রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): ধূলাবালির কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে আকাশ -সংবাদ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ধূলাবালির জন্য পরিবেশের ব্যপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে পরেছে। ধূলাবালির কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে আকাশ। বিশেষ করে এশিয়ান হাইওয়ের কাঞ্চন থেকে ভূলতা সড়ক দিনদিন ধূলাবলুর পরিমাণ বাড়ছে। এসব ধূলাবালুর কারণে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, জনস্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে ধূলির সমস্যা অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, এলার্জি, এবং চোখে জ্বালাপোড়া সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ ধীরগতিতে চলার কারণে ধূলাবালু বেশি ছড়াচ্ছে, যা ফলে এই এলাকার বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে।মাটি ও বালিবাহী ট্রাক, ডাম্পার এবং পিকআপের বেপরোয়া চলাচল ধুলা বাড়িয়ে দেয়। রূপগঞ্জে অনেক রাস্তার বেহাল দশা এবং পানি ছিটানোর অভাবে ধুলাবালির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া রূপগঞ্জ, জাঙ্গীর, মুড়াপাড়া, হাবিবনগর, কায়েতপাড়া, চড়পাড়া, কালাদি, ইছাপুরা, মায়ারবাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকাগুলোর রাস্তায় ধুলাবালুর পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে, যা এই অঞ্চলের পরিবেশ এবং বাসিন্দাদের জীবনে এক ধরনের সংকট সৃষ্টি করছে।
বৈজ্ঞানিক তথ্য মতে, ধুলাবালুর কারণে বাতাসে সাসপেন্ডেড সলিড (মাটি, বালি ইত্যাদি) বৃদ্ধি পায়, যা শ্বাসনালীর সমস্যা এবং বাতাসের গুণগত মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলিতে যেখানে বায়ু দূষণের সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে, সেখানে এসব ধূলিঝড় আরও পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) বলেছে, দীর্ঘমেয়াদী ধূলি এবং বায়ুদূষণ স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
এছাড়া, ধূলি পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
পথচারি পিয়াস জানান, এখন শীতকাল কাঞ্চন সেতু এলাকা থেকে ভুলতা পর্যন্ত একপ্রকার ধূলার ঝড় হয়। যা জনজীবন কে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের চরম ঝুঁকিতে ফেলছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ধুলাবালুর কারণে এলাকার মানুষ যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, সে বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে, আমাদের কিছু উদ্যোগ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাটি, বালি ও ধূলির উড়াল রোধে আমরা গাছের চারা রোপণ এবং রাস্তার পিচ ঢালাই করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এ ছাড়া, স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচারণা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ আরও ত্বরান্বিত করা হবে।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত ধূলিঝড়ের কারণে যদি কোনো বিশেষ সমস্যা তৈরি হয়, তবে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আইভি ফেরদৌস জানান, ধূলিঝড়ের কারণে শ্বাসকষ্ট, চোখে জ্বালাপোড়া, এবং এলার্জি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। রোগীদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, ঠাণ্ডা ও ফ্লু ধরনের রোগী বেড়ে গেছে। এছাড়া, ধূলি ও বায়ু দূষণের কারণে হাঁপানির রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য সেবা সহজলভ্য রাখতে, আমরা সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করছি। এলাকার বাসিন্দাদের কনজেশন, শ্বাসকষ্ট এবং চোখের রোগের প্রতি সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি আবেদন করা হয়েছে, তারা যেন বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করেন এবং দরকার হলে মুখে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীরের ধূলি থেকে রক্ষা পায়। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): ধূলাবালির কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে আকাশ -সংবাদ
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ধূলাবালির জন্য পরিবেশের ব্যপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে পরেছে। ধূলাবালির কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে আকাশ। বিশেষ করে এশিয়ান হাইওয়ের কাঞ্চন থেকে ভূলতা সড়ক দিনদিন ধূলাবলুর পরিমাণ বাড়ছে। এসব ধূলাবালুর কারণে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, জনস্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে ধূলির সমস্যা অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, এলার্জি, এবং চোখে জ্বালাপোড়া সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ ধীরগতিতে চলার কারণে ধূলাবালু বেশি ছড়াচ্ছে, যা ফলে এই এলাকার বাসিন্দারা ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে।মাটি ও বালিবাহী ট্রাক, ডাম্পার এবং পিকআপের বেপরোয়া চলাচল ধুলা বাড়িয়ে দেয়। রূপগঞ্জে অনেক রাস্তার বেহাল দশা এবং পানি ছিটানোর অভাবে ধুলাবালির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া রূপগঞ্জ, জাঙ্গীর, মুড়াপাড়া, হাবিবনগর, কায়েতপাড়া, চড়পাড়া, কালাদি, ইছাপুরা, মায়ারবাড়ি সহ বিভিন্ন এলাকাগুলোর রাস্তায় ধুলাবালুর পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে, যা এই অঞ্চলের পরিবেশ এবং বাসিন্দাদের জীবনে এক ধরনের সংকট সৃষ্টি করছে।
বৈজ্ঞানিক তথ্য মতে, ধুলাবালুর কারণে বাতাসে সাসপেন্ডেড সলিড (মাটি, বালি ইত্যাদি) বৃদ্ধি পায়, যা শ্বাসনালীর সমস্যা এবং বাতাসের গুণগত মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলিতে যেখানে বায়ু দূষণের সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে, সেখানে এসব ধূলিঝড় আরও পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) বলেছে, দীর্ঘমেয়াদী ধূলি এবং বায়ুদূষণ স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
এছাড়া, ধূলি পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
পথচারি পিয়াস জানান, এখন শীতকাল কাঞ্চন সেতু এলাকা থেকে ভুলতা পর্যন্ত একপ্রকার ধূলার ঝড় হয়। যা জনজীবন কে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের চরম ঝুঁকিতে ফেলছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ধুলাবালুর কারণে এলাকার মানুষ যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, সে বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে, আমাদের কিছু উদ্যোগ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাটি, বালি ও ধূলির উড়াল রোধে আমরা গাছের চারা রোপণ এবং রাস্তার পিচ ঢালাই করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এ ছাড়া, স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচারণা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ আরও ত্বরান্বিত করা হবে।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত ধূলিঝড়ের কারণে যদি কোনো বিশেষ সমস্যা তৈরি হয়, তবে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আইভি ফেরদৌস জানান, ধূলিঝড়ের কারণে শ্বাসকষ্ট, চোখে জ্বালাপোড়া, এবং এলার্জি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। রোগীদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, ঠাণ্ডা ও ফ্লু ধরনের রোগী বেড়ে গেছে। এছাড়া, ধূলি ও বায়ু দূষণের কারণে হাঁপানির রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য সেবা সহজলভ্য রাখতে, আমরা সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করছি। এলাকার বাসিন্দাদের কনজেশন, শ্বাসকষ্ট এবং চোখের রোগের প্রতি সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি আবেদন করা হয়েছে, তারা যেন বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করেন এবং দরকার হলে মুখে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীরের ধূলি থেকে রক্ষা পায়। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য জনগণের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে।