বরিশালের গৌরনদীতে সিজারিয়ান অপারেশনের অবহেলা, অনিয়ম ও চিকিৎসাগত ত্রুটির অভিযোগে সাথি আক্তার পরী (২২) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনার পরপরই ক্লিনিকটির কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা গা ঢাকা দিলে উত্তেজিত জনতা ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাটাজোড় এলাকার মদিনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পরী উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠি গ্রামের ইমন আকনের স্ত্রী। পরীর শ্বশুর নজরুল আকন জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে তার পুত্রবধুকে গৌরনদীর বাটাজোড় এলাকার মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। প্রথমে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাজিব কর্মকার নরমাল ডেলিভারির কথা বললেও ৫ হাজার টাকার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হঠাৎ সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি (নজরুল) সিজারে আপত্তি জানালে কর্তৃপক্ষ বরিশাল থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এনে অপারেশন করানোর আশ্বাস দেন।
নজরুল বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে একজন চিকিৎসক অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন এবং প্রায় এক ঘণ্টা পর সিজার সম্পন্ন হয় এবং সিজার করা চিকিৎসক অপারেশন শেষ করেই তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক ত্যাগ করেন। তবে পরিবারের কেউ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের নাম জানাতে না পারলেও ক্লিনিকের প্যাথোলজির ভেতরে লুকিয়ে থাকা ল্যাব টেকনোলজিস্ট প্রান হালদার জানান ওই চিকিৎসকের নাম ডা. সমিরন হালদার।
নজরুল অভিযোগ করেন,অপারেশনের আধাঘণ্টা পর পরীকে বেডে আনা হলে তার শরীর সম্পূর্ণ সাদা হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এসময় কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা জানায় ক্লিনিকে অক্সিজেন নেই, বাইরে থেকে আনতে হবে। পরে একজন স্টাফ অক্সিজেন আনতে গিয়ে আর ফেরত আসেননি।
নজরুল আকন বলেন, পরীর অবস্থা আরও খারাপ হলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে চিকিৎসক রাজিব কর্মকার এসে পরীক্ষা করে কোনো কথা না বলে দ্রুত বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিনিকের সব স্টাফ পালিয়ে যায়। আমরা তখন পাশের একটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক এনে পরীক্ষা করালে তিনি জানান, পরী মারা গেছে।
এদিকে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
বরিশালের গৌরনদীতে সিজারিয়ান অপারেশনের অবহেলা, অনিয়ম ও চিকিৎসাগত ত্রুটির অভিযোগে সাথি আক্তার পরী (২২) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনার পরপরই ক্লিনিকটির কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা গা ঢাকা দিলে উত্তেজিত জনতা ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাটাজোড় এলাকার মদিনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পরী উজিরপুর উপজেলার ভরসাকাঠি গ্রামের ইমন আকনের স্ত্রী। পরীর শ্বশুর নজরুল আকন জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে তার পুত্রবধুকে গৌরনদীর বাটাজোড় এলাকার মদিনা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। প্রথমে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাজিব কর্মকার নরমাল ডেলিভারির কথা বললেও ৫ হাজার টাকার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হঠাৎ সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি (নজরুল) সিজারে আপত্তি জানালে কর্তৃপক্ষ বরিশাল থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক এনে অপারেশন করানোর আশ্বাস দেন।
নজরুল বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে একজন চিকিৎসক অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন এবং প্রায় এক ঘণ্টা পর সিজার সম্পন্ন হয় এবং সিজার করা চিকিৎসক অপারেশন শেষ করেই তড়িঘড়ি করে ক্লিনিক ত্যাগ করেন। তবে পরিবারের কেউ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের নাম জানাতে না পারলেও ক্লিনিকের প্যাথোলজির ভেতরে লুকিয়ে থাকা ল্যাব টেকনোলজিস্ট প্রান হালদার জানান ওই চিকিৎসকের নাম ডা. সমিরন হালদার।
নজরুল অভিযোগ করেন,অপারেশনের আধাঘণ্টা পর পরীকে বেডে আনা হলে তার শরীর সম্পূর্ণ সাদা হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এসময় কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা জানায় ক্লিনিকে অক্সিজেন নেই, বাইরে থেকে আনতে হবে। পরে একজন স্টাফ অক্সিজেন আনতে গিয়ে আর ফেরত আসেননি।
নজরুল আকন বলেন, পরীর অবস্থা আরও খারাপ হলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে চিকিৎসক রাজিব কর্মকার এসে পরীক্ষা করে কোনো কথা না বলে দ্রুত বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিনিকের সব স্টাফ পালিয়ে যায়। আমরা তখন পাশের একটি ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক এনে পরীক্ষা করালে তিনি জানান, পরী মারা গেছে।
এদিকে ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।