উজাড় হচ্ছে পাহাড়, কমছে পানি প্রবাহ
সাঙ্গু নদীর পাড়ে জড়ো করে রাখা হয়েছে কাঠ। যোগসাজশে বন উজাড় করে এসব কাঠ পাচার করা হয় -সংবাদ
বান্দরবানের রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা মৌজায় জোত পারমিটের আড়ালে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে বন উজাড় ও কাঠ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। সাঙ্গু নদীর দুই তীরে হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে- যা নৌপথে পাচারের অপেক্ষায় রয়েছে। রুমা উপজেলা গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা মৌজা সাঙ্গু নদীপথে খালের মুখে চিত্র এটি। এছাড়াও গ্যালেঙ্গ্যা পান্তলা মৌজায় জোট পারমিটের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বন উজাড় ও কাঠ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সাঙ্গু নদীর দুই তীরে হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ জোত পারমিটকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই একটি চক্র নির্ধারিত এলাকার বাইরে বিশাল পরিধিতে গাছ কাটছে। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া পুরনো গাছ দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে, উজাড় হচ্ছে পাহাড়, কমে যাচ্ছে পানি প্রবাহ। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে সাঙ্গু নদীর উজানে পান্তলা পাড়ার ঘাট পেরিয়ে সেপ্রু মুখ এলাকায় নদীর ধারে গাছের বিশাল গাছের গোছা প্রস্তুত করা রয়েছে যা নৌপথে পাচারের অপেক্ষায়। এখানে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, জাহেদ মাঝির নির্দেশে এখানে কাজ করছেন তারা। এ বিষয়ে জাহিদ মাঝি বলেন, বান্দরবানের ব্যবসায়ী কাউছার সদাগরের কাঠ তারা নদীতে নামানোর জন্য প্রস্তুত করছেন। শ্রমিক নিয়োগ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ পুরো কাজ তিনি কাউছারের সঙ্গে কথা বলে করছেন। তবে সাবেক রেঞ্জার মো. মুনতাসীর বলেন, ‘পান্তলা পাড়া থেকে তিনজন ব্যক্তির নামে অনুমোদিত জোত পারমিট ছিল। কাউছার ঠিক কার নামে জোত করেছে- কাগজপত্র না দেখে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। নুমলাই হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা লংরুম ম্রো (৪২) বলেন, পান্তলা মৌজায় তার নামে কোনো জমির বন্দোবস্ত নেই। তবে তিনি জানান, এক ব্যক্তি কামাল তাদের কিছু গাছ কিনে নিয়ে গেছে।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী কাউছারের পক্ষে কাঠ কেনা-কাটা ও পরিবহণের দায়িত্বে রয়েছে কামাল। গালেঙ্গ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেনরত ম্রো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গাছ ব্যবসায়ীরা জোত পারমিট করে নির্ধারিত একটি স্থানের বন্দোবস্তের জমির কাগজ দেখান। কিন্তু গাছ কেটে নিয়ে যান সম্পূর্ণ অন্য জায়গা থেকে। এটা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ কারণে পাহাড়ের ঝিরিগুলোতে পানির প্রবাহ শুকিয়ে গেছে। রুমা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ রহমান বলেন, ‘গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নে কয়েকটি অনুমোদিত জোত পারমিট চলমান রয়েছে। তবে এগুলো অনুমোদিত হয়েছে আগের রেঞ্জারের সময়ে। কোনো মৌজায় কার নামে অনুমোদন হয়েছে- তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। এ বিষয়ে বান্দরবান বন বিভাগের ডিএফও আব্দুর রহমান বলেন, রুমায় জোত পারমিটের নামে কাঠ পাচারের বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি, আমরা তদন্ত করে দেখবো, যদি কাঠ পাচারের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
ছবির ক্যাপশন: রুমার গালেঙ্গ্যা এলাকায় সাঙ্গু নদীর তীরে পাচারের জন্য গাছের স্তূপ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
উজাড় হচ্ছে পাহাড়, কমছে পানি প্রবাহ
