শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বছরের অর্ধেক সময় পানিতে ডুবে থাকে। প্রতিবছর বর্ষার শুরুতেই বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে যায়। এ সময় বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের কখনও সাঁকো বেয়ে, কখনও ডিঙি নৌকায় করে আবার কখনও পানি মাড়িয়ে নানা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। এদিকে বছরের অর্ধেক সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকার কারণে ছাত্র সমাবেশ, খেলাধুলাসহ সকল কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর একাধিকবার আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকার কারণে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।
উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ২০০৩ ও ২০০৭ সনে বিদ্যালয়ের দুটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ (মাঠ) মাটি ভরাটের কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ফলে প্রধান সড়কের চাইতে প্রায় ৫ ফুট নিচু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বর্ষার শুরুতেই পানিতে ডুবে যায়। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বছরের ৬ মাস বিদ্যালয় প্রাঙ্গণটি পানিতে ডুবে থাকে। এখনো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের অধিকাংশ অংশ পানিতে ডুবে আছে। ফলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ অনেক নিচু হওয়ায় বর্ষার শুরুতেই পানিতে তলিয়ে যায়। প্রায় ৫ মাস সাঁকো ও ডিঙি নৌকা দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে এ সময়ে প্রাক-প্রাথমিক (শিশু শ্রেণী) শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। তিনি জানান বর্ষা ও বৃষ্টির পানি বের হওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছরেই কমপক্ষে ৬ মাস বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকে। জমে থাকা পানি ধীর গতিতে কমতে থাকলেও বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পুনরায় তলিয়ে যায়। তিনি বলেন, চলমান সমস্যার সমাধান করতে হলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ৪/৫ ফুট উঁচু করে মাটি ভরাট করতে হবে। এদিকে পানি মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেকেই পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হয়। শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, গত অর্থবছরে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে মাটি ভরাটের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে ৪ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তা দিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে কিছু বালি ফেলা হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম। তিনি জানান, পানি মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের দুর্ভোগের বিষয় চিন্তা করে শিক্ষকরা নিজেরাই গত একমাস হল আশপাশ থেকে মাটি নিয়ে চলাচলের জন্য সরু রাস্তা তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, দু’বছর আগেও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩’শ জন। কিন্তু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকার কারণে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অর্ধেক কমে গেছে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৩৯ জন।
এ বিষয়ে ছুটিতে থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাটি ভরাটের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা কমিটির মাসিক মিটিংয়েও বিষয়টি একাধিক বার উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা কমিটির মিটিংয়ে রেজুলেশন করা হলেও অধ্যবধি কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার, (২৫ নভেম্বর ২০২৫) উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুরাদ হোসেন জানান, চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান জানান, ইতিপূর্বে ওই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের জন্য কিছু বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বছরের অর্ধেক সময় পানিতে ডুবে থাকে। প্রতিবছর বর্ষার শুরুতেই বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে যায়। এ সময় বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের কখনও সাঁকো বেয়ে, কখনও ডিঙি নৌকায় করে আবার কখনও পানি মাড়িয়ে নানা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। এদিকে বছরের অর্ধেক সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকার কারণে ছাত্র সমাবেশ, খেলাধুলাসহ সকল কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর একাধিকবার আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকার কারণে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।
উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ২০০৩ ও ২০০৭ সনে বিদ্যালয়ের দুটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ (মাঠ) মাটি ভরাটের কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ফলে প্রধান সড়কের চাইতে প্রায় ৫ ফুট নিচু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বর্ষার শুরুতেই পানিতে ডুবে যায়। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বছরের ৬ মাস বিদ্যালয় প্রাঙ্গণটি পানিতে ডুবে থাকে। এখনো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের অধিকাংশ অংশ পানিতে ডুবে আছে। ফলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ অনেক নিচু হওয়ায় বর্ষার শুরুতেই পানিতে তলিয়ে যায়। প্রায় ৫ মাস সাঁকো ও ডিঙি নৌকা দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে এ সময়ে প্রাক-প্রাথমিক (শিশু শ্রেণী) শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ রাখতে হয়। তিনি জানান বর্ষা ও বৃষ্টির পানি বের হওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছরেই কমপক্ষে ৬ মাস বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকে। জমে থাকা পানি ধীর গতিতে কমতে থাকলেও বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পুনরায় তলিয়ে যায়। তিনি বলেন, চলমান সমস্যার সমাধান করতে হলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ৪/৫ ফুট উঁচু করে মাটি ভরাট করতে হবে। এদিকে পানি মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেকেই পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হয়। শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, গত অর্থবছরে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে মাটি ভরাটের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে ৪ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তা দিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে কিছু বালি ফেলা হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম। তিনি জানান, পানি মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের দুর্ভোগের বিষয় চিন্তা করে শিক্ষকরা নিজেরাই গত একমাস হল আশপাশ থেকে মাটি নিয়ে চলাচলের জন্য সরু রাস্তা তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, দু’বছর আগেও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩’শ জন। কিন্তু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পানিতে ডুবে থাকার কারণে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অর্ধেক কমে গেছে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১৩৯ জন।
এ বিষয়ে ছুটিতে থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাটি ভরাটের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা কমিটির মাসিক মিটিংয়েও বিষয়টি একাধিক বার উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা কমিটির মিটিংয়ে রেজুলেশন করা হলেও অধ্যবধি কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার, (২৫ নভেম্বর ২০২৫) উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুরাদ হোসেন জানান, চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান জানান, ইতিপূর্বে ওই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের জন্য কিছু বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।