alt

দশমিনায় বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী) : বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

দশমিনা (পটুয়াখালী) : গ্রামাঞ্চলে শীতের মুখরোচক রস সংগ্রহে খেজুর গাছে ঝুলানো মাটির হাড়ি -সংবাদ

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চল থেকে শীত মৌসুমের মুখরোচক খেজুরের রসসহ খেজুর গাছ কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হতে চলছে। শীতকালে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার এবং বাড়তি আয়ের অন্যতম উপাদান হিসাবে খেজুরের রস ছিল। শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়তো। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে গাছিরা এক গাছ থেকে অন্য গাছের রস সংগ্রহ করতো। সারি সারি রসের হাড়ি দেখে সাধারন মানুষ আনন্দে আত্বহারা হয়ে যেত। কালের বিবর্তনে সেই দৃশ্য এখন আর আগের মতো চোখে পড়ছে না।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে এখন আর আগের মত খেজুর গাছ চোখে পড়ে না। গ্রামের রাস্তার দুই পাশে সারি সারি খেজুর গাছ এখন আর নেই। আবাদি কিংবা অনাবাদি জমি ও বসতঘরের আশেপাশে খেজুর গাছ থাকলেও মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে কেটে ফেলেছে। অনেকে গাছ কেটে জ্বালানি হিসাবে বা টাকার জন্য অল্প দামে বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে কালের ক্রমে ধীরে ধীরে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গেছে। বাণিজ্যিকভাবে এই গাছটি কেউ রোপন করছে না। এই গাছ রাস্তা, বসতঘর, আবাদি কিংবা অনাবাদি জমির আশেপাশে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে থাকে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে গ্রামাঞ্চলে সারি সারি খেজুর গাছ ছিল। গ্রামের গাছিরা কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহে নেমে পড়তো। এখন আর এই দৃশ্য চোখে পড়ে না।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রতি বছর শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে খেজুর গাছ কাটতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়তো। গাছ কমে যাওয়ায় এখন আর আগের মত কেউ গাছ কাটছে না। ফলে গাছিদের রস সংগ্রহে খুব কম দেখা যাচ্ছে। ঘন কুয়াশায় পড়ে খেজুর রসের মন মাতানো সুমিষ্ট ঘ্রাণ আর দেখা মিলছে না।

উপজেলা সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহাবুল চৌকিদার বলেন,শীত আসলেই খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহের জন্য নেমে পড়তাম। খেজুর গাছ কাটার পর পরই গাছগুলোতে রসের হাড়ি পরিপূর্ণ হয়ে যেত। এই রস আহরন করে গ্রামে গ্রামে খেজুরের মিঠা, পিঠা, পায়েসসহ নানা ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরি করা হতো। পর্যাপ্ত পরিমাণে রস না পাওয়ায় এখন আর আগের মত সেই ধরনের খাবার তৈরি করা যায় না। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখতে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে অনেক গাছি পরিবার এখনও খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আগের মত রস পাওয়া যায় না। গাছিরা জানায়, খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় অল্প সংখ্যক গাছ কাটা হয়। এতে এক হাড়ি রস আহরন করা হলে তার দাম প্রায় ৮শত টাকার কম নয়। এত দাম দিয়ে কেউ রস কিনতে চায় না। তবে শখের বশে কেউ কেউ ক্রয় করে নিয়ে যায়।

এদিকে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে শীতকালিন পিঠা উৎসবে খেজুরের রসের কোন পিঠা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। পর্যাপ্ত গাছ না থাকায় রসের পরিমান কমে গেছে।

ফলে শীত মৌসুমের মুখরোচক খেজুরের রসসহ খেজুর গাছ কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হতে চলছে। নতুন করে কেউ খেজুর গাছ রোপন করছে না। ঐতিহ্য ধরে রাখা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা এবং মুখরোচক রস পেতে খেজুর গাছ রোপন করা একান্ত প্রয়োজন।

ছবি

গৌরনদীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৫

ছবি

রৌমারীতে ‘মিডডে মিল’ কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

উল্লাপাড়ায় ঘুষ-স্বজনপ্রীতির অভিযোগে মাদরাসার সুপারসহ ৪ জন বরখাস্ত

বটিয়াঘাটায় প্রাণী সম্পদ মেলা অনুষ্ঠিত

ছবি

বাগেরহাটে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

ছবি

কুষ্টিয়ায় গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ৯টি অবৈধ ইটভাটা

ছবি

দরপতনেও ভাটা পরেনি আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

ছবি

শাহজাদপুরে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

বরগুনায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালিত

ছবি

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মিলাদ

ডিমলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহের কর্মসূচীর উদ্বোধন

ছবি

সরকারি জায়গায় বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণের গুরুতর অভিযোগ

ছবি

ভালুকায় ভারতীয় মদ বোঝাই পিকআপ জব্দ

ছবি

গৌরনদীতে দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গা মন্দিও ভাঙার অভিযোগ

ছবি

স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিল উপজেলা প্রশাসন উদ্বোধন হলো আধুনিক শিশু পার্ক

মহেশপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ফেন্সিডিল উদ্ধার ও নারী আটক

ছবি

কুলাউড়ায় আমন ধান কাটার ব্যস্ততা, সোনালী ফসল ঘরে তুলতে উৎসবমুখর কৃষক

ছবি

শেরপুরে টিসিবির ২৪৮ বস্তা চাল জব্দ, ডিলার আটক

ছবি

নড়াইলে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষরা ছেলেকে হত্যা করেছে, দাবি মায়ের

ছবি

আত্রাইয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ পালিত

ছবি

মোরেলগঞ্জে জাতীয় প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য র‌্যালি

ছবি

বীগঞ্জে তদন্ত চলাকালে প্রধান শিক্ষকের উপর অর্তকিত হামলা, দুই শিক্ষক আহত

ছবি

তিন বছরেও শেষ হয়নি খাসিয়ামারা সেতুর কাজ, দুর্ভোগে মানুষ

ছবি

নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত

ছবি

নেত্রকোণায় প্রতিদিন অর্ধ কোটি টাকার মাছের বেচাকেনা

ছবি

শীতের শুরুতে আগাম আলুচাষে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ঘিওরের কৃষকদের

ছবি

অন্তর্বর্তী সময়ে অতি ডানপন্থিদের আস্ফালন যেমন বেড়েছে, সরকারের দিক থেকে আস্কারাও পেয়েছে: শিক্ষক নেটওয়ার্ক

ছবি

কক্সবাজার জেল গেইট এলাকায় পাহাড় ধ্বংস: প্রকৃতির সামনে নতুন ঝুঁকি

ছবি

কালিহাতীতে পরিত্যক্ত মেশিন ঘরে কিশোরী ধর্ষণ

দুমকিতে জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্ট্রিকরণ বিষয়ক কর্মশালা

ছবি

মোহনগঞ্জে মাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল

ছবি

আদমদীঘিতে নিখোঁজের ৩ দিন পর বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

গজারিয়ায় বালু ভরাটে কমছে আমাদি জমি ও মাটির উর্বরতা

ছবি

শীতের আমেজে কদর বেড়েছে গরম কাপড়, লেপ, তোষকের

ছবি

সিলেটে এতিম শিশুদের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের স্কুল

ছবি

রাঙ্গাবালীতে সংরক্ষিত বন ধ্বংস তরমুজ খেতের প্রস্তুতি

tab

দশমিনায় বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)

দশমিনা (পটুয়াখালী) : গ্রামাঞ্চলে শীতের মুখরোচক রস সংগ্রহে খেজুর গাছে ঝুলানো মাটির হাড়ি -সংবাদ

বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চল থেকে শীত মৌসুমের মুখরোচক খেজুরের রসসহ খেজুর গাছ কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হতে চলছে। শীতকালে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার এবং বাড়তি আয়ের অন্যতম উপাদান হিসাবে খেজুরের রস ছিল। শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়তো। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে গাছিরা এক গাছ থেকে অন্য গাছের রস সংগ্রহ করতো। সারি সারি রসের হাড়ি দেখে সাধারন মানুষ আনন্দে আত্বহারা হয়ে যেত। কালের বিবর্তনে সেই দৃশ্য এখন আর আগের মতো চোখে পড়ছে না।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে এখন আর আগের মত খেজুর গাছ চোখে পড়ে না। গ্রামের রাস্তার দুই পাশে সারি সারি খেজুর গাছ এখন আর নেই। আবাদি কিংবা অনাবাদি জমি ও বসতঘরের আশেপাশে খেজুর গাছ থাকলেও মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে কেটে ফেলেছে। অনেকে গাছ কেটে জ্বালানি হিসাবে বা টাকার জন্য অল্প দামে বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে কালের ক্রমে ধীরে ধীরে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে গেছে। বাণিজ্যিকভাবে এই গাছটি কেউ রোপন করছে না। এই গাছ রাস্তা, বসতঘর, আবাদি কিংবা অনাবাদি জমির আশেপাশে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে থাকে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে গ্রামাঞ্চলে সারি সারি খেজুর গাছ ছিল। গ্রামের গাছিরা কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহে নেমে পড়তো। এখন আর এই দৃশ্য চোখে পড়ে না।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের প্রতি বছর শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে খেজুর গাছ কাটতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়তো। গাছ কমে যাওয়ায় এখন আর আগের মত কেউ গাছ কাটছে না। ফলে গাছিদের রস সংগ্রহে খুব কম দেখা যাচ্ছে। ঘন কুয়াশায় পড়ে খেজুর রসের মন মাতানো সুমিষ্ট ঘ্রাণ আর দেখা মিলছে না।

উপজেলা সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহাবুল চৌকিদার বলেন,শীত আসলেই খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহের জন্য নেমে পড়তাম। খেজুর গাছ কাটার পর পরই গাছগুলোতে রসের হাড়ি পরিপূর্ণ হয়ে যেত। এই রস আহরন করে গ্রামে গ্রামে খেজুরের মিঠা, পিঠা, পায়েসসহ নানা ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরি করা হতো। পর্যাপ্ত পরিমাণে রস না পাওয়ায় এখন আর আগের মত সেই ধরনের খাবার তৈরি করা যায় না। তবে ঐতিহ্য ধরে রাখতে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে অনেক গাছি পরিবার এখনও খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় আগের মত রস পাওয়া যায় না। গাছিরা জানায়, খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় অল্প সংখ্যক গাছ কাটা হয়। এতে এক হাড়ি রস আহরন করা হলে তার দাম প্রায় ৮শত টাকার কম নয়। এত দাম দিয়ে কেউ রস কিনতে চায় না। তবে শখের বশে কেউ কেউ ক্রয় করে নিয়ে যায়।

এদিকে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে শীতকালিন পিঠা উৎসবে খেজুরের রসের কোন পিঠা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। পর্যাপ্ত গাছ না থাকায় রসের পরিমান কমে গেছে।

ফলে শীত মৌসুমের মুখরোচক খেজুরের রসসহ খেজুর গাছ কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হতে চলছে। নতুন করে কেউ খেজুর গাছ রোপন করছে না। ঐতিহ্য ধরে রাখা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা এবং মুখরোচক রস পেতে খেজুর গাছ রোপন করা একান্ত প্রয়োজন।

back to top