সিংড়া : চলবিলে নৌকায় করে আনা হচ্ছে আমান ধান -সংবাদ
জমিতে এক হাঁটু আধ হাঁটু পানি, আবার কোন কোন জমিতে হাটুর ওপরে পানি। এখন হেমন্তের অগ্রহায়ণ মাস। বন্যার পানি নামে নাই চলনবিলের কৃষি জমি থেকে। তাই বাধ্য হয়েই নৌকা দিয়ে বোনা আমন ধান কাটছেন চলনবিলের কৃষক। এতে শ্রমিক খরচ পড়ছে দ্বিগুন। একবেলা ধান কেটে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৫শ থেকে ৭শ টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন ৫মণ থেকে ৬মণ হলেও খরচ বাদে কৃষকদের ঘরে উঠছে মাত্র ১মণ থেকে ২মণ ধান। নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলের ডাহিয়া ও ইটালী ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাঁটু পানিতে নেমে শ্রমিকরা চরম কষ্টে ধান কাটছেন। নৌকায় বোঝাই করে কাটা ধান নিয়ে আসছেন কৃষকের খোলায়। সেখান থেকে মাড়াই করে তুলছেন ঘরে।
হেমন্তের নতুন ধান কাটতে সারা দেশ উৎসবে মেতে উঠলেও কৃষকদের দুঃখ, কষ্ট ও হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে কৃষি প্রধান চলনবিলের ভুক্তভোগী এ অঞ্চলের আমন চাষীদের। কৃষকরা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের পশ্চিম মাগুড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ভুটরু জানান, তিন ভাই মিলে ৭০ বিঘা বোনা আমন ধানের চাষ করেছি। বেশির ভাগ জমিতে নৌকা নিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পানিতে ধান কাটতে চাচ্ছেননা অনেক শ্রমিক। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজ করে ৫শ থেকে ৭শ টাকা দিতে হচ্ছে তাদের।
ইটালী ইউনিয়নের ইন্দ্রাসন গ্রামের কৃষক সবুজ আলী জানান, ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান চাষ করেছি। ফলন বিঘা প্রতি ৫মণ থেকে ৬মণ হচ্ছে। কিন্তু সব খরচ বাদ দিয়ে ১ থেকে ২ মণ ধান ঘরে তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন বর্গার ধান কিভাবে দেবো? দুশ্চিন্তায় আছি। উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের কাউয়াটিকরী গ্রামের কৃষক ফরিদ প্রামানিক বলেন, বোনা আমন ধান কাটা পর আমি প্রতি বছর সরিষার চাষ করি। গত বছর ২০ বিঘা চাষ করেছিলাম। এ বছর জমিতে পানি আছে। সরিষার চাষ করতে পারবো কিনা দুশ্চিন্তায় আছি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি বছরে ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ও ২৩ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের অসময়ের বন্যায় কিছু এলাকায় বোনা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষি প্রণোদনা ও পরামর্শ দিয়ে সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে সহযোগিতা করছি। চলনবিলের পানি নেমে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি সরিষা ও বোরো ধান চাষ করে বোনা আমনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন কৃষক।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সিংড়া : চলবিলে নৌকায় করে আনা হচ্ছে আমান ধান -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
জমিতে এক হাঁটু আধ হাঁটু পানি, আবার কোন কোন জমিতে হাটুর ওপরে পানি। এখন হেমন্তের অগ্রহায়ণ মাস। বন্যার পানি নামে নাই চলনবিলের কৃষি জমি থেকে। তাই বাধ্য হয়েই নৌকা দিয়ে বোনা আমন ধান কাটছেন চলনবিলের কৃষক। এতে শ্রমিক খরচ পড়ছে দ্বিগুন। একবেলা ধান কেটে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৫শ থেকে ৭শ টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন ৫মণ থেকে ৬মণ হলেও খরচ বাদে কৃষকদের ঘরে উঠছে মাত্র ১মণ থেকে ২মণ ধান। নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলের ডাহিয়া ও ইটালী ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাঁটু পানিতে নেমে শ্রমিকরা চরম কষ্টে ধান কাটছেন। নৌকায় বোঝাই করে কাটা ধান নিয়ে আসছেন কৃষকের খোলায়। সেখান থেকে মাড়াই করে তুলছেন ঘরে।
হেমন্তের নতুন ধান কাটতে সারা দেশ উৎসবে মেতে উঠলেও কৃষকদের দুঃখ, কষ্ট ও হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে কৃষি প্রধান চলনবিলের ভুক্তভোগী এ অঞ্চলের আমন চাষীদের। কৃষকরা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের পশ্চিম মাগুড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ভুটরু জানান, তিন ভাই মিলে ৭০ বিঘা বোনা আমন ধানের চাষ করেছি। বেশির ভাগ জমিতে নৌকা নিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পানিতে ধান কাটতে চাচ্ছেননা অনেক শ্রমিক। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজ করে ৫শ থেকে ৭শ টাকা দিতে হচ্ছে তাদের।
ইটালী ইউনিয়নের ইন্দ্রাসন গ্রামের কৃষক সবুজ আলী জানান, ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান চাষ করেছি। ফলন বিঘা প্রতি ৫মণ থেকে ৬মণ হচ্ছে। কিন্তু সব খরচ বাদ দিয়ে ১ থেকে ২ মণ ধান ঘরে তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন বর্গার ধান কিভাবে দেবো? দুশ্চিন্তায় আছি। উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের কাউয়াটিকরী গ্রামের কৃষক ফরিদ প্রামানিক বলেন, বোনা আমন ধান কাটা পর আমি প্রতি বছর সরিষার চাষ করি। গত বছর ২০ বিঘা চাষ করেছিলাম। এ বছর জমিতে পানি আছে। সরিষার চাষ করতে পারবো কিনা দুশ্চিন্তায় আছি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানান, চলতি বছরে ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ও ২৩ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের অসময়ের বন্যায় কিছু এলাকায় বোনা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষি প্রণোদনা ও পরামর্শ দিয়ে সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে সহযোগিতা করছি। চলনবিলের পানি নেমে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি সরিষা ও বোরো ধান চাষ করে বোনা আমনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন কৃষক।