কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিডডে মিল কর্মসূচির শুরুতেই শিক্ষার্থীদের মাঝে নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে এসব অনিয়েমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ি শিশুদের জন্য মানসম্মত খাবার সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ি, রৌমারী উপজেলায় মোট ১১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮হাজার ৯৯৮জন শিক্ষার্থী সপ্তাহে পাঁচ দিন ‘পুষ্টিকর’ খাবার পাওয়ার কথা। নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ি প্রতি রবি. বুধ ও বৃহস্পতিবার বনরুটি (১২০ গ্রাম), সেদ্ধ ডিম (৬০ গ্রাম) ও ইউএইচটি দুধ (২০০ গ্রাম) এবং মঙ্গলবার ফর্টিফায়েড বিস্কুট (৭৫ গ্রাম) ও মৌসুমী ফল বা কলা (১০০ গ্রাম) দেওয়ার কথা। তবে অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বিভাগকে সমন্বয়ের বাইরে রেখে খাবার সরবরাহ শুরু করেছে।
রৌমারী উপজেলার যাদুরচর নতুনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বাউশিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে, রুটিন অনুযায়ি খাবার সরবরাহ করা হয়নি। যে খাবার দেওয়া হয়েছে তার মানও ছিল নিম্নমানের। রুটি ছিল শক্ত ও নিন্মমানের, আর কলা ছিল সম্পূর্ণ কাাঁচা। সর্বশেষ মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের জন্য কাঁচা কলা সরবরাহ করা হয়।
জানতে চাইলে চর বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুল হক বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ৯৪ জন শিক্ষার্থী। ১৮ তারিখ ৭০ জনের জন্য ডিম ও রুটি পেয়েছি। ১৯তারিখে শুধু রুটি পেয়েছি, তারপর আজ পর্যন্ত আর কোনো খাবার সরবরাহ করা হয়নি।
যাদুরচর নতুনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, ১৮ তারিখে রুটি ও কলা দিয়েছে, কিন্তু পরিমাণ ছিল কম। ১৯ তারিখ শুধু রুটি দিয়েছে। এরপর আর খাবার সরবরাহ করেনি। ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে ফোন করলে তিনি বলেন, প্রাক্কলন মূল্যের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম দর নিয়ে কাজ করায় সরবরাহ সমস্যা হয়েছে।
নিম্নমাণের খাবার সরবরাহের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রৌমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন। তিনি বলেন, আইসল্যান্ড ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠান ১৮ নভেম্বর মৌখিকভাবে জানিয়ে সরবরাহ শুরু করে। আমরা এখনো কোনো কার্যাদেশ পাইনি। ২৫ নভেম্বর কয়েকটি স্কুলে কাঁচা কলা সরবরাহের অভিযোগ ওঠার পর তারা সরবরাহ স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে। ১ ডিসেম্বর থেকে আবার সরবরাহ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। মানসম্পূর্ণ খাবার সরবরাহ ঠিকাদারের দায়িত্ব। আবার অনিয়ম পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসল্যান্ড ট্রেডিং এর প্রতিনিধি রায়হান বলেন, আমরা ময়মনসিংহসহ কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছি। খুব অল্প সময়ে কার্যাদেশ পাওয়ায় খাবার সরবরাহ নিয়ে কিছুটা অব্যবস্থাপনা হয়েছে। ১ ডিসেম্বর থেকে সবকিছু নিয়ম মতো শুরু হবে। আমরা সবার সহযোগিতা চাচ্ছি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিডডে মিল কর্মসূচির শুরুতেই শিক্ষার্থীদের মাঝে নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে এসব অনিয়েমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ি শিশুদের জন্য মানসম্মত খাবার সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ি, রৌমারী উপজেলায় মোট ১১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮হাজার ৯৯৮জন শিক্ষার্থী সপ্তাহে পাঁচ দিন ‘পুষ্টিকর’ খাবার পাওয়ার কথা। নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ি প্রতি রবি. বুধ ও বৃহস্পতিবার বনরুটি (১২০ গ্রাম), সেদ্ধ ডিম (৬০ গ্রাম) ও ইউএইচটি দুধ (২০০ গ্রাম) এবং মঙ্গলবার ফর্টিফায়েড বিস্কুট (৭৫ গ্রাম) ও মৌসুমী ফল বা কলা (১০০ গ্রাম) দেওয়ার কথা। তবে অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বিভাগকে সমন্বয়ের বাইরে রেখে খাবার সরবরাহ শুরু করেছে।
রৌমারী উপজেলার যাদুরচর নতুনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বাউশিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা গেছে, রুটিন অনুযায়ি খাবার সরবরাহ করা হয়নি। যে খাবার দেওয়া হয়েছে তার মানও ছিল নিম্নমানের। রুটি ছিল শক্ত ও নিন্মমানের, আর কলা ছিল সম্পূর্ণ কাাঁচা। সর্বশেষ মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের জন্য কাঁচা কলা সরবরাহ করা হয়।
জানতে চাইলে চর বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুল হক বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ৯৪ জন শিক্ষার্থী। ১৮ তারিখ ৭০ জনের জন্য ডিম ও রুটি পেয়েছি। ১৯তারিখে শুধু রুটি পেয়েছি, তারপর আজ পর্যন্ত আর কোনো খাবার সরবরাহ করা হয়নি।
যাদুরচর নতুনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, ১৮ তারিখে রুটি ও কলা দিয়েছে, কিন্তু পরিমাণ ছিল কম। ১৯ তারিখ শুধু রুটি দিয়েছে। এরপর আর খাবার সরবরাহ করেনি। ঠিকাদারের প্রতিনিধিকে ফোন করলে তিনি বলেন, প্রাক্কলন মূল্যের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম দর নিয়ে কাজ করায় সরবরাহ সমস্যা হয়েছে।
নিম্নমাণের খাবার সরবরাহের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রৌমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন। তিনি বলেন, আইসল্যান্ড ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠান ১৮ নভেম্বর মৌখিকভাবে জানিয়ে সরবরাহ শুরু করে। আমরা এখনো কোনো কার্যাদেশ পাইনি। ২৫ নভেম্বর কয়েকটি স্কুলে কাঁচা কলা সরবরাহের অভিযোগ ওঠার পর তারা সরবরাহ স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে। ১ ডিসেম্বর থেকে আবার সরবরাহ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। মানসম্পূর্ণ খাবার সরবরাহ ঠিকাদারের দায়িত্ব। আবার অনিয়ম পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসল্যান্ড ট্রেডিং এর প্রতিনিধি রায়হান বলেন, আমরা ময়মনসিংহসহ কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছি। খুব অল্প সময়ে কার্যাদেশ পাওয়ায় খাবার সরবরাহ নিয়ে কিছুটা অব্যবস্থাপনা হয়েছে। ১ ডিসেম্বর থেকে সবকিছু নিয়ম মতো শুরু হবে। আমরা সবার সহযোগিতা চাচ্ছি।