সাঙ্গু নদীর পাড়ে জড়ো করে রাখা হয়েছে কাঠ। যোগসাজশে বন উজাড় করে এসব কাঠ পাচার করা হয় -সংবাদ
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
বান্দরবানের রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা মৌজায় জোত পারমিটের আড়ালে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে বন উজাড় ও কাঠ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। সাঙ্গু নদীর দুই তীরে হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে- যা নৌপথে পাচারের অপেক্ষায় রয়েছে। রুমা উপজেলা গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের পান্তলা মৌজা সাঙ্গু নদীপথে খালের মুখে চিত্র এটি। এছাড়াও গ্যালেঙ্গ্যা পান্তলা মৌজায় জোট পারমিটের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বন উজাড় ও কাঠ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সাঙ্গু নদীর দুই তীরে হাজার হাজার ঘনফুট কাঠ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ জোত পারমিটকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই একটি চক্র নির্ধারিত এলাকার বাইরে বিশাল পরিধিতে গাছ কাটছে। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া পুরনো গাছ দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে, উজাড় হচ্ছে পাহাড়, কমে যাচ্ছে পানি প্রবাহ। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে সাঙ্গু নদীর উজানে পান্তলা পাড়ার ঘাট পেরিয়ে সেপ্রু মুখ এলাকায় নদীর ধারে গাছের বিশাল গাছের গোছা প্রস্তুত করা রয়েছে যা নৌপথে পাচারের অপেক্ষায়। এখানে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, জাহেদ মাঝির নির্দেশে এখানে কাজ করছেন তারা। এ বিষয়ে জাহিদ মাঝি বলেন, বান্দরবানের ব্যবসায়ী কাউছার সদাগরের কাঠ তারা নদীতে নামানোর জন্য প্রস্তুত করছেন। শ্রমিক নিয়োগ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ পুরো কাজ তিনি কাউছারের সঙ্গে কথা বলে করছেন। তবে সাবেক রেঞ্জার মো. মুনতাসীর বলেন, ‘পান্তলা পাড়া থেকে তিনজন ব্যক্তির নামে অনুমোদিত জোত পারমিট ছিল। কাউছার ঠিক কার নামে জোত করেছে- কাগজপত্র না দেখে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। নুমলাই হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা লংরুম ম্রো (৪২) বলেন, পান্তলা মৌজায় তার নামে কোনো জমির বন্দোবস্ত নেই। তবে তিনি জানান, এক ব্যক্তি কামাল তাদের কিছু গাছ কিনে নিয়ে গেছে।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী কাউছারের পক্ষে কাঠ কেনা-কাটা ও পরিবহণের দায়িত্বে রয়েছে কামাল। গালেঙ্গ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেনরত ম্রো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গাছ ব্যবসায়ীরা জোত পারমিট করে নির্ধারিত একটি স্থানের বন্দোবস্তের জমির কাগজ দেখান। কিন্তু গাছ কেটে নিয়ে যান সম্পূর্ণ অন্য জায়গা থেকে। এটা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ কারণে পাহাড়ের ঝিরিগুলোতে পানির প্রবাহ শুকিয়ে গেছে। রুমা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ রহমান বলেন, ‘গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নে কয়েকটি অনুমোদিত জোত পারমিট চলমান রয়েছে। তবে এগুলো অনুমোদিত হয়েছে আগের রেঞ্জারের সময়ে। কোনো মৌজায় কার নামে অনুমোদন হয়েছে- তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। এ বিষয়ে বান্দরবান বন বিভাগের ডিএফও আব্দুর রহমান বলেন, রুমায় জোত পারমিটের নামে কাঠ পাচারের বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে শুনেছি, আমরা তদন্ত করে দেখবো, যদি কাঠ পাচারের সঙ্গে কেউ জড়িত থাকে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
ছবির ক্যাপশন: রুমার গালেঙ্গ্যা এলাকায় সাঙ্গু নদীর তীরে পাচারের জন্য গাছের স্তূপ।