দৃষ্টিহীন হয়েও পরিবারের ভরণপোষণ করছেন চরফ্যাসন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু সুফিয়ান -সংবাদ
জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। চোখে আলো নেই, তবু জীবনের সব হিসাব কষে এগিয়ে চলেছেন দৃঢ় মনোবল আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে। ভোলার চরফ্যাসন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু সুফিয়ান (৩৩) দৃষ্টিশক্তির অভাবকে কখনও দুর্বলতা হতে দেননি। বরং ১৫ বছর ধরে পরিচালনা করছেন নিজের ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান যা তার জীবিকার পাশাপাশি আত্মসম্মানের প্রধান ভরসা।
চরফ্যাসন কলেজ রোডের পাশে প্রেসক্লাব সংলগ্ন স্থানে ভ্যানগাড়ির ওপর গড়া তার ছোট দোকানটি প্রতিদিন জমজমাট থাকে। শুক্রবার, (২৮ নভেম্বর ২০২৫) সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, টিউবওয়েল থেকে পানি এনে নিজেই চা তৈরি করছেন সুফিয়ান। ক্রেতারা চা, পান, সিগারেট কিংবা বিস্কুট চাইলে বিন্দুমাত্র ভুল না করেই তিনি হাতে ধরছেন সঠিক পণ্য। সুফিয়ান বলেন, জন্ম থেকেই দেখতে পাই না। মা-বাবার মুখও কখনো চোখে দেখা হয়নি। শুধু কণ্ঠস্বর আর স্পর্শেই মানুষকে চিনেছি। চোখে দেখতে না পারলেও কাজ থেমে থাকলে চলে না এ কারণেই ১৮ বছর বয়স থেকে চায়ের দোকান করছি। ব্যক্তিগত জীবনে অসহায় মুহূর্তও এসেছে। বিয়ের কয়েক বছর পর স্ত্রী নানা অপবাদ দিয়ে চলে গেছেন। তবে সন্তানদের দায়িত্ব থেকে সরে যাননি তিনি। দুই সন্তান আছে। ওদের মুখ দেখতে না পারলেও বাবা হিসেবে দায়িত্ববোধ আছে, বলেন তিনি। প্রতিদিন লাঠির টোকায় টোকায় পথ চিনে বাড়ি থেকে দোকানে আসেন সুফিয়ান। নিয়মিত ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় তার দোকানে, লাভ থাকে প্রায় ২০০ টাকা। এই টাকায় চলছে মা, সন্তান ও বোনের সংসার। পাশের ব্যবসায়ী মো. তানভির বলেন, চোখে দেখতে না পেলেও দোকান সামলানোর দক্ষতা ও সততা অবিশ্বাস্য। টাকার নোট ধরেই তিনি বলে দিতে পারেন কত টাকা। আমরা সবাই তাকে সম্মান করি। চরফ্যাসনের বাসিন্দা শামিম হোসেন জানান, দৃষ্টিহীন হয়েও পরিবারের ভরণপোষণ করছেন। এমন মানুষদের জন্য সমাজের সহযোগিতা প্রয়োজন। চরফ্যাসন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মামুন হোসেন বলেন, “আবু সুফিয়ানকে সহায়ক ভাতার আওতায় আনার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি তার চায়ের দোকান উন্নয়নে সহযোগিতা দেওয়া হবে। দৃষ্টিশক্তি নেই, তবু নিজের জীবনে রাস্তা খুঁজে নিয়েছেন সুফিয়ান। চায়ের দোকানের ধোঁয়া আর গরম পানির শব্দের মধ্যেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন নিজের সম্মান ও বাঁচার শক্তি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
দৃষ্টিহীন হয়েও পরিবারের ভরণপোষণ করছেন চরফ্যাসন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু সুফিয়ান -সংবাদ
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। চোখে আলো নেই, তবু জীবনের সব হিসাব কষে এগিয়ে চলেছেন দৃঢ় মনোবল আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে। ভোলার চরফ্যাসন পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু সুফিয়ান (৩৩) দৃষ্টিশক্তির অভাবকে কখনও দুর্বলতা হতে দেননি। বরং ১৫ বছর ধরে পরিচালনা করছেন নিজের ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান যা তার জীবিকার পাশাপাশি আত্মসম্মানের প্রধান ভরসা।
চরফ্যাসন কলেজ রোডের পাশে প্রেসক্লাব সংলগ্ন স্থানে ভ্যানগাড়ির ওপর গড়া তার ছোট দোকানটি প্রতিদিন জমজমাট থাকে। শুক্রবার, (২৮ নভেম্বর ২০২৫) সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, টিউবওয়েল থেকে পানি এনে নিজেই চা তৈরি করছেন সুফিয়ান। ক্রেতারা চা, পান, সিগারেট কিংবা বিস্কুট চাইলে বিন্দুমাত্র ভুল না করেই তিনি হাতে ধরছেন সঠিক পণ্য। সুফিয়ান বলেন, জন্ম থেকেই দেখতে পাই না। মা-বাবার মুখও কখনো চোখে দেখা হয়নি। শুধু কণ্ঠস্বর আর স্পর্শেই মানুষকে চিনেছি। চোখে দেখতে না পারলেও কাজ থেমে থাকলে চলে না এ কারণেই ১৮ বছর বয়স থেকে চায়ের দোকান করছি। ব্যক্তিগত জীবনে অসহায় মুহূর্তও এসেছে। বিয়ের কয়েক বছর পর স্ত্রী নানা অপবাদ দিয়ে চলে গেছেন। তবে সন্তানদের দায়িত্ব থেকে সরে যাননি তিনি। দুই সন্তান আছে। ওদের মুখ দেখতে না পারলেও বাবা হিসেবে দায়িত্ববোধ আছে, বলেন তিনি। প্রতিদিন লাঠির টোকায় টোকায় পথ চিনে বাড়ি থেকে দোকানে আসেন সুফিয়ান। নিয়মিত ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় তার দোকানে, লাভ থাকে প্রায় ২০০ টাকা। এই টাকায় চলছে মা, সন্তান ও বোনের সংসার। পাশের ব্যবসায়ী মো. তানভির বলেন, চোখে দেখতে না পেলেও দোকান সামলানোর দক্ষতা ও সততা অবিশ্বাস্য। টাকার নোট ধরেই তিনি বলে দিতে পারেন কত টাকা। আমরা সবাই তাকে সম্মান করি। চরফ্যাসনের বাসিন্দা শামিম হোসেন জানান, দৃষ্টিহীন হয়েও পরিবারের ভরণপোষণ করছেন। এমন মানুষদের জন্য সমাজের সহযোগিতা প্রয়োজন। চরফ্যাসন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মামুন হোসেন বলেন, “আবু সুফিয়ানকে সহায়ক ভাতার আওতায় আনার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি তার চায়ের দোকান উন্নয়নে সহযোগিতা দেওয়া হবে। দৃষ্টিশক্তি নেই, তবু নিজের জীবনে রাস্তা খুঁজে নিয়েছেন সুফিয়ান। চায়ের দোকানের ধোঁয়া আর গরম পানির শব্দের মধ্যেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন নিজের সম্মান ও বাঁচার শক্তি।