগান -সংগৃহীত
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত রূপাইছড়া রাবার বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ বনশিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রূপাইছড়া রাবার বাগান শ্রমিক কর্মচারীবৃন্দ। অভিযোগপত্রটি আমলে নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন রূপাইছড়া রাবার বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাশেম আখঞ্জি ও সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন।
অভিযোগে জানা যায়, রূপাইছড়া রাবার বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে শ্রমিকদের জিম্মি করে বাগানের কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। ২০২২ সালে যোগদানের পর থেকেই তিনি অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলে কথা বলার সাহস পায়নি। তার ভয়ে তটস্থ থাকে শ্রমিক কর্মচারীরা।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, অফিসের কর্মচারী বেলায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত চালানে প্রায় ১শ গাড়ীর অধিক অফিসের রেকর্ড ছাড়া ২২০০ হারে মোট ২২ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন। উক্ত চালানগুলো ভান্ডারের রেকর্ডে এমনকি জ্বালানী কাঠের রেজিস্টারেও লিপিবদ্ধ নেই। বাগানের জঙ্গল কাটা প্রতি বৎসর প্রায় চার লক্ষ থেকে সাড়ে চার লক্ষ টাকা বাজেট থাকে, কিন্তু টেপার দ্বারা জঙ্গল কর্তন করে উক্ত বাজেটের পুরো টাকা তিনি আত্মসাত করেন। এ বিষয়ে বিল বাউচার পর্যালোচনা করলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে।
এছাড়াও প্রতি বৎসর বাগানের সীমানায় ড্রেন নির্মাণের জন্য দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা বাজেট থাকে, কিন্তু বাস্তবে সীমানায় ড্রেন না করে ভূয়া বিলের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন। গাছ মার্কিং এর প্রতি বৎসর বাজেট থাকে ৬০/৭০ হাজার টাকা, কিন্তু বাস্তবে টেপার মাঠ কর্মীদের দ্বারা গাছ মার্কিং করে ভূয়া বিলের মাধ্যমে প্রতি বছরই সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন তিনি।
এছাড়াও দৈনিক ভিত্তিক মাঠকর্মী, অতিরিক্ত সুপার ভাইজার দৈনিক/স্থায়ী নিরাপত্তা স্মোকার, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেখে টেপার হতে বানানো মাঠ কর্মী, দৈনিক কিস্তিওয়ালা মোট ৩০জন জনবল দ্বারা পুনঃবাসন বাগানের জঙ্গল কাটা, নার্সারী সৃজন, সার প্রয়োগ, ওষুধ স্প্রে ইত্যাদি পুনঃবাসন বাগানের যাবতীয় পরিচর্যার কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ভুয়া বিল বাউচারের মাধ্যমে বাজেটের সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করে তা পুরোটাই তিনি আত্মসাত করেন।
অভিযোগ রয়েছে বাগানের ফায়ার লাইন, ফায়ার ওয়াছার কোন বৎসরই জনবল না নিয়ে ২/১জন লোক দ্বারা কাজ করে ভুয়া বাউচার সাজিয়ে বিল তুলেন। বাগানের বাসাবাড়ি মেরামতের নামে বাজেটের সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করে নামমাত্র কাজ করে প্রায় ১ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন। শ্রমিক কর্মচারীর বাসার পানির লাইন মেরামত না করে দেড় লক্ষ টাকা, নার্সারী সৃজনের নামে ১৭ লক্ষ টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থ বৎসরের বাগান স্থানীয় লোকদের ৩০০ কেয়ার জায়গা ইজারা দিয়ে ১৫০০ টাকা হারে মোট ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে মসজিদে আংশিক টাকা খরচ করে বাকী টাকাও আত্মসাত করেন। দুই মাঠ কর্মীকে ১০০ কেয়ার জায়গা মুখি চাষ করিয়ে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ধান ক্ষেত ইজারা দিয়ে ১ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন।
রূপাইছড়া বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে অনেক অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা আর তদন্ত হয়নি। একটি সূত্র জানায়, তদন্ত হওয়ার পূর্বেই তিনি তদন্তে নিয়োজিত লোকদের উৎকোচের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ফেলেন। যার ফলে তদন্ত লাল ফিতা বন্দি হয়ে যায়। যদিও তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রূপাইছড়া রাবার বাগানের ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি কোন ধরণের অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই।