কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে লেবুচাষ করে সফল হয়েছেন পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে কৃষক আমিনুল ইসলাম হারিছ, মল্লিক মিয়া, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাকিল আহমেদ ও সংগ্রাম মিয়াসহ অনেক কৃষক। লেবু চাষ করে বিঘা প্রতি বছরে লক্ষাধীক টাকার আয় করছেন কৃষকরা। লেবু বাগান পরিদর্শন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন।
বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে লেবু। লেবু হচ্ছে ভিটামিন ‘সি’-এর উৎকৃষ্ট উৎস। লেবুর রস টক স্বাদযুক্ত, লেবু স্বাদে ও গুণে ভরপুর, যেমন সুগন্ধী মনোমুগ্ধকর, তেমনি পুষ্টিমানেও অতুলনীয়। লেবুর রসে প্রায় ২.২ পিএইচ এর প্রায় ৫% থেকে ৬% সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে যার ফলে এটি টক স্বাদযুক্ত হয়। লেবুতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। লেবু ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস, যা ১০০ গ্রাম রেফারেন্স পরিমাণে (টেবিল) দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ৬৪% সরবরাহ করে। লেবুর রসে জাম্বুরার রসের প্রায় দ্বিগুণ এবং কমলার রসের প্রায় পাঁচগুণ বেশি সাইট্রিক এসিড পাওয়া। লেবু ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কটিয়াদী পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে প্রায় ৪০/৪৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন দেশী, সীডলেছ, চায়না থ্রি ও রাজশাহীর সীডলেচসহ বিভিন্ন জাতের লেবু। স্থানীয় কৃষকগণ জানান প্রায় ১২/১৫ বছর আগে লেবুর বাগান শুরু করেছিলেন ভরারদিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম হারিছ, মল্লিক মিয়া, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাকিল আহমেদ। বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে রয়েছে সবুজ রঙের ছোট বড় লেবু। লেবু চাষে তাদের এমন সাফল্য দেখে এলাকার অনেক মানুষ উৎসাহিত হয়ে নিজেদের ফসলি জমিতেই করেছেন লেবু বাগান। লেবু বাগানে চারা রোপণের এক বছরের মধ্যেই ফল ধরা শুরু হয়।
সম্প্রতি পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে কটিয়াদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে লেবু বাগান পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কিশোররগঞ্জ খামারবাড়ির উপপরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. শাহিনুল ইসলাম, জেলা মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন/কৃষি প্রকৌশলী মুখলেসুজ্জামান তালুকদার, কটিয়াদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম ভূঞা, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আজহার মাহমুদ, পৌরসভার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মঈনুল ইসলাম, কটিয়াদী প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মাইনুল হক মেনু, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, সাবেক পৌর কাউন্সিলার মো. জাকির হোসেন প্রমূখ।
কথা হয় লেবু চাষে সফল চাষি আমিনুল ইসলাম হারিছ সাথে, তিনি জানান আমি প্রথমে ৩-৪ বিঘা জমিতে লেবু চাষ করেছি। লেবুর গাছ লাগনোর এক বছর পর থেকেই ফল ধরা শুরু হয়। সপ্তাহে ২/৩দিন বাগান থেকে লেবু তুলে বাজারে নিয়ে নিজেই বিক্রি করেন। বাগানের লেবুর সাইজ ভালো ও প্রচুর রস এবং সুগন্ধি হওয়ায় সবার মুখে মুখে প্রচার হয়ে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে বাগান থেকে লেবু কিনে নিয়ে যান। সারা বছর লেবু চাহিদা থাকায় লেবু চাষ করে আমি লাভবান। তিনি আরও জানান, বিঘাপ্রতি লেবু থেকে সকল খরচ বাদে বছরে প্রায় এক লক্ষ টাকার উপরে আয় করে থাকেন। লেবু চাষে খুব বেশি খরচও হয়না। এক বিঘা জমিতে লেবুর চারা রোপন করতে প্রায় ১০/১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। পরে সময় সময় পোকামাকড়ের ঔষধ ও নিমিত পরিচর্যা করলেই হয়। লেবু বাগানে নেই তেমন রোগবালাইয়ের ঝামেলা। সঠিক পরিচর্যায় একবার চারা রোপণ করার পর অন্তত ১০-১৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বাগান থেকে লেবুর চাহিদা মিঠিয়েও লেবুর চারা বিক্রি করা যায়। নতুন চাষিরা লেবুর চারা কিনে নিয়ে যায়। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছেন। ভরারদিয়া গ্রামের কৃষক মল্লিক মিয়া, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাকিল আহমেদসহ অন্যান্য কৃষকরাও একই কথা বলেন।
কটিয়াদী উপজেলারকৃষি সম্প্রসারন অধিপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে ৪০/৪৫ বিঘা জমিতে একসাথে লেবু চাষ করা হয়েছে। এখানে দেশীয়, সীডলেছ, চায়না থ্রি ও রাজশাহীর সীডলেচসহ বিভিন্ন জাতের লেবু চাষ করা হয়েছে। আমি লেবুর বাগান কয়েকবার পরিদর্শন করেছি। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রযুক্তিগত দিকসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। লেবু চাষ করে চাষিরা আর্থিভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া উন্নতমানের লেবুর মার্কেট তৈরি এবং চারা গাছ বিক্রি করতে কৃষি বিভাগ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে লেবুচাষ করে সফল হয়েছেন পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে কৃষক আমিনুল ইসলাম হারিছ, মল্লিক মিয়া, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাকিল আহমেদ ও সংগ্রাম মিয়াসহ অনেক কৃষক। লেবু চাষ করে বিঘা প্রতি বছরে লক্ষাধীক টাকার আয় করছেন কৃষকরা। লেবু বাগান পরিদর্শন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন।
বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে লেবু। লেবু হচ্ছে ভিটামিন ‘সি’-এর উৎকৃষ্ট উৎস। লেবুর রস টক স্বাদযুক্ত, লেবু স্বাদে ও গুণে ভরপুর, যেমন সুগন্ধী মনোমুগ্ধকর, তেমনি পুষ্টিমানেও অতুলনীয়। লেবুর রসে প্রায় ২.২ পিএইচ এর প্রায় ৫% থেকে ৬% সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে যার ফলে এটি টক স্বাদযুক্ত হয়। লেবুতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। লেবু ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস, যা ১০০ গ্রাম রেফারেন্স পরিমাণে (টেবিল) দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ৬৪% সরবরাহ করে। লেবুর রসে জাম্বুরার রসের প্রায় দ্বিগুণ এবং কমলার রসের প্রায় পাঁচগুণ বেশি সাইট্রিক এসিড পাওয়া। লেবু ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কটিয়াদী পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে প্রায় ৪০/৪৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন দেশী, সীডলেছ, চায়না থ্রি ও রাজশাহীর সীডলেচসহ বিভিন্ন জাতের লেবু। স্থানীয় কৃষকগণ জানান প্রায় ১২/১৫ বছর আগে লেবুর বাগান শুরু করেছিলেন ভরারদিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম হারিছ, মল্লিক মিয়া, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাকিল আহমেদ। বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে রয়েছে সবুজ রঙের ছোট বড় লেবু। লেবু চাষে তাদের এমন সাফল্য দেখে এলাকার অনেক মানুষ উৎসাহিত হয়ে নিজেদের ফসলি জমিতেই করেছেন লেবু বাগান। লেবু বাগানে চারা রোপণের এক বছরের মধ্যেই ফল ধরা শুরু হয়।
সম্প্রতি পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে কটিয়াদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে লেবু বাগান পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জাকির হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কিশোররগঞ্জ খামারবাড়ির উপপরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. শাহিনুল ইসলাম, জেলা মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন/কৃষি প্রকৌশলী মুখলেসুজ্জামান তালুকদার, কটিয়াদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম ভূঞা, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আজহার মাহমুদ, পৌরসভার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মঈনুল ইসলাম, কটিয়াদী প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মাইনুল হক মেনু, সাংবাদিক মিজানুর রহমান, সাবেক পৌর কাউন্সিলার মো. জাকির হোসেন প্রমূখ।
কথা হয় লেবু চাষে সফল চাষি আমিনুল ইসলাম হারিছ সাথে, তিনি জানান আমি প্রথমে ৩-৪ বিঘা জমিতে লেবু চাষ করেছি। লেবুর গাছ লাগনোর এক বছর পর থেকেই ফল ধরা শুরু হয়। সপ্তাহে ২/৩দিন বাগান থেকে লেবু তুলে বাজারে নিয়ে নিজেই বিক্রি করেন। বাগানের লেবুর সাইজ ভালো ও প্রচুর রস এবং সুগন্ধি হওয়ায় সবার মুখে মুখে প্রচার হয়ে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে বাগান থেকে লেবু কিনে নিয়ে যান। সারা বছর লেবু চাহিদা থাকায় লেবু চাষ করে আমি লাভবান। তিনি আরও জানান, বিঘাপ্রতি লেবু থেকে সকল খরচ বাদে বছরে প্রায় এক লক্ষ টাকার উপরে আয় করে থাকেন। লেবু চাষে খুব বেশি খরচও হয়না। এক বিঘা জমিতে লেবুর চারা রোপন করতে প্রায় ১০/১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। পরে সময় সময় পোকামাকড়ের ঔষধ ও নিমিত পরিচর্যা করলেই হয়। লেবু বাগানে নেই তেমন রোগবালাইয়ের ঝামেলা। সঠিক পরিচর্যায় একবার চারা রোপণ করার পর অন্তত ১০-১৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বাগান থেকে লেবুর চাহিদা মিঠিয়েও লেবুর চারা বিক্রি করা যায়। নতুন চাষিরা লেবুর চারা কিনে নিয়ে যায়। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছেন। ভরারদিয়া গ্রামের কৃষক মল্লিক মিয়া, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাকিল আহমেদসহ অন্যান্য কৃষকরাও একই কথা বলেন।
কটিয়াদী উপজেলারকৃষি সম্প্রসারন অধিপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পৌরসভার ভরারদিয়া গ্রামে ৪০/৪৫ বিঘা জমিতে একসাথে লেবু চাষ করা হয়েছে। এখানে দেশীয়, সীডলেছ, চায়না থ্রি ও রাজশাহীর সীডলেচসহ বিভিন্ন জাতের লেবু চাষ করা হয়েছে। আমি লেবুর বাগান কয়েকবার পরিদর্শন করেছি। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রযুক্তিগত দিকসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। লেবু চাষ করে চাষিরা আর্থিভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া উন্নতমানের লেবুর মার্কেট তৈরি এবং চারা গাছ বিক্রি করতে কৃষি বিভাগ থেকে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে।