সকালা ১০:৩৮মি, উপজেলা জুড়ে লোকজন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। হঠাৎ ভয়ংকরী রূপে কেঁপে উঠলো পলাশ ঘোড়াশালসহ উপজেলার সব জায়গায়। মানুষে আর্ত চিৎকারে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল আতংক। এ ছিল গতকাল শুক্রবারে ঘটে যাওয়া ১৬ সেকেন্ডের ভূমিকম্প। ইউএসজিএস এর মতে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৫রিক্টার স্কেল এবং উৎপত্তি স্থল ঘোড়াশালের পূর্ব-দক্ষিণ ৭ কি,মি দূরে মাধবদীর কাছাকাছি। সারদিন পলাশ ঘুরে জানা যায় পলাশে ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়াবহ চিত্র। পলাশে ভূমিকম্পে মাটির দেয়াল চাপায় ও স্ট্রোক করে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন বিভিন্ন বয়সের অন্তত ২০ মানুষ। আহতরা পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল ও জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি সদর হাসপাতাল ও পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এবং নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) ডাংগার ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের (নয়াপাড়া) মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫)।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদী সদর ও পলাশ উপজেলার মধ্যবর্তী অঞ্চলে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। এই ভূমিকম্পে নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এতে নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ভবনসহ বেশ কিছু ভবনে ফাটল দেখা দেয়।ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে গিয়ে অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।
ভূমিক্পের সময় পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) মাটির ঘরের দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন। তাকে প্রথমে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নরসিংদী ১০০ শয্যা হাসপাতালের পথে নেওয়ার সময় তিনি মারা যান বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন।জিনারদীর অনেক মাটির ঘরে ফাঁটল ধরেছে।
অপরদিকে পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫) বাড়ির পাশের ফসলের মাঠে কাজ করছিলেন। এসময় ভূমিকম্প জমি কেঁপে উঠলে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করলে মাটির গর্তে পড়ে গিয়ে স্টোক করেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এছাড়াও ভূমিকম্পে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে কেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পুড়ে যায় এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। পলাশ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুল শহিদ বলেন, খবর পেয়ে পলাশ ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক জানান, ভূমিকম্পের কারণেই এ অগ্নিকা- ঘটে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।
ভূমিকম্পে পলাশ উপজেলার অনেক ভবনে ফাটল দেখা দেয়। পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের এটিয়ার মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ঘোড়াশাল পৌর এলাকার লেবুতলা গ্রামের ঘোড়াশাল ডেইরি ফার্মে বিশাল জায়গা জুড়ে ফাটল দেখা দেয়। পোর এলাকার বাগপাড়ায় মাটি ভেদ করে উপরে পানি উঠতেও দেখা যায়। ঘোড়াশাল বাজারের ছয়তলা ভবন এস এ প্লাজায়ও ফাটল দেখা দেয়। বসত বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপকভাবে। ঘোড়াশাল নতুন বাজার গ্রামের ইসহাক মিয়ার বাড়ি ভেঙে বেশ ক্ষতি হয়েছে।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান,ঘোড়াশালের চারটি খাদ্যগুদামে ফাঁটল ধরেছে, বেশ ক্ষতি হয়েছে।দ্রুতসময়ে খাদ্য স্থানান্তর শুরু করা হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
সকালা ১০:৩৮মি, উপজেলা জুড়ে লোকজন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। হঠাৎ ভয়ংকরী রূপে কেঁপে উঠলো পলাশ ঘোড়াশালসহ উপজেলার সব জায়গায়। মানুষে আর্ত চিৎকারে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল আতংক। এ ছিল গতকাল শুক্রবারে ঘটে যাওয়া ১৬ সেকেন্ডের ভূমিকম্প। ইউএসজিএস এর মতে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৫রিক্টার স্কেল এবং উৎপত্তি স্থল ঘোড়াশালের পূর্ব-দক্ষিণ ৭ কি,মি দূরে মাধবদীর কাছাকাছি। সারদিন পলাশ ঘুরে জানা যায় পলাশে ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়াবহ চিত্র। পলাশে ভূমিকম্পে মাটির দেয়াল চাপায় ও স্ট্রোক করে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন বিভিন্ন বয়সের অন্তত ২০ মানুষ। আহতরা পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল ও জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি সদর হাসপাতাল ও পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এবং নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) ডাংগার ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের (নয়াপাড়া) মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫)।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদী সদর ও পলাশ উপজেলার মধ্যবর্তী অঞ্চলে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। এই ভূমিকম্পে নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এতে নরসিংদীসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ভবনসহ বেশ কিছু ভবনে ফাটল দেখা দেয়।ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে গিয়ে অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।
ভূমিক্পের সময় পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) মাটির ঘরের দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন। তাকে প্রথমে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নরসিংদী ১০০ শয্যা হাসপাতালের পথে নেওয়ার সময় তিনি মারা যান বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন।জিনারদীর অনেক মাটির ঘরে ফাঁটল ধরেছে।
অপরদিকে পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫) বাড়ির পাশের ফসলের মাঠে কাজ করছিলেন। এসময় ভূমিকম্প জমি কেঁপে উঠলে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করলে মাটির গর্তে পড়ে গিয়ে স্টোক করেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এছাড়াও ভূমিকম্পে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে কেন্দ্রের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পুড়ে যায় এবং জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়। পলাশ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আব্দুল শহিদ বলেন, খবর পেয়ে পলাশ ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. এনামুল হক জানান, ভূমিকম্পের কারণেই এ অগ্নিকা- ঘটে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।
ভূমিকম্পে পলাশ উপজেলার অনেক ভবনে ফাটল দেখা দেয়। পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের এটিয়ার মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ঘোড়াশাল পৌর এলাকার লেবুতলা গ্রামের ঘোড়াশাল ডেইরি ফার্মে বিশাল জায়গা জুড়ে ফাটল দেখা দেয়। পোর এলাকার বাগপাড়ায় মাটি ভেদ করে উপরে পানি উঠতেও দেখা যায়। ঘোড়াশাল বাজারের ছয়তলা ভবন এস এ প্লাজায়ও ফাটল দেখা দেয়। বসত বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাপকভাবে। ঘোড়াশাল নতুন বাজার গ্রামের ইসহাক মিয়ার বাড়ি ভেঙে বেশ ক্ষতি হয়েছে।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান,ঘোড়াশালের চারটি খাদ্যগুদামে ফাঁটল ধরেছে, বেশ ক্ষতি হয়েছে।দ্রুতসময়ে খাদ্য স্থানান্তর শুরু করা হয়েছে।